নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবই বুঝি বাট কিছু কইতে পারিনা

chetamal

কোন প্রবলেমই প্রবলেম না, প্রবলেম হলো প্রবলেমের প্রতি তোমার দৃস্টিভংগি

chetamal › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিভাবে হলেন ব্যাংকের চেক প্রতারক থেকে বিশ্বের ৫০০+ ব্যাংকের সিকিউরিটি নকশাযুক্ত চেকের ডিজাইনার

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫

ব্যাংকে আমরা যে সিকিউরিটি নকশাযু্ক্ত চেক ব্যবহার করি সেটা একজন চেক প্রতারকের নকশা করা, কিভাবে হলেন তিনি চেক প্রতারক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী দুঃসাহসিক প্রতারক থেকে সিকিউরিটি নকশাযুক্ত চেকের ডিজাইনার এবং এফবিআই ফিল্ড অফিসারদের লেকচারার?
তার উত্তরঃ

ফ্র্যাংক এবেগ্নেল জুনিয়র, তাকে বলা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী দুঃসাহসিক প্রতারক। তিনি ২৬ টি দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি অঙ্গরাজ্যে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে ৪০ লাখ ডলার কামিয়েছেন। আর এই কাজটি করেছেন তিনি তার ২১ তম জন্মদিনের আগে, এই কাজ করতে গিয়ে তার ৮ বার পরিচয় পাল্টাতে হয় যার মধ্যে ছিলো এয়ার লাইনস পাইলট, ইউনিভার্সিটি টিচার, ডাক্তার, এটর্নী ইত্যাদি। প্যান আমেরিকার পাইলট হিসেবে পরিচয় ধারন করার সময় তিনি ১ লক্ষ ষাট হাজার কিমি বিমান ভ্রমন করেন একদম বিনে পয়সায় এবং এই সময়ে হোটেল খরচ এবং খাবার খরচ এয়ারলাইনস কোম্পানী বহন করে।



তিনি পুলিশ কাস্টরি থেকে ২ বার পলায়ন করেন এবং তা ২১ বছর বয়স হওয়ার আগেই। আর এফবিআই তে জয়েন করার আগেই তার ১৪ বছরের জেল দন্ড হয় যার ৬ মাস ফ্রান্সের জেলখানায় (১ বছরের দন্ড), ৬ মাস সুইডিস জেলখানায় আর ৪ বছর আমেরিকার জেলখানায় (১২ বছর দন্ড) কারা ভোগ করেন।



প্রথম প্রতারনা
এবেগ্নেল এর প্রথম শিকার ছিলো তার বাবা যে তাকে একটা গ্যাসলিন ক্রেডিট কার্ড এবং একটি ট্রাক দিয়েছিলো তার পার্ট টাইম জবের সহযোগিতার জন্য। ক্যাশ টাকা পাওয়ার জন্য এবেগ্নেল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে স্টেশন থেকে টায়ার, ব্যাটারি ও অন্যন্য পার্টস কিনতো এবং পরে এগুলো ফেরত দিয়ে ক্যাশ টাকা নিতো, এর ফলশ্রুতিতে তার বাবাকে ৩৪০০ ডলার ক্রেডিট কার্ড এর বিল শোধ করতে হয়। তখন এবেগ্নেল এর বয়স ছিলো মাত্র ১৫।

কিভাবে প্রতারনা করতেন
এবেগ্নেল এর শুরুর দিকের প্রতারনার মধ্যে ছিলো নিজের ব্যক্তিগত একাউন্ট এর ব্যালেন্স এর চেয়ে বেশী এমাউন্ট এর চেক লিখে টাকা তোলা কিন্তু এটা ততক্ষন কাজ করতো যতক্ষন ব্যাংক অতিরিক্ত উত্তোলনকৃত অর্থের জন্য তাগাদা দিতো তাই সে বিভিন্ন ব্যাংক এ বিভিন্ন নামে একাধিক একাউন্ট খুলা শুরু করলো। এভাবে সে প্রতারনার বিভিন্ন পন্থা আবিস্কার করে, এর মধ্যে ছিলো নিজের চেক এর হুবুহু কপি করা এবং জমা করা যেমন পেরল চেক, যার মাধ্যমে সে ব্যাংক থেকে তার একাউন্ট ব্যালেন্স শো করে ক্যাশ নিয়ে নিতো।
আরেকটা পন্থা ছিলো যে সে নকল ব্যাংক ডিপোসিট স্লিপ এর উপর তার একাউন্ট নাম্বার প্রিন্ট করে আসল গুলোর সাথে মিশিয়ে দিতো এর মানে হলো টাকা তার একাউন্ট এ জমা হতো।

এবেগ্নেল এর আরেকটি প্রতারনার মধ্যে ছিলো যে, সে লক্ষ করলো যে এয়ারলাইন্স আর রেন্ট এ কার বিজনেস এ সংগ্রহের টাকা গুলো এয়ারপোর্ট এর ভিতরে একটা ড্রপ বক্সের ভিতরে রাখতো, সে তখন একটা সিকিউরিটি গার্ড এর পোশাক কিনে অই ড্রপ বক্স এর সামনে “out of order” লিখে ঝুলিয়ে রাখতো এবং আরো লিখে রাখতো যে সংগৃহিত টাকা সিকিউরিটি গার্ড এর কাছে জমা দিন। তারপর যা হওয়ার তাই হতো। কিন্তু তখন ও কেউ ভাবে নি ড্রপবক্স কিভাবে out of service হয়!!!


কিভাবে পুলিশের হাতে ধরা পরলেন
১৯৬৯ সালে তিনি ফ্রান্স পুলিশের হাতে ধরা পরেন এবং সেখান থেকে এফবিআই এর জিম্বায় আসেন। তার ধরা পরার কাহিনী শুরু করলে টিউন অনেক বড় হয়ে যাবে, তাই স্কিপ করলাম। বিস্তারিত https://goo.gl/cfnQf4 পড়ে নিতে পারেন

এফবিআইতে জয়েন
১৯৭৪ সালে যখন তার ১২ বছরের সাজার ৪ বছর পূর্ন হয় তখন এফবিআই একটা অফার দেয় তাদেরকে চেক প্রতারনা বিষয়ে বিনে পয়সায় সাহায্য করবে বিনিময়ে তাকে প্যারলে মুক্তি দিবে. এর পর থেকে এবেগ্নেন এফবিআই এর চেক জালিয়াতির পরামর্শক হিসেবে এবং ফিল্ড পর্যায়ে অফিসারদের লেকচারার হিসেবে কাজ করছেন। তার ওয়েব সাইট ঘেটে দেখা গেছে যে তার জালিয়াতি বিষয়ে প্রতিরোধ ব্যাবস্থা ১৪০০০ এর বেশি প্রতিষ্ঠান গ্রহন করছে।



বর্তমানে ৫০০ টির ও বেশি ব্যাংক/কোম্পানীর সৌভাগ্য হয়েছে যে তারা ফ্র্যাংক এবেগ্নেল এর নকশা করা চেক ব্যবহার করার যাতে তারা চেক জালিয়াতি থেকে রক্ষা পায়, আর এ কাজের জন্য প্রতি বছর তিনি মিলিয়ন ডলার পান। তিনি এবেগ্নেল এন্ড এসোসিয়েট নামের সিকিউরিটি কনসালটেন্ট ফার্মের ও কর্ণধার।

তার সেমি বায়োগ্রাফি লেখা বই নিয়ে একটা মুভি বানানো হয় যার নাম Catch me if you can. পরিচালক স্টিফেন স্পিলবার্গ। এবেগ্নেল চরিত্র অভিনয় করেছেন লিওনার্দো ডিকিপ্রিও এবং টম হ্যাংকস এফবিআই এজেন্ট কার্ল হ্যানর্যাটি ভুমিকায় অভিনয় করেন। মুভিতে টম হ্যাংক ডিকিপ্রিওর একটা আনসার পাওয়ার জন্য অনেক চেস্টা করে, প্রশ্ন টা হলে কিভাবে এবেগ্নেল লুইজিয়ানা বার পরিক্ষায় পাশ করলো? এর আনসার পাওয়ার জন্য আপনাকে মুভিটা দেখতে হবে




মুভি:- Catch Me If You Can (2002)
imdb Ratings: 8.0/10 from 446,352 users


এবেগ্নেল এর ১৯৭৭ সালের একটা টিভি অনুষ্ঠানের ভিডিও দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।

এখানে

তথ্যসুত্রঃ উইকিপিডিয়া, Catch Me If You Can (2002)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৭

এস কাজী বলেছেন: খুব ভাল একটা পোস্ট। জেনে ভাল লাগল। একটু নলেজ বাড়ল।

ধন্যবাদ এই পোস্টের জন্য

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০

chetamal বলেছেন: থেংকস।
আমি এতো সময় নিয়ে আর কোন পোস্ট লিখি নাই।

২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

রিকি বলেছেন: সুন্দর অনবদ্য পোস্ট। সাথে প্রথম প্লাস :) :) ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান আমার অনেক প্রিয় একটা মুভি :)

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

chetamal বলেছেন: আমার ও

৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০

বাংলার জামিনদার বলেছেন: ভাল কুতুব কোনো সন্দেহ নাই।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

chetamal বলেছেন: হ, ভাই ভালো কুতুব।

৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৮

গোধুলী রঙ বলেছেন: আমাগো দেশে হইলে হ্যায় তো ধরাই পড়তো না, কোন ভাবে পড়লেও হয় ক্রস ফায়ারে দিয়া দিতো নয়তো ............... আরকি, আরো কতকিছু করতো, কিন্তু তার মেধাকে ব্যবহার করতো নাহ।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪২

chetamal বলেছেন: আমার ও ছোট বেলা ইচ্ছা ছিলো. মেধা ছিলো বাট কাজে লাগাতে পারি নাই আর কি।

৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:৩৩

প্রলয়শিখা বলেছেন: গত পরশু দেখেছি সিনেমাটি। এক কথায় অসাধারণ।

৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৭

আহসানের ব্লগ বলেছেন: প্রিয় মুভি ।

৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:১২

ভিটামিন সি বলেছেন: আংগো দেশে হে ধরা পড়তো না। হেয় হইতো দেশ প্রেমিক।

৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০৭

নাল বলেছেন: Shundor hoise.
N.B. This is my 1st comment in somewhereinnlog. :)

৯| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫৭

বিপরীত বাক বলেছেন: অনেক আগেই এই কাহিনী রহস্যপত্রিকায় ছেপেছিল।। এই সিনেমাও দেখেছি না হয় ১০ -১২ বছর আগে।।।

১০| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:১১

আল ইফরান বলেছেন: আমাদের দেশে ধরা খাইলে এই ব্যাটার লাইফ পুলিশ আর উকিল মিলে কয়লা করে ফেলতো নয়তো টাকা-পয়সা দিয়ে বের হয়ে আবার এই বাটপারি লাইনে নামতো।
আম্রিকান পিপল নো হোয়াট টূ ডু উইথ দৌস এভিল জিনিয়াস।
এবিগেইল হিসেবে ক্যাপ্রিওর অভিনয় ভালো হইছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.