বৃষ্টি নিয়ে কবিতা

২২ শে মে, ২০২১ বিকাল ৪:৫০

বৃষ্টি নিয়ে কবিতা নেই আমার
চাষা হাবিব

বৃষ্টি নিয়ে কোন কবিতা নেই আমার!

সেদিন সারা শহর আকাশ জুড়ে ছিল কড়া রোদ, শহরের মানুষ ছাতা ছাড়াই দুদ্দাড় বেরিয়ে পড়েছিল রাস্তায়। আকাশ তখন মৃত্যুর মতো নীল,শুভ্রতার কাফন পরা মেঘ চুপচাপ সরে যাচ্ছিল দক্ষিণ দিকে, কী চমৎকার দৃশ্যপট অথচ বৃষ্টি নিয়ে কোন কবিতা নেই আমার!

সেদিন এক শহর মানুষ চোখের সামনে বৃষ্টিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলো। আচমকা প্রবল বর্ষণে শহরের সব গৃহী মানুষকে হতবাক দেখাচ্ছিল, তারা প্রাণপণ ছুটছিল অপেক্ষা ছাউনির দিকে। সেখানে বাদাম বিক্রেতা থেকে লটকন–পথচারী–অফিস ফেরত, সবাই উৎফুল্ল হয়ে পড়েছিল খুবই।শুধু এক বালিকা ভাবলেশহীন বৃষ্টিতে ভিজছিল নিভৃতে।ভিজছিল স্কুলের মাঠ, নম্রতার ভেজানো বাসার ছাদ, ব্যালকনিতে নরম হাত, প্যাডেল মারা শরীর আর নিঃসঙ্গ একা কড়ই গাছ। আমি বসে বসে দেখছি বৃষ্টি ভেজা শহর, মানুষ আর সেই বিজ্ঞাপন কন্যার নিস্পৃহ বৃষ্টি ভেজা। হয়তো যারা কখনো বৃষ্টিতে ভেজে নাই তাদেরও গল্প থাকে, থাকে কাহিনি। যদিও কেউ বলেনা সেসব গল্প–কাহিনি। হয় না কবিতা বিজ্ঞাপন। লেখা হয় না বৃষ্টিতে না ভেজা ইস্তেহার।

বৃষ্টিতে ভেজার যে কষ্ট কিংবা বিষাদ কেউ বলে না অথচ বৃষ্টি ভেজার আনন্দ নিয়েই বেড়ে ওঠে বিজ্ঞাপন, টানটান উত্তেজনা। সে বিজ্ঞাপনে চাপা পড়ে, না ভেজা বৃষ্টিতে ছাতায় মোড়া মন। আর সেই বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় ঘাসফুল মাড়ানো শিশির, পরজীবি সোনালুপাতা সংসার। অথচ কী বিস্ময় বৃষ্টি নিয়ে কোন কবিতা নেই আমার!

কতদিন একশহর মানুষ চোখের সামনে বৃষ্টিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায়। উল্লাসে নেতানো শরীর দখল হয় বৃষ্টিতে, শুনেছি সেদিনও তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দখল হয়েছিল গর্ভবতী আঁচল। শহর জুড়ে রটে যায় বৃষ্টির শরীরে ঝাঁঝরা হওয়া দুপুর। সে ঝাঁঝরায় ভিজতে থাকা কিশোরীর দেহ হয়ে যায় ক্যানভাস, সে ক্যানভাসে অমর হয় ভিজতে ভিজতে কড়ই গাছটা,মাঠের মার্চ পোষ্ট আহত কোনটা। কী আফসোস! এত এত রসদ অথচ আমার লেখা হয়নি আজও বৃষ্টি ভেজা নিয়ে কবিতা কিংবা বৃষ্টিবিলাসে বিষাদসিন্ধু উৎসব অথবা নিভৃতে ভিজতে থাকা কিশোরী আখ্যান।

হায়! বৃষ্টি নিয়ে কোন কবিতা নেই আমার!

কাব্যগ্রন্থ–বোকা বাকসো; চাষা হাবিব।

১ টি +০/-০