এবারের বিশ্বকাপে খেলবে ম্যারাডোনার ছেলে

১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৫৭

খুব বেশি দিন আগের কথা না...এই তো গতবার ফুলটবল বিশ্বকাপ চলাকালনি সময়ের কথা...গাজীপুরের এক ইটভাটার পাশের টং দোকানে বসে চা খাচ্ছি...আমার সঙ্গে ওই ইটভাটার আরো আট দশজন শ্রমিকও চা খাচ্ছেন...যথারীতি বিশ্বকাপের হাওয়া তাদের গায়েও লেগেছে....তারাও ফুটবল নিয়েই গপ্পো করছেন...এরই মধ্যে এক বয়স্ক শ্রমিক জিজ্ঞেস করলেন,

‘হেই এবার ম্যারাডোনা খেলবে না....বিজ্ঞের মতো আরেক চ্যাংড়া টাইপ শ্রমিক মাথা নেড়ে উত্তর দিলেন...না, সে এবার খেলবে না...তবে তার ছেলে এবার খেলবে...এবারে আরেক শ্রমিক বেশ সন্দেহের সুরে জিজ্ঞেস করলেন, আসলেই?..এবার চ্যাংড়‍া শ্রমকি মাথা নেড়ে জোর দিয়‍া বললো, হ সত্যিই...পেপারে লেখছে ঘটনাটা...তারে আগামীকালের খেলাতেই নামানো হবে’

এরপর সেই আড্ডায় ম্যারাডোনার ছেলে দেখতে কেমন, কি ধরনের খেলা খেলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলতে লাগলো...বলা বাহুল্য শ্রমকিদের বেশ কয়েকজন দাবি করলেন তারা ম্যারাডোনার ছেলের ছবি পেপারে দেখছেন...আমি চা খেতে খেতে পুরো আলাপচারিতাই উপভোগ করলাম...কিন্তু কারোরই ভুল ধরিয়ে দিলাম না...ভুল ধরিয়ে দিলেই এরা সবাই ভয়ানক লজ্জা পেতো...এই খেটেখাওয়া সহজসরল মানুষগুলোকে লজ্জা দেয়ার অধিকার আমাকে কেউ দেয় নাই...

কারন এর চেয়ে ঢের বেশি লজ্জাকর কাজ বিশ্বকাপ এলেই আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে দেখা যায়...আমাদের প্রায় প্রতিটি টিভি চ্যানেলই বাংলাদেশের কিছু সাবেক ফুটবলারকে ধরে আনে ফুটবল বোদ্ধা বা বিশ্লেষক হিসেবে...এরপর তারা নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া বিভিন্ন দল ও খেলোয়াড়ের সমালোচনা করতে থাকেন...দলগুলো কী কী ধরণের ভুল করেছে সেই সবিষয়ে সবিস্তারে নাতিদীর্ঘ বক্তব্য দেন...এবং কিভাবে খেললে ম্যাচটা জিততে পারতো সে বিষয়ে সম্যক জ্ঞান দেন...অথচ এই মানুষটি বা এরা যখন আমাদের জাতীয় দলে খেলেছেন তখন তাদের পারফরম্যান্সের যে কী হাল ছিলো তা বললে সদ্যভূমিষ্ট শিশুও লজ্জায় মাথা নোয়োবে...

এতো বুড়ো বুড়ো নামীদামী মানুষগুলোর যদি লাখো মানুষের সামনে চাপাবাজি করতে লজ্জা না লাগে তাহলে ওই শ্রমিকদের লজ্জা দেয়ার আমি কোন ছার....



বি:দ্র:- এ্যাতো বিশাল বিশাল ফুটবল বোদ্ধারা থাকতে আমাদের ফুটবলের যে কেনো এই হাল তা জানতে চায় এই পাগল মন।

০ টি +০/-০