নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিপন ইমরান

রিপন ইমরান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইফতারে পাহাড়ি বরফ :-)

২২ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৫৮

গত বছর লিখেছিলাম লেখাটা...এ বছরও দেখলাম বিক্রি হচ্ছে 'পাহাড়ী বরফ'...তাই আবারো ফ্ল্যাশব্যাক...

সে অনেককাল আগের কথা...তখনো বাংলার ঘরে ঘরে ফ্রিজ তথা রেফ্রিজারেটরের আগমন ঘটেনি...পুরান ঢাকার শাহী ল্যাম্ব রোস্ট বা সুতি কাবাব তখনো মধ্যবিত্তের ইফতার টেবিলের অলঙ্কার হয়ে ওঠেনি...সিদ্দীকা কবীর আপা তখন একমাত্র চ্যানেল বিটিভির ঘোলা পর্দায় সন্ধ্যাবেলায় রান্নার অনুষ্ঠান করেন, মাখন রঙা শারমীন লাকীদের সেকালে আগমন ঘটেনি ( অবশ্য বিটিভির সেই ঘোলা পর্দায় কে যে মাখন রঙা আর কার রঙ যে ছাই তা বোঝা দুস্কর ছিলো)...

আমি সেই সময়ের কথা বলছি...ছোট্ট আমি সেই সময়ের এক রমজান মাসে বিকেলবেলায় বাবার হাত ধরে গিয়েছি শুক্রাবাদ বাজারে...বাজারে ঢু‍ুকে তো আমার চোখ ছানাবড়া...বাজারের এককোনে জটলা পাকিয়ে সবাই কি যেনো কিনছে...জটলার দিকে বাবাকে অ‍ামিই টেনে নিয়ে গেলাম...আরিব্বাস ধুন্ধুমার কাণ্ড...জটলার মাঝথানে বিশাল এক বরফের চাঙড় রাখা...দুজন মানুষ শাবল দিয়ে সেই চাঙড় ভাঙছে আর চেঁচাচ্ছে, ‘ অ্যাই বরফ...পাহাড়ি বরফ’...পাহাড়ি বরফ শব্দটা শুনেই আমার মনে হলো এ নির্ঘ্য‍াত হিমালয় থেকে অ‍ানা বরফ...‍

ওই দুজন মানুষ সেই পাহাড়ি বরফ কাটার ফাঁকে ফাঁকে বরফের গায়ে কাঠের গুঁড়ো ছিটিয়ে দিচ্ছেন (তখন না বুঝলেও এখন বুঝি এটা বরফের যাতে না গলে সেই কৌশল)...অামি আর অপেক্ষা করতে পারলাম না...বাবার কাছে বায়না ধরলাম আমিও একটুকরো পাহাড়ি বরফ কিনবো...তখনকার বাবারা এখানকার মতো সুইট কর্পোরেট বাবা ছিলন না...বিরাট এক ধমক দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন এগুলো নোংরা জলের বরফ, কেনা যাবে না...আমার ছোট্ট অবুঝ মন তার এই কথা মোটেও বিশ্বাস করেনি সেদিন...কী সুন্দর আমার সামনে দিয়েই আমারই বয়েসী একটা ছেলে পাঁচ টাকার বরফ কিনে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝোলাতে ঝোলাতে নিয়ে গেলো, আর আমার বাবা বলে কী না...ধূর...

আমার পাহাড়ী বরফের গল্প এই পর্যন্তই...আমরা কিছুটা বড়ো হতে না হতেই পাহাড়ী বরফের বেচা বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, কারন ততোদিনে ফ্রিজ ঢ‍ুকতে শুরু করেছে মধ্যবিত্তের ঘরবাড়িতে...ভুলেই গিয়েছিলাম পাহাড়ি বরফের কথা...

কিন্তু হঠাৎ গতকাল ইফতারের কিছু আগে দেখলাম মৌচাক মার্কেটের পেছনে একটা ভ্যানে করে বরফ বিক্রি হচ্ছে...ওতো হাকডাক নেই...বেশ নীরবে-নিভৃতেই চলছে বরফ বাণিজ্য...আশপাশের দোকানদাররাই বোধহয় এর ক্রেতা...তবুও বরফ যে এখনো ইফতারের আইটেম হিসেবে বিক্রি হয় এটা দেখেই ভালো লাগলো...আসলে কিছু কিছু জিনিস একেবারে হারিয়ে না যাওয়াই ভালো...:-(

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৪২

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: কিছু কিছু জিনিস একেবারে হারিয়ে না যাওয়াই ভালো[/sb..সহমত!

২| ২২ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার পাহাড়ি বরফের গল্প। হ্যাঁ, মাঝখানে ঝিমিয়ে গেলেও ইদানীং আবার পথের ধারে বরফ বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে।

৩| ২২ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩

সুমন কর বলেছেন: পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবো............

৪| ২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৮:৩৮

শারলিন বলেছেন: অনেক দিন আগের কথা মনে পড়ে গেল। আমাদের বাসার পাশে একটা বরফ মিল ছিল। সেই মিল থেকে রোযার সময় ইফতারের আগেয়াম্রা বরফ নিয়ে আসতাম।

৫| ২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১১:০৭

হাসান রাজু বলেছেন: মনে পড়ছে ।

৬| ২৩ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:২০

জনাব মাহাবুব বলেছেন: ছোটবেলার এই পাহাড়ী বরফের কথা আমিও ভুলতে পারি না। প্রতিদিন ইফতারের আগে ১ টাকা দিয়ে কাঠের ভূষিমাখা বরফ নিয়ে বাসায় ফিরতাম। প্রথমে বরফটাকে ধুয়ে ভূষিগুলি পরিস্কার করে তারপর জগের পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হতো। ইফতারের সময় এক গ্লাস ঠান্ডা পানিতে বুকটা জুড়িয়ে যেত।

আস্তে আস্তে গরমের তীব্রতা কমে শীতের আগমনের কারনে বরফের চাহিদা তলানিতে এসে ঠেকে। দীর্ঘ অনেক বছর শীতকালে রমজান অতিবাহিত হওয়ার পর আবার সেই তীব্র গরমে পাহাড়ি বরফের ব্যবসা জমে উঠেছে। আমি পুরান ঢাকার মানুষ এখনও আমাদের এলাকায় পাহাড়ি বরফ বলে চিৎকার করে বরফ বিক্রি হচ্ছে। "পাহাড়ি বরফ, পাহাড়ি বরফ" চিৎকার এখনও কানের মাঝে বেজে উঠে এবং সেই সাথে মনটাও আনন্দে দোলে উঠে।

৭| ২৩ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:২১

টয়ম্যান বলেছেন: গরমে বরফ আহ কি মজা খাইতে :)

৮| ২৩ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:১৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনার লেখার বিষয়টা চমৎকার। বেদনাদায়ক হলেও পুরোনো সব কিছুই হারাচ্ছে বটে!

৯| ২৩ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যার ফ্রিজ নাই.. অথচ কাঠফাটা তেষ্টার রোজার শেষে ইফতারিতে বসবে.. তার কাছে এই বরফ যে কত কাঙ্খিত ভাষায় তা প্রকাশ করা যাবে না!

আমি ফিল করেছি- যখন ফ্রিজ কিনতে পারিনি! রোজার ইফতার আইটেমে এটা কত তৃপ্তির আর আরামের ছিল!!!!

১০| ২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:০৪

বাবুই পািখ বলেছেন: মনে পড়ে গেল পুরোনো পুরানো সেই দিনের কথা।

১১| ২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:০৭

মুহাম্মদ তৌহিদ বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যার ফ্রিজ নাই.. অথচ কাঠফাটা তেষ্টার রোজার শেষে ইফতারিতে বসবে.. তার কাছে এই বরফ যে কত কাঙ্খিত ভাষায় তা প্রকাশ করা যাবে না!

১২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ২:০৬

খান সাইদুর রহমান বলেছেন: পুরানো সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল। আহা!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.