![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খেলা করি আমার বিছানায় সাদা চাদরে
আমি খেলা করি আমার আলোহীন বন্ধ্যা সময়ে।
এক পা দু পা হাঁটি, হেঁটে যাই অবিরাম
এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঝুলন্ত পেন্ডলামের মত
আমার চারকোনা ঘরের ভেতর
যতক্ষণ না ক্লান্তি আমাকে আচ্ছন্ন করে।
আমি বলে যাই না বলা যত কথা
নিস্তব্ধ কান পেতে শোনে আমার সাদা দেয়াল।
কি গভীর মনোযোগ, কি অসীম ধৈর্য,
যেন রাইখস্ট্যাগ শুনছে হিটলারের ভাষণ।
আমি জীবন শুনি ঘড়ির কাঁটায়
দেয়ালে টাঙ্গানো ঘড়ি টিক টিক অবিরাম,
যেন নিঃসঙ্গ নিস্তব্ধ জীবনের একমাত্র প্রাণ
মূল্যহীন সময়ের মাঝে বলে যায় এখনো জীবন।
পৃথিবীকে দেখি আমার ছোট্ট খোলা জানালায়
ঘোলা কাঁচে নাক চেপে পুরো পৃথিবীটাই চেনা যায়,
ম্যাপল পাতার ফাঁকে ফাঁকে এক চিলতে আকাশ
আমার সকাল দুপুর রাত, দীর্ঘশ্বাস।
আমি স্নান করি অস্তমিত সূর্যের আলোয়
ক্লান্ত যখন সে এসে থামে শেষ ঘুলঘুলির ফাঁকে।
দিনশেষে খন্ড-বিখন্ড এলিয়ে পড়ে আমার ঘরে
ক্ষুদ্র সোনালী বর্শার মত বিদ্ধ করে আমাকে।
যখন একাকীত্ব প্রবল হয় আমার সত্ত্বায়
প্রদীপ জ্বেলে দেই ঘরের কোনে
বিশ্বস্ত ছায়া-সঙ্গীরা ঘিরে ধরে আমাকে,
আমার নিজেরই ছায়া, ধূসর আঁধার;
আলোতেই জন্ম অথচ আলোর বিপরীতে।
তবুও স্বপ্ন দেখি কোন সূর্য উঠা ভোরে
ঘুম ভাঙ্গা চোখে দেখবো দাঁড়িয়ে কেউ শিয়রে
অথবা স্বর্ণঝরা বিকেলে করাঘাত মৃদু দুয়ারে
সুবাসিত মুক্তি নিয়ে, এসে দাঁড়াবে সে এলোচুলে
হাত ধরে টেনে নেবে আমায় আকাশের ছাদের নিচে
আলোয় ঝলসে যাবে চোখ, বাতাশের চাপ নাকে মুখে।
আবার প্রাণভরে দেখব আমি মেঘেদের যুদ্ধ
প্রজাপতির ডানায় রংধনুর নাচন, বৃষ্টির ছন্দ।
দু হাত ভরে তুলব মালা গাঁথার ফুল; অগুনিত-
রাত কেটে ভোর হবে খসে পড়া তারাদের গুনে
হাতে হাত রেখে পাশাপাশি রুপকথা সময়
আর সেই স্পর্শ, ভালবাসা স্পর্শ, দু-দন্ড আশ্রয়।।
---------------------------------------------------------
(আমি কবি নই। প্রায় ৩ বছর আগে লেখা আমার জীবনের ৫ম আর এখন পর্যন্ত শেষ কবিতা এটি। দেশ ছাড়ার পর দীর্ঘদিনের জন্য বিছানায় অসুস্থ পড়ে ছিলাম একা, তখন আমার জীবনে প্রচণ্ড বাস্তব এই কবিতাটি লিখেছিলাম। আজ যদিও আমি অসুস্থ নই, দৃশ্যপট খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।
আর এই কবিতাটি ছিল ব্লগস্ফিয়ারে আমার প্রথম পোস্ট এবং অবশ্যই শেষ পোষ্ট প্রায় বছর খানেকের জন্য।)
©somewhere in net ltd.