নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চাষা হাবিব। কবি, গবেষক ও শিক্ষক। প্রকাশিত ও প্রকাশিতব্য গ্রন্থ; কবিতা-১৩, গবেষণা-১৩, প্রবন্ধ-২, গল্প গ্রন্থ-২, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধ-৬০ এবং গান রচনা-৩০; নাটক-২ । করেছেন মুক্তিযুদ্ধ এবং গণহত্যা নিয়ে একাধিক গবেষণা।

চাষা হাবিব

কবি, গবেষক ও উন্নয়নকর্মী

চাষা হাবিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাষা হাবিবের দুটি কবিতা

০৩ রা মে, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩

ধ্রুপদী জলপান।। চাষা হাবিব

কাকেদের উৎসবে কুকুরও বন্ধু
সুসময় গাছের ডালে বেধে রাখে সন্তানকামী মানত। ইউরিয়া ব্যবহারে বেড়ে যায় আগাছা নলের ডগা, ধানের শীষে চিটে আর পোকায় হঠাৎ তাণ্ডব এলোমেলো করে যুবতী আঁচল। বুক থেকে উচু ধানী জমিতে, নিন্ম নয়নজুলি খাড়ি নালাতে, মানতের শিরনীতে বোবা শব্দে ঠোঁট ফাটে নারদ। কাকের দুপুরে চিবুক ভ্রামরী ন্যুব্জ হয় দুধেল মনসায়। দয়াল চাঁদ, হরিচরণ, সত্যপীর চীবরে বসে উঠে পড়ে জায়নামাজে কাকের শ্রাদ্ধে–মেজবানি জলসায়। ধানের গন্ধে গা গরম হয় মানতের গতর, সে গরমে দামী অধ্যাপকও হয়ে ওঠে নিতান্তই ধর্মজৈন নানক। যেবার কুকুরের তাড়া খেয়ে আদি গঙ্গা আর পেরোতে পারেনি, যদিও সাধ ছিল লৌহিত্য হয়ে বুকের বা'পাশটায় ঝাপটা ঝড়ে পোয়াতি ধানে পৌঁছে যাবে একেবারে দূর্বার ত্রিশূল বরাবরে সীমানা পিলার। হয়নি–সেই থেকে জোয়ান সলেমন প্রায় চাঁদ রাতে দোতারায় খুঁজে ফেরে মানতের ঘ্রাণ। রাখাল চন্দ্র, ব্রাদার জন আর মহাথের ভান্তে পুটলিতে জমা করে তন্ত্রমন্ত্র সাধন। সেখানে বাঁশঝাড় আর কেরল কঞ্চি তাকে নিয়ে যায় দূরের গহন অতলে, সেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে কাকেরা শোরগোল করে, ছোট পাখিও সে দলে ভিড়ে–হয়ে যায় শিরনীর মস্তান খাদেম।

সন্তানকামী মানত বড় বড় পাতিলে সিদ্ধ হতে হতে শিবের গাঁজনে ধান শুদ্ধ দেহের ভাঁজে হয়ে ওঠে বহুব্রীহি–লালসালু পিরান। আমিও সে ব্যাকরণ বুঝে ফেলি, পোয়াতি বরণ নীল সাদা মেঘে উচু উচু ভাঁজ আর বর্ণিল রুদ্রাক্ষ তসবির গুলতে হাতে, জোৎস্নায় কাকেদের শহরে জমে ওঠে সংক্রান্তির মহাতিথি, যেখানে ভোর থেকে ভেজেই চলে ইউরিয়া মাখা চালে মল্লের বেটি বিজ্ঞাপনী মুড়ির কড়াইয়ে সন্তানকামী ঋতুবতী যুবতী ধান। সে ফলবতী মুড়িতে কুকুরের লালা মেখে রোজ বসে সৌষ্ঠব ইফতার,ইস্টার, হরিবাসর আর বনেদি ধ্রুপদী পার্টিতে গোলাবধূপের অমিয় জলপান।


প্রোপাগাণ্ডা ।। চাষা হাবিব

নিরন্নের সকালে আমিও অভুক্ত থেকে, প্রেমের আরতিতে জল ঢেলেছি আর তোমার দুপুরের ফাগুনের গণ তেজে,শিমুল মেখে আমিও থেকেছি নিরন্ন।
হায় তুমি দালাল জীবন!
আমিও সে ফাঁদে খুঁয়েছি
আমার ন্যাপকিন, চীবর
সাথে করে হারিয়েছি ঘুম
না ঘুমিয়ে যদি সমাধান হয় – তো জাগো
যদি বলো হয় কেঁদে সমাধান–তো কাঁদো
আর মেরে সমাধান হয় যদি – তো মারো
বাধা অতিক্রমে যা করা ওই তো সংস্কৃতি!
কে দিবে তোমাকে পথ,কে দিবে করে তৈরি সব, তামাশায় চলছে চারপাশ, হরেক রকম খেলতামাশা,কাটছে পকেট, পিতার মুখোশ, আবার মাতব্বরে নব্য শাসক থেকে পুরোহিত ধর্মযাজক। এসো খুলে দেই সবকটা জানালা, আসতে দাও আলো বেদনা হৃদয়, এ ঘর আমার ভাঙতে হলে ভাঙ্গো, ছিড়ে ফেলো ছলনা সকল ভ্রান্তির, আদর্শের খোঁয়াড়ে পোষ যে যন্ত্রণা।

আমায় দখলে আমি আজ ধার্মিক, আমি দখলে আজ তাই কি প্রেমিক, তুমি তাই দখলে আর আমি পরাধীন, আকাশ থেকে ছিটকে পড়া তারার মতো ফেঁসে গেছি আজ আমি দখলের জালে,কখন জানি অসংলগ্ন একলা আমি, ছিটকে এসে আটকে গেছি নীল শহরে, এখন তাই অন্যদিন–অন্য মানুষ, চাষ করে সৎকা শ্বাস যাকাত পেট, চিন্তার জমিনে রাষ্ট্র আটকে আছে, ক্ষমতা দখল আর প্যারাডক্স রথ।

মা তো স্বৈর নয় অথচ মমতায় স্বৈরাচার
ঈশ্বরের বাণী বেচে দেয় শাসক জনতার
পেটে চালান করে চুষে খায় ঘামের দাম, তবে তুমি কোন পক্ষ, নিরপেক্ষ–সেও তো এক পক্ষ। বোকার স্বর্গ যেন বেচে চলা গা, তবে মনে রেখো যা ন্যায় ও সত্য, যা ছিল ঐক্য সেই যে পুর্বপুরুষ, এরপর আমাদের শুধুই অনৈক্য, স্বাধীনতা তাই আজ কেঁদে ফেরা, যদিও আমি যুদ্ধ দেখিনি, দেখেছি পাহাড় চিহ্ন ক্ষত,অথচ সবে আজ দোকানের সওদা, কেনাবেচা হরদম মতিচুর খাজা মন্ডা, আচ্ছা ভগবান কি জেন্ডার! নাকি ভাঙা টুকরায় ভেঙে দেয় ঐক্যতান, মেলে না ছবিতে অবয়ব শুধু কীট অথচ চেয়ে আমি অমরত্ব–তুমিও তাই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.