![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার সম্পর্কে জানার জন্যই এই খানে আসা....... আমার সম্পর্কে কিছু বুঝতে পারলে দয়া করে জানাবেন......
১. আমার রুম্মেট জাহাঙ্গির ভাই খুব বিরক্ত মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। তবে তিনি আসলেই বিরক্ত কিনা তা কিন্তু বুঝা জাচ্ছে না। কারন যতো খুশির বা দুঃখের ঘঠনাই ঘটুক না কেন তার মুখ সব সময়ই বিরক্ত হয়েই থাকে, তাই তার মুখের এরোকম তিনকোনা expression দেখে ভয়ে বিছানা থেকে লাফ দেয়া কোন বুধিমানের কাজ হবে না নিশ্চই, এক্ষেত্রে গতো মাসের একটা উধাহরন দেয়া জেতে পারে... কদিন আগে দুপুরে তিনি আমার কাছে এসে বললেন, বুচ্ছিস নির্ঝর, এটা একটু আগে পাইলাম(যথারিতি মুখে ভিশন বিরক্তির ছাপ)
আমি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি ভাই?
একটা যয়েনিং লেটার, ঐ যে কয়েক দিন আগে ইন্টারভিউ দিলাম না? আগামী মাসের এক তারিখ থেকে জয়েন করতে বলছে।
জাহাংগির ভাই হলো গত তিন বছর ধরে একেবারে সলিড বেকার।আমি গত একবছর ধরে তার সাথে আছি, প্রতি মাসে তার মা গ্রাম থেকে চিঠি পাঠান টাকা পাঠানর জন্য। তিনিও লক্ষি ছেলের মতন চিঠির উত্তর লিখতে বসে যান এবং লেখেন... মা, আমাদের কম্পানি তো অনেক বড় তাই কর্মচারি ও মালিক পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছে, এটা থেমে গেলেই একেবারে দু বছরের বেতন নিয়ে আসবো।
এই যার অবস্থা, সে যদি একটা জলোজ্যন্ত যয়েনিং লেটার পাওয়ার পরও বিরক্ত মুখ করে থাকে, এবং ওই ঘটনার কদিন পরে যয়েনিং লেটার ক্যন্সেল হওয়ার খবরও যদি তিনি একই ভাবে দেন, তাহলে তার মুখকে পাগল রাই বিশ্বাস করবে। আর আমি যে আসলে পাগল না, তা কিছুক্ষন পরেই টের পাবেন। তাই আমি হেসে বললাম, কি হইছে ভাই কিছু বলবেন মনে হয়?
তিনি আমার দিকে আরো কিছুক্ষন এভাবে তাকিয়ে থেকে বললেন, আমি আগেই বলছিলাম এসব ফালতু কাজ কার্বার ছাইরা দে, আমার কথা তো শুনলি না।
কেন কি হইছে?
আনিস বললো আজকে রাতে সান্ধিয়ার বিয়ে।
কার?
তোর সান্ধিয়ার।
আমি হাত দিয়ে কথাটা উড়িয়ে দেয়ার ভঙ্গি করে বললাম, ধুৎ কি সব বলেন...
তোর সাথে সান্ধিয়ার দেখা হয় না কয়দিন? আমার কথা শেষ করতে না দিয়েই জাহাংগির ভাই জানতে চাইলেন।
সাপ্তাহ খানিকের মতো হবে, ও ইক্সাম নিয়ে ব্যস্ত তো তাই।
পরিক্ষা টরিক্ষা কিছু না, বিয়ে নিয়েই এতো ব্যস্ততা ওর।
কি বলতেছেন এসব। একটু ঝেরে কাশুন তো জাহাংগির ভাই। (আমি টের পাচ্ছিলাম আমার গলা কিছুটা কেপে উঠছে, কারন আমি সান্ধিয়াকে কখনই খুব বেশি একটা বিশ্বাস করতাম না। তোবুও ওই আমার এই অতী বাস্তব জীবনের এক মাত্র বীলাসিতা)
কাশাকাশির কিছু নাই। মেয়ে যা ঘটানোর ঘটায় ফেলছে। আজকে রাতে সেনাকুঞ্জে সান্ধিয়ার বিয়ে। ঘটনা একফোটাও মিথ্যা না। আমার বালিশের নিচে কার্ড ও আছে, প্রথমে আমিও বিশ্বাষ করি নাই... তাই সোজা চলে গেছিলাম সান্ধিয়ার বাসায়, সেখান থেকেই কার্ড নিয়ে আসলাম, ওই দিলো। আরো বলল খুব ব্যস্ততার কারনে আমাদেরকে কার্ড দিতে আসতে পারে নি।
আমি কিছুটা গাধার মতোনই তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম, যেনো সব কথা বুঝতে পারছি না।মুখটাও মনে হয় কিছুটা হা হয়ে গেল। আমি বললাম, ও
ব্যস শেষ?
কি?
জাহাঙ্গির ভাই তার বালিশের নীচ থেকে কিছু একটা আমার হাতে গছিয়ে দিতে দিতে বললেন, এটুকুই রিয়কশন? খুব ভাল, টাইট হইয়া একটা ঘুম দে, সন্ধায় ডাইকা দিবো। সান্ধিয়া তোকেও যেতে বলছে। আমি একটু বাইরে যাই, দেখি কিছু গিফট টিফট পাই কিনা।
২. একটু আগে জাহাংগির ভাই গিফট কিনতে চলে গেলেন, তারপর কারেন্টও চলে গেল। হাতে যে পদার্থ টা নিয়ে বসে আছি, তাতে স্থুল ভাবেই ইংগিত দেয়া আছে যে, সান্ধিয়াও চলে যাচ্ছে। ভ্যবসা দুপুরে আমি একটা সোনালী কালারের সুন্দর খাম নিয়ে বাবু হয়ে বিছানায় বসে আছি। খামটার উপরে সোনালী কালী দিয়ে লিখা...
Mr.
Jahangir & Nirjhar
সান্ধিয়ার হাতের লেখাই তো মনে হচ্ছে, কণে নিজে তার বিয়ের কার্ডে লিখলো !
সন্ধেহ দূর করার জন্য ডেস্ক থেকে একটা বড় গোলাপের পাপরি বের করলাম, গোলাপের পাপরির উপর সান্ধিয়ার হাতের লিখা।বুঝাই যাচ্ছে খুব যত্ন করে লিখা হয়েছে...
LUV U
লাভ স্পেলিং এর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বেচারা লাভ আর বেশিদিন প্থিথীবিতে থাকতে চাইছে না, যেকনো সময় ফুরুত করে উরাল দিতে পারে। তবে রক্ষা, u টা সে ঠিক মতো লিখেছে, মনে হয় ya পাপরিতে লিখতে বেশি সমস্যা হচ্ছিলো। এসএমএস এ সান্ধিয়া সাধারনতো লিখে luv ya । আচ্ছা আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি? সান্ধিয়ার আজ সন্ধায় বিয়ে আর আমি ওর বিয়ের কার্ড হাতে নিয়ে এসব কি ভাবছি। নাহ আর বেশিক্ষন ওকে নিয়ে ভাবা যাবে না। আমার উচিত মাথার ভিতরের সান্ধিয়া নামক সুইচ টা অফ করে দিয়ে লম্বা একটা ঘুম দেয়া। পাপরিটা ডেস্কে রাখতে গিয়ে মনে পড়লো, কদিন আগে অনেক ভোরে সান্ধিয়া আমার রুমে এসে হাজির। জাহাঙ্গির ভাই যথারিথি বিরক্ত মুখে বলেছিলো, সান্ধিয়া আসছে।
প্রথমে বুঝতে পারি নাই, তাই চোখ কোচলাতে কোচলাতে বললাম, কে আসছে?
আরে সান্ধিয়া, হাতে এতোগুলো ফুল। বলতে বলতে তিনি দুই হাত দুই দিকে নিয়ে আমাকে ফুলের ব্যপোকতা বুঝানোর চেষ্টা করতে লাগলেন।
আমার তখন নিজেকে রাজা কিংবা মহারাজ টাইপ কিছু একটা মনে হতো। এই বিশাল শহরে একটা মফস্যলের সাধারন ছেলের দিকে সবাই এমন ভাবে তাকায় যেনো, আমি একটি রাস্তার নেরি কুরুর, যে কিনা ভুল করে মহান মানব জাতীর অংশ হওয়ার চেস্টা করছে। আর তার দিকেই প্রায় পরি টাইপের একটা মেয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকতো। বিভিন্ন বিষেশ ও অবিষেশ দিনে যে কিনা ভোর বেলায় হাতে ফুল নিয়ে উপস্থিত হতো। যাইহোক, আমি তখন নিজেকে খুব বেশী স্বাভাবিক রাখার জন্য এবং জাহাঙ্গির ভাইকে বুঝানোর জন্য যে ভোর বেলায় একটি তরুনী মেয়ে এতোগুলো ফুল নিয়ে আমার কাছে আসতেই পারে। এটা বুঝনোর জন্য খালি গায়ে লুঙ্গি পরেই সান্ধিয়ার সামনে উপস্থিত হতাম, এবং চোখ কোচলাতে কোচলাতে বলতাম, এতো সকালে?
ও আমার দিকে ওর বড় বড় চোখ দুটো আরো বড় বড় করে বলতো, তোমার কি কিছুই মনে নেই?
কেন? কি হয়েছে?
তুমি আগে মানুষ হয়ে আসো তারপর বলছি,
তুমি তাহলে একটু বসো।
তোমার এই নোংরা বিছানায় আমাকে বোসতে বলছো?
আমি অপরাধির মতন বললাম, তাহলে আর কি করবা দারিয়ে থাকো, আমি দু মিনিটের মধ্যে আসছি।
আমি যখন সান্ধিয়ার মানুষ হয়া হয়ে আসতাম, তখন দেখতাম, ও আমার বিছানা গুছিয়ে ওখানেই বসে জাহাঙ্গির ভাইয়ের সাথে তুমুল আড্ডাতে ব্যাস্ত। এবং তাদের দুজনের আড্ডার বিষয় ও নির্ধারিত, “রাজনীতি”। আমি ভেবে পাই না এতো সুন্দর একটা মেয়ে কিভাবে রাজনীতি নিয়ে এতো কথা বলে!! ওর সাথে পরিচিত হওয়ার আগে আমার ধারনা ছিলো সুন্দরী মেয়েরা শুধু নিজের বিষয়ে কথা বলতে এবং অন্নের কাছে নিজের প্রশংসা শুনতে ভালবাসে।
কিছুক্ষন পর রিকশায় যেতে যেতে আমি বললাম, এখন বলো তো এতো ফুল কেন?
তুমি কি জানো তুমি দিনে দিনে স্টুপিড এর পর্যায় চলে যাচ্ছো? সান্ধিয়া কঠিন ভাবে জানতে চাইলো।
আমি মাথা চুলকিয়ে বললাম, ভালাইন্টাইন ডে তো চলে গেল কদিন আগে, আজকে আবার কি হলো?
সান্ধিয়া তার আকনিস্ট ছাত্র কে বুঝাচ্ছে, আজকে হলো ২১শে ফেব্রুয়ারী। এই দিনে শহীদ মীনারে ফুল দিতে হয়, তাই আমারা যাচ্ছি শহিদ মিনারে এই ফুল গুলো দিতে।
আরেক হাতে একটা বড় পাপরি দেখিয়ে বলল, আর এটা হচ্ছে তোমার। সারা রাত অনেক কষ্ট করে এটার উপর লিখেছি।
আমি পড়ে পাপরিটা মানি ব্যগে রেখে দিতে যাচ্ছিলাম, ও বলল, তুমি এটা মানি ব্যগে রাখছো কেন?
আমি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, তাহলে কি করবো?
যতক্ষন আমরা ঘুরবো, তুমি এটা দু হাতে নিয়ে বসে থাকবা?
আমি যেন বিষম খেলাম, ওমা!! কেন?
সান্ধিয়া ভ্রু যোরা নাচিয়ে বলল, তুমি যেন আমার হাত ধরতে না পারো সেজন্য। আজকের দিনটা ভুলে যাওয়ার জন্য এই হল তোমার শাস্তি।
সেদিন সারাদিন আমি দুই হাতে একটা ফুলের পাপরি নিয়ে ওর সাথে ঘুর ঘুর করলাম। দুপুরেরে দিকে পাপরিটা একটু ছিরে যাওয়ার কারনে ও চেচামেচি করে আকাশ মাথায় তুল্লো। অবশ্য, শেষ বিকেলের দিকে আমার শাস্তি কিছুটা শিথিল হয়েছিল, আমি এক হাত দিয়ে ওর মোম-মোম হাতটা শেষ বারের মত ধরার সুযোগ পেয়েছিলাম।
৩. আমাকে একজন ডাকছে। এই নির্ঝর উঠ, দেরী হয়ে যাচ্ছে তো উঠ উঠ...
আমি জানি আমাকে কে ডাকছে। জাহাঙ্গির ভাই। কিজন্য ডাকছে তাও জানি। আমার এখন টিউশনিতে যেতে হবে। জাহাঙ্গির ভাই তার রুটিন মাফিক আমাকে সন্ধ্যা বেলায় ডেকে তুলছে। প্রত্যেকদিন পুরান ঢাকার চিপা গলিতে, বদ্ধো রুমে একটা গাধা চশমা পরা মেয়েকে অংক গিলাতে ভাল লাগে না। কিন্তু আজকে তো শুক্র বার, এই একটা দিনই ওই জাহান্নামে যেতে হয় না। এই তথ্য জাহাঙ্গির ভাইও খুব ভাল করে জানে, তাহলে আমাকে ডাকছে কেন? কোন দুঃসংবাদ? নাহ... তা সম্ভব না, কারন আমি আমন ই একটা মানুষ যে, আমার কোন দুঃসংবাদ হলে সেটা আমাকে নিয়েই হতে হবে। যেমন ধরা যাক, আমার পা ভেঙ্গে গেলো, তাহলে সেটা হবে আমার জন্য একটা দুঃসংবাদ। কিন্তু সেক্ষেত্রে জাহাঙ্গির ভাইয়ের আগে আমারই জানার কথা। এখন মোটামটি নিশ্চিত হয়া গেলো যে কনো দুঃসংবাদ না। তাই আমি আরো মটকা মেরে দ্বিতিয় দফা ঘুমানোর চেষ্টা করতে থাকলাম। কিন্তু না, সেটা মনে হচ্ছে সম্ভব না, কারন জাহাঙ্গির ভাইয়ের ডাকার মাত্রা গুনিতক হারে বাড়ছে। তিনি এখন আমাকে এমন ভাবে ধাক্কাচ্ছে যে, যেকোন মুহুরতে বিছানা থেকে পড়ে যেয়ে সত্তিকারের দুঃসংবাদ এর জন্ম হয়ে jeতে পারে। অজ্ঞতা আমি চোখ বন্ধ রেখেই চি চি করে বললাম, জাহাঙ্গির ভাই, আজকে তো শুক্র বার, পড়াতে যেতে হবে না।
ইয়েস আজকে শুক্রবার আঠাশে ফেব্রুয়ারি সান্ধিয়ার বিয়ে। আজকে আমরা যবো সিনাকুঞ্জে, তারাতারি রেডি হ।
হঠাৎ করে আমার সব মনে পরে গেল, আমার একজন আছে, যার নাম সান্ধিয়া, আজকে তার বিয়ে। মনে হচ্ছে আমার মাথার ভিতরে কেউ ব্রেইনের জায়গায় বাতাস ভরে দিয়েছে, তাই মাথার মদ্ধে কেমন যেন ভোঁ ভোঁ আওয়াজ হচ্ছে। মানুষের ফিলিংস গুলো যে হার্ট এর না ব্রেইন এর, তা খুব টের পাচ্ছি।
জাহাঙ্গির ভাই ডেকে ডেকে হাল ছেরে দিয়ে আমাকে রিতিমতো টেনে তুলে বলল, দেখতো গিফটা কেমন হইছে?
আমি চোখ মেলে চারটা গ্লাস ও তার পিছনে চারটা দাত দেখতে পেলাম। অর্থাৎ তিনি গিফট হিসেবে চারটা গ্লাস এর একটা সস্তা সেট নিয়ে হাসি মুখে আমার চোখের সেমনে ধরে রেখেছেন।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, টাকা কোথায় পেয়েছেন?
আনিসের কাছ থেকে ধার নিলাম, বিয়েতে তো আর খালি হাতে যাওয়া যায় না। তুই তারাতারি রেপিং টা করে ফেল।
আমি সুন্দর করে রেপিং করলাম এবং তার উপর জাহাঙ্গির ভাইয়ের নামটা লিখে দিলাম। জাহাঙ্গির ভাই বলল, তোর নামও লেখ।
আমি বল্লাম, আমার কেন?
আরে বিয়ের অনুষ্ঠানে কোন গিফট ছাড়া যাবি নাকি।
আমি আর কথা বারালাম না আমার নাম লিখলাম। এই দু বছরে ফুল ছাড়া সান্ধিয়াকে দেয়া এটা আমার দ্বিতীয় গিফট।
আমি যে আসলে বিয়েতে যাচ্ছি না জাহাঙ্গির ভাইকে এটা বলা যাবে না। বললেই গত এক বছরে আমি তার কি কি কথা রাখি নাই এবং তিনি আমার কি কি কথা রেখেছেন তা নিয়ে টানাটানি শুরু করবেন। তাই আমি মনে মনে ঠিক করলাম নিচে নামার সঙ্গে সঙ্গেই উল্টা দিকে দৌড় দিব। বেড় হওয়াড় আগে সান্ধিয়ার দেয়া একটা পারফিউমও গায়ে একটু স্প্রে করে নিলাম।
জাহাঙ্গির ভাই আর আমি হেটে হেটে ফার্ম গেটের দিকে যাচ্ছি ওখান থেকেই মেক্সিতে করে সোজা সেনাকুঞ্জে। আমি যেকোন সময় উল্টা দিকে দৌড় দেয়ার জন্য মোটামটি প্রস্তুতি নিয়ে রাখলাম। হঠাৎ জাহাঙ্গির ভাই বল্ল, অনেক দিন পর ভাল খাবার খাব কি বলিস? মেসের খাবার খেতে খেতে তো আমাদের মুখটা একেবারে পচে যাচ্ছেরে। তুই না গেলে কিন্তু আমি যেতাম না। আবার একটু পর বল্ল, সান্ধিয়াকে নিশ্চই আজকে খুব সুন্দর লাগবে।
জাহাঙ্গির ভাইকে আমার আর নিরাশ করতে ইচ্ছে হল না। আমি জাহাঙ্গির ভাইকে নিয়ে মেক্সিতে করে সেলাকুঞ্জে চলে আসলাম। সেনাকুঞ্জের বিশাল বিল্ডিং এর সামনে নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে। আমাদের পাস দিয়ে বিরাট বড় বড় গাড়ি গেট দিয়ে ঢুকছে আমরাও ঢুকলাম। অলরেডি অনেক মানুশ জন চলে এসেছে।জাহাঙ্গির ভাই বল্ল, চল সান্ধিয়ার সাথে দেখা করে আসি। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে কি মনে করে যেন বল্ল, থাক তুই এখানে দাড়া আমিই দেখা করে আসি। আমি অনেকক্ষন দাড়িয়ে আছি। হঠাৎ চোখে পড়লো সান্ধিয়া স্টেজে বসে আছে। তাকে রাজকন্নার মতই লাগছে।ওর পাশেই বড় বসে আছে। এবং একটু পর পর সান্ধিয়াকে দেখার চেস্টা করছে। আমি ওদের সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি।জাহাঙ্গির ভাই সান্ধিয়াকে কি যেন বলছে, হঠাৎ সান্ধিয়ার চোখ দুটো কি যেন খুজতে লাগলো। আমি ভিরের মাঝে ঢুকে গেলাম। আর সাথে সাথেই আমি সান্ধিয়াক প্রায় ক্ষমা করে দিলাম। আসলেই তো সান্ধিয়ার মতো মেয়ে আমাকে এতো দিন নিখাদ ভালবাসা দিয়ে গেছে এই তো অনেক, এতো কি পাওয়ার উচিত ছিল আমার? প্রকৃতি কি আমার প্রতি একটু বেশিই করুনা করলোনা? আমি শুধু সান্ধিয়াকে ক্ষমা করেই শেষ করলাম না তার মহত্যও আমাকে কিছুটা উদাসিন করে দিল। আমি পাশের একটা খাবার টেবিল এ বসে গেলাম। একটূ পর জাহাঙ্গির ভাই এসে আমার পাশে বসতে বসতে বল্ল, তুই কই ছিলি সান্ধিয়াতো তোকে দেখলো না? আমি আরো বললাম মনে হয় চলে গেছে। আমি কিছু বললাম না।
খাবার চলে আসছে জাহাঙ্গির ভাই গ্রগ্রাসে খাচ্ছে। কে বলবে তার মার টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না। এখনো জাহাঙ্গির ভাই এর মা রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে তার ছেলে একসাথে দুবছরের বেতন নিয়ে আসবে তাকে বড় ডাক্তার দেখাবে। আর জাহাঙ্গির ভাই প্রতি সকালে ইন্টারভিঊ এর জন্য আবেদন পাঠায় পোস্ট অফিসে গিয়ে। এতো কস্ট নিয়েও তো মানুষ বেচে থাকে। আমি জাহাঙ্গির ভাই এর পিঠে হাত দিয়ে বললাম, ভাই আর এক গ্লাস বোরহানি নেন এরা বোরহানি টা ভাল বানিয়েছে। জাহাঙ্গির ভাই বল্ল, তাহলে দে আরেক গ্লাস। খাওয়া শেষ হলে আমি বললাম, চলেন যাই। দাড়া শেষে কি হয় দেখে যাই। আমি অবাক হয়ে জাহাঙ্গির ভাই এর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। আমি বল্লাম, শেষে আবার কি হবে বিয়ে তো শেষ। তবুও আমরা কি মনে করে যেন শেষ অবদি থেকে গেলাম।
সান্ধিয়া শেষের দিকে গাড়িতে উঠার আগে খুব কান্নাকাটি জুরে দিলো। ওর কান্নাকাটি দেখে মনে হতেই পারে ওকে যোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি জাহাঙ্গির ভাইকে বললাম, আপনার শেষ দেখা হয়েছে? জাহাঙ্গির ভাই বল্ল, চল।
পরিশেষ,
রাত সারে এগারটা। ক্যান্টন্মেন্টের পুরো রাস্তা খালি। মাঝে মাঝে পাশ দিয়ে গর্জন করে গাড়ি যাচ্ছে। জাহাঙ্গির ও নির্ঝর ফুটপাত দিয়ে হাটতে লাগলো। তাদের দুজনের মাঝেই আছে কস্ট। তবে কস্টকে সরিয়ে ফেলার মত তাদের সামর্থ নেই। তাই তারা কস্ট নিয়েই হাটে কস্ট নিয়েই হাসে। এরাই শহুরে মানুষ। ঢাকার হাজারো অলি গলিতে হাজারো মানুষ হাজারো কস্ট নিয়ে রাত যাপন করে নির্দিধায়।
২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪১
বাকপ্রবাস বলেছেন: গল্পটা সুুন্দর ছিল, বানান সমস্যা আর ছাত্রী সম্পর্কে মন্তব্যটা কটু লেগেছে। আপনার গল্প লেখার হাত ভাল, বানানটা দেখতে হবে একটু
৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৩
সনেট কবি বলেছেন: বেশ
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: আমার এক বন্ধু ছিল জাহাঙ্গীর নাম। সে একমাস আগে অর্থাৎ গত মাসের ২১ তারিখ মারা গেছে।
আপনার লেখার বেশ কিছু বানান সমস্যা আছে। এডিট করে নিন।