![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
৭১ সালে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিশ্বের দরবারে উদ্ভব ঘটে। স্বাধীনতা যুদ্ধে সব ধর্মের, সব বর্ণের মানুষ অংশগ্রহণ করে। তাই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। রাষ্ট্রিয় মূলনীতিতে অন্যতম ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে দূরে সরে যায় এবং দেশে ধর্মীয় রাজনীতি শুরু হয়। এখানে যে কতিপয় যুদ্ধাপরাধী মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তারা আবার রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়। জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার বিরোধী ছিল। তারা ধর্মের নামে হত্যা, লুটপাট ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে, যা ইসলামের আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ইসলামে দেশপ্রেমের কথা উল্লেখ আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন দেশের আপামর মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে তখন রাজাকার, আলবদর আর আলশামস মিলিতভাবে ভয়ঙ্কর ঘাতকের রূপ নিয়েছিল। তারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছিল। ’৭৫-এর পটপরিবর্তনের পর দেশে ধর্মীয় রাজনীতির সুযোগ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী সহজ-সরল মানুষকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করেছে। বিএনপিকে সহযোগী দল হিসেবে নিয়ে জামায়াত বছরের পর বছর একটি প্রজন্মকে সাম্প্রদায়িকতার বিষমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করেছে। তারা রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে প্রথমেই ভারতকে আমাদের শত্রুরাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে। নির্বাচনের সময় ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে সুকৌশলে। বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে দেশটি ভারত দখল করে নেবে। মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির হবে এবং আজানের পরিবর্তে উলুধ্বনি শোনা যাবে। তাদের এই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়েছে ধর্মপ্রাণ সহজ-সরল মানুষ। এই অপপ্রচার এখনও চলছে। জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা নির্বাচনের পর জয়পুরহাট জেলার এক মসজিদের ইমাম বলেছেন, যারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে তারা নাস্তিক ও তাদের তওবা পড়ানো উচিত। গত এক বছর ধরে তারা পবিত্র মসজিদের মাইকে তারা অপপ্রচার চালিয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারির ২৭ তারিখ যখন যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাঈদির ফাঁসির রায় হয় তখন তারা মসজিদের মাইকে ঘোষণা করেছিল সাঈদিকে চাঁদে দেখা গেছে। এই ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার চলছে অনেক আগে থেকেই। গত বছর ৫ ফেব্রুয়ারি গণজাগরণ মঞ্চের সৃষ্টির পর জামায়াত গণজাগরণের তরুণদের নাস্তিক হিসেবে চিহ্নিত করে প্রচার চালায়। এর ফলে ব্লগার রাজীবসহ ব্যাপক হত্যাকান্ড চালায় দলটি। সবচেয়ে বেদনার বিষয়, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেখানে সব সম্প্রদায় ও ধর্মের লোক সমঅধিকার নিয়ে বসবাসের কথা সেখানে জামায়াতের সহিংসতা গণতন্ত্রের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এদেশের বিরোধী ছিল, যারা স্বাধীন দেশে ধর্মের দোহাই দিয়ে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করছে তারা আসলে ধর্মব্যবসায়ী। গণতান্ত্রিক দেশে ধর্মীয় রাজনীতি চলতে দেয়া উচিত নয়। এদের প্রতিহত করতে না পারলে দেশ একটি মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হবে এবং একদিন দেশে তালেবানি শাসন প্রতিষ্ঠা হবে। তাই এই ধর্মীয় ব্যবসায়ীদের এখনি প্রতিহত করার সময় এসেছে।
©somewhere in net ltd.