এবারে শুধু মধ্যবিত্ত...

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৪

এটা একান্তই আমার নিজস্ব ধারণা...ভুল কি সঠিক তা জানি না...তবে আমি বিশ্বাস করি...বিষয়টা আপনাদের একটু বলা যাক...সামাজিক সৌজন্যতাবোধ সংক্রান্ত বিষয়ে মধ্যবিত্তরা ভীষন স্পর্শকাতর...
ধরেন মধ্যবিত্ত শ্রেনীভুক্ত কোন মানুষকে আপনি হাতি দিয়ে টেনেও খালিহাতে তার কোন আত্মীয়র বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন না...দু’ কেজি মিষ্টি নাহোক অন্তত কেজিখানেক মৌসুমি ফল হলেও তিনি নিয়ে যাবেন কাগজের ঠোঙায় নেট ব্যাগে ঝুলিয়ে...
’আগামীকাল দুপুরে গরীবের বাড়িতে চারটা ডালভাত খাবেন’- এটা হচ্ছে মধ্যবিত্তের দাওয়াতের মূলমন্ত্র...অথবা বাসায় কাউকে দাওয়াত খাইয়ে বিদায় বেলার বেদবাক্য হচ্ছে, ‘অনেক কষ্ট করলেন। কোন সমাদরই করতে পারলাম না। তবে থেকে গেলে খুশি হতাম’...
যে কোন অনুষ্ঠানে নিজের অনেক কষ্টে জমানো টাকা থেকে সবচে ভালো উপহারটা মধ্যবিত্তরাই কেনেন... আর কষ্টের টাকায় কেনা সেই উপহার নিয়ে কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে পরিবার পরিজন নিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে ঢোকার সময় ভাবেন, ‘ইশ্ হাতে টাকা থাকলে আর একটু ভালো কিছু কেনা যেতো। উপহার খোলার পর না জানি কী ভাববে ওরা?’
হুট করে কোন বড়লোক বন্ধু বা আত্মীয় টাকা ধার চাইলে বেশ লজ্জিত মুখে মধ্যবিত্তরাই বলেন, ‘পুরোটা নেই তবে একটু সময় পেলে ম্যানেজ করতে পারবাে।’ মধ্যবিত্তরা এমনই গাড়ল, এরা উচ্চবিত্তদের টাকা ধার দিয়ে লজ্জায় ফেরত চাইতে পারে না...আর উঁচুতলা বাবুরাও এই সুযোগে...:-)
মধ্যবিত্ত বাঁচে এরকম হাজারো সৌজন্যতার ফালতু সংস্কার নিয়ে...
তবে উচ্চবিত্তদের অনেক সুবিধা...তারা র্নিদ্বিধায় খালি হাতেই মাধ্যবিত্ত আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াত খেতে যান আর বিদায় বেলায় বেশ সূঁচালো মুখ করে বলেন, ‘তোমরা তো বাসায় যাওই না। সময় করে পারলে একবার এসো’। অথবা যে কোন অনুষ্ঠানে কোন উপহার ছাড়া হাজির হয়ে বেশ সগৌরবে ঘোষনা দেন, ‘শোন তোমার উপহারটা পাওনা রইলো কিন্তু।’ আর যে কেউ টাকা ধার চাইলে বেশ চিন্তিতমুখে বলেন, ‘আর বলো না, গতমাসে লণ্ডন থেকে ঘুরে আসবার পর থেকে খুবই টানাটানির মধ্যে আছি।’

বি:দ্র: খুব সমস্যার মধ্যে থাকা মধ্যবিত্ত এক বন্ধুর কাণ্ডকারখানায় উজ্জীবিত হয়েই এই স্ট্যাটাস। ওর নামটা ‍আর লিখলাম না। কারন আমাদের মানে মধ্যবিত্তদের লজ্জার মাত্রাটা বাড়াবাড়ি রকমের কিনা। তার ওপর কেউ ধন্যবাদ দিলে আমাদের আবার অকারণেই চোখে জল চলে আসে। তাই...

৩ টি +০/-০