![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যে ছাদটা একসময় স্বর্গ ছিল আমার কাছে, আজ সেই ছাদটাই নরক মনে হয়, রহমতখালীর খালের এপার থেকে ওপারের গ্রামটাকে দেখে যে-কেউ স্বর্গ বলবে, এমনি সুন্দর তার রূপ, আমার বাংলা মায়ের রূপ... দিনের পর দিন সেখানে আমি কাটিয়ে দিয়েছিলাম যেটা দেখার জন্য...
আজ সেখানে গাঁথুনি করেছে অট্টালিকা... নাহ সহ্য হয় না!!!
ঘর থেকে দু’কদম এগিয়ে গেলে যেখানে একটা মরা শ্মশানের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লজ্জাবতীদের লজ্জা দিতেই ছুটে যেতাম স্কুল শেষে, সেখানে বিরাট সব খুঁটী গেঁড়ে বানানো হচ্ছে শিশুপার্ক... ছোটবোন প্রতিবার বাড়ি গেলে কাজ কদ্দুর এগোল, খুশী খুশী মুখে সেসব গল্প করে... আমিও তার সাথে হাসি বিনিময় করি...
এখনো বড়ো অবুঝ... তাই বুঝলো না কি হারালো...
সেই ভরা খালের তীরে বসে পার করা দিনগুলো কি বীভৎসভাবে হারিয়ে যায় স্মৃতি থেকে...
খুব ছোটবেলায় চরে গিয়েছিলাম বেড়াতে, কি অদ্ভুত সুন্দর... চোখে সহ্য করার মতো নয়, একেকটা ঘর থেকে আরেকটা ঘর দেখা যায়না বললেই চলে, যেদিকেই চাই শুধু সবুজ ধানেদের মাথা দুলিয়ে বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে অবিরাম নাচ, জলের তলে মাছেদের ছুটোছুটি... আরো কতো নাম না জানা ফলের-ফুলের আর সবজি বাগান...
ঠুনকো পাটকাঠির দেয়াল ঘিরে কি দিব্যি একটা জীবন পার করে দেয় ওরা, কি সহজ, কি সরল এই বেঁচে থাকা, অভাব নেই কিছুরই, শুধু একটু নুন আর গায়ে জড়ানোর কাপড়...
ওটা একবার গেলে আর খুব সহসা প্রয়োজন হয় না...
ইসস! হুমায়ূন স্যারকে একবার যদি দেখিয়ে আনা যেতো?!!!
গ্রামে যাইনি অনেক বছর... হুম... অনেক বছর...
গ্রাম, দাদীর কবর... মনে হলেই কলিজায় কাঁপন ধরে...
শুনেছি, দাদীর ভিটে ভেঙ্গে ছোটচাচা বিলাসী এক বাড়ি করেছে...
আমার শৈশবের সেই ছায়াঘেরা গ্রাম... চোখ বুজলেই নিঃশ্বাসে আসে মাটির সোঁদা গন্ধ, শ্যাওলা ধরা পুকুরের ঠাণ্ডা হাওয়া, বাঁশের ঝাড়...
মনে পড়ে খেলার সাথীদের অট্টহাসি, চিৎকার... এখনো চোখে ভাসে সেই এলোমেলো ছুটে বেড়ানো আর অযথাই পুকুরে ঝাঁপাঝাঁপি...
এমন মিষ্টি শৈশবটাকে হারাতে দেবনা কিছুতেই...
নাহ... আর গ্রামে যাব না আমি... রাগ করিস না দাদী !!
©somewhere in net ltd.