নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাউন্টার হেজিমনি

সহজ সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। চিন্তার ক্ষেত্রে যুক্তিবোধ এবং প্রমাণ-দলিলকে গুরুত্ব দেই।

কাউন্টার হেজিমনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাপলা অভিযান: নিহত ৬১ জনের নাম সংগ্রহ করেছে অধিকার

১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:০০

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে সরকারি বাহিনীর হামলায় নিহত ৬১ জনের নাম জানতে পেরেছে দেশের বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন-'অধিকার'।



শাপলা চত্বরে গণহত্যা নিয়ে আজ (সোমবার) ‘অধিকার’-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সমাবেশ ও মানবাধিকার লংঘন’ শীর্ষক ২৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে যৌথ বাহিনীর রায়ট কার, নিহতদের লাশের ছবি, লাশ নিয়ে গাড়িতে তোলার দৃশ্য, অভিযানের পর সিটি করপোরেশনের পানিবাহী গাড়ি দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার দৃশ্যসহ বেশকিছু আলোকচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:



প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সরকার প্রথমে কেউই হতাহত হয়নি বলে দাবি করেছিল। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় সেদিন রাতের অভিযানের ছবি ও নির্বিচারে মানুষ হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় সরকার সেই দাবি থেকে সরে আসে এবং সারাদিন বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্ঘাতে তিনজন পথচারী, একজন পুলিশ সদস্যসহ মোট ১১ জন নিহত হওয়ার কথা জানায়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা অধিকারকে জানান, এ পর্যন্ত ২০২ জনের মৃত্যুর খবর তারা পেয়েছেন এবং প্রায় ২৫০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে চলমান অনুসন্ধানের একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে অধিকার নিহত ৬১ জনের নাম সংগ্রহ করেছে। আল-জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেল ৫০ জন নিহত হবার কথা জানিয়েছে।’



অধিকারের প্রতিবেদনে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম এর এই সমাবেশে যোগ দিয়েছিল অনেক শিশু-কিশোর। প্রায় প্রত্যেক শিশুই ছিল কওমি মাদরাসার ছাত্র। এই কওমি মাদরাসার শিশুরা সাধারণত খেটে খাওয়া গ্রাম-বাংলার অসহায় দরিদ্র মানুষের সন্তান। এই শিশুদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে এতিম। যারা রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। ৬ মে ২০১৩ রাতের অন্ধকারে যৌথবাহিনীর হামলা থেকে বাদ পড়েনি সেসব শিশুও। বিশেষ করে এতিম শিশুদের মধ্যে থেকে যারা নিখোঁজ রয়েছে, কেউ তাদের সন্ধান না করায় এতিম শিশুদের নিখোঁজ কিংবা হতাহতের সংখ্যা অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে।



অধিকার বলছে, সেদিনের রাতের পরিস্থিতিতে সেই রাতে কত লাশ কীভাবে কোথায় সরানো হয়েছে এবং নিহতদের সঠিক সংখ্যা কত তা এই মুহূর্তে যাচাই করা কঠিন হলেও মানবাধিকারের দিক থেকে এই কাজটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।



নিহতের আত্মীয়-স্বজনদের বর্ণনায় নিরাপত্তা বাহিনীর বর্বরতার চিত্র : নিহত মো. সাইদুল বারীর খালাতো বোন অনন্যা সুলতানা অধিকারকে জানান, মো. সাইদুল বারী (১৭) মোহাম্মদপুরের বাইতুল ফজল ইসলামীয়া মাদরাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। ৫ মে সাইদুল বারী হেফাজতের সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য মতিঝিল যায়। তখন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা সাইদুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু মোবাইল বন্ধ থাকার কারণে যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি রাতেও সাইদুল মাদরাসায় ফেরেনি। ৬ মে বিভিন্ন পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে জানতে পারেন, মতিঝিলের শাপলা চত্বরে পুলিশের হামলায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তখন তিনি ও তার বড় বোন সাবিহা সুলতানা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। ৭ মে বিকালে মতিঝিল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে গিয়ে তার খালাত ভাইয়ের লাশ খুঁজে পান। তিনি দেখেন লাশের মাথার পেছনের অংশ শক্ত ও ভারী অস্ত্রের আঘাতেথেঁতলে গেছে। মাথার সামনের অংশে চাইনিজ কুড়ালের ২ ইঞ্চি লম্বা কোপের দাগ ছিল এবং থুতনির নিচে আরেকটি কোপের দাগ ছিল, যাতে চিবুকসহ নিচের ঠোঁটের সামান্য অংশ কেটে যায়। ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, ৫ মে সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টায় কয়েকজন হেফাজতকর্মী মৃত অবস্থায় সাইদুলের লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

পরে সেখান থেকে লাশ সাইদুলের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার গালতা থানার ইউসুফদিয়া গ্রামে নিয়ে সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।



নিহত মো. ইউনুসের বড় ভাই ওমর ফারুক অধিকারকে জানান, তার ছোট ভাই মাওলানা মুফতি মো. ইউনুস (৩২) কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ফোরখলা হাফেজিয়া মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। ৫ মে বিকালে তার ভাই মাওলানা ইউনুস তাকে মোবাইলে ফোন করে ঢাকার মতিঝিলে হেফাজতের সমাবেশে যোগ দেয়ার কথা জানান। তিনি তখন ইউনুসকে শাপলা চত্বর থেকে চলে আসার জন্য বলেন। কিন্তু ইউনুস তাকে বলেন, শাপলা চত্বরে কোনো গণ্ডগোল হচ্ছে না, সমাবেশ শেষে তিনি চলে আসবেন। এরপর রাত আনুমানিক ১০টায় তিনি আবারও ইউনুসকে ফোন করেন। তখন তিনি ইউনুসের কাছ থেকে জানতে পারেন, শাপলা চত্বরে গণ্ডগোল হয়েছে, তবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শফীর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যের পরেই শাপলা চত্বরে অবস্থানরত হেফাজত কর্মীরা শাপলা চত্বর ত্যাগ করবেন। তিনি ইউনুসকে বাড়িতে চলে আসার জন্য আবারও বললে ইউনুস উত্তরে জানান, ‘শাপলা চত্বরে হাজার হাজার মুজাহিদ অবস্থান করছেন। আল্লামা শফী এখানে এসে আমাদের দিকনির্দেশনা দেবেন। তারপর আমরা শাপলা চত্বর ছাড়ব। আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন।’ ওমর ফারুক বলেন, এটাই ছিল তার ভাইয়ের সঙ্গে শেষ কথা। এর পর থেকে তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তিনি আর ফোন ধরেননি। ৬ মে ভোরে তিনি তার ভাইকে আবার ফোন করেন। তখন একজন অপরিচিত লোক ফোন রিসিভ করে নিজেকে পুলিশ সদস্য বলে পরিচয় দেন। সেই পুলিশ সদস্য তাকে মাওলানা ইউনুসের মৃত্যুর খবর জানান। তিনি পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে জানতে পারেন, তার ভাইয়ের লাশ মতিঝিলের একটি ব্যাংকের সিঁড়ির ওপর পড়ে ছিল। সেখান থেকে পুলিশ সদস্যরা তার ভাইয়ের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যান। সকালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন। তিনি দেখেন, তার ভাইয়ের ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে একটি গুলি লেগে পা ভেদ করে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। শরীরে আর কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। অত্যধিক রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছিল বলে তার ভাইয়ের অনুমান। ওমর ফারুক অধিকারকে জানান, তার পরিবার ইউনুসের মৃত্যুর ব্যাপারে কোনো মামলা করেনি। কারণ মামলা করলে তার এবং তার পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হতে হবে বলে তিনি মনে করেন। ওমর ফারুক অধিকারকে আরও জানান, তার ছোট ভাই মাওলানা ইউনুসের আট মাস বয়সের একটি মেয়েসন্তান রয়েছে। ইউনুস কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।



নিহত মোয়াজ্জেমুল হক নান্নুর মেঝো ভাই মো. হাফিজুল হক অধিকারকে জানান, তার ছোট ভাই ৪ মে যশোর থেকে ঢাকায় তার বন্ধুর বাসায় যান। সেখানে এক দিন থেকে ৫ মে নান্নু ও তার বন্ধু হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে যোগ দিতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে যান। এর পর থেকে তার কিংবা তার পরিবারের কারও সঙ্গে নান্নুর আর যোগাযোগ হয়নি। ৬ মে সকালে একজন অপরিচিত লোক তার মোবাইলে ফোন করে জানান, মোয়াজ্জেমুল হক নান্নু গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় ঢাকার মোহাম্মদপুরের আল মানার হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। যেহেতু তিনি যশোরে ছিলেন তাই এ খবর পেয়ে তিনি ঢাকার কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনকে আল মানার হাসপাতালে পাঠান। নান্নুর শরীরে কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর নান্নুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।



নান্নুর পরিবারের পক্ষে চিকিত্সার খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ায় ১১ মে নান্নুকে যশোর সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বিকালে নান্নুর মৃত্যু হয়। হাফিজুল হক অধিকারকে আরও বলেন, হাসপাতালের ডাক্তার তাকে জানিয়েছেন, নান্নুর ফুসফুসের ভেতরে ছররা গুলির অংশ ঢুকে যায়। মোয়াজ্জেমুল হক নান্নুর লাশ গোসল করানোর সময় হাফিজুল লক্ষ করেন, লাশের গায়ে চার-পাঁচশ’ ছররা গুলির চিহ্ন রয়েছে। নান্নুর বুকের বাঁ পাঁজরে গুলির চিহ্ন এবং বাঁ পায়ের গোড়ালি ভাঙা ছিল। এমনকি নান্নুর পায়ে লাঠি দিয়ে পেটানোর চিহ্ন হিসেবে দুই পায়েই ছোপ ছোপ কালো দাগ ছিল। তিনি ধারণা করেন, নান্নুকে প্রথমে লাঠি দিয়ে পেটানোর পর খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হাফিজুল হক বলেন, তার ভাই নান্নুর জানাজার নামাজ ১২ মে খড়কী ঈদগাহ ময়দানে পড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১১ মে যশোর সদর থানার ওসি ইমদাদুল হক বাড়িতে এসে ঈদগাহ ময়দানে জানাজার নামাজ পড়তে নিষেধ করেন। পরে নান্নুর পরিবারের লোকজন বাধ্য হয়ে যশোর সরকারি এম এম কলেজের মাঠে তার জানাজার নামাজ পড়েন এবং খড়কী কবরস্থানে লাশ দাফন করেন। পরে মোয়াজ্জেমুল হক নান্নুর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠান করতে চাইলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মোবাইল থেকে ফোন করে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অনুষ্ঠান না করার জন্য হুমকি দেয়া হয়। তাদের বাড়িতে এখন নিয়মিত অপরিচিত লোকজন নজরদারি করছে। যার ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।



প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা : আহত জুয়েল অধিকারকে জানান, তিনি পঞ্চগড় জেলার একটি মাদরাসার ছাত্র। ৫ মে তিনি তার মাদরাসার হুজুর (শিক্ষক) আলমগীরসহ ৬ জন হেফাজতের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য বিকালে ঢাকা মহানগরীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে এসে পৌঁছান। তখন থেকে তিনি মঞ্চের সামনেই অবস্থান করছিলেন। তিনি রাতে শাপলা চত্বরের পশ্চিম দিক থেকে গুলির শব্দ শুনতে পান। গুলির শব্দ শুনে শাপলা চত্বরের পশ্চিমে অবস্থানরত হেফাজত কর্মীরা চত্বরের সেই দিক থেকে সরে আসতে থাকে। তিনিও ভিড়ের চাপে মঞ্চের সামনে থেকে শাপলা চত্বরের পূর্ব পাশে সরে যান এবং টয়েনবি সার্কুলার রোডের বামপাশে মধুমিতা সিনেমা হলের আগে মতিঝিল দারুল উলুম জামে মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নেন। গুলির শব্দে অনেক হেফাজত কর্মী শাপলা চত্বর ছেড়ে আশপাশের বিভিন্ন গলিতে ঢুকতে থাকেন। তখন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মঞ্চ থেকে মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়, “আপনারা গুলি বন্ধ করেন। আপনারা কেন আমাদের নিরীহ কর্মীদের ওপর হামলা করছেন।” একপর্যায়ে গুলির শব্দ বন্ধ হয়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তখন তিনি মতিঝিল বড় মসজিদে এশার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে তিনি মসজিদ থেকে বের হয়ে আসেন। তিনি দেখেন রিকশা, ভ্যান ইত্যাদি যানে করে অনেক আহত লোকজনকে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সময় তিনি ৭টি লাশও নিয়ে যেতে দেখেন। এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টায় তিনি আবারও মঞ্চের কাছে যান। পুলিশ সদস্যরা যেন মঞ্চের কাছে না আসতে পারে সেজন্য হেফাজত কর্মীরা রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে এবং কাঠের স্তূপ তৈরি করে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় মতিঝিল এলাকার বিদ্যুতের সংযোগ পুলিশ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। রাত সোয়া দুইটার দিকে তিনি চারদিক থেকে গুলির শব্দ শুনতে পান। তিনি দেখেন হাজার হাজার পুলিশ সদস্য গুলি করতে করতে শাপলা চত্বরের পশ্চিম দিক ও উত্তর দিক থেকে মঞ্চের দিকে আসছে। এ সময় শাপলা চত্বরে অবস্থানরত হেফাজতের কর্মীরা রাস্তার বিভিন্ন গলি পথ দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি নিজেও শাপলা চত্বরের পূর্ব পাশের একটি গলিতে ঢুকে পড়েন। সেখানে কয়েকটি পানের দোকান ছিল। তিনি সেখানে একটি পানের দোকানে আশ্রয় নেন। সেখানে তার সঙ্গে প্রায় ৭০ জন হেফাজত কর্মী ছিলেন। এই সময় চারদিকে বৃষ্টির মতো গুলি হচ্ছিল। তিনি সেখানে নিজেকে আর নিরাপদ মনে করেননি। তাই তিনি চেয়েছিলেন রাস্তা অতিক্রম করে রাস্তার ওপাশে একটি ঘরে ঢুকে যেতে। কিন্তু পানের দোকান থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার হাতে ও পায়ে গুলি লাগে। তিনি রাস্তার পাশেই একটি ড্রেনে পড়ে যান। কিছুক্ষণ পর গুলির আওয়াজ একটু কমলে তিনি ড্রেন থেকে উঠে রাস্তা পার হন। রাস্তা পার হওয়ার সময় তিনি দেখেন ২০-২৫ জনের নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে রয়েছে। তিনি রাস্তা পার হয়ে একটা ঘরে ঢুকে পড়েন। সেখানে শ’খানেক হেফাজত কর্মী ছিলেন। এদের বেশির ভাগই ছিলেন গুলিবিদ্ধ। রাত আনুমানিক ৪টায় আশপাশে বিভিন্ন জায়গা থেকে সবাইকে বের হয়ে আসার জন্য মাইক দিয়ে ঘোষণা দেয়া হয়। তখন তারা সেখান থেকে বের হয়ে আসেন। এরপর কয়েকজন লোক তাকে জাতীয় অর্থপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসেন। গুলিতে আহত মিরপুর রূপনগর মাদরাসার ছাত্র মো. মাজেদুল ইসলাম অধিকারকে জানান, ৬ মে মধ্যরাতে তিনি শাপলা চত্বরের শাপলা ভাস্কর্যের বাউন্ডারির ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আড়াইটায় হঠাত্ মুহুর্মুহু গুলির শব্দ ও টিয়ারশেলের গন্ধে তার ঘুম ভেঙে যায়। তিনি দেখেন তার চারপাশের লোকজন দৌড়ে পালাচ্ছে। তিনিও বাউন্ডারির ভেতর থেকে বের হয়ে দৌড় দেন। এরপর তিনি টিয়ার গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে সোনালী ব্যাংক মতিঝিল শাখার রেলিং টপকে ভেতরে প্রবেশ করলে গুলিবিদ্ধ ৭-৮ জনের নিথর দেহ সেখানে পড়ে থাকতে দেখেন। সেখানে কয়েকশ’ লোকও আশ্রয় নেয়। পরে পুলিশ সদস্যরা সেখানেও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এরপর সেখান থেকে ১০-১২ জনের সঙ্গে মিলে দিলকুশা রোডের একটি ভবনের সিঁড়িতে তিনি আশ্রয় নেন। তিনি দেখেন, পুলিশ সদস্যরা গাড়ি নিয়ে দক্ষিণ দিকে চলে যাচ্ছে। এমন সময় একজন পুলিশ সদস্য তাদের দেখে ফেলে এবং সেই পুলিশ সদস্য অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের সেখানে ডেকে নিয়ে আসে। পুলিশ সদস্যরা এসে তাদের গুলি করতে চায়। তারা গুলি না করার জন্য পুলিশ সদস্যদের অনুরোধ করেন। তখন পুলিশ সদস্যরা তাদের গুলি না করে লাঠিপেটা করে ও তাদের ধরে লাঠি ও রাইফেলের বাঁট দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং এতে তার মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

এরপর তাদের ছেড়ে পুলিশ সদস্যরা সিঁড়িতে পড়ে থাকা অন্যদের ওপর চড়াও হয়। এই সুযোগে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে রাস্তার পাশে একটি ডাস্টবিনের দিকে যেতে থাকেন। যাওয়ার পথে তিনি ১০-১২ জনকে রাস্তায় নিথরভাবে পড়ে থাকতে দেখেন এবং ডাস্টবিনের আড়ালে আশ্রয় নেন।



এরপর দুইজন পুলিশ সদস্য এসে তাকে আবার ধরে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। এই সময় দূর থেকে এক পুলিশ সদস্যের ছোড়া গুলি তার ডান উরুতে বিদ্ধ হয়। তখন তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর তার মুখে পানির ছিটা পড়লে তিনি জ্ঞান ফিরে দেখেন, জিন্স প্যান্ট ও শার্ট পরা এক ব্যক্তি তার মুখে পানি ছিটাচ্ছে। লোকটি তাকে বলে, ‘তুই এখনও মরিসনি।’ এই বলে সেই ব্যক্তিটি তাকে আবারও পেটাতে শুরু করে। তখন তিনি সেই ব্যক্তির পায়ে ধরে তাকে আর না মারার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তার কথা না শুনে তাকে আর পেটানো হয়। একপর্যায়ে একজন পুলিশ সদস্য তাকে ধরে দাঁড় করায় এবং দৌড় দিতে বলে। কিন্তু তিনি দৌড়াতে পারছিলেন না। তিনি হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পুলিশ সদস্যরা তাকে পেছন থেকে পেটাতে থাকে এবং দৌড় দিতে বলে। তিনি অনেক কষ্ট করে দৌড় দিয়ে পাশের একটি গলিতে ঢুকে পড়েন। সেখানে তিনি কয়েকজন হেফাজতকর্মীকে দেখতে পান। তিনি তাদের কাছে তাকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য অনুরোধ করলে তারা তাকে ভোর আনুমানিক ৪টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি এখনও চিকিত্সাধীন।



শিক্ষক রহমত উল্লাহ (৩৫) জানান, ৬ মে রাত আনুমানিক ২টা ১৫ মিনিটে শাপলা চত্বরে থাকা কিছু হেফাজতের নেতাকর্মীরা বসে জিকির করছিলেন। এই সময় হঠাত্ দৈনিক বাংলার মোড় থেকে কয়েক হাজার পুলিশ, র‍্যাব এবং বিজিবি সদস্য মঞ্চের দিকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে আসতে থাকে। এতে হেফাজতের কর্মীরা ভয়ে মঞ্চের দিকে ছুটে আসতে থাকেন। যৌথবাহিনীর সদস্যরা মঞ্চের আশপাশে থাকা হেফাজতকর্মীদের ওপর গুলি ছুড়তে থাকে। তিনি বলেন, যৌথবাহিনীর সদস্যরা যখন অভিযান শুরু করে তখন সে এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। কিন্তু শাপলা চত্বরের আশপাশে কয়েকটি ভবনে বাতি জ্বলছিল এবং রাস্তায় দেয়া বিভিন্ন ব্যারিকেডে হেফাজতকর্মীদের ধরানো আগুন জ্বলছিল। আবছা আলোয় তিনি লক্ষ্য করেন, তার আশপাশে প্রায় ২০০-৩০০ হেফাজতকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছেন। তার ধারণা, সেখানে যারা পড়ে ছিলেন তারা সবাই মারা গেছেন। তিনি বলেন, শাপলা চত্বরের অভিযানে যৌথবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট পরিহিত অনেক অস্ত্রধারী লোকও অংশ নেয়। সেই লোকগুলো মাটিতে পড়ে থাকা নিথর দেহগুলোতে আঘাত করে ও গালাগাল করতে থাকে। তিনি বলেন, হয়তো সেসব সাদা পোশাকধারী লোকজন লাশগুলো সরিয়ে ফেলেছে।



প্রত্যক্ষদর্শী একজন সাংবাদিকের বর্ণনা : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাংবাদিক অধিকারকে জানান, তিনি একটি ফটো এজেন্সির ফটোসাংবাদিক। তার অফিস শাপলা চত্বরের কাছেই। ৫ মে সন্ধ্যা থেকেই তিনি তার অফিসে বসে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কর্মসূচির খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টায় তিনি হৈচৈ শুনে অফিসের জানালা দিয়ে দেখেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কর্মীরা মতিঝিল থানার দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছে। মতিঝিল থানার পুলিশ সদস্যরা এ সময় হেফাজতকর্মীদের ধাওয়া করে এবং এতে পুলিশ ও হেফাজতকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ হেফাজতকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। যার ফলে হেফাজতকর্মীরা বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটি করে চলে যায়। রাত সাড়ে ১০টায় মতিঝিল থানার সামনে অনেক পুলিশ এবং পুর্বানী হোটেলের সামনে থেকে শাপলা চত্বর হয়ে সিটি সেন্টার পর্যন্ত র‍্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। তখন পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। রাত আনুমানিক ১১.৩০টায় হেফাজতকর্মীরা মতিঝিলের সিটি সেন্টার, পুর্বানী হোটেল এবং ব্যাংক এশিয়ার সামনে কাঠের টুকরা, গাছের ডাল এবং রাস্তার আইল্যান্ডের কংক্রিট স্ল্যাব দিয়ে রাস্তায় ৭-৮টি ব্যারিকেড তৈরি করে যেন যৌথবাহিনীর সদস্যরা শাপলা চত্বরের দিকে সহজে এগিয়ে আসতে না পারে।



তিনি ঘটনাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ৬ মে ২০১৩ রাত আনুমানিক ১২টা ১৫ মিনিটে শাপলা চত্বরে যান এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর নেতার সঙ্গে সমাবেশের ছবি তোলার ব্যাপারে কথা বলেন। তিনি তার দুই সহকর্মীকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর সমাবেশের ছবি তোলার কাজে নিয়োজিত করে অফিসে ফিরে আসেন। তখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। তিনি অফিসে বসে তার এক সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারেন, শাপলা চত্বরে জমায়েত হওয়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য বিজিবির সদস্যরা আসছে এবং শাপলা চত্বরে রাতে বড় ধরনের অপারেশন হবে। রাত আনুমানিক ২টায় তিনি তার অফিস থেকে বের হয়ে একজন সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে দৈনিক বাংলা মোড়ে যান। সেখান থেকে নিজের বাসার ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ফকিরাপুলের দিকে যাচ্ছিলেন, এমন সময় তিনি দেখতে পান প্রায় ১০ গজ পরপর ছোট ছোট ব্যারিকেড ও বিভিন্ন ধরনের কাঠের টুকরার স্তূপে আগুন জ্বলছে। তিনি সেখান থেকে এগিয়ে গিয়ে দেখেন, মতিঝিল থানার সামনে বেশকিছু পুলিশ, র‍্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও বিজিবি সদস্যরা ২টি রায়ট কার ও ১টি জলকামান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি ফকিরাপুল মোড়ে পৌঁছানোর একটু আগেই দেখতে পান কালো পোশাক পরা বেশকিছু লোক ও ইংরেজিতে প্রেস লেখা জ্যাকেট পরা কয়েকজন সাংবাদিক দাঁড়িয়ে আছেন।



সাংবাদিকদের কাছে গিয়ে জানতে পারেন সেখানে দুই হাজারেরও বেশি পুলিশ, র‍্যাব, এপিবিএন ও বিজিবি সদস্য রয়েছে। একজন জয়েন্ট কমিশনার পর্যায়ের অফিসার তাদের কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এ দলের সঙ্কে একটি রায়ট কার ও একটি জলকামান ছিল। তখন তিনি বুঝতে পারেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই বড় ধরনের কোনো অপারেশন শুরু হবে। তাই তিনি অপারেশন দেখার জন্য সেখানে থেকে যান। তিনি দেখেন, অপারেশন দলের কমান্ডিং অফিসার তার দলকে উত্তেজিত করার জন্য বলছে, ‘আপনারা কী যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন?’ দলের প্রত্যেক সদস্য সমস্বরে বলে ওঠে, ‘ইয়েস স্যার’। তিনি আরও বলেন, আমার মনে হলো আমি যেন সম্মুখ সমরে যোগ দিতে যাওয়া কোনো সেনা দলের সঙ্গে রয়েছি।



রাত আনুমানিক ২-১৫ মিনিটে যৌথবাহিনীর অপারেশন দলের সদস্যরা ফকিরাপুল থেকে শাপলা চত্বরের দিকে অভিযান শুরু করে। অপারেশন দলের প্রথমে ছিল পুলিশ, তারপর এপিবিএন, তারপর র‍্যাব এবং সবশেষে ছিল বিজিবি সদস্যরা।

রাত আনুমানিক ২-২০ মিনিটে যৌথবাহিনীর রায়ট কারে মাইক থাকা সত্ত্বেও তারা হেফাজত কর্মীদের সরে যেতে না বলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে শাপলা চত্বরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এতে রাস্তায় অবস্থানরত হেফাজত কর্মীরা টিকতে না পেরে পিছু হটতে শুরু করেন। রাস্তায় ব্যারিকেড থাকায় তিনি তার মোটসাইকেল নিয়ে বেশিদূর এগোতে পারেননি। তাই তিনি মতিঝিল টিএন্ডটি কলোনি পার হয়ে একটি পেট্রল পাম্পে তার মোটরসাইকেলটি রেখে অপারেশন দলের পেছনে হেঁটে হেঁটে এগুতে থাকেন। মতিঝিলের টয়েনবি সার্কুলার রোডে অবস্থিত নটর ডেম কলেজের কাছে হেফাজত কর্মীরা একটি বড় ধরনের ব্যারিকেড তৈরি করেছিলেন। যার ফলে যৌথবাহিনীর দুটি রায়ট কার ও জলকামানের গাড়ি প্রথমে পার হতে পারেনি। তখন যৌথবাহিনীর এক অফিসার ব্যারিকেড সরানোর নির্দেশ দেন। গুলি তখনও চলছিল। ব্যারিকেড সরিয়ে যৌথবাহিনী পুনরায় শাপলা চত্বরের দিকে এগিয়ে যায় আর হেফাজত কর্মীরা পিছু হটতে থাকেন। অপারেশন দলটি নটর ডেম কলেজ ফটকের সামনে এসে হেফাজত কর্মীদের দিকে টিয়ারশেল ছুড়ে। কিন্তু দক্ষিণ দিক থেকে বাতাস বয়ে আসায় টিয়ারশেলের ধোঁয়া তাদের নিজেদের দিকেই ফিরে আসে। এ সময় যৌথবাহিনীর সদস্যরা আগুন ধরিয়ে টিয়ারশেল থেকে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করে। এরপর রাত আনুমানিক ২-৪৫ মিনিটে নটর ডেম কলেজ পার হয়ে টয়েনবি সার্কুলার রোডে অবস্থিত দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার অফিসের সামনে এসে যৌথবাহিনীর সদস্যরা হেফাজত কর্মীদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং সরাসরি গুলি ছুড়তে ছুড়তে শাপলা চত্বরের কাছে এসে দেখে চত্বর খালি হয়ে গেছে। কারণ, এরই মধ্যে দৈনিক বাংলা মোড় থেকে আরেকটি অপারেশন দল আগেই শাপলা চত্বরে এসে হেফাজত কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছিল। হেফাজত কর্মীরা তাদের জীবন রক্ষায় তখন মতিঝিলের বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পড়েন।



এমন সময় তিনি দেখেন একজন হেফাজত কর্মীকে পুলিশ ধাওয়া করেছে। ধাওয়া খেয়ে লোকটি জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন। একজন পুলিশ সদস্য তাকে গুলি করতে উদ্যত হওয়ায় আরেকজন পুলিশ সদস্য তখন তাকে বারণ করেন। কিন্তু গুলি করতে উদ্যত পুলিশ সদস্য বারণ না শুনে লোকটির পেটে গুলি ছোড়ে। লোকটি পেটে হাত চেপে ধরে রক্তাক্ত অবস্থায় কোনো একটি গলিতে ঢুকে পড়েন। এরপর তিনি হেফাজতের অস্থায়ী মঞ্চের কাছে এসে দেখেন গুলিবিদ্ধ ৪টি লাশ সেখানে পড়ে আছে। তিনি এসব লাশের ছবি তুলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যান। সেখানে কয়েকশ’ হেফাজত কর্মী আশ্রয় নিয়েছিলেন। যৌথবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গিয়ে সরাসরি গুলি করে। তিনি দেখেন, ২ জন হেফাজত কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন। তখন সোনালী ব্যাংকের সামনে গুলি চলছিল। তাই তিনি সেখান থেকে শাপলা চত্বরের ফোয়ারার কাছে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন কিছু হেফাজত কর্মী ফোয়ারার পানিতে ডুবে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা তাদেরকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে এসেছে। এরপর তিনি সেখান থেকে পুনরায় সোনালী ব্যাংকের সামনে যান। সোনালী ব্যাংকের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় গিয়ে দেখেন ২ জনের গুলিবিদ্ধ নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। তখন সোনালী ব্যাংকের ভেতরে গুলি চলছিল। তিনি সোনালী ব্যাংকের গাড়ি পার্কিংয়ের ডান কোনার দিকে তাকিয়ে দেখতে পান কিছু হেফাজত কর্মী কাঁটাতারের বেড়া টপকে ভেতরে আশ্রয় নিচ্ছেন। তখন তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন ৫ জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছেন।



এরপর তিনি সোনালী ব্যাংকের গাড়ি পার্কিংয়ের কোনার ডান দিকের সিঁড়িতে গিয়ে দেখেন গুলিবিদ্ধ একজন কুঁজো হয়ে পড়ে আছেন। তিনি সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতীয় ধাপে ওঠেন। সেখানে দেখেন কালো শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পরা একটি ছেলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। আরেকটু সামনে তিনি এগিয়ে দেখেন তিনজন হেফাজত কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন। তারপর তিনি নিচে নেমে আসেন। নিচে এসে দেখেন দুটি নিথর দেহ গাড়ির নিচে পড়ে আছে। তিনি যখন সোনালী ব্যাংকের বারান্দায় তখনও সোনালী ব্যাংকের ভেতরে গুলি চলছিল। রাত আনুমানিক ৩টা ১৫ মিনিটে তিনি পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দক্ষিণ দিক দিয়ে ইত্তেফাক মোড়ের দিকে যান। তিনি দেখেন রাস্তায় বিভিন্ন ব্যারিকেডে আগুন জ্বলছে। পুলিশের রায়ট কার বিভিন্ন গলিতে হেফাজত কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে আর জলকামান দিয়ে রাস্তার আগুন নেভাচ্ছে। মধুমিতা সিনেমা হলের কাছে তিনি দেখতে পান ২টি দেহ নিথর পড়ে আছে।



এ দুজনের মধ্যে একজনের মাথায় গুলি লেগেছে এবং অন্যজনের শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত ঝরছে। এমন সময় তিনি শুনতে পান কিছু পুলিশ সদস্য ধর ধর বলে চিত্কার করছে। তিনি দৌড়ে সেদিকে যান। তিনি দেখেন কয়েকজন হেফাজতকর্মী একটি মই দিয়ে একটি ভবনের ছাদে ওঠার চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে একজন সোনালী ব্যাংকের সামনে একজন পুলিশ সদস্য অন্য পুলিশ সদস্যদের বারণ সত্ত্বেও হেফাজত কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তখনই গুলিবিদ্ধ হয়ে ১ জন হেফাজতকর্মী ছাদের কার্নিশে পড়ে যান। তিনি দেখেন পেট্রল পাম্পের তেল দেয়ার মিটারের পাশে একটি ত্রিপল পড়ে আছে। তিনি সেটা তুলে দেখেন, ১ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ সেখানে পড়ে আছে। এর পাশেই হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের একটি পিকআপ ভ্যান দাঁড় করানো ছিল। তিনি সেই পিকাপের ভেতরে দেখেন ১টি লাশ পড়ে আছে। এরপর তিনি ইত্তেফাক মোড়ের সামনেই দেখেন দুটি পিকআপ দাঁড়িয়ে আছে। এর সামনেই কংক্রিটের স্ল্যাব দিয়ে তৈরি একটি ব্যারিকেড ছিল। ব্যারিকেডের কারণে পিকআপ দুটি যেতে পারেনি। সেই পিকআপ ভ্যানে কিছু চেয়ার ছিল। দেখে বোঝা যায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর নেতারা এ পর্যন্ত এসে পিকআপ থেকে নেমে পালিয়ে যান। তখন তিনি ইত্তেফাক মোড় থেকে শাপলা চত্বরের দিকে ফিরতে থাকেন। শাপলা চত্বরের কাছাকাছি ঘরোয়া হোটেলের সামনে এসে দেখেন, আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ভবনের সামনে যৌথবাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়ছে। এরপর ভোর আনুমানিক ৪টায় তিনি শাপলা চত্বর হয়ে দৈনিক বাংলার দিকে রওনা দেন। তখন তিনি দেখেন সিটি সেন্টারের সামনে দুজন পুলিশ ও দুজন সাদা পোশাকধারী ব্যক্তি ১টি লাশ নিয়ে পূর্বাণী হোটেলের দিকে যাচ্ছে। পূর্বাণী হোটেলের সামনে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করানো ছিল।



নিখোঁজদের স্বজনদের বর্ণনায় শাপলা চত্বরের ভয়াবহতা : নিখোঁজ মনোয়ার সিদ্দিকীর বড় ভাই হাফেজ মো. ইসরাফিল অধিকারকে জানান, তার ছোট ভাই মাওলানা মনোয়ার সিদ্দিকী (২৮) কুমিল্লায় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন। তিনি ৫ মে হেফাজতের সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় যান। মনোয়ার সিদ্দিকী ঢাকায় হেফাজতের সমাবেশে যে যোগ দেবে সেটা আগে থেকে বাড়িতে জানায়নি।

মনোয়ার ঢাকায় গিয়ে বিকালে তাকে মোবাইলে ফোন করে ঢাকায় আসার কথা জানায়। তিনি তখন মনোয়ারকে বাড়িতে চলে আসতে বলেন কিন্তু মনোয়ার তার কথা না শুনে মতিঝিলেই থেকে যায়। এরপর থেকে মনোয়ারের মোবাইল বন্ধ থাকার কারণে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ৯ মে মনোয়ারের মোবাইলটি খোলা পাওয়া যায় এবং তার মোবাইলে ফোন দিলে অপরিচিত এক লোক ফোন রিসিভ করে। লোকটি বলে এই মোবাইলটি সে ঢাকার রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছে। এই বলে কলটি কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে মনোয়ারের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। মো. ইসরাফিল অধিকারকে আরও জানান, তার ছোট ভাই নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি তার ছোট ভাই মাওলানা মনোয়ার সিদ্দিকীকে ফিরে পেতে অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন।



রাস্তা ধুয়ে ফেলা হয় : এটিএম বুথের গার্ড মো. হযরত আলী জানান, ৬ মে রাত ২টা ১৫মিনিটে দৈনিক বাংলা মোড় থেকে আনুমানিক দুই হাজার সশস্ত্র পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি সদস্য শাপলা চত্বরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। সে সময় তিনি প্রচুর গুলির শব্দ শুনতে পান। গুলির শব্দ শুনে তিনি ব্যাংক ভবনের ভেতরে চলে যান। ভোর আনুমানিক সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তিনি গুলির শব্দ শুনতে পান। গুলির শব্দ থেমে গেলে ভোর আনুমানিক ৬টায় তিনি ব্যাংক থেকে বের হন। তখন তিনি রাস্তায় কোনো ব্যক্তির লাশ দেখতে না পেলেও রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ছোপ ছোপ রক্তের দাগ দেখতে পান। তিনি লক্ষ্য করেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের লোকজন এসে রাস্তায় পানি ঢেলে রাস্তা ধুয়ে ফেলছে।



ঢাক সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা অতিরিক্ত প্রধান আবু সালেহ মো. মাইনউদ্দিন ৬ মে’র ঘটনায় সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য যে গাড়িগুলো পাঠানো হয়েছিল সে সম্পর্কে অধিকারকে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর তিনি পরিবহন বিভাগে অথবা নির্বাহী বিভাগে যোগাযোগ করতে বলেন। এ ব্যাপারে ডিসিসি দক্ষিণের পরিবহন বিভাগের উপ-সচিব এএসএম এমদাদুত দস্তগীর, অধিকার-কে জানান, ৬ মে শাপলা চত্বরে যৌথবাহিনীর অভিযানের ঘটনায় সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য যে গাড়িগুলো পাঠানো হয়েছিল সে সম্পর্কে কথা বলতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ রয়েছে। তাই তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।”



গত ৬ মে মধ্যরাতে শাপলা চত্বরে অভিযানের পরপরই হেফাজতে ইসলামের নেতারা দাবি করেন, ঘুমন্ত ও ইবাদতরত মুসল্লিদের ওপর গুলি চালিয়ে ওই রাতে অন্তত তিন হাজার লোককে হত্যা করা হয়। দেশ-বিদেশের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন এবং গণমাধ্যমও হেফাজতের এ দাবির সঙ্গে সুর মিলিয়েছে। হংকংভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন এশিয়ার হিউম্যান রাইটস কমিশন জানিয়েছে, শাপলা চত্বরে নিহতের সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি হতে পারে। প্রভাবশালী ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্ট বলছে, ৫ ও ৬ মে অন্তত ৫০ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এটাকে ‘গণহত্যা বলেই মনে হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছে ইকোনমিস্ট।

Click This Link

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:২১

ইকবাল পারভেজ বলেছেন: নিশ্চিত থাকেন ৪০ বছর পর হইলেও আম্লীগের অনেক নেতা মানবতা বিরোধী অপরাধে জেলে যাইবো |

২| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:২৭

নিয়েল হিমু বলেছেন: এত বড় বুকামি করলা কেন মাম্মা ? অধীকার এর site এ যেহেতু বিভিন্ন মুভমেন্ট এর ফটো দিছে তাইলে ঐডি নামায়া ২/১ টা এইখানে শেয়ার দিলানা কেন ?
এত বড় পোষ্ট সামুতে বৈসা পড়ার ইচ্ছা নাই অধীকারের web site এর ২৫পৃষ্টা প্রতিবেদন link দেও ঐখানেই পড়ুম ।
অঃটঃ শেষে দিয়া কিসের লিংক দিছো মাম্মা ? PDF খাওয়ার টাইম নাই

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: মাম্মা, অধিকারের পুরা প্রতিবেদন তো শেষের লিংক এ পাবা, দেহ, দেহ, মাম্মা!

৩| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:৩৭

পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: শাপলা অভিযান: নিহত ৬১ জনের নাম সংগ্রহ করেছে অধিকার:((:((:((


হ্যাপা-জটে বিটলামি ফাকিস্তানের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে নাস্তিক সরকারি বাহিনীর হামলায় নিহত ৬১ জনের নাম জানতে পেরেছে দেশের বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন-'অধিকার'।

শাপলা চত্বরে গণহত্যা নিয়ে আজ (সোমবার) ‘অধিকার’-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। ‘হ্যাপা-জটে বিটলামি ফাকিস্তান-এর সমাবেশ ও মানবাধিকার লংঘন’ শীর্ষক ২৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে যৌথ বাহিনীর রায়ট কার, নিহত ছাগলদের ছবি, কাচ্চির গোশত নিয়ে গাড়িতে তোলার দৃশ্য, বিরিয়ানি ভক্ষনের পর সিটি করপোরেশনের পানিবাহী গাড়ি দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার দৃশ্যসহ বেশকিছু পর্ন আলোকচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সরকার প্রথমে কেউই হতাহত হয়নি বলে দাবি করেছিল। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় সেদিন রাতের অভিযানের ছবি ও শফি-সানি লিওনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় সরকার সেই দাবি থেকে সরে আসে এবং সারাদিন বিভিন্ন পর্যায়ের হস্ত মারিতে মারিতে তিনজন হ্যাপাজটসহ মোট ১১ জনের হাত নিহত হওয়ার কথা জানায়। হ্যাপা-জটে বিটলামি ফাকিস্তানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা অধিকারকে জানান, এ পর্যন্ত ২০২ জনের মৃত্যুর খবর তারা পেয়েছেন এবং প্রায় ২৫০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে চলমান অনুসন্ধানের একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে অধিকার নিহত ৬১ জনের নাম সংগ্রহ করেছে। আল-জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেল ৫০ জন নিহত হবার কথা জানিয়েছে।’

৪| ১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ৩:২০

কাজী মামুনহোসেন বলেছেন: ভচ এইডা কি পইড়া দেখছেন ?

পিলিচ বস, দয়া কইরা এই লিখা পুরাডা একটু পইড়া দেইখেন।

Click This Link

৫| ১১ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৬:১৬

দায়িত্ববান নাগরিক বলেছেন: পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: শাপলা অভিযান: নিহত ৬১ জনের নাম সংগ্রহ করেছে অধিকার:((:((:((

[img|http://cms.somewhereinblog.net/ciu/image/131019/xlarge/?token_id=6ea97f14b8e04b9af1d08f7c3adc0c5a

৬| ১১ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৬:১৬

দায়িত্ববান নাগরিক বলেছেন: পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: শাপলা অভিযান: নিহত ৬১ জনের নাম সংগ্রহ করেছে অধিকার:((:((:((

৭| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৭:৩৯

কালবৈশাখীর ঝড় বলেছেন:
সিটি কর্পোরেশনের পানিবাহি গাড়ীদিয়ে একঘন্টায় ৬টন রক্ত পরিষ্কার করা যায় নাকি?
সেখানে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে যায়। পানি দিয়ে রাস্তা ধুলে বিপুল পরিমান লাল পানি জমে থাকার কথা, অতচ কোন ছবিতেই রাস্তা ভেজা বা পানি জমেথাকা দেখা যায় নাই। আপনার বর্নিত ব্যাঙ্কের গার্ড ভোর ৬টায় রাস্তা শুখনোই দেখেছে বলছে।

আমিও সকাল সাতটায় রাস্তায় বিপুল ধ্বংশকান্ড দেখলেও রাস্তা শুখনোই দেখেছি।

আমার লেখাটি পড়ুন, কমেন্টের জবাব গুলো সহ।
Click This Link

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪৮

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: কেন আমি নিজে চ্যানেলের ফুটেজে রাস্তায় রক্তের ছোপ ছোপ দাগ দেখলাম!

৮| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৮:৫৮

অেসন বলেছেন: ৬১ জন হইলে চলতো না। ২৫০০ - ৩০০০ এর নাম চাই ?

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪৭

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: Despite this reality, it is still necessary to immediately have an independent investigation and establish the real facts avoiding prejudice, bias and political manipulation. A credible investigation committee headed by a retired Justice of the Supreme Court should be formed immediately and the trauma the society had undergone should be addressed by finding out:

৯| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৫১

চলতি নিয়ম বলেছেন: একই রকম দাড়ি দেওয়া দুইটা কনফার্ম হৈছে। এইটা নিজে কিছু লিখলে দাড়ি টা কনফার্ম হওয়া যাইত। =p~

১০| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৫৭

দমকল৮৬ বলেছেন: ৬০/৬১ জন হুজুর না মরে ৫/৬ জন ঠাকুর মরলে উপরের কুকুর গুলার ঘেউ ঘেউ তে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে যেত ।

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: ঠিক কইছেন

১১| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:১১

প্রকৌশলী রিয়াদ হাসান চৌধুরী বলেছেন: ফালতু ....

১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৪৯

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: আপনি কেন ফালতু বললেন? বুজলাম না!

১২| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫২

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: http://timenewsbd.com/national/2013/06/11/3400

১৩| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৫৬

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: পুরাই আজব.............

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৩৮

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: এই নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানাই!

১৪| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১২

েশখসাদী বলেছেন: Allah will do justice at the right time.

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৩৯

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: এই হত্যাযজ্ঞের বিচার হবেই!

১৫| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৪৯

কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: ইকবাল পারভেজ বলেছেন: নিশ্চিত থাকেন ৪০ বছর পর হইলেও আম্লীগের অনেক নেতা মানবতা বিরোধী অপরাধে জেলে যাইবো |

শুধু আওয়ামী লীগ নেতা না - যারা ব্লগে ফেবুতে মিডিয়াতে এই গনহত্যা সমর্থন করেছে বা আড়াল করার চেস্টা করেছে তাদের সবার বিচার হবে। শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।

১৬| ১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:০২

কর্কট রাশি বলেছেন: শেয়ার করতে পারি লেখাটা? :)

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৭

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: কেন নয়, করেন

১৭| ১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪

নিয়েল হিমু বলেছেন: গর্ধপের চার নাম্বার । বলছি না পিডিএফ [][]র টাইম নাই । ডিরেক্ট অধিকারের লিংক দে X(( X(( X(( X(( X((

১৮| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৮

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: Another reporter saw RAB soldiers dragging four people and loading them on to a truck:

I was behind the police lines at Dainik Bangla. I did not hear any police
announcement or warning that they were going to start the operation. They
just started firing rubber bullets and blanks and sound grenades. Later I
saw 20-25 RAB taking four bodies from a side road opposite City Centre,
near the Biman Bangladesh office. When I went to see what was happening,
I told them I was a journalist and showed my ID and one hit me with a stick
in face. The bodies were of four madrassa students. I saw the blood but
can't tell what sort injuries they had because it was dark. On the steps of
the Sonali Bank I saw the body of a young guy. He was maybe 10 or 12. His
whole body was bruised from neck to chest. I checked his pulse and heart
beat and a policeman also checked his pulse and said he was dead. The
police picked up the body and put it into an ambulance.69
Click This Link

১৯| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৯

কাউন্টার হেজিমনি বলেছেন: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.