![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লোকমুখে একটি বাক্য শোনা যায় – রাম রাজত্ব । রাম রাজত্ব – এই বাক্যের দুই রকম অর্থ করা যায় । যা খুশি স্বেচ্ছাচারিতা তাই করা – আর অন্যটি হল যা সুন্দর বা কল্যাণময় সেই কাজ করা, হিংসা না করা, কাউকে আঘাত বা কষ্ট না দেওয়া, মিথ্যার আশ্রয় না নেওয়া, সকলে মিলে মিশে জীবন যাপন ও সৎ চিন্তা ভাবনায় সকলকে উৎসাহ ও শিক্ষা দেওয়া । এই রাম রাজত্বর ধারণা ও জ্ঞান নিয়ে বাল্মীকি লোকশিক্ষার জন্য “রামায়ণ” লিখলেন – রাম নামে মানুষের চরিত্র নির্মাণ ছাড়াও অনেকগুলি নাম,চরিত্র, তাদের সবার নানা ভাল মন্দ ক্রিয়া কলাপ,জীবনের নানা সংকট,যুদ্ধ – এই সব নিয়ে সাত কাণ্ড রামায়ণ । এই রকম লোকশিক্ষার জন্য হল মহাভারত রচনা । জাতকের গল্প, হোমারের ইলিয়াড অডিসি, কোরানশরিফ রচনা, মক্কা ও হজের নানা শিক্ষণীয় কাহিনী উপদেশ, যিশু বাইবেল – রোম ভ্যাটিকান চার্চ বা গির্জা – এ সবের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে সচেতন করা, মানুষের কল্যাণ মানুষের উন্নতি। কত মহাপুরুষ কবি দার্শনিকরা কত শ্রম, নিষ্ঠা ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা ইতিহাস । কত অমূল্য গ্রন্থাদি আমাদের পঠন পাঠনের বিষয় – জ্ঞান আরোহণের ও চর্চার জন্য কত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। অনেক আরও দরকার । দেশে বিদেশে কত মানুষ নিরক্ষর !
হায় ! ইদানীং আমাদের দেশে বিশাল বিশাল মূর্তি নানা জায়গায় নির্মাণ শুরু হয়েছে – কিসের প্রয়োজনে ? ব্যবসার প্রয়োজনে না অন্য কিছুর জন্য ? এই অর্থ ব্যয় যদি পঠন পাঠন জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার কাজে – মানুষে বুদ্ধি ও মননশীলতার বিকাশে, গ্রন্থ রচনা,গবেষণা, গবেষণাগারে ব্যবহারের জন্য আধুনিক উন্নত যন্ত্রাদি ক্রয়, পুস্তকাদি ক্রয়, স্কুল কলেজ নির্মাণ ইত্যাদিতে হতো তাহলে কিছু বলার বা লেখার ছিল না । প্রশ্ন এখানেই – এই মূর্তি নির্মাণ কি কারণে – এ কাজ কি জ্ঞান বিজ্ঞানকে এগিয়ে দিচ্ছে বা দেবে, না অজ্ঞান অন্ধকারের পথে মানুষকে নিয়ে যাচ্ছে বা যাবে ? আল্লা,রাম,বুদ্ধ,যিশু, কত সূফী সাধক, কত মহাকাব্য, মহান গ্রন্থ, পুণ্য তীর্থস্থান-সম বিদ্যালয় ও গ্রন্থাগার – সব একাকার হয়ে -- তাঁরা সবাই যত মত তত পথ ঘুরে সেই এক এবং অদ্বিতীয় “জ্ঞান” স্বরূপ হয়েছেন – এই বিশ্বমন্ডলে জ্ঞানালোক-বর্তিকা হয়ে অমূর্ত রূপে কৌতূহলী জ্ঞান-অন্বেষী সকল মানুষের মধ্যে বুদ্ধিতে মননে ও নিরন্তর চর্চায় অমর ও শ্রদ্ধেয় আছেন । রক্ষা করছেন সন্ধানী বিদোৎসাহী মানুষকে কারণ “জ্ঞান” তিনি জানেন মানুষ আসবে যাবে জন্মাবে মরবে, মন্দ খারাপ কাজ ভ্রষ্টাচার,শাসন শোষণ, শাসক ও দল,তাঁদের মন মত বিচার আইন ব্যভিচার অত্যাচার বহু বার বহু বার সমাজ সহ্য করেছে আবার নতুন শক্তি “জ্ঞান” বুদ্ধিতে ধারণ করেছে – পরিবর্তন ও নতুন ভাবে মানুষ ও সমাজ বার বার তৈরি হয়েছে । প্রতিবারই মন্দ খারাপ কাজ ভ্রষ্টাচার,শাসন শোষণ, শাসক ও দল,তাঁদের মন মত বিচার আইন ব্যভিচার অত্যাচার হয়েছে – মানুষ মানেনি -- আবারও মানুষ তা পালটে দিয়েছে । এই বার বার পালটানো – প্রতিবারই কে করছে ? করছে মানুষ সেই মহান “জ্ঞান” থেকে – আমরা সেই জ্ঞানকেই কেউ আল্লা বলি – কেউ রাম – বুদ্ধ, যিশু বা সেই “জ্ঞান”-কে কেউ বলি নিরাকার, কেউ তাঁকে মানি জ্ঞানের আকর মহৎ-গ্রন্থ রূপে যা দৈর্ঘ্য প্রস্থে মূর্তিতে আবদ্ধ নয় । তাহলে এই মূর্তি তৈরির আতিশয্য এটা কি ? এটা উন্মান্দ অশিক্ষিতদের কুকাজ – ভয়ের কিছু নেই তবে কষ্ট আছে – ঐ তিনি “জ্ঞান” -- স্বরূপত তিনিই আমাদের সকল কষ্ট মন্দ থেকে উত্তরণে বিদ্যা, বুদ্ধি ও শক্তির উৎস – সৎ চিত্ আনন্দ । কাজের নামে যা খুশী তা করা – বেশী দিন কোথাও চলেনি – মিথ্যা আস্ফালন, ধ্বংস অনিবার্য । “জ্ঞান” মহাজগতময় অসীম অনন্ত ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভালো লিখেছেন। সহমত আপনার সঙ্গে যে ' জ্ঞান মহাজগৎময় অসীম অনন্ত '
শুভকামনা ও ভালোবাসা জানবেন।