ত্রৈধ বিন্দু

২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:০৭

১।
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে/যেখানে
নদী এসে থেমে গেছে....
"তুমি থামবা?" বিরক্ত হয়ে বলল
সারিকা ।
কেন আমি কি খারাপ গাই?"বলল শুভ্র
। একটু কষ্ট পেয়েছে তাই ।।
"হ্যা চরম খারাপ । বমি আসে শুনলে ।"
বলে মুখটা ঘুরিয়ে নিলো ।
ঠিক আছে আর গাইবো না । কথাটা বলে
শুভ্র চলে গেল । বারান্দায় বসে আছে
দুইজন । কলেজে পড়ার সময় মেয়েরা
কত গান শুনতে চাইত শুভ্রর কাছে ।
শুভ্র শোনাতো না । ও ভেবে রেখেছিলো
একবারে বিয়ে করে বৌকেই শোনাবে গান
। কিন্তু বৌ তার একদম বেরসিক ।
একটা সশব্দে দীর্ঘশ্বাস ফেলল । অন্য
সময় হলে সারিকা বিরক্ত হত কিন্তু ও
কি যেন ভাবছে ।
২।
-পার্থ একটা গান শোনাও না ।
-মুড নেই ।
-কি হইছে?
-কিছু না ।
-মানে? কি হইছে বলো?
-বলবো? রাখবে?
-অবশ্যই ।
-সারিকা, ইউ হ্যাভ টু লিভ মি ।
তোমার সাথে আমার থাকা টোটালী
ইম্পসিবল ।
এরপর আর পার্থের সাথে কথা হয় নি
সারিকার ।
অনেক গুলো বছর কেটে গেছে । জীবনে
এসেছে শুভ্র । শুভ্র কে আকড়ে ধরে
বাকি জীবন কাটানো যেত । ছেলেটা
ওকে অনেক ভাল বাসে । কিন্তু পারে না
সারিকা । একদম আনরোমান্টিক লাগে
শুভ্র কে ।। কিন্তু এভাবে আর
কতদিন?
৩।
একঘন্টা হয়ে যাচ্ছে সারিকা দরজা
খুলছে না । বিরক্তির বদলে টেনশন
লাগছে শুভ্রর । কি হল?
একি রক্ত? রক্ত কেন?
শুভ্রর সেবাতে এবারের মত বেচে গেল
সারিকা । বড় কোনো ক্ষতি হলনা ।
-শুভ্র?
-বল সারা!
-তুমি তো জানো আমি এখনো পার্থকে
ভালবাসি তাও কেন ভালবাসো?
-কারণ আমি জানি তুমি একদিন আমার
হবে ।।
তারপর থেকে আস্তে আস্তে শুভ্র আর
সারিকার সম্পর্ক ভাল হতে লাগল ।
সারিকা ওকে কি ভালবাসতে শুরু করল?
৪।
ছয় মাস পরের কথা ।
আজ শুভ্র আর সারিকার দ্বিতীয়
বিবাহবার্ষিকী । সারিকার জন্য শুভ্র
তৃতীয় বারের মত ব্ল্যাকরোজ কিনেছে
। ওর ইচ্ছা ছিলো বাসর রাতে তার
বৌকে ব্ল্যাকরোজ দিবে । কিন্তু পারে
নি । প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতেও পারেনি
। এবার দিবেই । যে করেই হোক ।
ঘরে ঢুকেই যা দেখল তার জন্য প্রস্তুত
ছিলো না ও । সারিকা গলায় দড়ি দিয়ে
ফ্যানের সাথে ঝুলছে । পাশে একটা চিঠি
। লেখা শুভ্র পারলে ক্ষমা করে দিও ।
শুভ্র জানে এখন কি করবে সে ।
সারিকাকে নামিয়ে ঠোটে একটা চুমু দিল
। ব্ল্যাকরোজ আর চিঠিটা আগুনে
পোড়া দিয়ে পুলিশে ফোন দিলো ।
৫।
এক সপ্তাহ পর
ফাসি দেয়ার জন্য শুভ্রকে ফাসিকাঠে
দাড় করানো হয়েছে । মুখে কালো কাপড়
পড়ানো । মানসিক নির্যাতন করে
স্ত্রীকে হত্যার কারণে তাকে ফাসি
দেয়া হয়েছে ।
শুভ্র একটা অদ্ভুত গন্ধ পাচ্ছে ।
গোলাপফুল আর কাগজ পোড়া গন্ধ । যে
কোনো মূহুর্তে পায়ের নিচের পাটাতন
সড়ে যাবে । সারিকাকে বলেছিলো সব
কষ্ট ভাগ করে নেবে শুভ্র । কথাটা
রাখতে চলেছে ও ।
#CNOS

২ টি +০/-০