নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশে। সাগর মহাসাগর পেরিয়ে অনেক দুরে এসে শত জটিল গবেষণা করলেও জন্মস্থানের সাথে নিয়তই নাড়ির টান অনুভব করে যাই। আর বাংলাভাষা যে মস্তিস্কের অনেকটা স্থান জুড়ে আছে, তা সহজেই অনুমেয়।

দীপু সিদ্দিক

অন্যের ভালো দেখে দেখে ভালো থাকতে চাই! অন্যদের ভালো কামনা করে ভালো রাখতে চাই! মানব মমতার স্বরূপ খুজতেই অতীতকে ভালোবাসি এবং অতীত নিয়ে নাড়াচাড়া করি ।।

দীপু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষের প্রথম ঘর: পাহাড়ের গুহা (পর্ব ০৩)

০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:৪৫

প্রত্নপ্রস্তর যুগে পাহাড়ের গুহা ছাড়াও এক ধরণের কুড়েঘর জাতীয় আবাসেও যে মানুষ বসবাস করত, আমরা বর্তমানে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। পশু চামড়া ও হাড় দিয়ে ম্যামথ শিকারীদের তৈরি করা ঘর এবং গাছের ছোট ছোট ডাল ও খড়কুটোর সাথে মাটি লেপে করে তৈরি করা ঘরগুলো ছিল ঐ সময়ের আবহাওয়া প্রতিরোধ ও বসবাসের জন্য অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম স্থাপত্য নিদর্শন। প্রত্নতাত্ত্বিক এই আবিষ্কারের মাধ্যমে আমরা এখন ধারণা করছি যে, যে সব এলাকাতেই মানুষ বসতি স্থাপন করেছিল, ওসব এলাকাতেই সম্ভবত তারা এই বিশেষ ধরণের কুড়েঘর স্থাপত্যের সূচনা করেছিল।



যাহোক, এইসব নির্মাণ কাঠামোগুলোকে স্থাপত্যের পর্যায়ে ফেলাটাও খুব মুস্কিল। যতদিন না আরো বেশি বেশি তথ্য প্রামাণ আবিষ্কার হচ্ছে এবং আরো বেশি গবেষণা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এই কাঠামোগুলোর সাথে এর আশেপাশের সম্পর্ক কি ছিল তা বোঝাও সম্ভব নয়। এগুলোকি তাদের জনবসতির উন্নয়নের সর্বশেষ উৎপাদন ছিল অথবা এগুলো কি ঐ লোক বসতিতে থাকা প্রত্যেক পরিবারের আলাদা আলাদা আবাসনের সৃষ্টি ছিল? এর উত্তর হতে পারে সম্ভবত এভাবে যে, নির্মাণকাঠামোগুলো গুণগতভাবে খুবই নিম্নমানের হলেও এগুলোই ছিল স্থাপত্যকৌশলের সত্যিকারের সূচনাপর্ব।



সমগ্র পৃথিবীতে কিভাবে স্থাপত্যের সূচনা হয়েছিল তার একটি মোটামুটি ধারণা পাওয়া যাবে নিম্নক্ত বিবরণীতে। প্রথমেই আসা যাক প্রত্নপ্রস্তর যুগের ব্যাপারে। আগেই জানিয়ে রাখছি যে প্রত্নপ্রস্তর যুগের সূচনা হয়েছিল ৭.৫ লক্ষ বছর আগে। অবশ্য মানুষ তখন স্থাপত্যের ব্যাপারে কোন ধারণাও করেনি। কেবল পাহাড়ের গুহাই ছিল তাদের বসবাসের একমাত্র আশ্রয়। কুড়েঘর জাতীয় কাঠামো মানুষ তৈরি করতে শিখেছিল অন্তত উচ্চপ্রত্নপ্রস্তর (Upper Palaeolithic) যুগে এসে। এর সময়কাল ধরা যায় মোটামুটি ৩৫০০০ বছর থেকে ১২০০০ বছর পূর্বেকার সময় হিসেবে। পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঞ্চলে এসময়কার স্থাপত্যের ব্যাপারে নিচে সামান্য বর্ণনা দিচ্ছি:



আমেরিকা মহাদেশ: প্রত্নপ্রস্তর যুগে আমেরিকা মহাদেশ তথা নতুন দুনিয়ার মানুষের বসবাসের স্থান বলতে একমাত্র গুহাগুলোর কথাই বলা যায়। যদিও ধারণা করা হয় যে, এসময়ে মানুষ কখনো কখনো অস্থায়ী বসতি শিবির স্থাপন করে থাকবে, তথাপি এপর্যন্ত পাহাড়ের গুহা ব্যতিত অন্য কোন নিদর্শন এ পর্যন্ত প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় পাওয়া যায় নি।



ইউরোপ মহাদেশ: মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে প্রত্নপ্রস্তর যুগীয় সময়কালের তাবুর মত কিছু কুড়েঘরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া ইউরোপের বিভন্ন গুহাচিত্রেও এধরণের তাবুর মত কুড়েঘরের উদাহরণ পাওয়া যায়। বরফযুগের ওই অবস্থায় কাঠের প্রাচুর্যতা ছিল খুবই অল্প। এবং একারণে মোরাভিয়া ও রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রাগৈতিহাসিক কুড়েঘরগুলোকে মানুষ তৈরি করেছিল প্রধানত পশুচামড়া দিয়ে। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই দেখা যায় কুড়েঘর তৈরির ক্ষেত্রে এই এলাকায় প্রথমে মাটিতে গোলাকার গর্ত করে তার চারদিকে প্রধানত ম্যামথের বড় বড় হাড় ও দাত বসিয়ে তার উপরে পশুচামড়ার ছাউনি বসানো হতো। এই কুড়েঘরের ঠিক মাঝখানে থাকত একটি চুলা যা রান্না ও তাপের জন্য ব্যাবহার করা হতো।



দূর প্রাচ্য: এই অঞ্চলে স্থাপত্যের একমাত্র নিদর্শন পাওয়া গেছে সাইবেরিয়ায়, বিশেষত বৈকাল হ্রদের নিকটবর্তী মাল্টা ও বুরের-এ। এখানে প্রাপ্ত কুড়েঘরের সাথে ইউরোপীয় রাশিয়ার প্রত্নপ্রস্তরযুগের কুড়েঘরের অনেক মিল পাওয়া যায়। যার মাধ্যমে ধারণা করা হয় যে দুটি অঞ্চলের সাথে ঐ সময়ে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ ছিল।



পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল: এই অঞ্চলের প্রত্নপ্রস্তর যুগের মানুষেরা প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত গুহাগুলোতে যে নিয়মিত বসবাস করত তার প্রচুর উদাহরণ পাওয়া যায়। এই অঞ্চলে এধরণের নিদর্শন খুবই পরিচিত। অন্যদিকে এই অঞ্চলের বিশেষত ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার বিভিন্ন নাতুফিয়ান প্রত্নস্থলে প্রাগৈতিহাসিক মানুষেরা কুড়েঘর তৈরি করত। প্রত্নপ্রস্তর যুগের শেষের দিকে এখানকার মানুষেরা ছোট ছোট পাথরের তৈরি পাটাতনের উপর সামান্য উচু আকৃতির গোলাকার কুড়েঘর তৈরি করত।



ইরান ও ভারতীয় অঞ্চল: ইরাক ও ইরানের মধ্যবর্তী জারগো রেখার সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে প্রাগৈতিহাসিক মানুষের বসবাসের নামুনা হিসেবে পাহাড়ের গুহা ও কুড়েঘর উভয় রকমের নিদর্শন পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারতের মাদ্রাজের নিকট প্রত্নপ্রস্তরযুগের গুহা বসতির উদাহরণ হিসেবে ‘পল্লভারাম’ গুহা পৃথিবী বিখ্যাত। পল্লভারাম গুহায় প্রাপ্ত এই নিদর্শনের ভিত্তিতেই প্রাগৈতিহাসিক সংস্কৃতির মধ্যে এই সংস্কৃতিকে আলাদা মর্যদায় নামকরণ করা হয়েছে ‘মাদ্রাসিয়ান’ সংস্কৃতি।



পর্ব ০১ এর লিংক:

Click This Link

পর্ব ০২ এর লিংক:

Click This Link

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:০১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

সুন্দর পোস্ট তবে আর একটু তথ্য নির্ভর হলে দারুন হত।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:০৬

দীপু সিদ্দিক বলেছেন: ভাইরে! পরামর্শের জন্য সত্যিই আমি কৃতজ্ঞ।
তবে আপনাদের বলে রাখছি এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বাস্ততব তথ্য। একাডেমিক গবেষণায় এর চেয়ে বেশি তথ্য আর নাই। অন্তত পিএইডির এই পর্যন্ত পাই নি। হা হা । তবে এই জগতে ফ্যান্টাসি আছে প্রচুর পরিমাণে।
আপনি কোন বিশেষ এলাকা ধরে বর্ণনা করতে যদি পরামর্শ দেন, তবে আমি পরবর্তী লেখায় বর্ণনা করব।
ঈদের শুভেচ্ছা রইল (আমাদের এখানে আজ ঈদ)।

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:১৮

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট! ঈদ মোবারক!

০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:২৯

দীপু সিদ্দিক বলেছেন: আজ আমাদের এখানে সত্যি সত্যিই ঈদ। ঈদের শুভেচ্ছা দেয়ার জন্য খুবই কৃতজ্ঞ। আমার লেখার ব্যাপারে পরামর্শের ও সমালোচনার দুয়ার সব সময়েই খোলা রইল ভাই।

৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৩৪

ডাব্বা বলেছেন: নাইস।

৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০০

আরাফাত রহমান বলেছেন: ঈদের সময় কী শুরু করলেন?

যাউগ্গা পড়তে ভালই লাগছে। চালায়া যান।

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯

দীপু সিদ্দিক বলেছেন: কেন ভাই?
মন্তব্যটি শুনে মাথা চমকে উঠল। পরামর্শ দিবেন প্লিজ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.