![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
....২৭শে জানুয়ারী সেই মহাপন্ডিত মানুষটির জন্মদিন !Great Radhabinod Pal -- আমাদের দেশে ইনাকে যথাসম্ভব আড়ালে রাখা হয়েছে । এদেশে সেই সময় অন্য দলগুলি ও কমুউনিষ্টরাও মিত্র শক্তির পক্ষে কথা বলে মানুষকে প্রতারনা করেছে ।
যাদের আমরা মনে রাখিনি বা কারও মনে যাতে না থাকে তাই করা হয়েছে আড়ালে রাখা হয়েছে.... ......⚘⚘
টোকিওর রাজপথে চলতে চলতে হঠাত যদি এই মূর্তির নীচে চোখ পড়ে, চমকাবেন না যেন, গাউন পরা বিচারকের মূর্তির নীচে লেখা এক বঙ্গসন্তানের নাম !
অথচ ভারত তো দূর, গোটা পশ্চিমবঙ্গে তাঁর নামাঙ্কিত কিছু নেই । জাপানীরা কিন্ত পঞ্চাশ বছর পরেও ভোলেনি তাঁর অবদান ।
দিনটা ছিল নভেম্বরের ১২ তারিখ, সাল ১৯৪৮ । টোকিওর উপকন্ঠে এক বিশাল বাগান বাড়িতে চলছে বিশ্বযুদ্ধে হেরে যাওয়া জাপানের প্রধানমন্ত্রী তোজো সহ মোট পঞ্চান্ন জন অপরাধীর বিচার । এদের মধ্যে আঠাশ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে Class-A (crimes against peace) যুদ্ধাপরাধী , প্রমাণিত হলে যার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ।
সারা বিশ্ব থেকে আগত এগারোজন বাঘা বাঘা জুরী অপরাধীদের দেখে একে একে ঘোষণা করছেন ......
"Guilty"....".Guilty"......"Guilty"......... হঠাৎই বজ্র নির্ঘোষে একজন বলে উঠলেন “Not Guilty!”!
হলঘরে নেমে এলো ভয়ংকর এক নিস্তব্ধতা ।
কে এই জুরী মহোদয় ?
পুরো নাম ডক্টর রাধাবিনোদ পাল । টোকিও যাবার আগে ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের অন্যতম বিচারপতি, দুবছর উপাচার্য ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ।
১৮৮৬ সালে পূর্ববঙ্গের কুষ্ঠিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের এই বঙ্গসন্তান । ছোটবেলাতেই পিতৃহীন হবার পর মা ছেলেকে নিয়ে আশ্রয় নেয় পাশের চুয়াডাঙ্গা নামে এক বর্ধিষ্ণু গ্রামে । খাওয়া থাকার বিনিময়ে মা করতো গেরস্ত বাড়ির কাজ আর ছেলে গরু নিয়ে মাঠে চরাতে যেতো ।
গরু চরানোর সময় সেই ছেলে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে ঘোরাফেরা করতো আর রোজই শিক্ষক ক্লাসে গেলে স্কুল ঘরের জানালায় দাঁড়িয়ে দেখতো । এক দিন শহর থেকে ইনস্পেক্টর বিদ্যালয় পরিদর্শনে এলেন। তিনি ক্লাসে ঢুকে ছাত্রদের কটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন। সকলেই চুপ,এরই মাঝে ক্লাসের বাইরে জানালা দিয়ে শোনা গেল সেই রাখালের কন্ঠস্বর ....“ আমি আপনার সব প্রশ্নের উত্তর জানি।” ডেকে ভেতরে নিতে একে একে সকল প্রশ্নের জবাব দিলো সে । ইন্সপেক্টর জিজ্ঞেস করলেন – “তুমি কোন ক্লাসে পড়?” “ আমি তো পড়ি নে, গরু চরাই।“ – এমন কথা শুনে তিনি তো হতবাক। প্রধান শিক্ষককে ডেকে তাকে স্কুলে ভর্তি করে নেওয়ার নির্দেশ দেবার পাশাপাশি জলপাণিরও ব্যাবস্থা করে গিয়েছিলেন ।
সেই শুরু.....রাধাবিনোদ এরপর জেলায় সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে স্কুল ফাইনাল পাশ করে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সী কলেজে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্ক নিয়ে M.Sc করার পর ফের আইন নিয়ে পড়াশুনা করেন ও ডক্টরেট উপাধি পান । সম্পূর্ণ বিপরীত দুই বিষয় বেছে নেওয়ার প্রসঙ্গে বলতেন, "law and mathematics are not so different after all”.
ফিরে আসি আবার টোকিওর আন্তর্জাতিক আদালতে । ডক্টর পাল তার অকাট্য যুক্তি দিয়ে বাকি জুরীদের বোঝান যে মিত্রশক্তিও
আন্তর্জাতিক আইনের সংযম ও নিরপেক্ষতার নীতিমালা লংঘন করেছে । তাছাড়া জাপানের আত্মসমর্পনের ইঙ্গিত উপেক্ষা করে তারা মারাত্মক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টিকারী দু দুটো আনবিক বোমা ব্যবহার করে হত্যা করেছে কয়েক সহস্র নিরপরাধ মানুষ । বারোশ বত্রিশ পাতা জুড়ে লেখা সেই রায় দেখে অধিকাংশ জুরী অভিযুক্তদের Class-A থেকে B তে নামিয়ে আনেন , রেহাই পান তারা মৃত্যুদন্ডের হাত থেকে ।
আন্তর্জাতিক আদালতে তাঁর এই রায় তাকে এবং ভারতকে বিশ্বজোড়া সুখ্যাতি এনে দেয়।
জাপান কিন্ত ভোলেনি এই মহান মানুষটির অবদান । ১৯৬৬ সম্রাট হিরোহিতো তাঁকে সেদেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ' কোক্কো কুনশাও' সম্মানে ভূষিত করেন ।
টোকিও এবং কিয়াটোতে দুটি ব্যস্ত রাস্তা তাঁর নামে রাখা হয়েছে । আইন পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তার লেখা রায় । টোকিওর সুপ্রীম কোর্টের সামনে বসানো আছে তার গাউন পরা মূর্তি ।
২০০৭ সালে ওদেশের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দিল্লীতে এসে ডক্টর পালের পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন । ..........আজ (২৭শে জানুয়ারী) যে সেই মহাপন্ডিত মানুষটির জন্মদিন !
সূত্র উইকিপিডিয়া ও বন্ধু স্বপনকে কৃতজ্ঞতা জানাই ।
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: শ্রী রাধা বিনোদ পালের ছবি দিয়ে ভালো করেছেন- চিত্রাভ। অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৬
চিত্রাভ বলেছেন:
শ্রী রাধা বিনোদ পাল ।