নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক মধ্যবিত্ত কৃষকপরিবারে জন্ম। ইতিহাসে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করেছি আনন্দমোহন কলেজ থেকে।

ইবিএস খাইরুল

ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক মধ্যবিত্ত কৃষকপরিবারে জন্ম। ইতিহাসে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করেছি আনন্দমোহন কলেজ থেকে। রাজনৈতিক দলের সাথে কাজ করার সুযোগ না হলেও সামাজিক সংগঠন করার সুযোগ হয়েছে। ২০১৪ সালে ফেসবুক মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ঈদগাহ বন্ধু সমাজ(ইবিএস) নামে সমাজ উন্নয়নকামী সংগঠনের চীফ কোঅরডিনেটর হিসেবে আমাদের গ্রামকে আদর্শগ্রামে উন্নীত করতে কাজ করছি। চাকুরী করছি একটি পোশাক কারখানায় মানবসম্পদ বিভাগে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আমি কথা বলি। চার ভাই চার বোনের মধ্যে ৩য় এবং বড় ছেলে।

ইবিএস খাইরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভয়াবহ রোগ হেপাটাইটিস-বি এবং ....... একটি পরীক্ষা

২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫১

হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম



হেপাটাইটিস-বি সম্পর্কে আমার মনে হয় খুব কম সংখ্যক মানুষই জানেন। এটি মূলত লিভার বা কলিজায় সংক্রামিত হয়। আমরা এতদিন যা মাটিয়া(মাইট্টা) জন্ডিস নামে চিনতাম। হেপাটাইটিস-বি মূলতঃ একটি ভাইরাস। যা নানাভাবে এক মানব দেহ থেকে অন্য মানব দেহে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এটি এইডস রোগের চেয়েও বেশী সংক্রামক বলা হয়ে থাকে। হেপাটাইটিস-বি রোগটি দুইধরণের মেয়াদের হয়ে থাকে। যেমন - স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী। দীর্ঘ মেয়াদী যা ৬ মাসের বেশী তা হেপাটাইটিস লিভার সিরোসিস এর অন্যতম প্রধান কারন। আক্রান্ত রোগীর কোন রকম উপসর্গ নাও থাকতে পারে। জ্বর, ক্লান্তিবোধ, শরীর টনটন করা, ব্যথা, বমি ভাব এবং ক্ষুধামন্দা- এই রোগের লক্ষণ। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন রোগাক্রান্ত মায়ের নবজাতকেরা, ইনজেকশন দিয়ে যারা নেশা করে, রোগাক্রান্ত রোগীর নিকট জনেরা, স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা যারা রক্তের সংস্পর্শে প্রায়শই আসেন যেমনঃ রক্ত সঞ্চালন বিভাগের কর্মী, দাঁতের ডাক্তার, সেবিকা এবং ধাত্রীরা।

হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম


হেপাটাইটিস-বি রোগটি বিভিন্নভাবে ছড়ায় যেমনঃ রক্ত বা রক্তের সংস্পর্শ যেমন খোলা ক্ষত স্থান বা আঁচড়ের সংস্পর্শে আসলে, দূষিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে, আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে নবজাতক, ব্যক্তিগত দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিস, যেমন: দাঁতের ব্রাশ, রেজার, ক্ষুর, পানির গ্লাস, চায়ের কাপ ইত্যাদি, সিরিঞ্জ বা সূঁচের ব্যবহার, মূখের লালারস এবং যৌন কর্মের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এই রোগটি নির্ণয় করার জন্য রোগীর শরীর থেকে সামান্য রক্ত নিয়ে HBsAg স্ক্রিনিং টেষ্ট করতে হয়। যাদের রক্তে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস পজিটিভ বা থাকবে তাদেরকে পরবর্তীতে লিভারের ক্ষতি হয়েছে কিনা অথবা সম্ভাবনা আছে কিনা সেগুলো জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী HBeAg, AST(SGOT), ALT(SGPT), HBV-DNA, Ultrasound, Endoscopy of upper GIT পরীক্ষাগুলো করতে হবে। আক্রান্ত রোগীকে নিয়মিত ফলোআপ এ রাখতে হবে, যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক চিকিৎসা আরম্ভ করা যায়। যাদের শরীরে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস পাওয়া যাবেনা বা নেগেটিভ তাদের ভ্যাকসিন নেয়া অবশ্যই করণীয়। পরিবারের সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে হবে যাতে সবাই হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস মুক্ত হয়ে সুস্থ্য থাকতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী হেপাটাইটিস-বি রোগে আক্রান্ত রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হেপাটাইটিস-বি রোগের ওষুধ সেবন করতে হবে।
একটি পোশাক কারখানায় দিনভর পরীক্ষা ও সমীক্ষা
গত ১১ ও ১২ এপ্রিল ২০১৮ ইং তারিখ গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে স্থাপিত একটি পোশাক কারখানায় দিনভর হেপাটাইটিস-বি স্ক্রিনিং টেষ্ট করে একটি বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবা দানকারী সংস্থা। হেল্থ এইড নামক স্বাস্থ্য সেবাদানকারী সংস্থাটি জায়ান্টগ্রুপের পোশাক উৎপাদন কারখানার ৯৫৩ জন শ্রমিক ও কর্মকর্তার হেপাটাইটিস-বি স্ক্রিনিং টেষ্ট করে। তাতে ১৬ জনের হেপাটাইটিস-বি পজিটিভ বা সংক্রমণ হয়েছে জানা যায়।যার শতকরা হিসেব করলে দাঁড়ায় ১.৬৮% মানুষ হেপাটাইটিস-বি রোগে আক্রান্ত। যদি পরীক্ষা করার উদ্যোগ না নেওয়া হত তবে এদের শরীরে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস আছে এমনটি জানার উপায় ছিলনা। আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ে ইতিমধ্যে ক্যাম্পেইন হয়েছে, তাদের কি করনীয় তা নির্ধারণ করে ভবিষ্যতে কিভাবে চলতে তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসা নিতে বলা হয়েছে।

হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্তদের নিয়ে আলোচনা


হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্তদের নিয়ে আলোচনা


একটি অসমর্থিত সমীক্ষা অনুযায়ী দেশের শতকরা ৭-১০ ভাগ মানুষ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের বাহক এবং প্রায় ৩.৫ ভাগ গর্ভবতী মায়েরা হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত।সারা বিশ্বে প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ দীর্ঘমেয়াদী হেপাটাইটিস-বি রোগে আক্রান্ত।
প্রস্তাবনা: যে সব শিশু বর্তমানে জন্ম নিচ্ছে তাদেরকে সরকারীভাবে ২০০৭ টিকা প্রদান করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে সরকারীভাবে হেপাটাইটিস-বি থেকে মুক্ত থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যারা এর পূর্বে জন্ম গ্রহণ করেছেন তাদেরকে কিভাবে হেপাটাইটিস-বি থেকে মুক্ত করা যায়? যেখানে ১.৬৮% মানুষকে একটি কারখানা থেকে সনাক্ত করা গেছে নিশ্চয় সারাদেশে বিরাট একটি সংখ্যা হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত রয়েছে। সমগ্র দেশে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে তা সরকারী বা বেসরকারী হউক মানুষকে নিরাপদ করে তুলা প্রয়োজন।
হেলথ এইড এর জেনারেল ম্যানেজার(জিএম) এস এম মতলব উদ্দীন এর সাথে কথা বলেছিলাম, তিনি বলেন হেপাটাইটিস-বি রোগটি এইডসের চেয়েও ভয়াবহ। হেলথ এইড চেষ্টা করে যাচ্ছে ধীরে ধীরে সারা বাংলাদেশের মানুষকে কিভাবে সরকারের পাশাপাশি স্বল্প খরচে রোগটি চিহ্নিত করা যায় এবং যারা আক্রান্ত হয়নি তাদেরকে ভ্যাকসিন দিয়ে সুরক্ষিত করা। মোট ২১০০ টাকা ব্যয় হবে যদি সুস্থ্য অবস্থায় পরীক্ষা ও ভ্যাকসিন নেওয়া যায়। আর আক্রান্ত হলে কত টাকা ব্যয় হবে তা বলা বাহুল্য। তার সাথে এবিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার জন্য সরাসরি কথা বলতে পারবেন ০১৭১৬-৮৭২১৭৬(অফিস সময়-১০:০০-০৫:০০টা পর্যন্ত) এই মোবাইল নাম্বারে।
ধন্যবাদ সকলকে ধৈর্য্য সহকারে শেষপর্যন্ত পড়ার জন্য। সকলের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবন কামনা করে হেপাটাইটিস-বি সম্পর্কে সচেতনতার জন্য আমার এই উপস্থাপনা। আপনাদের ভাল লাগলে ও উপকৃত হলে মন্তব্য করে জানাবেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.