একটু ঠাকুর দেখে আসা যাক

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৫

পূজোর ঢাকে বাড়ি পড়লো বোধহয়...ঢােলগুলো নিশ্চয়ই এখন অবিরত বলতে থাকবে 'ঠাকুর থাকবে কতোক্ষন, ঠাকুর যাবে বিসর্জন'...সন্ধ্যায় ধূপধুনো দিয়ে আরতি আর ঢাকের শব্দে এক ধরণের নেশা লাগানো ঘোর আছে...

প্রথম একা বাড়ির সবাইকে ছেড়ে ঢাকার বাইরে গিয়েছিলাম দূর্গা পূজা দেখতে...তখন আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি...আমার সেরা বন্ধু Antu Saha...একই বাড়ির উপর নীচে থাকি আমরা...ও হিন্দু আমি মুসুলমান...শুধু ধর্মের ভিন্নতা ছাড়া দুই পরিবারের মাঝে আর কোন দূরত্ব নেই...

অন্তুর মুখে দূর্গা পূজার গল্প শুনে সেবার খুব লোভ হলো...ইস যদি আমিও যেতে পারতাম...অন্তুকে বলেছিলাম কথাটা...ও বললো আন্টিকে...আন্টি আমার মাকে...ব্যস কত্তাে সহজেই মিলে গেলো যাবার অনুমতি...

অন্তু দুর্গা পূজার এক সপ্তাহ আগেই ঢাকা ছেড়ে নওগাঁ চলে গেলো...আমি গেলাম পূজোর দুদিন আগে...ছিলাম পুরো এক সপ্তাহ...চোখ বুজে বলতে পারি আমার জীবনের সেরা সাতটি দিন কাটিয়েছি...

সারাটা দিন সাইকেল নিয়ে পুরো নওগাঁ শহর চষে বেড়ানো...সন্ধ্যায় সবাই মিলে মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর দেখতে যাওয়া...বিসর্জনের দিন কপালে সিঁদুর মেখে দলেবেঁধে ঠাকুর নিয়ে নৌকা নিয়ে ছোট যমুনায় চক্কর দেয়া... রাঙা কাকু, সোনা কাকু, শম্পা দি, মল্লিকা দি, তনু, টুম্পা, অপু, তপন দা, পিসী, মেসো মশাই, বড় মামা, ছােট মামা এরা সবাই আমার আপন মানুষ...ছিলো আছে থাকবে...

অনেকদিন দেখা নেই এদের সঙ্গে...এটুকুই দূরত্ব কিন্তু কাছটুকু মনের ভেতর...এরপর বেশ কয়েকবার গেছি নওগাঁয়...নিজ হাতে ঠাকুর বিসর্জনও দিয়েছি...একবারতো এক হিন্দু তরুণীর প্রেমে পড়ে উখাল পাথাল অবস্থা...সে গল্প আরেকদিন...

আমারতো মনে হয় দুর্গাপূজার এই কটাদিন নওগাঁ বাংলাদেশের সবচেয়ে রঙিন শহর...কতোদিন যাই না...তবে আমি যাবো...আজ না হয় কাল ঠিক একিদন...সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা...

বি:দ্র: এখনও অন্তুর সঙ্গে আমার উপর নীচের একটা সর্ম্পক রয়েছে...আমার বনানী অফিসের নীচতলার অফিসে অন্তুর বাবা বসেন...

১ টি +২/-০