হ্যাপী-রুবেলের ন্যায়বিচার

২০ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:২৫

ধর্ষণ মামলায় চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপীর নারাজি আবেদন খারিজ করে জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত...
এখন নিশ্চয়ই ফেবু থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লা-মিডিয়া সবখানে হ্যাপিকে নিয়ে টসটসে রসালো মন্তব্যের ঝড় বইবে...আর আদি রসাত্মক ফটো কমেন্টগুলোর কথা না হয় নাই বা বললাম...আদালত এটা সুবিচার করছে না কুবিচার করছে সেই আইনী তর্কে যাচ্ছি না...

তবে আমার নিজের একান্ত ধারণা এই দেশে শুধু বড় বা খ্যাতিমান নামীদামী মানুষদেরই সুবিচার মেলে...তাদেরই বরাবর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়...যাবতীয় 'সু' তাদের জন্যই তুলে রাখা হয়...
বোধকরি রুবেল সাহেব যদি বাংলা কাঁপনো ক্রিকেটার না হয়ে পাড়া-মহল্লার কাউলা রুবেইল্যা হতেন তাহলে হয়তো রায় অন্যরকমও হতে পারতো...

আবার একইভাবে 'হ্যাপি'-র নামের আগে 'চিত্রনায়িকা' তকমাটা যদি না থাকতো তাহলে হয়তো তিনি সুবিচার পাওয়ার জন্য অনেক বেশি উপযোগী হতেন...তার পাশে মানুষের সহমর্মিতা, নারীবাদী সংগঠনের প্রতিবাদী হাতটাও উপস্থিত থাকতো...কিন্তু তিনি যেহেতু চিত্রনায়িকা আর চিত্রনায়িকা মানেই খারাপ মেয়ে তাই তাদের ন্যায়বিচার চাইবার বা পাইবার অধিকার নেই...এক্ষেত্রে অধিকাংশ নারীই স্পিকটি নট..

একই বিষয় দেখেছি প্রভা-রাজীবের ভিডিও ফাঁসের সময়...কোন মেয়েকেই দেখিনি প্রভার পক্ষ নিয়ে একটি কথা বলতে অথবা লিখতে...কেউ বললো না, দোষ তো মেয়েটি করেনি, করেছে ছেলেটা...ব্যক্তিগত ভিডিও ফাঁস করে দিয়ে মেয়েটির সামাজিক ও মানসিক যে অপূরণীয় ক্ষতি করেছে তার জন্য ছেলেটির উপযুক্ত বিচার হওয়া উচতি...
এসব না বলে অধিকাংশই ব্যস্ত ছিলেন ভিডিওখানা দেখার পর পুরুষ সঙ্গীকে নাক কুঁচকে বলতে, ইস্ এতাে বেহায়া হয় কেমনে মানুষ...এই চলো না একদিন আমরাও...

আমাদের সমাজে কোন যৌনকর্মী যদি ধর্ষনের বিচার চাইতে যায় তাহলে এখনও নাকের ডগায় চশমা এনে মহামান্যরা তাকে বুঝিয়ে দেন, মেয়ে তুমি তো প্রতিদিন পয়সার বিনিময়ে এমনিতেই শোও...আজ না হয় বিনে পয়সাতেই...থাক তোমায় আমি ঠকাবো না...ওসব বিচার-ফিচার বাদ দাও...আমি ক্ষতিপূরণ নিয়ে দিচ্ছি...এক্ষেত্রে চিত্রনায়িকা, গায়িকা, মডেলদের অবস্থাও তথৈবচ...

৩ টি +১/-০