![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিষণ্ণতা এক অদ্ভুত রোগ। যখন পেয়ে বসে, মানুষের মনটা কেমন স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। কিছুই ভাল লাগে না কিংবা ভাল লাগার অনুভূতি গুলো সাময়িকভাবে বিশ্রাম নিতে শুরু করে।
কোন কারণ নেই, কোন ব্যাখ্যা নেই, তবুও এক ভূতা অনুভূতি কেমন করে চারপাশের সবকিছুকে কেমন বিরক্ত এবং অসহনীয় করে তুলে তা বলে বা লিখে বুঝনো কঠিন। মানুষ প্রাণিটি খুব জটিল, মস্তিষ্ক নামক এক স্লট মেশিন কয়েন ছাড়াও অবিরাম খেলে যায়।
বসে থাকার মতো ক্লান্তি নেই, দরকারের অদরকারের সব চিন্তা সে করতেই থাকে। আধুনিক বিজ্ঞান বলে মন বলে আলাদা কিছু নেই, মস্তিষ্কেরই একটা অংশ কিন্তু আমরা মনকে আলাদাভাবেই ভাবতে পছন্দ করি। মনটা বড়ো বর্ণচোরা। নানা রকম বর্ণ ধারণ করতে পটু। এই রঙ হলুদ,নীল বেগুনী কিংবা আকাশী নয়, অদৃশ্য হাজার রকম রঙের খেলা করে মনে।
আনন্দ মনকে বাসিয়ে তুলে হাজার রঙের সমুদ্রে। দুঃখবোধ কেমন করে সেই সমুদ্রকে ছোট করে করে নিয়ে আসে পুকুরের কাছে। বিষণ্ণতা আরো কঠিন অবস্থা। পুকুরের পানি একদম নীরব, ঢেউ খেলে না। বিষণ্ণতা ভাঙাতে কারো ঢিল ছোড়া চাই। কিন্তু এমন সব পরিস্থিতে ঢিল নিয়ে কেও বসে থাকে না বলেই এই সময় কেমন করে জানি ক্লাসিক্যাল পদার্থবিদ্যার সমস্ত সূত্রকে ভুল প্রমাণিত করে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। প্রতিটি মুহূর্তকে আলাদা আলাদা করে চেনা যায়।
কোয়ান্টাম মেকানিকস এ এমন একটা ব্যপার আছে, পানির ধারাকে সরু করতে করতে এমন এক সময় আসে যখন তা আর ধারা থাকে না, ফোটায় পরিণত হয়, আলোর ব্যাপারটাও এমন, উৎস থেকে প্রবাহ সরু সরু করতে করতে এমন অবস্থায় আসে যখন আলোকে আর প্রবাহের ছকে ফেলা যায় না, তখন কণায় পরিণত হয়,যাকে ফোটন বলে এবং তখন এদেরকে গণা হয়, একটা আলো, দুইটা আলো এভাবে।
বিষণ্ণতায় সময় গুলোকে এভাবে আলাদা আলাদা ভাবে গণা যায়। প্রতিটি সময়ের একক গুলোর বিস্তৃতি এতো এতো বিশাল যে প্রত্যেকটির মাঝে আরও অদ্ভুত সব ব্যাপার থাকে। প্রতিটি মুহূর্তেই অদ্ভুত সব চিন্তা রাজি তোমাকে হুল ফুটিয়ে যাবে, তুমি হয়তবা চিৎকার করবে মনে মনে, কিন্তু তোমার এই চিৎকার কেও বুঝতে পারবে না। তুমি হয়তবা আশা করবে, কেও তোমার সেই ছোট্ট পুকুরে ঢিল ছুড়ে প্রবাহের সৃষ্টি করবে, কিন্তু তা কখনোই হবে না, আরো কঠিন হতাশা সৃষ্টি হতে থাকবে। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার। অথচ আনন্দের ব্যপার গুলোতে এই ব্যপার গুলো থাকে না।
আইনস্টাইন ভর করে বসে আনন্দময় সময়গুলোর ঘাড়ে, বিশাল সময়ে বিস্তৃত সমুদ্রে তোমার নৌকা মুহূর্তেই অচিন্তনীয় দ্রুততার সাথে পার করিয়ে নিয়ে যায়, ঠিক বুঝেই উঠা যায় না, সময়ের প্রসারণ তখন উল্টে থাকে, অনেক বিশাল সময় কেমন করে এতো ছোট হয়ে যায় সেটাই আশ্চর্য। এ এক কঠিন ধাঁধাঁ। মাঝে মাঝে মনে হয়, এই আমি, আমার অস্তিত্ব, অনর্থক। আমি বসে আছি, অযথা।
তবে অস্তিত্ব এবং অনস্তিত্ব নিয়ে দ্বিধা থেকে জন্ম নেয় নতুন এক ধারণা। আমাদের এই অস্তিত্বের সমান্তরালে হয়তবা আছে আরও সব অস্তিত্ব। অস্তিত্ব সরলরেখার মতো এগিয়ে চলে অনস্তিত্বের সন্ধানে। এজন্য আমি আমার আমিকে কখনো দেখতে পাই না।
নিজেকে বড়ো দেখতে ইচ্ছে করে। আমি হয়তবা বসে বসে গভীর বিষণ্ণ হয়ে অদ্ভুত সব ভাবছি, আর আমার দ্বিতীয় অস্তিত্ব হয়তবা আমার এই অবস্থা কিছুক্ষণ আগেই পার করে এসেছে, সুতরাং সে আগে থেকেই জানে, কিভাবে সময়ের অদ্ভুত প্রসারণ থামিয়ে দেওয়া যায়। তার কাছ থেকে জেনে নিয়ে আমিও থামিয়ে দেবো আমার প্রসারণ।
কিন্তু আবার ভয়ও আছে, দুটি অস্তিত্ব সামনা সামনি দেখা হলে হয়তো নতুন অস্তিত্বের প্রবাহে সৃষ্টি হবে। নতুন অস্তিত্বে হয়তো, এই আমি নূতন হয়ে যাবো, আমার আমি তখন নতুন মাত্রা পাবে, কিন্তু আগের আমিটাকে খুব মিস করতে শুরু করবো। তখন শুরু হবে আবার নতুন সময়ের প্রসারণ। আবার সেই হুল ফুটানো আত্নচিৎকার।
এই অদ্ভুত লোপ আরো কঠিন সময়ের মধ্যে নিয়ে আমাকে ফেলে দিতে পারে। না, আর হচ্ছে না, অস্তিত্বের অন্তর্ঘাত খুবই অসহনীয়। বিষণ্নতার কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে - নিস্তব্ধতার আধার আর জেগে থাকার সারশূণ্যতায় আমাকে ঘিরে ক্রমেই বেড়ে উঠছে এক বুক হতাশা। বেচে থাকার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গগুলো ক্রমশ নির্জীব ধাবিত, জাগতি আলোময় কোলাহল গুলো কেমন দূর থেকে দূরে বহু দূরে যেতে যতে নিঃশেষ হতেছে প্রায়।
মাঝে মাঝে বেদনার হুলফুটানো আত্নচিৎকার ভেসে যায় দেহের প্রতিটি শিরা উপশিরায়। আর ঘনকোয়াশার রঙহীন আকাশ মনের অজান্তেই ফেলে আসা দিনের স্মৃতির মতো বাররার ঘিরে রাখে কোন অজানায়। অলস ভাবনা গুলোর ক্লান্তিতে যেন বেঁচে থাকায় দায়।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৩
এবং সাইদি বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩
সুমন কর বলেছেন: গোছানো লেখা.....+।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৩
এবং সাইদি বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাল লাগলো খুব।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৩
এবং সাইদি বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫১
সুলতানা রহমান বলেছেন: বিষন্নতার মুহূর্ত গুলো সত্যিই দীর্ঘ
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৩
এবং সাইদি বলেছেন: আসলেই তাই
৫| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৮
শামছুল ইসলাম বলেছেন: আনন্দ, বেদনা ও বিষণ্ণতা - তিন অনুভূতিকেই চমৎকার ভাবে প্রকাশ করেছেনঃ
//আনন্দ মনকে বাসিয়ে তুলে হাজার রঙের সমুদ্রে। দুঃখবোধ কেমন করে সেই সমুদ্রকে ছোট করে করে নিয়ে আসে পুকুরের কাছে। বিষণ্ণতা আরো কঠিন অবস্থা। পুকুরের পানি একদম নীরব, ঢেউ খেলে না। বিষণ্ণতা ভাঙাতে কারো ঢিল ছোড়া চাই। কিন্তু এমন সব পরিস্থিতে ঢিল নিয়ে কেও বসে থাকে না বলেই এই সময় কেমন করে জানি ক্লাসিক্যাল পদার্থবিদ্যার সমস্ত সূত্রকে ভুল প্রমাণিত করে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। প্রতিটি মুহূর্তকে আলাদা আলাদা করে চেনা যায়।//
তারপর সেগুলোকে বিজ্ঞানের সাথেও সুন্দর মিলিয়েছেনঃ
//কোয়ান্টাম মেকানিকস এ এমন একটা ব্যপার আছে, পানির ধারাকে সরু করতে করতে এমন এক সময় আসে যখন তা আর ধারা থাকে না, ফোটায় পরিণত হয়, আলোর ব্যাপারটাও এমন, উৎস থেকে প্রবাহ সরু সরু করতে করতে এমন অবস্থায় আসে যখন আলোকে আর প্রবাহের ছকে ফেলা যায় না, তখন কণায় পরিণত হয়,যাকে ফোটন বলে এবং তখন এদেরকে গণা হয়, একটা আলো, দুইটা আলো এভাবে। //
তারপরও রহস্য থেকেই যায়ঃ
//মাঝে মাঝে মনে হয়, এই আমি, আমার অস্তিত্ব, অনর্থক। আমি বসে আছি, অযথা।//
অস্তিত্ব এবং অনস্তিত্ব দ্বন্দ্ব আরো দানা বাঁধে।
মন নিয়ে সুন্দর, গোছানো একটা লেখার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন। সবসময়।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৫
এবং সাইদি বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ । আপনিও ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন সবসময়
৬| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: বিষন্নতা মাঝেমাঝে আমাকেও পেয়ে বসে।
ভাল লেগেছে আপনার লেখাটা।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০১
এবং সাইদি বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৫
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভালো লাগলো বিষণ্ণ বিষয়ক ভাবনা।
মাঝে মাঝে সত্যিই অকারণ কারণে মন হু হু করা ব্যাপারটা ক্রমাগত মস্তিষ্কে সুঁইয়ের মতো হুল ফোঁটায়!
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০২
এবং সাইদি বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৪৮
সুপ্তময় বলেছেন: "দুটি অস্তিত্ব সামনা সামনি দেখা হলে হয়তো নতুন অস্তিত্বের প্রবাহে সৃষ্টি হবে। নতুন অস্তিত্বে হয়তো, এই আমি নূতন হয়ে যাবো, আমার আমি তখন নতুন মাত্রা পাবে, কিন্তু আগের আমিটাকে খুব মিস করতে শুরু করবো। তখন শুরু হবে আবার নতুন সময়ের প্রসারণ। আবার সেই হুল ফুটানো আত্নচিৎকার।"
আগের আমিটাকে মিস করার মত বিচিত্র অনুভূতি খুব কমই আছে। আত্নচিৎকার যেমন আছে তেমনি আনন্দ ও আছে।দুটোই আমি ও আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।নতুন আমি র আত্মতৃপ্তির পথ যত প্রশস্থ হয় আত্নচিৎকার ততই কমতে থাকে কিন্তু আগের আমি র অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যায় না।সকল আমি মিলে এক আমিতে পরিনিত হওয়ার আত্মবিশ্বাসেই নতুন আমি র পথ চলা।
লেখাগুলো যেন ড্রাফট করা ছিল আজকের এই সময়ে পড়ার জন্য।এত সুন্দর করে লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ
৯| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪৩
এবং সাইদি বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ
১০| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২০
এহসান সাবির বলেছেন: দারুন....!
১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৩
এবং সাইদি বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৫
সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: সুন্দর ভাষাশৈলী