নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালো লাগে বই পরতে আর ব্লগ নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে

শরফুদ্দিন মাহমুদ

সহজ ভাবে কথা বলতে চাই, চারিদিকের দুর্নীতি ভাবিয়ে তুলছে আমায়।

শরফুদ্দিন মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুক পকেট ( পর্ব - ২)

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০০

তন্ময় সবসময় লাজুক টাইপের ছিলো । কারো সাথে সে মিশতে পারতো না । বন্ধুরা যখন একজন মেয়েকে নিয়ে খুব অশ্লীল টাইপের কিছু নিয়ে গা টিপে টিপে হাসাহাসি করছে তখন সে একটু দূরে গিয়ে গাছের দিকে তাকিয়ে আছে । বন্ধুদের কাছে তন্ময় খুব অদ্ভুত কোন ছেলে , যে শুধু আবালের মতো তাকিয়ে থাকে ।



লাজুক ছেলেদের সব চাইতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় সম্ভবত বিয়ের মঞ্চে । তন্ময়ের আজকে বিয়ে । আফসার সাহেব তার মেজো ছেলের বিয়ে খুব ধুম ধাম করে দিচ্ছে । এই ধুম ধাম করে বিয়ে তন্ময়ের লজ্জার পরিমান আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে ।এই ব্যাপারে অবশ্য আফসার সাহেবের কোন মাথা ব্যাথা আছে বলে মনে হয় না ।



রাত ১২টা । বিয়ের কাজ শেষ হওয়া বলতে বর যাত্রীর খাওয়া শেষ হয়েছে । কোন এক কারণে এখনো বিয়ে পড়ানো হচ্ছে না । তন্ময়ের দিকে কনে পক্ষের মানুষ এসে ড্যাব ড্যাব চোখে তাকিয়ে আছে । বয়স্ক কিছু মানুষ কি নিয়ে জানি নিজেদের মধ্য তখন থেকেই ফুসুর ফুসুর করেই যাচ্ছে । তন্ময় একবার ছোট মামাকে ডাকবে কিনা ভাবছে । ছোট মামা সাংবাদিক মানুষ। ঘটনা কি জিজ্ঞেস করলেই বিস্তারিত জানা যাবে । ছোট মামাকে ডাকতে হলো না ।



ছোট মামা নিজেই তন্ময়ের কাছে হুট পাট করে চলে এসেছে ।



-- ঘটনা তো খারাপ ।



-- কেন । কি হয়ছে । এইভাবে আর কতক্ষন বসে থাকতে হবে মামা । সবাই কেমন কেমন করে জানি তাকাচ্ছে ।



-- আরে ধুর তোর বসে থাকা । মেয়ে তো কোন ভাবেই কবুল বলছে না । মেয়ের বাবা রাম চড় দিবে বলার পরেও মেয়ের মুখ থেকে কবুল বের হচ্ছে না । ফয়সাল নামের এক হাবি জাবি পোলার সাথে নাকি ইটিশ পিটিশ ছিল । পুরাই অস্থির প্রেম নাকি । দুইবার বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলো মেয়ে । এই মেয়েকে বিয়ে করলে তো বিরাট ঝামেলাই পরে যাবি তুই ।



তন্ময়ের মনটা খারাপ হয়ে গেলো । নবনীর সাথে তার দেখা হয়েছিল একবার । নবনীদের ছাদে । বিয়ের তারিখ পাকা করার দিন তার বোনেরা তাকে জোর করে নবনীর সাথে দেখা করার জন্য ছাদে নিয়ে গিয়েছিলো । অনেক বেশি অস্বস্তি নিয়ে নবনীর দিকে তাকিয়ে ছিলো । নবনী একবারও তার দিকে তাকাইনি । তাই চোখ দেখা হয় নি । নিশ্চয় এই মেয়ের চোখ অনেক সুন্দর হবে । অনেক মন খারাপ হলে সে চোখে পানি টল মল করবে । নবনীর পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর পর নবনী সামনের দিকে তাকিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলো " আপনি কবিতা লিখতে পারেন । " তন্ময় কিছুই বলি নি । চলে আসার সময় নবনী বলেছিলো " আমার মন খারাপ হলে ফয়সাল ভাই কবিতা লিখে শুনাতেন । উনি অনেক ভালো কবিতা লিখতে পারেন । "



তন্ময় জানে ফয়সাল নামের কোন এক ভালো কবিতা লিখা ছেলের জন্য নবনীর মন অস্থির থাকে । তন্ময় কবিতা লিখতে পারে না । তবে সে নবনীর মন ভালো করে দিতে পারবে । ভালোবাসার মানুষের মন ভালো করার পদ্ধতি তন্ময় জানে । তন্ময় আরও অনেক কিছু জানে যা অন্যরা জানে না । নবনীর জন্য অনেক ম্যাজিক সে জমা রেখেছে । নবনী ভালো থাকবে তার সাথে সে জানে । তন্ময় জানে নবনীর চোখ অনেক সুন্দর ।



তন্ময় অস্থির হয়ে যাচ্ছে । এই প্রথমবারের মতো সে নিজের জন্য কিছু চাইছে উপরওয়ালার কাছে । একবার কবুল বলে দাও নবনী । একবার কবুল বলে দাও । তোমার কখনো মন খারাপ হবে না । মন খারাপ হলেও আমি তোমার মন ভালো করে দিব । একবার কবুল বলে দাও নবনী । একবার ...



( চলবে )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.