নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছুই বলার নেই...

এবং সাইদি

স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগে, দেখাতেও!

এবং সাইদি › বিস্তারিত পোস্টঃ

যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হোক!

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৮

পহেলা বৈশাখ। নববর্ষ উদযাপন এখন বাংলাদেশের প্রধানতম উৎসব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের অংশগ্রহণের দিক দিয়েই প্রধান ও প্রাণের উৎসব এটি। এই উৎসবের মধ্যে খুঁজে পাই আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং অস্তিত্বের শিকড়।

দিনটি উদযাপনে কাক-ডাকা-ভোর থেকেই পথে নামে লাখো মানুষ। সকাল হতেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, চারুকলা, রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। নানা রঙে, নানা ঢঙে সেজে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে হাসিমুখে শুরু হয় বর্ষবরণ। এটি কেবল ঢাকাতেই নয়, এ আনন্দধারা বয়ে চলে সারা দেশেই। এদিন সাম্প্রদায়িক অপশক্তিসহ সব অশুভকে প্রতিহত করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করে সকলেই। এবার পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোগানও ছিল ‘অনেক আলো জ্বালাতে হবে মনের অন্ধকারে’।

যখন বর্ষবরণে মাতোয়ারা পুরো দেশ, নববর্ষের আনন্দ-উল্লাসে ব্যস্ত পুরো জাতি, তখন কিছু নরপশু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পবিত্র প্রাঙ্গণকে করেছ অপবিত্র। বিকৃত মস্তিষ্কের এসব নরপশু নারীদের বস্ত্রহরণ, শ্লীলতাহানির মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। লাখো মানুষের এই মিলনমেলার উৎসবে আগত নারীদের ওপর নরপশুরুরা প্রকাশ্যে যে বর্বর, অসভ্য, অমানবিক, পৈশাচিক ঘৃণ্য যৌন হয়রানি চালিয়েছে। এতে পরক্ষণেই ম্লান হয়ে গেছে সকল আনন্দ। লজ্জায় মাথা নিচু আজ পুরো জাতির। কলঙ্কিত হয়েছে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির এই উৎসবের মর্যাদা ও সম্মানের। আজ গোটা জাতি স্তম্ভিত ও উদ্বিগ্ন।

সিসি ক্যামেরা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চারস্তর নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যেই বর্ষবরণের দিন ৩০ থেকে ৩৫ জন অসভ্য উচ্ছৃঙ্খল তরুণ প্রকাশ্যে নারীদের কাপড় ধরে টানাটানি, মারধর ও শ্লীলতাহানি করে।

অভিযোগ উঠেছে পুরো ঘটনাটি ঘটেছে পুলিশের নাকের ডগায়। এ সময় নারীদের রক্ষায় ছাত্র ইউনিয়নের যে নেতারা এগিয়ে এসেছিলেন, তারাও উচ্ছৃঙ্খল এসব তরুণদের হাতে প্রহৃত হয়েছে। তাও আবার পুলিশের সামনেই।

ছাত্র ইউনিয়ন, প্রত্যক্ষাদর্শী ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই যেকোনো উৎসবের দিনে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। অতীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, এটা জানার পরও প্রশাসন যথাযথ কোনো বিশেষ ব্যবস্থা নেয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এম আমজাদ আলী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল বিকেল ৪টার মধ্যে উদ্যানের গেট বন্ধ করে দিতে, কিন্তু পুলিশ তা করেনি।

আর ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে সিসি টিভি ছিল। সেটা দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দিন দিন যেখানে আমাদের দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা, চিকৎসা, প্রযুক্তি, সংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রেই নারীদের অবদান উন্নতির শীর্ষে, সেখানে নারীদের জনসম্মুখে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার এ ঘটনা পুরো জাতিকে পীড়া দিয়েছে, যা হার মানিয়েছে মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও। ম্লান হয়েছে আমাদের বিগত দিনের অর্জন।

বাঙালির সবচেয়ে বড় সর্বজনীন এ উৎসবে নারীদের বিবস্ত্র ও হয়রানি করে যৌনলিপ্সু নরপশুরা যে নজির তৈরি করেছে, তাতে সবাই স্তম্ভিত। তাই নারী লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। আর যেন কখনো এ ধরনের জঘন্য বর্বরতা ও অসভ্যতার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হোক। একইসঙ্গে নারীদের নিরাপত্তা ও নিরপদ পরিবেশসহ যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হোক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.