নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাহমুদুল হাসান দোহা

আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি।

মাহমুদুল হাসান দোহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা গদ্যের জনপ্রিয় লাইনগুলো…

১০ ই জুন, ২০১২ ভোর ৬:৫০

এটি আমার প্রথম পোস্ট ।যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তবে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ।

সামুতে আমি account খুলেছি অনেক দিন আগে এবং এতদিন শুধু অন্যদের পোস্ট পড়ে কাটিয়ে দিয়েছি।সত্যি করে বলছি, কোন কিছু পোস্ট করার ইচ্ছা আমার একটুও ছিল না ।কিন্ত গতকাল রাতে শব্দহীন জোছনা ভাইয়ার ‘বাংলা কবিতার সবচেয়ে জনপ্রিয় লাইনগুলো…’ পড়ার পর ওখানে comment করতে গিয়ে দেখি আমি অযোগ্য...আর তাই যোগ্যতা অর্জনের নিমিত্তে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস ।

বাংলা সাহিত্যের প্রধান দুটি শাখা কবিতা এবং গদ্য সম্পর্কে ডঃ হুমায়ুন আজাদ তাঁর ‘লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী’ গ্রন্থে বলেছেন,

“আমরা আজকাল সাহিত্যে দুটি ভাগ দেখে থাকি;এর একটি কবিতা, আর একটি গদ্য, যে গদ্যে লেখা হয় গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ নাটক আরো কত কী ।বাঙলা সাহিত্যের একটি বিরাট অংশ কবিতা; ১৮০০ সালের আগে বাঙলা সাহিত্যে গদ্য বিশেষ ছিলোই না ।এতদিন ধরে রচিত হয়েছে কেবল কবিতা ।কবিতায় লেখা হয়েছে বড়ো বড়ো কাহিনী, যা আজ হলে অবশ্যই গদ্যে লেখা হতো । ভাবতে কেমন লাগে না যে সেকালে কেউ গদ্যে লেখার কথা ভাবলেন না, সব কিছু গেঁথে দিলেন ছন্দে ! সব সাহিত্যেরই প্রথম পর্যায়ে এমন হয়েছে।এর কারণ মানুষ কবিতার যাদুতে বিহবল হতে ভালোবাসে । সেই কবে যে-দিন প্রথম সাহিত্যের আবির্ভাব ঘটেছিলো, সে-দিন লেখকের বুকে তরঙ্গিত হয়ে উঠেছিলো ছন্দ । তখন মানুষ সাহিত্যে খোঁজ করতো তা, যা বাস্তব জীবনে পাওয়া যায় না ।যে-ভাষায় তারা সারাদিন কথা বলতো, যে-গদ্যে ঝগড়া করতো, তাতে সাহিত্য হতে পারে একথা তারা ভাবতে পারেনি ।তাই তারা বেছে নিয়েছিলো এমন জিনিশ, যা প্রতিদিনের ব্যবহারে মলিন নয়, যাতে ছন্দ আছে, সুর আছে ।এমন হয়েছে সব দেশের সাহিত্যে; বাঙলা সাহিত্যেও ।”



আপনিও জানান আপনার প্রিয় বাংলা গদ্যের লাইনগুলো…





জেলেপাড়ার ঘরে শিশুর ক্রন্দন কোনদিন বন্ধ হয় না। ক্ষুধাতৃষ্ণার দেবতা, হাসিকান্নার দেবতা, অন্ধকার আত্মার দেবতা, ইহাদের পূজা কোনদিন সাঙ্গ হয় না।… … … জন্মের অভ্যর্থনা এখানে গম্ভীর, নিরুৎসব, বিষণ্ন। জীবনের স্বাদ এখানে শুধু ক্ষুধা ও পিপাসায়, কাম ও মমতায়, স্বার্থ ও সঙ্কীর্ণতায়। ঈশ্বর থাকেন ওই গ্রামে, ভদ্রপল্লীতে।এখানে তাঁহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।



অন্ধ আবেগের সঙ্গে তার মনে হইতেছিল, যারা পঙ্গু, অসহায় জীব, শক্তিকে লজ্জা দেওয়া তাদের পক্ষে ভাল কথা নয়-মানুষের ধর্ম বিরুদ্ধ এ কাজ।



ধর্ম যতই পৃথক হোক দিনযাপনের মধ্যে তাহাদের বিশেষ পার্থক্য নাই।সকলেই তাহারা সমভাবে ধর্মের চেয়ে এক বড় অধর্ম পালন করে-দারিদ্র্য !



লখা ও চণ্ডি উলঙ্গ, চকচকে ভিজা-ভিজা গায়ের চামড়া ।ডিবরির শিখাটি উর্ধ্বে ধোঁয়ার ফোয়ারা, মাথার উপরে চালে পচা শণের, চারি পাশের দেয়ালে চেরা বাঁশের স্যাঁতসেতে ঢেউ তোলা মাটির মেঝে । আদিম অসভ্যতার আবেষ্টনী ।অভিনয় সুমার্জিত সভ্যতার ।



কমে মাঠঘাটের জল । ও তো মানুষের চোখের জল নয়, কমিবে বৈকি ।



কুবেরের বিবাহের সময় বড় দুরন্ত ছিল কপিলা ।তখন পঙ্গু মালাকে বিবাহ করিয়াছিল বলিয়াই হয়তো কপিলার দুরন্তপনা অত বেশি চোখে পড়িয়াছিল কুবেরের, অন্ধকারে যে বাস করে মৃদু আলোতে তার চোখ ঝলসাইয়া যায়, চোখ ঝলসানো আলোতে সে হয় অন্ধ ।



পদ্মানদীর মাঝি, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়









তাহার যে অশ্রু শুকাইয়া গেছে । জ্যৈষ্ঠের খররৌদ্রই তো জ্যৈষ্ঠের অশ্রুশূন্য রোদন ।



আমার মন বারবার করিয়া বলিতে লাগিল, ‘আমি পাইলাম, আমি ইহাকে পাইলাম।’ কাহাকে পাইলাম। এ যে মানবী, ইহার রহস্যের কি অন্ত আছে।



তিনি (হৈমন্তীর বাবা) বলিলেন, ‘যাহা দিলাম তাহা উজাড় করিয়াই দিলাম ।এখন ফিরিয়া তাকাইতে গেলে দুঃখ পাইতে হইবে । অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার রাখিতে যাইবার মত এমন বিড়ম্বনা আর নাই ।



আমার সন্দেহ হয়, অধিকাংশ লোকে স্ত্রীকে বিবাহমাত্র করে পায় না এবং জানেও না যে পায় নাই; তাহাদের স্ত্রীর কাছেও আমৃত্যুকাল এ খবর ধরা পড়ে না ।কিন্তু, সে যে আমার সাধনার ধন ছিল; সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ ।



হৈমন্তী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর









শুধু রোদ্যাঁ কেন, পৃথিবীর শিল্পী মাত্রেই এই শিল্পের খেলা খেলে থাকেন।যিনি গড়তে জানেন, তিনি শিবও গড়তে পারেন, বাঁদরও গড়তে পারেন।



যে লেখক সাহিত্য ক্ষেত্রে ফলের চাষ করতে ব্রতী হন, যিনি কোনোরূপ কার্য-উদ্ধারের অভিপ্রায়ে লেখনী ধারণ করেন, তিনি গীতের র্মমও বোঝেন না, গীতার ধর্মও বোঝেন না ।



আমি জানি যে, পাঠক সমাজকে আনন্দ দিতে গেলে তাঁরা প্রয়শই বেদনা বোধ করে থাকেন ।কিন্তু এতে ভয় পাবার কিছুই নেই; কেননা কাব্যজগতে যার নাম আনন্দ, তারই নাম বেদনা ।



সাহিত্য শিক্ষার ভার নেয় না, কেননা মনোজগতে শিক্ষকের কাজ হচ্ছে কবির কাজের ঠিক উল্টো ।কারন কবির কাজ হচ্ছে কাব্য সৃষ্টি করা, আর শিক্ষকের কাজ হচ্ছে প্রথমে তা বধ করা, তারপরে তার শবচ্ছেদ করা, এবং ঐ উপায়ে তার তত্ত্ব আবিষ্কার করা ও প্রচার করা ।



সাহিত্যে খেলা, প্রমথ চৌধুরী







মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিতে পারিত যে, সে ঘুমাইয়া পড়া শিশুটির মতো চুপ করিয়া থাকিত, তবে সেই নীরব মহাশব্দের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত। এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্থির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে। ইহারা সহসা যদি বিদ্রোহী হইয়া উঠে, নিস্তব্ধতা ভাঙিয়া ফেলে, অক্ষরের বেড়া দগ্ধ করিয়া একেবারে বাহির হইয়া আসে! হিমালয়ের মাথার উপরে কঠিন বরফের মধ্যে যেমন কত কত বন্যা বাঁধা আছে, তেমনি এই লাইব্রেরির মধ্যে মানবহৃদয়ের বন্যা কে বাঁধিয়া রাখিয়াছে!



লাইব্রেরি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর











বিশেষত, তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই। শোভাও নাই, কোনো কাজেও লাগে না। স্নেহও উদ্রেক করে না, তাহার সঙ্গসুখও বিশেষ প্রার্থনীয় নহে। তাহার মুখে আধো-আধো কথাও ন্যাকামি, পাকা কথাও জ্যাঠামি এবং কথামাত্রই প্রগল্ভতা। হঠাৎ কাপড়চোপড়ের পরিমাণ রক্ষা না করিয়া বেমানানরূপে বাড়িয়া উঠে; লোকে সেটা তাহার একটা কুশ্রী স্পর্ধাস্বরূপ জ্ঞান করে। তাহার শৈশবের লালিত্য এবং কণ্ঠস্বরের মিষ্টতা সহসা চলিয়া যায়; লোকে সেজন্য তাহাকে মনে মনে অপরাধ না দিয়া থাকিতে পারে না। শৈশব এবং যৌবনের অনেক দোষ মাপ করা যায়, কিন্তু এই সময়ে কোনো স্বাভাবিক অনিবার্য ত্রুটিও যেন অসহ্য বোধ হয়।



মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।



ছুটি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর







“ঠাকুর, বউ গেলে বউ পাইব, কিন্তু আমার ভাই ফাঁসি গেলে আর তো ভাই পাইব না।



শাস্তি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০১২ রাত ৯:২০

শব্দহীন জোছনা বলেছেন:


ভাল লাগল খুব

মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়,বেচে থাকলে বদলায়। কারনে অকারনে বদলায়, সকালে বিকালে বদলায়।
মুনীর চৌধুরীর রক্তাক্ত প্রান্তর

১৭ ই জুন, ২০১২ ভোর ৬:৫৮

মাহমুদুল হাসান দোহা বলেছেন: ভাইয়া...আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনেতো মন্তব্য করে গেলেন... কিন্তু আমিতো এখনও আপনারটায় পারলাম না।

২| ১৮ ই জুন, ২০১২ সকাল ৭:১৯

শব্দহীন জোছনা বলেছেন:
বর্তমানে সেফ হতে আগের তুলনায় একটু বেশি সময় লাগে... তবে আপনি ভাল ভাল পোস্ট দিয়ে যান ...... আশা করি খুব শীঘ্রই সেফ হয়ে যাবেন :)


হ্যাপি ব্লগিং...

৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:২৫

ফথরুল বলেছেন: কষ্ট আর কেষ্ট দুইটা খাইয়া আইজ আমি সেফ (২ বছর+).. আপনিও আর একটু.......
আর লিখে যান......

৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:৪৭

ফথরুল বলেছেন: বেশ সুন্দর তো, শুভেচ্ছা রইল। B:-/

৫| ১৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫৪

খেয়া ঘাট বলেছেন: অনেকদিন মনে রেখে দেওয়ার মতো একটা পোস্ট। মুগ্ধ হলাম।
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.