নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
* মুসলিম আস্তিক হলে মঙ্গলের জন্য সব কিছু চাইতে হবে আল্লাহর কাছে। তার জন্য নামাজ আছে, দোয়া আছে।
* নন মুসিলম আস্তিক হলে চাইতে হবে তার স্রষ্টার কাছে। তবে কোন যাত্রার (যেমন - রথ যাত্রা) মাধ্যমে যদি কল্যাণ, মঙ্গল কামনা করার নির্দেশনা থাকে তাহলে সেটা ভিন্ন ব্যপার। কিন্তু সেটা একটা জাতির নববর্ষের উৎসবে অনুপ্রবেশ করানো ঠিক হবে না।
* নাস্তিক/মুক্তমনা তো সব কিছু বিশ্বাস করে তার যুক্তি, বিজ্ঞান দিয়ে। কাজেই তার জন্য তো প্রকৃতির কাছে মঙ্গল কামনা করা বা নতুন বছরে ভালো চাওয়ার কিছু নেই। তাও সেখানে মুখোশ, পেঁচার মত জড় পদার্থের ব্যবহার! বলা যায় অযৌ্ক্তিক একটা কান্ড।
তাই বলা যায়, মঙ্গল শোভাযাত্রা করলে আস্তিক আর নাস্তিকের বৈশিষ্ট্য চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হবে! মুখোশ, পেঁচাবিহীন বৈশাখী(মঙ্গল না বলে) শোভাযাত্রা করলে আস্তিক, নাস্তিক দুই পক্ষের স্বার্থই রক্ষা হয়!
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ২:৪১
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: এসব বলতে গেলে দেশ বিরোধী, চেতনা বিরোধী, রাজাকার শুনতে হয়। ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৩:২৭
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
সুস্থ ধারার যে কোন সাংস্কৃতিক চর্চাকে আমাদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন। এটি বিদেশি বা স্বদেশী যাই হোক না কেন। আমরা যে নীতি ও আদর্শ বিশ্বাস করি তা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার, এতে সমাজের কিছু যায় আসে না। সমস্যা দেখা দেয় তখনই যখন আমরা নিজের ইচ্ছাকে জোর করে সমাজে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করি। এটা অন্যায়। এতে সমাজে বিভাজন দেখা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ বেড়ে যায় ফলে সমাজে শান্তি বিনষ্ট হয়। একুশ শতকের বিশ্বায়নের এ যুগে জোর করে নিজের পছন্দ-অপছন্দ অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। মানুষ তা শুনতে বাধ্য নয়।
কালচার/সাংস্কৃতিক চর্চাটা আসে মানুষের ভালবাসা ও দীর্ঘ দিন থেকে সমাজে প্রচলিত অভ্যাস থেকে। এজন্য জোর করে কোন কালচার/সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া যায় না, আবার জোর করে মানুষের নিজস্ব কালচার/সংস্কৃতি থেকে বের করে আনা যায় না। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা ও বিনোদন মানুষের বুদ্ধিভিক্তিক জ্ঞানকে বিকশিত করে, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক দৃঢ় করে। সমাজকে পরিশুদ্ধ করে। পৃথিবীর উন্নত ও সভ্য দেশগুলো এভাবেই আজ এগিয়ে যাচ্ছে আরো উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে। তারা নিজেদের মতামত কারো উপর চাপিয়ে দেয় না; বরং অন্যের পছন্দ অপছন্দকে সম্মান দেয়, সহযোগিতা করে। এতে সমাজে পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা অটুট থাকে।
...............শুভ নববর্ষ।
.............................ব্লগে স্বাগতম।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৩:৩০
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: কিন্তু আপনি যখন কোন বিষয়ে আপত্তি জানাবেন আর সেটা নিয়ে আরেক জন গোঁয়ার্তুমি করবে তখন সেটাকে বলা যায় অন্য উদ্দেশ্য আছে।
৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৫:৫০
চাঁদগাজী বলেছেন:
প্যারেড না শোভাযাত্রায় মানুষ তাদের ভালো লাগার পোষ্টার, প্লাকার্ড, গাড়ীঘোড়া, পোশাক ইত্যাদি প্রদর্শন করেন; কেহ কিছু চাচ্ছে না, কেহ কিছু পাচ্ছে না; শ্রেফ আনন্দ।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৬:২৯
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: আপনি বলছেন কেউ কিছু চাইছে না, কিন্তু তারা বলছে অশুভ কে জয় করতে মঙ্গল শোভাযাত্রা। তারা বলছে লক্ষ্মীপেঁচায় সমৃদ্ধি, গাজী ও বাঘ দুঃসময়ের কাণ্ডারি।
৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:০১
ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ বলেছেন: @ দপ্তরবিহীন মন্ত্রী- আপনার/আপনাদের জন্য সহানুভূতি। বাংলা নববর্ষ ও ইংরেজী নববর্ষ আসলেই আপনাদের অস্থিরতা/ছটফটানি বেড়ে যায়। তখন এইসব ম্যাওপ্যাও পোস্ট প্রসব করেন। আপনারা Religion এবং Culture এর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে অক্ষম।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২১
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: জ্বি। তাইতো আপনারা অনেক জ্ঞানী। তবে সংখ্যায় এখনো অনেক কম।
৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:০৬
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সহমত।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২১
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৪৫
হাফিজ রাহমান বলেছেন: মন্ত্রী মহোদয় ! আপনার পোস্টটা চমৎকার হয়েছে। এ জন্য আপনাকে এক সাগর মুগ্ধতা। সাথে প্রতি নবসেকেন্ডের শুভেচ্ছা। একটা সংযুক্তি দেয়ার লোভ সামলাতে পারছি না। তাই আপনার পোস্টের একটি সংযুক্তি দিলাম।
এসো হে বৈশাখ ! এসে দেখো !!
সূচনা কথা
বৈশাখ তুমি সত্যিই এসো। এসে দেখো তোমার নামে আমাদের এ বাংলায় কি হচ্ছে ? তুমি যদি অনুভূতিপ্রবণ প্রাণযুক্ত কিছু হতে, তুমি যদি স্বতন্ত্র কোনো সত্তার ধারক হতে তবে তোমাকে নিয়ে যা হয়েছে হবে তাতে তোমার আক্ষেপের সীমা থাকতো না। দুঃখে হয়তো তোমার চোখে জল এসে যেতো।
বৈশাখ নামের ব্যবচ্ছেদ
বৈশাখ এখন একটি নাম। এ নামে আপাতত আমাদের আপত্তি থাকার কথা নয়। নাম সে তো নামই। পরিচয়ের মাধ্যম। কোনো কিছুর পরিচয় তুলে ধরতে নামের জুড়ি নেই। নামকরণে অবশ্য আবেগ, অনুভূতি, বিশ্বাস ইত্যাকার নানা বিষয় আষয়ের বিরাট দখল থাকে। কখনো আবার অপরিকল্পিতভাবেই নামের সৃষ্টি হয়। সনাতনী ধর্মালম্বীদের বিশেষ ধর্মীয় শব্দ যোগে আমাদের দেশে জায়গা-অঞ্চলের নামের অভাব নেই। কারণ ইতিহাস বলে, এ অঞ্চল একসময় সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের অভয়ারণ্য ছিল। এ দেশের সিংহভাগ মুসলিমের বংশপীঠিকা ধরে এগুতে থাকলে একসময় সনাতনী কিংবা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নাম চলে আসবে। এ কারণে ভারতে ঘর ওয়াপেসি নামে একটি গ্রুপ দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তারা বলে, মুসলিম ! তুমি তো আমাদের। তুমি আপন ঘরে চলে এসো। মুসলিমদেরকে আপন (?) ঘরে ফিরিয়ে নিতে বেশ কসরত করে যাচ্ছে তারা। মুসলিমরা আঁধার থেকে আলোর পথে এসেছে। আবার আঁধারে ফিরে যাবে ? মুসলিমরা এতোটা বোকা হয়তো এখনো হয় নি। নাম বিষয়ে কথা হচ্ছিলো। বৈশাখ খণ্ডিত কিছু সময়ের একটি নাম মাত্র। বৈশাখ নামের যে সময়গুলো চলে যায় তা আর ফিরে আসে না। শুধু নামটি পরবর্তীতে আসা কিছু খণ্ডিত সময়ের সাথে যুক্ত হয়। বৈশাখ নামকরণেও সনাতনী ধর্মাবলম্বীদে ঘরোয়া বিশ্বাসের ছাপ পড়েছে। কারণ বৈশাখ মানে বিশাখা সম্বন্ধীয়। বিশাখার আবিধানিক অর্থ কাণ্ড বা শাখাহীন বৃক্ষ। হিন্দু দেবতা ব্রহ্মার পুত্র দক্ষ। এ দক্ষের কন্যা হলো বিশাখা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এ বিশাখা দেবির নাম থেকেই বৈশাখ নামের সৃষ্টি। অন্য একটি সূত্র মতে বিশাখা বুদ্ধের বিশিষ্ট এক নারী শিষ্যের নাম। হতে পারে এ নাম হতে বৈশাখ নামের সৃষ্টি। এখন এসো হে বৈশাখ বলে শুধু নতুন একটি মাসকে আহ্বান করা হচ্ছে না কি বিশাখা দেবী বা দেবী বিষয়ক কোনো কিছুকে আহ্বান করা হচ্ছে সেটা বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন। কবিতাটি কোনো মুসলিম রচিত নয়। এটি কবি রবি ঠাকুর রচিত একটি কবিতা। তিনি ব্রহ্ম ধর্মালম্বী ছিলেন। তিনি তার বিশ্বাস নিয়ে কবিতা লিখেছেন এবং বৈশাখকে ডেকেছেন। একজন রবি ঠাকুরের বিশ্বাসে গড়া কবিতা তো আমরা মুসলিমরা পাঠ করতে পারি না।
মঙ্গলশোভাযাত্রা জিনিসটা কি ?
(ক) মঙ্গল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে। ১। কল্যাণ ২। সাপ্তাহিক দিবস নাম। ৩। সৌরজগতের একটি গ্রহের নাম। সাধারণত মঙ্গলের এ তিনটি অর্থই ব্যবহৃত হয়। তবে মঙ্গল শব্দটির শক্তিশালী একটি ধর্মীয় দিক রয়েছে। সনাতনী ধর্মাচারে মঙ্গল শব্দের বহু কীর্তি বিদ্যমান। এবার দেখা যাক, হিন্দু ধর্মাচারে মঙ্গল শব্দের ধর্মীয় রূপ-রেখা কি ?
১। মূর্তিপূজক সম্প্রদায়ের নিকট মঙ্গলদেবতা নামে একজন দেবতা রয়েছে। মঙ্গল হলো, যৌনতা, যুদ্ধ এবং শক্তির দেবতা।
২। হিন্দু ধর্মের মধ্যযুগীয় আখ্যান কবিতাকে মঙ্গলকাব্য নামে অভিহিত করা হয়। যে কাব্যে দেবতাদের আরাধনা হয়, মাহাত্ম্য ও গুণকীর্তন করা হয়, যে কাব্য শ্রবণে মঙ্গল হয় এবং যে কাব্য গৃহে রক্ষিত হলে মঙ্গল হয় তাকেই মঙ্গলকাব্য নামে অভিহিত করা হয়। মঙ্গলকাব্য আবার তিন শাখায় বিভক্ত। মনসামঙ্গল, চণ্ডিমঙ্গল ও অন্যদামঙ্গল।
৩। পূজোর সময় যে পাত্র ব্যবহার করা হয় তাকে বলা হয় মঙ্গলঘট।
৪। বিশেষ পূজার জন্য যে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয় তাকে বলা হয় মঙ্গলপ্রদীপ।
৫। পূজার সময় মঙ্গলপ্রদীপ ঘুরিয়ে যে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটানো হয় তাকে বলা হয় মঙ্গল আরতি।
৬। হিন্দু ধর্মাচারে বিশেষ একটি পূজা রয়েছে যার নাম মঙ্গল পুজা।
৭। হিন্দু ধর্মে বিবাহের প্রথম আচারের নাম হলো মঙ্গলাচরণ।
৮। হিন্দু ধর্মে বিবাহকালে সূর্যোদয়ের পূর্বে বর কণেকে চিড়ে ও দধি আহার করানো হয়, যাকে দধিমঙ্গল নামে অভিহিত করা হয়।
৯। হিন্দু ধর্ম মতে বিপদ হতে রক্ষাকামনায় প্রিয়জনের মণিবন্ধে যে সূত্র বেঁধে দেয়া হয় তাকে বলা হয় মঙ্গলসূত্র বা রাখি।
১০। সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষে যে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় তাকে বলা হয় মঙ্গলশোভাযাত্রা।
(খ) শোভা অর্থ সৌন্দর্য, কান্তি, বাহার, সৌন্দর্যের বা উজ্জ্বলতার বিকাশ।
(গ) যাত্রা অর্থ গমন, প্রস্থান, নির্গমন, অতিবাহন, যাপন, নির্বাহ, দেবতার উৎসবাদি। শোভাযাত্রা মানে বহুলোকের একত্রে সমারোহের সহিত গমন।
যাত্রা শব্দটির আভিধানিক অর্থের মাঝেই হিন্দুধর্মীয় অর্থ বিদ্যমান। উইকিপিডিয়া যাত্রা শব্দটির ধর্মীয় রূপটিকে আরো পরিষ্কার করে দিয়েছে। উইকিপিডিয়া বলছ, যাত্রা শব্দের ইংরেজি রূপ হলো Yatra । সংস্কৃতি ভাষায় বলা হয় यात्रा । বাংলায় আমরা লিখি যাত্রা। যাত্রার সংজ্ঞায় উইকিপিডিয়া বলছে, Yātrā (Sanskrit: यात्रा, 'journey', 'procession' , in Hinduism and other Indian religions, generally means pilgrimage to holy places such as confluences of sacred rivers, places associated with Hindu epics such as the Mahabharata and Ramayana, and other sacred pilgrimage sites. (https://en.wikipedia.org/wiki/Yatra)
অর্থাৎ যাত্রা শব্দটি ব্যবহৃত হয় সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কোনো কাজে গমনার্থে। সুতরাং মোটামোটি নিশ্চিত করেই বলা যায়, মঙ্গলশোভাযাত্রা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি বিশেষ ধর্মীয় অনুষঙ্গ। প্রয়োজনে নিচের লিংকটিতে গিয়ে দেখুন সনানতনী ধর্মাবলম্বীদের মঙ্গলশোভাযাত্রার একটি চিত্র। তাতে সম্মুখ ভাগের ব্যানারে লেখা আছে, ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষে মঙ্গলশোভাযাত্রা’। সচেতন বোদ্ধাদের বোধ হয় অতিরিক্ত আর প্রমাণের প্রয়োজন হবে না। Click This Link
এসব সূত্র সামনে রেখে কি বলা সম্ভব মঙ্গলশোভাযাত্রা একটি অসাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠান ?
মঙ্গলশোভাযাত্রায় বাঘ-পেঁচার মূর্তি কেন ?
অনেক ভাই বলে থাকেন, মঙ্গলশোভাযাত্রায় ব্যবহৃত নির্দিষ্ট পশু পাখির প্রতীকগুলো এ দেশের ন্যাশনালিটি ধারণ করে। আসলে কি তাই ! ঢাবির চারুকলা অনুষদের ডিন ড. নিসার হোসেন দৈনিক সমকালে দেয়া একটি সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ১৯৮৯ সালের প্রথম শোভাযাত্রার ঘোড়া ও বিশাল বাঘের মুখ এবারের শোভাযাত্রায় থাকছে। থাকছে সমৃদ্ধির প্রতীক হাতি। (http://bit.ly/2nMISkj)
ডিন মহোদয় বলছেন, হাতি হচ্ছে সমৃদ্ধির প্রতীক। আর আমরা বলছি, না, এটা আবহমান গ্রাম বাংলার প্রতীক। কারটা সত্য ? ভারতীয় (http://bit.ly/2nsiHvU) এ লিংকটিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, হিন্দু ধর্ম মতে গনেশ তথা হাতি হচ্ছে সমৃদ্ধির প্রতীক।
https://www.facebook.com/noyonchatterjee5/photos/a.296717957396541.1073741828.249163178818686/353737258361277/?type=3&theater
১৪.৪.’১৪ ইং তারিখে ‘লক্ষ্মীপেঁচায় সমৃদ্ধি, গাজী ও বাঘ দুঃসময়ের কাণ্ডারী’ শিরোনামে bdnews24.com এরঅনলাইন পোর্টালে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেখানে বলা হয়েছে লোকজ ঐতিহ্যের নানা প্রতীক নিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রত্যাশায় করা এই শোভাযাত্রায় স্থান পেয়েছে- মা ও শিশু, হাঁস ও মাছের ঝাঁক, বিড়ালের মুখে চিংড়ি, শখের হাঁড়ি। মঙ্গলযাত্রায় ছিল হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের দুঃসময়ের কাণ্ডারির প্রতীক হিসেবে ‘গাজী ও বাঘ’, সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে লক্ষ্মীপেঁচার পাশাপাশি শিশু হরিণ, মা ও শিশু, হাঁস ও মাছের ঝাঁক।
প্রতিবেদনটিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, সমৃদ্ধির প্রতীক হলো লক্ষ্মীপেঁচা। এর উপস্থাপনা ভঙ্গিতে প্রতীয়মান হয়, মঙ্গলশোভাযাত্রা একটি প্রার্থনামূলক ইবাদত। যাতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ কামনা করা হয়।
এক দিকে বলা হচ্ছে, এগুলো গ্রাম বাংলার লোকজ সংস্কৃতির ধারক। অন্য দিকে বলা হচ্ছে সমৃদ্ধির প্রতীক। যদি ধরে নিই, এগুলো গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির ধারক তহালে কথা হলো, আমাদের গ্রাম-বাংলায় একটা কুসংস্কার চালু আছে, `পেঁচা কুলক্ষণ বহন করে।’ এতে দেখা যাচ্ছে, পেঁচা এটা গ্রাম বাংলার কুসংস্কৃতির ধারক। কুসংস্কৃতি কি কোনো প্রচারের বিষয় হলো ? আর যদি বলি, পেঁচা সুলক্ষণ ও সমৃদ্ধির প্রতীক তাহলে বলবো, এটা হিন্দু বিশ্বাস। মুসলিম বিশ্বাসে এসবের কোনো স্থান নেই। কারণ হিন্দু বিশ্বাস মতে লক্ষ্মী দেবীর বাহন হলো পেঁচা। সে পেঁচা নাকি মঙ্গল ও সমৃদ্ধি বহন করে। সুতরাং এতে প্রতীয়মান হচ্ছে, মঙ্গলোশোভাযাত্রা ও তাতে ধারণকৃত মূর্তি মুখোশ সবই ভিনদেশীয় ও ভিনধর্মীয় সংস্কৃতি। এগুলোর সাথে বাংলাদেশ ও মুসলিমদের কোনো সম্পর্ক নেই।
https://bangla.bdnews 24.com/bangladesh/article772232.bdnews
মঙ্গলশোভাযাত্রায় ক্ষ্যাপা ষাড়ের মূর্তি ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। অথচ ক্ষ্যাপা ষাড় শিবের বাহন প্রতিকৃতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মঙ্গলশোভাযাত্রায় বাঘের মূর্তি-মুখোশ অতিমাত্রায় ব্যবহৃত হয়, যা দূর্গার বাহন প্রতিকৃতি নির্দেশ করে। একই সাথে হাতিও অতিমাত্রায় ব্যবহৃত হয় যা গনেশ দেবতা নির্দেশ করে। গনেশকে মঙ্গল মূর্তি হিসেবে বিশ্বাস করে হিন্দুরা। সে হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রায় গণেষের প্রতিকৃতি থাকা অত্যবশ্যক পর্যায়ের।
এছাড়া মঙ্গলশোভা যাত্রায় সূর্যের প্রতিকৃতি (মানুষের মাথার মত) অনেক বেশি দেখা যায়। এটা হচ্ছে হিন্দুদের সূর্য দেবতার প্রতিকৃতি। উইকিপিডিয়া বলছে- সূর্য হিন্দুধর্মের প্রধান সৌর দেবতা। হিন্দু ধর্মীয় সাহিত্যে সূর্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। কারণ সেই একমাত্র দেবতা যাঁকে মানুষ প্রত্যহ প্রত্যক্ষ করতে পারে। (Click This Link))
মঙ্গলশোভাযাত্রায় ব্যবহৃত এসকল প্রতিকৃতি হিন্দুধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে এসেছে। এ সম্পর্কে নিউইয়র্ক ইউনিভির্সিটি থেকে প্রকাশিত সালেক খান রচিত Title Performing the (imagi)nation: A Bangladesh Mise-en-scene নামক বইয়ের ২১৬ পৃষ্ঠায় মঙ্গলশোভাযাত্রা সম্পর্কে বলা আছে- People Marching in the parade also carry paiper mache portrits Depicting mythical figures and animals. These caracters Are taken from Hindu puja and rituals.
অর্থাৎ মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত নানা প্রকারের মূর্তিগুলো হিন্দুদের পূজা অনুষ্ঠান থেকে ব্যবহার করা হয়েছে।
মঙ্গলশোভাযাত্রার ইতিকথা
মঙ্গলশোভাযাত্রার সূচনা হয় ১৯৮৯ সালে। নামকরণ হয় ১৯৯৬ সালে। প্রশ্ন হলো, চারুকলা কেন এ আয়োজনের সূচনা করলো ? এবং সেটা বছরের সূচনা দিনে করতে হবে এ তত্ত্ব চারুকলা কোথায় পেল ? গ্রাম বাংলায় কি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এ ধরনের শোভাযাত্রার আয়োজন হতো ? ইতিহাস তো এ প্রশ্নের ইতিবাচক কোনো উত্তর দেয় না। তবে চারুকলা এ ব্যাপারটিতে কেন এতো প্রাগ্রাসর হলো ? অতীতে গ্রাম বাংলার কোথাও যদি এ ধরনের আয়োজন না হয়ে থাকে তাহলে সেটা তো বাংলার সংস্কৃতি হতে পারে না। চারুকলার নিজস্ব সংস্কৃতি হতে পারে। যদি প্রমাণিত হয় গ্রাম বাংলায় এ ধরনের শোভাযাত্রার আয়োজন হয়েছে। তবে প্রশ্ন হবে সেটা কোন সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি হিসেবে পালিত হয়েছে ? অনলাইন তথ্য বলছে, বছরের প্রথম দিন এভাবে শোভাযাত্রার আয়োজন করার কালচার ভারতের মারাঠী হিন্দুদের মাঝে চালু আছে। তাদের অনুষ্ঠানটির নাম Gudi Padwa (https://en.wikipedia.org/wiki/Gudi_Padwa)
এছাড়া ভারতীয় অন্যান্য জাতি সত্ত্বার মাঝেও বছরের প্রথম দিন শোভাযাত্রা বের করা নিয়ম চালু আছে। তবে সেগুলো কোন না কোন ধর্মীয় (হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সী) অনুষ্ঠান।
সংস্কৃতি কাকে বলে ?
একটা জাতির দীর্ঘদিনের জীবনাচরণের ভেতর দিয়ে যে মানবিক মূল্যবোধ সুন্দর ও কল্যাণের পথে এগিয়ে চলে তাই সংস্কৃতি। বিভিন্ন আচার-প্রথা, নিয়ম কানুন, বিশ্বাস সবই সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং কোনো বিষয় কোনো সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি হয়ে উঠতে হলে তার অস্তিত্ব ওই সম্প্রদায়ের মাঝে বিদ্যমান থাকতে হবে। অতএব মঙ্গলশোভাযাত্রার নামে যা কিছুর আয়োজন হচ্ছে তার কোন সূত্রই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বাঙ্গালী বা মুসলিম জাতি সত্তার মাঝে। তাহলে এটাকে কি করে গ্রহণীয় সংস্কৃতি হিসেবে অভিহিত করা যায়।
ভুল পথে মঙ্গলশোভাযাত্রার ইউনিস্কো যাত্রা !
ইউনিস্কোতে জায়গা করে নিতে সত্য মিথ্যা ও নীতিনৈতিকতার কোনো বালাই নেই। যে কোনো উপায়ে চমকে দেয়া কিছু পারফরমেন্স প্রেজেন্টেশন করতে পারলেই হলো। মঙ্গলশোভাযাত্রা বেচারা ইউনিস্কোতে প্রবেশাধিকার পেয়েছে। কিন্তু ইউনিস্কো মহোদয় তার জন্ম তারিখে গলদ করে ফেলেছেন। ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে কথিত মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের ইউনেস্কো। ইউনেস্কো কেন মঙ্গল শোভাযাত্রাকে Intangible Cultural Heritage হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে তার ঐতিহাসিক তাৎপর্য বয়ান করতে গিয়ে বলেছে,`the tradition of Mangal Shobhajatra began in 1989 when students, frustrated with having to live under military rule, wanted to bring people in the community hope for a better future.` (http://bit.ly/2oBrEnF)
অর্থাৎ এরশাদের মিলিটারি রুলের কারণে ছাত্ররা হতাশাগ্রস্ত ছিলো। ফলে ভবিষ্যত মঙ্গল কামনায় তারা এই মঙ্গল শোভাযাত্রার সূচনা করে।
কিন্তু ইউনিস্কো পরিবেশিত এ তথ্য সম্পূর্ণ ভুল। ইতিহাস বলছে, ১৯৮৯ সালে চারুকলার উদ্যোগে কথিত এই শোভাযাত্রা যখন শুরু হয়, তখন তার নাম মঙ্গলশোভাযাত্রা ছিলো না, ছিলো `বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা‘। মঙ্গলশোভাযাত্রা নাম করণ করা হয় ১৯৯৬ সালে। তখন মোটেও মিলিটারি শাসন ছিলো না, ছিলো গণতান্ত্রিক সরকার।- http://bit.ly/2nCQDJG,
হালখাতা পূজা একটি হিন্দুধর্মীয় অনুষ্ঠান
আমাদের দেশের কর্ণধারগণ বলেন, নববর্ষ উদযাপন বিষয়টি মূলত ব্যবসা বাণিজ্যে আমাদের অতীতের পণ্য বিনিময় ব্যবস্থা থেকে এসেছে। এর সাথে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্কটা সংস্কৃতির। তারা এ কথা বলে মূলত বর্ষবরণ থেকে সব ধরনের ধর্মীয় সম্পৃক্তিকেই নাকচ করতে চাচ্ছেন।
এবার লক্ষ্য করুন বর্ষবরণের সাথে হিন্দুধর্মের সম্পৃক্তি
হালখাতা অনুষ্ঠানের নামে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা অনুষ্ঠান। যাকে হালখাতা পূজা বা নতুন খাতা পূজা নামে অভিহিত করা হয়। হিন্দু ধর্মগ্রন্থে পূজার লিস্টে হালখাতা পূজাও বিদ্যমান রয়েছে। হিন্দুদের নিকট হালখাতা পূজা অনুষ্ঠানে বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর পূজা করা অবশ্য কর্তব্য। এমন কি এ পূজার সময় কি মন্ত্র পাঠ করতে হয় তাও সুনির্দিষ্ট। রবীন্দ্রনাথের জীবনী গ্রন্থেও এ হালখাতা পূজার বিবরণী পাওয়া যায়।
উইকিপিডিয়া বলছে, বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও ত্রিপুরা রাজ্যে "পয়লা বৈশাখ" দিনটি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় উৎসবের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। কলকাতার কালীঘাট মন্দির ও দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে এই দিন প্রচুর পূণ্যার্থী পূজা দেন এবং ব্যবসায়ীরা লক্ষ্মী-গণেশ ও হালখাতা পূজা করেন।
https://bn.wikipedia.org/wiki/বৈশাখ
বর্ষবরণের সাথে ইসলামের সম্পৃক্তি
বর্ষবরণের নামে কথিত এসব আনুষ্ঠানিকতার সাথে ইসলামের ইতিবাচক কোনো সম্পৃক্তি নেই। তবে নেতিবাচক সম্পৃক্তি আছে। ইসলাম এমন একটি সর্বজনীন ও সর্বব্যাপী আদর্শ যা সব বিষয়ে নাক গালানোর একচেটিয়া অধিকার রাখে। বর্ষবরণের গতি পথ, নৈতিকতা অনৈতিকতা এবং বৈধতা অবৈধতা নিয়ে কথা বলতে ইসলাম বাধ্য। সুতরাং ইসলাম পহেলা বৈশাখের নামে প্রচলিত বর্ষবরণের এটুজেট বিশ্লেষণ করে নীতিনির্ধারণীমূলক কথা বলবে এবং বলতে হবে। এটা ইসলাম ও ইসলামের ধারক বাহকদের নৈতিক দায়বদ্ধতা। পহেলা বৈশাখে নারী পুরুষের অবাধ চলাচল হয়। এ বিষয়ে কি ইসলামের বিধি নিষেধ নেই ? পহেলা বৈশাখে পর্দাবিধান চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। এ ব্যাপারটিতে কি ইসলামে কোনো কথা বলা নেই ? পহেলা বৈশাখে চরম আপত্তিকর পোষাকের প্রদর্শনী হয়। এ ব্যাপারে কি ইসলাম কথা বলে না ? পহেলা বৈশাখে জীবচিত্র ধারণ করা হয়। এ ব্যাপারে কি ইসলাম নীরবতা পালন করে ? পহেলা বৈশাখে ভিন্ন ধর্মের সাথে সাদৃশ্য অসংখ্য ধর্মীয় সংস্কৃতি লালন করা হয়। এ ব্যাপারে কি ইসলাম কিছুই বলে না ? তবে এর সাথে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই- এর কি ব্যাখ্যা ? সুতরাং পহেলা বৈশাখের সাথে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই- কথাটা সর্বৈব অপাংক্তেয় ও ভঙ্গুর।
মহাভারতে মঙ্গলযাত্রা
উপর লেভেল থেকে অবিরাম প্রচারণা চলে, মঙ্গলশোভাযাত্রা হিন্দু ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ নয়। অথচ মঙ্গলযাত্রার কথা হিন্দু ধর্মগ্রন্থ মহাভারতে রয়েছে। মহাভারতের দ্বিতীয় খণ্ডের ১০১ পৃষ্ঠায় মঙ্গলযাত্রা করার নির্দেশ দেয়া আছে। (সূত্র:http://bit.ly/2pauCn8)
বর্ষবরণ অসাম্প্রদায়িক উৎসব নয়
১৩-১৫ই এপ্রিল অনেক দেশেই বর্ষবরণ পালিত হয়। তবে সবগুলোই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। কোথাও বৌদ্ধ ধর্মীয়, কোথাও হিন্দু ধর্মীয় আবার কোথাও শিখ ধর্মীয়। ইসলামের সাথে এর বিন্দুমাত্র সংযুক্তি নেই।
https://en.wikipedia.org/wiki/Vaisakhi
রবী ঠাকুরের জীবনে পহেলা বৈশাখ পূজা
‘রবী জীবনী’র সপ্তম খণ্ডে রবীন্দ্র জীবনীকার প্রশান্তকুমার পাল লিখেছেন, ‘ওই বৎসর নববর্ষের দিনটি রবীন্দ্রনাথ শান্তি নিকেতনে ছিলেন, তাই প্রথানুযায়ী ছাত্র ও শিক্ষকদের নিয়ে মন্দিরে উপাসনা করে বর্ষবরণ করেন।’ এরপর উক্ত গ্রন্থের ২৫৮ পৃষ্ঠায় বর্ষশেষের উপাসনার কথা আছে। প্রশান্ত কুমার পাল লিখেছেন, ‘৩১ চৈত্র (শুক্র, ১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কলকাতার বহু অতিথি এবং ছাত্র ও শিক্ষকদের নিয়ে রবীন্দ্রনাথ বর্ষশেষের উপাসনা করেন।’ এতে দেখা যাচ্ছে, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ পহেলা বৈশাখকে পূজা হিসেবে পালন করতো। সেখানে আজকে রবীন্দ্রভক্তরা কোন যুক্তিতে এই দিবস পালনকে সেক্যুালার হিসেবে দাবি করে বুঝে আসে না।
নববর্ষ পালনে দুঃখ কষ্ট মুছে যাবে ?
অগ্নি উপাসক, হিন্দু, বৌদ্ধ ও উপজাতিদের বিশ্বাস হলো, এভাবে বছরের প্রথম দিনটি পালন করা হলে সারা বছরের জরা-দুঃখ-কষ্ট সব মুছে যাবে। বৌদ্ধরা বিশ্বাস করে পানি দিয়ে বৈসাবী খেললে তাদের জরা-দুঃখ দূরীভূত হয়ে তারা শুদ্ধ হয়ে যাবে। অগ্নি উপাসকদের বিশ্বাস হলো, ‘আগুন তাদের জরা-দুঃখ মুছে শুদ্ধ করে দেবে। এই বিশ্বাস হিন্দুদের মাঝেও সংক্রামিত। তাই দেখা যায়, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে যে গানটা গাওয়া হয় তাতে একটা পঙক্তি আছে- “মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা”। পঙক্তিটিতে স্পষ্টই বলা হচ্ছে, আগুন দিয়ে শুদ্ধ হওয়া যাবে। বস্তুত নববর্ষ অগ্নি উপাসকসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠান হওয়ার কারণেই প্রকৃত ইসলামীবেত্তারা কখনই এ অনুষ্ঠান পালনে অনুমতি বা স্বীকৃতি দেয়নি।
মঙ্গলশোভাযাত্রা কি আসলে ঐতিহ্যের পর্যায়ে পড়ে ?
২৭ বছর আগে, ১৯৮৯ সাল থেকে মঙ্গলশোভাযাত্রার সূচনা হয়। এত অল্প সময়ে কি কোনো কিছু ঐতিহ্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে ? ঐতিহ্যের মাঝে কি সময়ের ব্যবধান এতোটা সংকীর্ণ। একটা প্রজন্ম পার না হতেই তা ঐতিহ্যের রূপ নিলো। তবে এটা হিন্দুয়ানী ঐতিহ্যের পর্যায়ভুক্ত হতে পারে। কারণ তারা এটাকে সম্ভবত বহুকাল ধরেই পালন করে আসছে। সুতরাং মঙ্গলশোভাযাত্রা হিন্দুধর্মীয় ঐতিহ্য হতে পারে। কিন্তু বাঙ্গালী বা বাংলাদেশী ঐতিহ্য হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।
পহেলা বৈশাখে আরো যেসব পূজা উৎসব পালিত হয়
১. হিন্দুদের ঘটপূজা, গণেশ পূজা, সিদ্ধেশ্বরী পূজা, ঘোড়ামেলা, চৈত্রসংক্রান্তি পূজা-অর্চনা, চড়ক বা নীল পূজা বা শিবের উপাসনা ও সংশ্লিষ্ট মেলা, গম্ভীরা পূজা, কুমীরের পূজা, অগ্নিনৃত্য, বউমেলা, মঙ্গলযাত্রা এবং সূর্যপূজা।
২. ত্রিপুরাদের বৈশুখ মারমাদের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব।
৩. চাকমাদের বিজু উৎসব (ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমাদের পূজা উৎসবগুলোর সম্মিলিত নাম বৈসাবি)।
৪. হিন্দু ও বৌদ্ধদের উল্কিপূজা।
৫. অগ্নি পূজকদের নওরোজ।
সুতরাং মুসলমানরা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কোনো পূজা করতে পারে না। নাম তার যাই হোক।
পহেলা বৈশাখ তো মুসলমানরাই চালু করেছে !
অনেক ভাই বলেন, পহেলা বৈশাখ মোঘল আমল থেকে চালু হয়েছে। বাদশাহ আকবার এটা চালু করেছে। সে মুসলিম ছিল। হিন্দুরা তো এটা চালু করেনি। সুতরাং মুসলমানদের চালু করা বিষয় অনুসরণ করতে মুসলমানদের সমস্যা কোথায়? বাহ্যত বেশ যৌক্তিক প্রশ্ন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাদশা আকবর মুসলিম ছিলেন কি না ? এ প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমরা নিম্নে তার কিছু কার্যক্রম ও ধারণা বিশ্বাসের ফিরিস্তি তুলে ধরছি।
১. সম্রাট আকবর ইসলাম ধর্মের পরিবর্তে দীনে ইলাহী নামে নতুন এক ধর্মের প্রবর্তন করেন। এই নতুন ধর্মের প্রধান উপাদান ছিল সূর্যের উপাসনা। বাদশাহ প্রভাতে, দ্বিপ্রহরে, সন্ধ্যায় ও অর্ধরাত্রে বাধ্যতামূলকভাবে সূর্য পূজা করতেন। তিনি তিলক লাগাতেন ও পৈতা পরতেন। সূর্যোদয়ের সময় ও মধ্যরাত্রিতে নহবত ও নাকাড়া বাজান হতো। এই নতুন ধর্মে সূর্যের নাম উচ্চারণকালে 'জাল্লাত কুদরাতুহু' বলা হতো। বাদশাহ বিশ্বাস করতেন, সূর্য রাজা-বাদশাহদেরর অভিবাবক ও হিতাকাঙ্ক্ষী। তিনি তাই হিন্দুদের কাছ থেকে সূর্যকে বশীভূত করার মন্ত্র শিখেছিলেন। মাঝরাত্রে ও ভোরে তিনি এই মন্ত্র পাঠ করতেন। শিবরাতে তিনি যোগীদের আসরে সমস্ত রাত্রি বসে থাকতেন এবং বিশ্বাস করতেন, এতে আয়ু বৃদ্ধী পায়।
২. গৌতম নামের জনৈক ব্রাক্ষ্মনের কাছ থেকে বাদশাহ মূর্তি, সূর্য, আগুন, ব্রক্ষ্মা, মহামায়া, বিষ্ণু, কৃষ্ণ ও মহাদেব পূজার কায়দা কানুন শুনে বড়ই উৎফুল্ল হতেন এবং এসব গ্রহণও করতেন। উপরন্তু এই ধর্মে আগুন, পানি, গাছ, গাভীরও পূজা করা হত। নক্ষত্র পূজার ব্যাপারেও বাদশাহ অত্যধিক আগ্রহ প্রকাশ করতেন।
৩. হিন্দুদের পুনর্জন্মবাদে বিশ্বাস করাও ছিল এই ধর্মের কর্তব্য। সম্রাট আকবর হিন্দুদের পূনর্জন্মবাদে বিশ্বাস করতেন। মৃত্যুর পর তিনি পুনরায় অন্য কোন সিংহাসনে আরোহন করবেন বলে বিশ্বাস করতেন। ব্রাক্ষ্মনগণ তাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল, শক্তিশালী বাদশাহর শরীরে আত্মার জন্ম হয় এবং মহা মণীষীগণের আত্মা মৃত্যুর সময় মস্তকের তালু দিয়ে বের হয়ে যায়। এই ধারনার বশবর্তী হয়ে তিনি মাথার তালু টাক করে ফেলতেন এবং মস্তকের চারদিকে চুল রেখে দিতেন। বাদশাহ জৈন সাধুদের দ্বারা যথেষ্ট প্রভাবিত হয়েছিলেন। সাধু সঙ্গ লাভের পর হতে তার নিকট সব সময় এমনকি ভ্রমণের সময়েও একজন জৈন সাধু থাকত। জৈন ধর্ম অনুযায়ী বাদশাহ নিজেও মাংস ভক্ষণ ত্যাগ করেছিলেন।
৪. অগ্নিপূজকদের দ্বারাও বাদশাহ যথেষ্ট প্রভাবিত হয়েছিলেন। তার আদেশে দরবারের সন্মুখে সর্বক্ষণ অগ্নি প্রজ্জ্বলনের ব্যাবস্থা করা হয়। ঘন্টাধ্বনি প্রভৃতি গ্রহণ করা হয় খৃষ্টানদের নিকট থেকে। মোটকথা ইসলাম ছাড়া অন্য সব ধর্মই বাদশাহর চোখে সুন্দর মনে হত। তার চোখে সবচেয়ে বেশি সুন্দর মনে হতো হিন্দুধর্ম। তাই তার নতুন ধর্ম 'দ্বীন-ই-ইলাহির' বেশীর ভাগ উপাদানই গৃহীত হয়েছিল হিন্দুধর্ম হতে। তাই সঙ্গত কারণেই হিন্দু এবং রাজপুতদের নিকটই এই অদ্ভুত ধর্ম সমাদর লাভ করেছিল সবচাইতে বেশী। সম্ভবত বাদশাহ আকবেরর কাম্যও ছিল তাই।
৫. দীন-ই-ইলাহির মূলমন্ত্র ছিল ''লা ইলাহা ইল্লালাহু আকবারু খলিলুল্লাহì'' যারা নুতন এ ধর্মে দাখিল হত তাদেরকে এরূপ শপথ বাক্য উচ্চারন করতে হতো- ''আমি অমুকের পুত্র অমুক এতদিন বাপ দাদাদের অনুকরণে ইসলাম ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠত ছিলাম, এখন স্বেছ্ছায় ও সজ্ঞানে পূর্ব ধর্ম পরিত্যাগ করে 'দীন-ই-ইলাহি' গ্রহণ করছি এবং এই ধর্মের জন্য জীবন, সম্পদ ও সম্মান বিসর্জন দিতে প্রস্তুত আছি।''
এছাড়া আরো অসংখ্য ইসলাম বিরোধী কুফরী বিধান প্রচলিত ছিল বাদশাহ আকবরের দীনে ইলাহীতে। সুতরাং সম্রাট আকবরকে মুসলিম বলার কোনো সুযোগ নেই। উপরন্তু কোনো মুসলিম কোনো কিছুর প্রচলন করলেই তা পালনীয় হয়ে যায় না। বরং সেটাকে ইসলামের কষ্টিপাথরে যাচাই করে দেখতে হয় তা কতটুকু গ্রহণীয় আর কতটুকু বর্জনীয় Click This Link
তবে ঢাবির চারুকলা অনুষদে গোমাংস নিষিদ্ধ কেন ?
আচ্ছা ধরে নিলাম, চারুকলা নিরেট বাঙ্গালিয়ানা সংস্কৃতি লালনের উদ্দেশে মঙ্গলশোভাযাত্রার আয়োজন করে থাকে। এর সাথে হিন্দু ধর্মীয় সংস্কৃতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে চারুকলা অনুষদ ক্যান্টিনে গরুর মাংস নিষিদ্ধ কেন ? চারুকলার সকল শিক্ষার্থীই কি হিন্দু ? সংবাদের ভাষ্য মতে ১৪২৪ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখ শুক্রবার সাড়ে ৯টার দিকে মঙ্গলশোভাযাত্রা শেষে চারুকলা অনুষদের ক্যান্টিন থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে তেহারী পরিবেশন করা হয়। তেহারীতে গরুর মাংস ছিল জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ক্যান্টিনে ভাংচুর করে।
বৈশাখ উদযাপনে শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক সাগর হোসেন সোহাগ বলেন, ‘চারুকলা অনুষদে গরুর মাংস রান্না সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। কিন্তু ক্যান্টিন ম্যানেজার নাকি বিষয়টি জানেনই না। এটা কেমন কথা। না জেনে তিনি ক্যান্টিন পরিচালনা করছেন? তিনি পরিকল্পিতভাবেই এ কাজ করেছেন। আমাদের দাবি তাকে ক্যান্টিন থেকে বিতাড়িত করতে হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নিসার হোসেন বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। চারুকলার ক্যান্টিনের কখনো গরুর মাংস পরিবেশন করা হয় না। কিন্তু তারা এটি কেন করলো, সেটি তদন্ত করে দেখতে হবে। এর মধ্যে মনে হচ্ছে একটা দুরভিসন্ধি আছে। সে কোনোদিন তেহারি করে না। আজ কেন করলো সেটিও খতিয়ে দেখার বিষয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই শুনেছি যে, পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ভণ্ডুল করার একটা ষড়যন্ত্র চলছে। মনে হচ্ছে এ ঘটনাটি তারই একটি অংশ। বাংলা নববর্ষ- ১৪২৪ উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এটাতে একটি দুষ্টচক্রের ষড়যন্ত্র আছে। এটি খতিয়ে দেখা উচিত। এটাকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। খুব কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ডিনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তদন্ত স্বাপেক্ষে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায়।’ (http://m.risingbd.com/cat/news/221992/url)
যারা এতদিন পহেলা বৈশাখী পূজাকে ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব বলতো, মঙ্গলপূজাকে বাঙালীত্বের উৎসব বলতো তারাই আজকে গরুর মাংশের বিরোধীতা করছে। কেন ? এরা পেঁচার মধ্যে মঙ্গল খুঁজে পায়, এরা সূর্যদেবের মূর্তির মধ্যে মঙ্গল দর্শন করে, কিন্তু গরুর মাংশের মধ্যেই তাদের এলার্জি। কেন ? গরুর মাংস কি বাঙালী সংস্কৃতি না? এতে কি প্রতীয়মান হয় না চারুকলা আয়োজিত পুরো অনুষ্ঠানটিই হিন্দুধর্মীয় সংস্কৃতি লালন করে ? যে চারুকলা লক্ষীপেঁচার মধ্যে এতদিন মঙ্গল খুজেছে, সে আজ গরুর মাংশে ষড়যন্ত্র খুঁজে পেয়েছে। Click This Link
স্কুলে স্কুলে মঙ্গলশোভাযাত্রা পালন বাধ্যতামূলক ?
প্রতিটি স্কুলে নোটিশ পাঠিয়েছে প্রশাসন। বলেছে, বাধ্যতামূলকভাবে মঙ্গলশোভাযাত্রা করতে হবে। (http://bit.ly/2mLiTLs))।
এ দেশের সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে- কাউকে অন্য ধর্ম পালনে বাধ্য করা যাবে না। বিশেষত সংবিধানের মৌলিক অধিকার- `ধর্মীয় স্বাধীনতা‘ অংশের ৪১ এর ২ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে :
`কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী কোন ব্যক্তির নিজস্ব ধর্ম-সংক্রান্ত না হইলে তাঁহাকে কোন ধর্মীয় শিক্ষাগ্রহণ কিংবা কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উপাসনায় অংশগ্রহণ বা যোগদান করিতে হইবে না’। সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে সরকার এখন মুসলিম শিশু কিশোরদেরকে একটি বিশেষ ধর্মের ধর্মাচার পালনে বাধ্য করছে। শাসকই যদি সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখায় তবে আপামর জনসাধারণ কি করবে ?
মঙ্গলশোভাযাত্রার নামে চারুকলার ব্যবসা বাণিজ্য
মঙ্গলশোভাযাত্রার নামে তাদের ব্যবসায়িক আয়টাও কম নয়। একটা মুখোশ নিয়ে শোভাযাত্রায় হাঁটতে হলে খরচ করতে হয় ১৫শ’ থেকে ২০ হাজার টাকা। তাছাড়া ছোট আকারের মুখোশ রয়েছে যেগুলোর দাম ৬শ’ থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া পাখির দাম ৮০০ টাকা, সরার ৬০০ টাকা, ছবির দাম ২০০০ টাকা থেকে ১০০০০ টাকা। আর বড় আইটেমগুলোর মোটা দাম তো রয়েছেই।
তথ্যশালা :
https://www.facebook.com/noyonchatterjee5/posts/525005274567807
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২৪
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: অন্য একটা পোস্টে এই সংযুক্তি পড়েছি। ধন্যবাদ। তবুও যদি মুসলমানরা সচেতন হয়।
৭| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯
হাফিজ রাহমান বলেছেন: ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ মহোদয়কে বলছি, আপনি সম্ভবত ধর্ম ও সংস্কৃতির ব্যবধান খুব ভালো বুঝেন। সুতরাং একটু বুঝিয়ে বলুন, সে পার্থক্যটা মূলত কি ?
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২৩
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: ঐ একই কথাই বলবেন উনি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা প্রথমে বাঙালী, পরে মুসলমান। এখানে আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়া হচ্ছে না ব্লা ব্লা ব্লা।
৮| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:০৫
এ আর ১৫ বলেছেন: জনাব হাফিজ রাহমান সাহেব ---- ধন্যবাদ আপনার দীর্ঘ লিখাটি পোষ্ঠ করার জন্য , আমি সব কিছুর উত্তর দিবো না এখন, কারন অনেক বড় হয়ে যাবে, কয়েকটা পয়েন্টে উত্তর দিচ্ছি ---
পহেলা বৈশাখে পর্দাবিধান চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। এ ব্যাপারটিতে কি ইসলামে কোনো কথা বলা নেই ? পহেলা বৈশাখে চরম আপত্তিকর পোষাকের প্রদর্শনী হয়।
----- এই দিন মহিলারা সারা বৎসর যে ধরনের পোষাক পরে , সেই ধরনের পোষাক শাড়ী, সেলোয়ার কামিজ পরে এবং বোরকা হিজাব পরা মহিলারাও বাহির হয় । আপনার মতে সেলোয়ার কামিজ বা শাড়ী যদি অশ্লিল পোষাক হয় তাহোলে বলার কিছু নাই । আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে সারা বৎসর মহিলারা বোরকা হিজাব পরে ঘর থেকে বাহির হয় কিন্তু ১লা বৈশাখের দিন বোরকা হিজাব না পরে সেলোয়ার কামিজ শাড়ী পরে বাহির হয় তাই সেটা অশালিন পোষাক হয়ে যায় । যদি মহিলারা বৎসরের ৩৬৪ দিন ঈদের দিন সহ অশালিন সেলোয়ার কামিজ শাড়ী পরতে পারে তাহোলে ১লা বৈশাখে পরলে ক্ষতিটা কি ??? একটু ব্যাখা করবেন দয়া করে।
মঙ্গল শব্দটা নিয়ে আপনাদের এত এলার্জি==== কিসের মধ্য কি পানতা ভাতে ঘিয়ের মত দুনিয়ার কোথায় কোথায় এই শব্দ ব্যবহার হয়েছে তার ঠিকুজি চর্চা শুরু করেছেন । তাহোলে এবার মালেক, খালেক , রব ইত্যাদি নাম নিয়ে একটু চর্চা করেন না একটু। এই নাম গুলোতো আল্লাহর নাম তাই না , যখন ঐ নামে কোন মানুষকে সন্মোধন করেন তখন কি শিরকি করা হয় না করান মানুষকে কি আল্লাহর নামে ঢাকা যায় ( নাউযুবিল্লাহ) অথবা যদি কাউর নাম মুসা, ঈশা, ইউনুস, ইব্রাহিম হয় তখন কি তিনি ঐ সব নবিদের পর্যায় চলে যান ( নাউযুবিল্লাহ ) ......। মঙ্গল শব্দ নিয়ে যখন এত ঠিকুজি চর্চা করতে পারেন তাহোলে ঐ সমস্ত নাম গুলো নিয়ে একটু ঠিকুজি চর্চা করলে ভালো হয় না ।
কোন কিছু অন্য ধর্মের রিচুয়ালের সাথে মিলে গেলেই সেটারে হারাম হারাম বলে যখন মাতন তুলতে পারেন তাহোলে নীচের কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিন ----
১) হিন্দুরা পুজার আগে আহবান করে এবং সেটা মুসলমানরা ও আহবান করে তাহলে কি এই আহবান জানান কি ঠিক ( নাউযুবিল্লাহ ) ------ উল্লেখ হিন্দুরা উলু ধবনি দিয়ে আহবান করে , মুসলমানরা আজান দিয়ে আহবান করে
২) হিন্দুরা পুজার আগে পানি দিয়ে হাত পা মুখমন্ডল ধুয়ে পবিত্র হয় ঠিক তেমনি মুসলমানরা পানি দিয়ে ওজু করে পবিত্র হয়
৩) হিন্দুরা তাদের ডিভাইন থেকে মন্ত্র পাঠ করে পুজা করে , মুসলমানরা তাদের ডিভাইন থেকে সূরা পাঠ করে নামাজ পরে ( এখানে ডিভাইন থেকে পাঠ করটা মিলে যাচ্ছে)
৪) হিন্দুরা পুজার সময় পদ্মাসনে এবং বজ্রাসনে বসে , মুসলমানরা নামাজে বসার আসনটাও বজ্রাসনের মত ( এখানে আসনটা মিলে যাচ্ছে )
৫) হিন্দুরা পুজার সময় ধুপ জালায়। আগরবাতি জালায় , গোলাপ পানি ব্যবহার করে ---- মুসলমানরা আগরবাতি গোলাপ পানি ব্যবহার করে ....। ( এখানে ও কিছু জিনিস মিলে যাচ্ছে )
৬) হিন্দুরা পরিষ্কার কাপড় পরে পুজা করে , মুসলমানরা ও পরিস্কার কাপড় পরে নামাজ পরে । ( এখানেও মিলে যাচ্ছে )
আপনার যদি মঙ্গল শোভা যাত্রা নিয়ে এ রকমের ত্যানা প্যাচাতে পারেন তাহোলে উপরের ৬ বিষয়ে আপনার মতামত কামনা করছি.
কোন কিছু অন্য কিছুর সাথে ম্যাচ করে গেলে সেটা যে সে জিনিস হয়ে যায় না সেটা আপনারা মানতে চান না । কয়েকটা মুদ্রা মিলে গেছে বলে পুজা আর নামাজ এক হয়ে যায় না ( নাউযুবিল্লাহ ) ।
ধর্মের সাথে সম্পর্ক বিহিন বিষয়কে ধর্মীয় মোড়ক দেওয়ার ঠিকুজি চর্চা বন্ধ করলে ভালো হয়, তানা হোলে সেই খাদে পড়ে যাবেন আবার । ধন্যবাদ
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২৮
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: যেগুলো মিলে গিয়েছে সেগুলো সরাতে বললে না হয় সরিয়ে দেখাক। দেখিনা কোন বছর পেঁচা আর মুখোশ ছাড়া শোভাযাত্রা!
৯| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:০৯
জুজুগাগা বলেছেন: নাস্তিক আস্তিক এই দিন উপলক্ষে বিরাট অর্থনীতিক ফায়দা হাসিল করে। পচাঁ ভাত থেকে রংতুলির জমজমাট ব্যবসা
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২৯
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: ব্যবসাই মেইন কথা। সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ফালতু কথা।
১০| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:১৩
আল হাবসি বলেছেন: কই ছিলেন ওস্তাদ, আপনারেইতো হ্যরকিন দিয়া খুজতাছিলাম, কয়েকদিন আগে পয়লা এপ্রিল গেল, ভাবলাম পয়লা এপ্রিল নিয়া একখানি জ্বালাময়ী পোস্ট প্রসব করবেন,তখনও পাইলাম না দেখতে , সেই তখন থেকে খুজতাছি, আল্লাহর ফজিলতে পাইলাম অবশেষে আপ্নারে। সেই সময় কারণ দর্শাইতে গিয়া বুঝবার পারলাম আরে অহন তো ওয়াজ মাহফিলের time সো ওস্তাদ নিশ্চয়ই ঐহানে রইছে। যাউগ্য যে কথা কইতো ছিলাম, ব্লগে আইসেন, জ্বালাময়ী সব পোস্ট প্রসব করতাছেন আর আমরা সেগুলা পইরা পইরা ধন্য হইতাছি, চালাইয়া যান ওস্তাদ, আবাল পাবলিক গুলা ওয়াজ মাহফিলের মত এখানেও খাইব আপনার কথা, ওখানকার মারহাবা মারহাবার মত এখানেও দুইদিন পর শুকুর আলহামদুলিল্লাহ শুনতে পারবেন। সব জায়গায় 2 /4 পিস মুক্তমনার ছানাপোনারা থাকে,এখানেও আছে, এগুলারে ডরাইবেন না, 700 কোটির মধ্যে 475 কোটি তো কাফের,মুশরিক, (ওরা আবার আশরাফুল মাখলুকাত এর পর্যায়ে পড়ে নাকি), ভালো করে বুঝাইলে হয়ে শুনব নাইতো সেই সময় তরবারি ছিল অহন তো চাপাতি আছেই,তাই না উস্তাদ !!! অতএব চালাইয়া যান ওস্তাদ!!
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩১
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: আপনার ঐ পোস্টেই কইছিলেন, এপ্রিল ফুল নিয়া কারো কোন জ্বালাময়ী পোস্ট নাই কেন? দেখছেন তো, কীভাবে এপ্রিল ফুল বিদায় নিল বাংলাদেশ থেকে। মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়তো বিদায় নিবে না। তবে আবেদন কমবে প্র্যাকটিসিং মুসলমানদের মধ্যে - এটা সত্য।
১১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৪০
ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ বলেছেন: @ এ আর ১৫ ও আল হাবসী- ভাইয়েরা, বাংলা নববর্ষ/ ইংরেজী নববর্ষ আসলেই দপ্তরবিহীন মন্ত্রী/হাফিজ রাহমান-দের অস্থিরতা/ছটফটানি বেড়ে যায়। তাদের মানসিক শান্তির জন্য নববর্ষে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান/মংগল শোভাযাত্রা/গান-বাজনা/মেলা ইত্যাদি অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে উটের দৌড়,উটের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা, সৌদী তলোয়ার নৃত্য 'আরদাহ্' চালু করলে কেমন হয় ? সাথে হযরত আহমদ শফি এবং জেলে বন্দি শায়খ মাওলানা জসিমউদ্দিন রাহমানী-র জ্বালাময়ী তকরীর ?
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩৩
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: যাই করেন, অন্তত পেঁচা, মুখোশ, মোমবাতি আর তথাকথিত রথ যাত্রা কইরেন না।
১২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:২৮
হাফিজ রাহমান বলেছেন: @ এ আর ১৫ ভাই কিছু কথা বলেছেন। ভালো লাগল। তিনি কিছু বিষয়ে আমার বক্তব্য কামনা করেছেন। বেশ, মতবিনিময় ও যুক্তিবিনিময় এভাবেই হয়। তাঁর কথাগুলো নিয়ে আমি কথা বলবো। তবে ব্যাপারটা কিছুটা সময় সাপেক্ষ হওয়ায় কিছুটা সময় নেবো। আশা করি এ আর ১৫ ভাই সঙ্গ দিবেন।
কিন্তু ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ ভাই একেবারে ভিন্নভাবেই কথা বলেন। তিনি মূল পয়েন্টে আসতে চান না। মূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কথা বললে তো কথা বলা যায় না। সেটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়।
আর আল হাবসি সম্বন্ধে কি বলবো ? তিনি তো ভাষার শালীনতা হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তার জন্য মায়া করা ছাড়া আর কি করার আছে। টেবিলে আসুন। কথা বলি। ইসলাম কতটুকু উদার, কতটুকু অনুদার এ বিষয় নিয়ে আসুন কথা বলি। ধর্মান্ধ কখন হয় ? ইসলাম কতটুকু সীমাবদ্ধতা লঙ্ঘন করতে পারবে ? কতটুকু উদার হতে পারবে ? এসব বিষয় আষয় নিয়ে ইসলামের ধর্মগ্রন্থগুলোতে বিশদ আলোচনা আছে। আসুন মতবিনিময় করি। আপনার যুক্তি যুক্তিযুক্ত হলে মেনে নেব। আমারটা যৌক্তিক হলে মেনে নিবেন। এভাবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় আসুন। ভাষার সৌন্দর্য নষ্ট করে যদি নিজেকে ছোট করে ফেলেন তবে তো হলো না।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩৬
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: গালির কারণে আল হাবসির মন্তব্য মুছে ফেলতে বাধ্য হয়েছি। আলোচনা চলতে পারে।
১৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৬
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন:
এই মুখোশকে কেউ মানুষের মুখোশ বলবে না। প্রথম দেখাতেই মনে হবে দেবীর মুখ! ওহ, এটা তো অসাম্প্রদায়িক উৎসব।
১৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৩
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: আর কিছু বলার নাই। অন্ধরা অন্ধই থাকুক।
view this link
১৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৫৮
উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: "মংগল শোভাযাত্রা" - এই নামটিতেই রয়েছে পৌত্তলিকতার গন্ধ। পেচা বাদুরের মুখোশের কথা বাদই দিলাম। এটি যারা বুঝতে অক্ষম তাদের সাথে বাকযু্দ্ধে কোন লাভ নেই।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩০
দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: লাভ না হলেও তাদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। মুসলিমরা বুঝতে পারছে এটা যে অন্য ধর্মের সাথে মিল আছে। নূন্যতম ইসলামে বিশ্বাসী মানুষের এসব কাজে আপত্তি থাকবেই...
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ২:২৯
আল আমিন সেতু বলেছেন: ঠিক বলেছেন। মংগল শোভাযাত্রা বিজ্ঞানসম্মত ও না , ধর্মসম্মত ও না। এটা অন্য গোষ্ঠীর কালচার।