নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকের দিনই শেষ দিন মনে করতে হবে..কারন হঠাৎ করেই একদিন মরতে হবে.. কেয়ামত পর্যন্ত কবরে থাকতে হবে.. হাশরের মাঠে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে হবে.. জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কর্মকান্ডের হিসাব দিতে হবে.. পুলসিরাত পার হতে হবে.. তারপর....... জান্নাত অথবা জাহান্নামই হবে আসল ঠিকানা....
বাবুল মিয়া পেশায় মুরগী ব্যবসায়ী। গ্রামের বিভিন্ন হাট-বাজারে মুরগী বিক্রী করে সংসার চালায়। সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়েটা ক্লাস টেনে পড়ে। দেখতে সুন্দর বলে পাশের গ্রামের রহিম মিয়া তার পুত্রের জন্য প্রস্তাব পাঠায়। বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে বাবুল মিয়ার টেনশনে বেড়ে গেছে। কারণ তার যে জমানো টাকা পয়সা নেই।
বাবুল মিয়া ও রহিম মিয়া দুপক্ষ মিলে বিয়ের দর কষাকষি শুরু হয়েছে। ছেলের পক্ষের মুল কয়েকটি দাবী হচ্ছেঃ
১. বিয়েতে ২০০ জনকে খাওয়াতে হবে।
২. বিয়ের দিন ৫০ জনের খাবার রহিম মিয়ার বাড়ীতে পাঠাতে হবে।
৩. কনেকে ১ ভরি স্বর্ণ দিতে হবে।
৪. ছেলের জন্য আলমারী, খাট, সোফাসেট, লেপ-তোষক দিতে হবে।
উপরোক্ত দাবীগুলো শুনে কন্যা পক্ষও ছেলের পক্ষ থেকে কিছু আদায় করে নিতে চায়। তাদের দাবী হচ্ছেঃ
১. মোহরানা হবে ৪ লাখ।
২. কনেকে ২ ভরি স্বর্ণ দিতে হবে।
৩. কনেকে সাজানের জন্য বিয়ের শাড়ী,প্রসাধনীসহ আরো অন্যান্য জিনিষ দিতে হবে।
৪. বিয়ের পরে কন্যাপক্ষের ৫০ জনকে খাওয়াতে হবে।
উভয়পক্ষ দাবীগুলো মেনে নিয়ে বিয়ের একটি দিণক্ষণ ঠিক করে।
কিছুদিন পরেই বাবুল মিয়ার বড় মেয়ের বিয়ে। বাবুল মিয়ার টেনশন বেড়ে গেছে। ছেলেপক্ষের দাবীগুলো পুরণ করতে প্রায় ২ লাখ টাকার বেশী খরচ হবে। সামান্য মুরগী ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া এত টাকা কিভাবে জোগাড় করবে?
বাবুল মিয়া তার পয়সাওয়ালা আত্বীয় স্বজন, পাড়ার বিত্তশালী, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বার ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়ীতে গিয়ে টাকা সংগ্রহ করতে মাঠে নেমেছে। সবাই বাবুল মিয়ার আহবানে সাড়া দিয়েছে। সবটাকা জোগাড় না হওযায় বড় অংকের সুদের বিনিময়ে বাবুল মিয়াকে কিছু টাকা সংগ্রহ করতে হয়েছে।
কিছুদিন পরে--------------------
আজ বাবুল মিয়ার বড় মেয়ের বিয়ে। সব আয়োজন শেষ। যোহরের নামাযের আগেই রহিম মিয়ার বাড়ীতে ফার্নিচার ও খাবার পাঠিয়ে দিয়েছে। যোহরের পরে রহিম মিয়ার তার দলবল নিয়ে বেয়াইয়ের বাড়ী বাবুল মিয়ার বাড়ীতে উপস্থিত হয়েছে। খাওয়া-দাওয়া পর্ব শেষ করে আকদ পড়ানোর পর বাবুল মিয়া কাঁদতে কাঁদতে তার বড় মেয়েকে রহিম মিয়ার পুত্রের হাতে তুলে দেয়।
কিছুদিন পরে----------------
বাবুল মিয়াকে বড় মেয়ের শশুরবাড়ীতে আম-কাঠাল-তরমুজ-খেজুরের রসসহ পিঠা দিতে হবে।
আরো কিছুদিন পরে---------------
রমজান মাস শুরু হয়েছে। বাবুল মিয়াকে বড় মেয়ের শশুরবাড়ীতে ইফতারী দিতে হবে। ঈদের আগে মেয়ের জামাই, শশুর-শাশুড়ী, নদন-দেবর ও মেয়ের জন্য কাপড় দিতে হবে। জামাইয়ের পক্ষ থেকে বাবুল মিয়ার কপালে কিছু জুটবে না।
আরো কিছু দিন পরে----------------
কোরবানীর ঈদের আগে বাবুল মিয়াকে বড় মেয়ের শশুরবাড়ীতে একটি ছাগল পাঠাতে হবে। ঈদের দিন মসলা-রান্না করা মাংস, পরোটা-পিঠা পাঠাতে হবে।
আরো কিছু দিন পরে----------------
বাবুল মিয়ার বড় মেয়ের একটি ছেলে বা মেয়ে জন্মগ্রহন করবে। এই খুশীতে বাবুল মিয়াকে রহিম মিয়ার পরিবারের জন্য রান্নাকরা ভাত-তরকারী পাঠাতে হবে। নাতী/নাতনীর জন্য দোলনা, কাপড় ও প্রসাধনী পাঠাতে হবে।
এই হচ্ছে কন্যা দায়গ্রস্থ বাবুল মিয়াদের কন্যা জন্মদানের শাস্তি। যারা বড় লোক তাদের শাস্তির পরিমান আরো বড়। এই শাস্তি থেকে গরীব-ধনী কেউ রেহায় পায় না। টাকা থাক বা না থাক দিতে হবে। না দিলে যে কিপটা বলবে। খোটা দিবে। সমাজে মুখ দেখাবে কি করে?
যুগের পর যুগ ধরে এই প্রথা চলে আসছে। কন্যাকে সুখে রাখতে গিয়ে বাবুল মিয়ারা আজ দিশেহারা। অন্যদিকে রহিম মিয়ারা আনন্দে সব কিছু গ্রহন করে চলেছে।
বিয়েতে ও বিয়ের পরে দেয়া-নেয়ার এই ট্রেডিশান থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে। তরুন সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। বিয়ে করতে গিয়ে উভয়পক্ষ যাতে সর্বশান্ত না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০২
সিটিজি৪বিডি বলেছেন: যৌতুকের বিরুদ্ধে আইন আছে। কিন্তু আইনের সঠিক প্রয়োগ হয় বলেই এই অবস্থা।
২| ২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৮
নক্ষত্রের আমি বলেছেন: বাবুল/ রহিম মিঞার সন্তানরা যদি নিজেদেরকে বদলাতে পারে তবেই না এই ট্রেডিশন থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।
২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০০
সিটিজি৪বিডি বলেছেন: এই সন্তানেরা বাবা-মার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। তাদের সেই সাহস নেই।
৩| ২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০০
সানফ্লাওয়ার বলেছেন: এই প্রথা থেকে আমরা বেড়িয়ে আসতে পারবো কিনা জানি না। তবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যাতে বেড়িয়ে আসতে পারে তার জন্য এখন থেকেই তাদের উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।
২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৬
সিটিজি৪বিডি বলেছেন: তরুন সমাজ এখন শিক্ষা জীবন পার করতেই ত্রিশে গিয়ে পৌছে। চাকরী করে বিয়ের টাকা জোগাড় করতেই আরো কিছু বছর অপেক্ষা করতে হয়--------------------বাবা-মারা ও চান না যে তাদের সন্তান কিছু ছাড়া বিয়ে করুক----------------এই হচ্ছে বর্তমান অবস্থা-খুব অল্প পরিমান টাকা খরচ করে বিয়ের কাজটি সম্পর্ন করতে পারলে উভয় পক্ষের লাভবান হতো।
৪| ২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৫
মাইন রানা বলেছেন: ইসলাম থেকে যত দূরে যাবে সমাজে এই ধরনের অপসংস্কৃতি তত বাড়বে।
২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৮
সিটিজি৪বিডি বলেছেন: দর কষাকষি করতে গিয়ে উভয়পক্ষের টেনশন বেড়ে যায়। তারপরেও ওদের শিক্ষা হয় না।
৫| ২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৭
এ সামাদ বলেছেন: আমি শ্বশুর বাড়ী থেকে শুধু আমার বউকে ছাড়া আর কিছুই নেয়নি।
মামা শ্বশুর ঘড়ি নিয়ে হাতে পড়িয়ে দিতে চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম আমি ঘড়ি নিতে আসিনি।
যা নিতে এসেছি সেটা দেন চলে যায়।
শুনে সবাই হেসে উঠেছিল।
২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২১
সিটিজি৪বিডি বলেছেন: সবাই যদি আপনার মত হতো------------------------তাহলে আর বাবুল মিয়াদেরকে কাঁদতে হতো না।
৬| ২৬ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
আমিনুর রহমান বলেছেন:
একে বলে উপহার বলে যৌতুক না
সত্যিই খুব দুঃখজনক এই ট্রাডিশন শুধু অশিক্ষিত সমাজেই নয় শিক্ষিত সমাজেও প্রচলিত আছে। একটা কথা প্রচলিত আছে প্রথম সন্তান যার হয় কন্যা সে নাকি ভাগ্যবান পিতা একটু আমাদের দেশে কন্যা সন্তান হওয়া মানে দায়গ্রস্ত হয়ে পড়া
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কথিত মুসলিম নামধারন কারী হওয়ার পরিণতি!!!!!
ইসলামের প্রকৃত নিয়ম বিধানে যৌতুক হারাম। বরং পুরুষকে যোগ্য হয়ে কণ্যাকে মোহরানা দিয়ে গ্রহণ করতে হয়। নারীর অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা এবং অধিকারকে সুরক্ষিত করা হয়েছে।
অথচ আজ কন্যা দায় হয়ে গেছে!!!!!!!!!!
ফিরে এসো সবে ইসলামের কল্যানের পথে। থাকবে এমন কোন কান্নার ইতিহাস।