নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খাঁটি বাংলাদেশী

সুদীপ্ত কর

মরার আগে মেটালিকার মাস্টার অফ পাপেটস শুনতে শুনতে মরতে চাই। https://www.facebook.com/Sudipta.Kar

সুদীপ্ত কর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্প - চিরকুটের অভিশাপ

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৫:০৩

নিজের সাথে লুকোচুরি করে বেশীদিন টেকা যায় না। ব্যাক টু দি ওল্ড মি...

বাই বাই ক্যামোফ্লেজ




অসুস্থ অবস্থায় দিপের দেয়া চিরকুটটা এখনো রয়ে গেছে তিশার কাছে। অনেকদিন পরে সে গোপন জায়গা থেকে বের করলো দিপের লেখা এই চিহ্নটা। জাদুঘরে রেখে দেয়ার মত তেমন কোন বিশেষত্ব নেই আসলে এই ছোট কাগজটাতে। চিরকুটটা দিপ তিশাকে দিয়েছিলো একটা হলুদ খামে। তিশার বিয়ের দিন উপহার হিসেবে। তিশা অনেকটা বিব্রত আবার অনেকটা শংকিতও হয়েছিলো। একটা ভীতু দৃষ্টি দিয়েছিলো দিপের দিকে। হলুদ দিপের প্রচন্ড অপছন্দের রং। অপরদিকে তিশার বরাবরের প্রিয় চরিত্র ছিলো হিমু। দিপ প্রায়ই রেগেমেগে বলতে “আমি হিমু না। আমি একটা মানুষ। আলাদা একটা মানুষ।

কিন্তু হূমায়ুনভক্ত সব মেয়েই বোধহয় তার প্রেমিককে হিমুর মত দেখতে চায়। তিশাও দেখতে চাইতো। একটু এলোমেলো, ছন্নছাড়া, অগোছালো একটা ছেলে। দিপ আসলে ভেতরে ভেতরে অনেক অগোছালো ছিলো যেটা বাইরে থেকে তিশা কখনোই বুঝতে পারেনি। উপরে উপরে অনেক প্ল্যানমাফিক গুছিয়ে চলা দিপের সাথে তিশার শেষ কয়েকটা দিনের কথা তিশার কাছে দু:স্বপ্ন মনে হয় মাঝেমাঝে।

আর সেই দিপের হাতে হলুদ খাম?



খামটা তিশা লুকিয়ে রেখেছিলো। পরে ভিতরে একটা টিস্যু পেপারে মোড়া এই চিরকুটটা পেয়েছিলো যার অর্থ সে কোনদিনই বোঝেনি। তিশার বিয়ের পরদিন থেকে দিপকেও আর পাওয়া যায় নি। তখন সে আন্ডার ট্রিটমেন্ট ছিলো। তিশার বিয়ে ঠিক হয়ে যাবার পর থেকেই দিপ ভায়োলেন্ট হয়ে যায়। সাউকোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার দেখা দেয়। বাসায়ই ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। তিশা শুনে শুধু কেঁদেছিলো। কিছু করার ক্ষমতা ছিলোনা তার। বাবা-মা হারিয়ে ছোটবেলা থেকে মামায় বাসায় মানুষ। তাই চুপচাপ বিয়েতে রাজী হওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিলোনা।



দিপ কবি ছিলো। কবিতা লিখতো। অসুস্থতা দিপের ভেতর থেকে সবটুকু ছন্দ কেড়ে নিয়েছিলো বোধহয়। শেষ যেদিন তিশা দিপের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলো সেদিন দিপ ভাঙা ভাঙা গলায় উদভ্রান্ত দৃষ্টি নিয়ে বলেছিলো, ‘আমার না একটা অদ্ভুত ইচ্ছা হয় মাঝেমাঝে। বুচ্ছো? কোনকিছু শান্ত দেখতে ভাল লাগেনা। এই ধরো কোন গরীব রিকশাঅলা সারা সকাল রিকশা চালিয়ে দুপুরবেলা রাস্তার পাশে ভাত খাচ্ছে – এই দৃশ্য আমি সহ্য করতে পারিনা। আমার ইচ্ছা করে কষে একটা থাপ্পড় মারি। তারপর রিকশাঅলার এক্সপ্রেশন কি হয় সেটা বসে বসে দেখি।



এইটা আবার কেমন ইচ্ছা? আজিব। মাথা ঠিক আছে?



- আরে শুনো না। তারপর ধরো যে কোন টিচার সুন্দর করে ক্লাশ নিচ্ছে। খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াচ্ছে। কোন কথা নাই বার্তা নাই তাকে ঠাস করে একটা চড় দিলে তার এক্সপ্রেশন কেমন হবে? তারপর মনে করো রাস্তায় কোন টাক লোক হেটে যাচ্ছে। ধাম করে তার মাথায় তবলা বাজিয়ে জোড়ে জোড়ে গান ধরলাম,



তোমার টাকে বাস করে কারা ও টাকলু জানোনা,

তোমার মাথায় চুল নাইতো চাইর আনা

টাক জানো না..”,




তখন তার এক্সপ্রেশন কেমন হয় শক খাওয়ার পর এইটা না আমার দেখার খুব ইচ্ছা।

- তোমার মাথা কি ঠিক আছে? তুমি এইসব কি বলতেসো?




প্রবল মানসিক শক পেলে মানুষের এক্সপ্রেশন কি হয় সেটা নিয়ে দিপের এই বাড়াবাড়িই তার মাথার গোলমালের প্রাথমিক লক্ষণ ছিলো। একদিন রাস্তার পাশে পুলিশের উপর এই পরীক্ষা করতে গিয়ে সোজা থানায় যেতে হয়েছিলো। পুলিশের মার খাবার পরে সমস্যা আরো বেড়ে যায়। সাইকিয়াট্রিস্ট, হসপিটাল দৌড়াদৌড়ি। মাঝখানে কিছুটা সুস্থ হয়ে গিয়েছিলো। তখনই তিশার বিয়ে হয়ে যায় এক প্রবাসী ছেলের সাথে। বিয়ের দিন দিপকে দেখেও তিশা শকড হয়েছিলো। দিপ তার এক্সপ্রেশন দেখে কি ভাবছিলো তিশার জানা নেই।



দিপকে আর পাওয়া যায়নি। কিন্তু দিপের দুটো স্মৃতি রয়ে গেছে তিশার কাছে।



ছেলেটা সবেমাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তাকেই আজ আনতে গিয়েছিলো তিশা। স্কুলে গিয়েই ছেলের নামে এমন এক কমপ্ল্যান শুনতে হয়েছে যার পর থেকে অসুস্থ লাগছে। তার এইটুক ছেলেটা ক্লাশ ছুটি হওয়ার পর টিচারকে গিয়ে বলেছে, ‘মিস, কানে কানে একটা কথা বলবো।’ টিচার মাথা নীচু করার পরপরই সে টিচারের গালে ঠাস করে চড় মেরেছে। কারণ জিজ্ঞাসা করার পর বলেছে, “আমি দেখতে চেয়েছিলাম মিসকে হঠাৎ করে মারলে মিস কি করে, কিভাবে তাকায়?”



তিশা আর কিছু ভাবতে পারছেনা। দিপের শেষ চিহ্নটা কি দিপের সেই চিরকুটের কথাই বলছে?



নিজের সাথে লুকোচুরি করে বেশীদিন টেকা যায় না। ব্যাক টু দি ওল্ড মি ?





মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:২৪

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: “আমি হিমু না। আমি একটা মানুষ। আলাদা একটা মানুষ।” B#)

ভাল্লাগছে লেখাটা ---

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

সুদীপ্ত কর বলেছেন: :)

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৮

শুঁটকি মাছ বলেছেন: গল্পটা সুন্দর।প্রথম অংশ বেশ ভালো লেগেছে।শেষটায় আরো বেশী কিছু আশা করেছিলাম।
ভাল থাকবেন।শুভকামনা!

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫

সুদীপ্ত কর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন

৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:০৩

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: মাঝে মাঝে আমারো এরকম উদ্ভট ইচ্ছা হয় । কখনো পরীক্ষা করিনি অবশ্য । না করাই ভালো ;)

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫

সুদীপ্ত কর বলেছেন: আমার হয়। প্রবলভাবে এইসব ইচ্ছা জাগে..

৪| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
ভাল লাগলো।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৬

সুদীপ্ত কর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৫১

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঘটনাপ্রবাহ বেশি দ্রুত। তাড়াহুড়ো করে লেখা মনে হলো। তবে এন্ডিংটা বেশ।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৭

সুদীপ্ত কর বলেছেন: আমি চেয়েছিলাম খুব ছোট্ট একটা সময়কে ব্যাকগ্রাউন্ড দিয়ে স্প্রেড করার। অন্য লেখাগুলার তুলনায় সময় বরং একটু বেশীই লেগেছে।

অনেকদিন পরে লেখায় আপনার কমেন্ট পেয়ে খুশী হয়ে গেলাম :)

৬| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৭

শাহিন বলেছেন: ভালো লেগেছে । শুভেচ্ছা ।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৮

সুদীপ্ত কর বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা। ভালো থাকবেন ।

৭| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪

আম্মানসুরা বলেছেন: শুরুটা চমৎকার ছিল!!

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৯

সুদীপ্ত কর বলেছেন: থ্যাংক ইউ। পরের বার চেস্টা থাকবে শেষটাও চমঁতকার করার।

৮| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩১

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: ভালই লাগলো। আর একটু ডিটেইল থাকলে মনে হয় ভালো জমতো।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৯

সুদীপ্ত কর বলেছেন: চেস্টা করবো পরের বার। ধন্যবাদ। :)

৯| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫১

মাহমুদা সোনিয়া বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো!!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৪

সুদীপ্ত কর বলেছেন: থ্যাংক ইউ আপু :)

১০| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৪

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: সমাপ্তি ভাবিয়েছে অনেকক্ষণ। চমৎকার।



এইটা বেশি জোশ B-) B-) B-)
“তোমার টাকে বাস করে কারা ও টাকলু জানোনা,
তোমার মাথায় চুল নাইতো চাইর আনা
টাক জানো না..”,

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১৯

সুদীপ্ত কর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ :)

১১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫৫

সকাল রয় বলেছেন:
আপনি কোথায়।
আপনাকে নিয়ে কবিতা লেখা হলো

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:২০

সুদীপ্ত কর বলেছেন: ইয়ে মানে নিদ্রায় ছিলাম। আপনি কেমন আছেন?
কবিতার লিংক?

১২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫৫

সকাল রয় বলেছেন:
আপনি কোথায়।
আপনাকে নিয়ে কবিতা লেখা হলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.