![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(প্রথম ও শেষ চিঠি, ২৩/০৮/০৭ইং)
এইতো সেদিন তুমি বলেছিলে, ছোট্টবেলায়, আমার বয়স যখন ৮ কি ৯, তখন লুকিয়ে আমায় দেখতে। দেখতে অসম্ভব দুষ্টু-চঞ্চল এই আমাকে। যখন তুমি ছিলে আমার একেবারেই অচেনা...
কিন্তু তুমি কি জানতে? ১২/১৩ বছরের এক কিশোরী তোমার সাথে ঘর বাঁধবে বলে স্রষ্টার কাছে দুহাত তুলে প্রার্থনা করত, নীরবে ঘরের কোনে চোখের জল ফেলতো সবার অলক্ষ্যে, সেই ছোট্ট মানুষটার ছোট্ট জগত জুড়ে ছিল তোমায় নিয়ে যত ভাবনা! তোমাকে না দেখে, না জেনেই কি অসম্ভব ভালবেসেছিল...
যদি জানতে, তবে সেই নিস্পাপ ভালোবাসার অবমূল্যায়ন করতে পারতে না...!
ভালোবাসি____
অনেক ভালোবাসি____
ভালোবাসি বলেই আজো স্বপ্ন দেখি,
ভালোবাসি বলেই আজো বড়ো বাঁচতে ইচ্ছে করে,
বাঁচতে ইচ্ছে করে এই সমাজের একজন হয়ে...
তুমি সবই বোঝো, তবু কষ্ট দাও !!
মনে পড়ে সেদিনের কথা? যেদিন আমার হাতটা ধরে খুব করে কেঁদেছিলে, জোড় হাতে বলেছিলে, “ফিরে এসেছি, দিওনা ফিরিয়ে__”
মনে পড়ে? কিভাবে আঁকড়ে ধরেছিলে সংজ্ঞাহীন আমাকে? ভেবেছিলে বুঝি মরেই যাচ্ছি...
মনে পড়ে? বলেছিলে , কখনো ছেড়ে যাবে না!
ভাবতেই অবাক লাগে, এই তুমিই সেই তুমি!
মাঝে মাঝেই ভাবি, সেদিনের সেই আহত আমাকে সত্যিই ভালোবেসেছিলে কিনা...
সেই আঘাতের ক্ষত শুকিয়ে গেছে, সেই ব্যাথাও আর নেই...
মাথার সেই চোটটাও ঠিক হয়ে গেছে...
আর কোন সাইড ইফেক্টের সম্ভাবনা নেই, সত্যি!
এম.আর.আই. রিপোর্ট দেখে ডাক্তার তা-ই বলেছেন!
কিন্ত দাগ রয়ে গেছে, আর রয়ে গেছে সেদিনের হৃদয়ে পাওয়া আঘাতের যন্ত্রণা...
একদিন তুমিই তো বলেছিলে, “এ দুটি চোখের দিকে তাকিয়ে, একটা পুরো জীবন পার করে দেয়া যায়...! তবে কেন তোমার দৃষ্টি আজ অন্য আকাশে?
এইতো সেদিনো তুমি বলেছ, আমার মতো করে কেউ কোনদিন তোমায় ভালবাসতে পারবে না, যদি তাই হয়, তবে কেন পালিয়ে বাঁচতে চাও?
অনেক ভালো লেগেছিল সেদিন, এই নথ’টাকে প্রথম নাকে জড়িয়েছিলাম, সেই সেদিন থেকে আজো আমি আমাকে তোমার বাগদত্তা হিসেবে জানি, জানিনা সেদিন ভালোবেসেই স্বীকৃতিটা দিয়েছিলে কিনা! শুধু জানি, আজীবন তোমার বাগদত্তা হয়েই থাকবো!
সান্ত্বনা এই, আর কিছু না হোক, একটা স্বীকৃতি পেয়েছি, এটাও-বা কম কিসে!
এ-ও-বা ক’জনের ভাগ্যে জোটে?
খুব জানতে ইচ্ছে করে, আমার বাবার কাছে চেয়ে নেয়া দু’বছর সময় কি এভাবে পালিয়ে যাবার জন্য?
তুমি কি পারবে? সত্যিই কি পারবে আমাকে এভাবে ফেলে যেতে??
তুমি কি অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সব জেনেই আমার হাতে হাত রাখোনি?
সব জেনে-বুঝে পাড়ি দাওনি এ পথে? তবে কেন এভাবে পালিয়ে যাচ্ছ কাপুরুষের মতো??
আমার জীবনের যত লাঞ্ছনা, যত যন্ত্রণা, যত ঝড়- তার এতটুকু আঁচ-ও কি কখনো লাগতে দিয়েছিলাম তোমার গায়ে? তবে কেন আমাকে তোমার এত ভয়?
তখন ছোট ছিলাম তাই বুঝিনি, বুঝিনি আমার অবস্থান, বুঝিনি আমি তোমার যোগ্য নই, তাই ও দু’টো ছোট্ট হাত পেতে চেয়েছিলাম তোমাকে, জানিনা কি ভুল ছিলও সে প্রার্থনায়, কেন সেই ছোট্ট মনের আকুলতা কোন সাড়া পায়নি!
সে ছোট্ট মেয়েটার ছোট্ট পৃথিবী জুড়ে যে ভাবনা খেলা করতো, যে স্বপ্ন তাকে টেনে নিয়ে যেতে চাইতো তোমার সামনে, যে স্বপ্ন জুড়ে ছিলে তুমি, তুমি আর তুমি... কেন সে স্বপ্ন ভেঙ্গে দিতে চাইছ এভাবে?
তুমি কি বোঝনা, আমার এই ছোট্ট জীবনে একটুখানি ভালোবাসার আজ অনেকখানি প্রয়োজন?
আমার সব স্বপ্নগুলোকে সাথে নিয়ে কেন এভাবে ছেড়ে যাচ্ছ আমায়?
যে জীবনে স্বপ্ন থাকেনা, কি করে সে জীবনটাকে রাখি বলোতো??
যদি কখনো সব ছেড়ে চলে যাই না ফেরার দেশে, মনে পড়বে কি এই আমাকে?
যে শুধু তোমার জন্যেই সব ছেড়ে পা বাড়িয়েছিল অচেনা, অজানা, এক নির্মম জীবন যুদ্ধের বাস্তবতায়_________!
শুধু তোমাকে ভেবেই ছেড়ে এসেছিলো আপন জগত!
জানিনা কোন অভিশাপ মাথায় নিয়ে জন্মেছিলাম, কোন ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে এভাবে!
এমন তো হবার কথা ছিল না___!
আমিও তো তোমার মতোই রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ হয়েই জন্মেছিলাম!
মনের ভিতর হাজার প্রশ্ন ঝড় তোলে, হাজারো ভাবনা, হাজারো স্বপ্নেরা সে ঝড়ের ঝাপটায় আহত পাখির মতো কাতরায়...
তাই আজ আমি বড্ড বেশী এলোমেলো...
আমার এই এলোমেলো জীবনটাকে সাজিয়ে দিতে, তুমি কি কখনোই আসবেনা?
আসবেনা এই বিধ্বস্ত জীবনে???
©somewhere in net ltd.