নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার চোখে তো সকলই শোভন/সকলই নবীন,সকলই বিমল/ সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন/বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল/সকলই আমার মত
ঠাকুর দিঘী বা খাঞ্জেলি দিঘী
খান জাহান আলি সম্পর্কে যতই জানছি, ততই আশ্চর্য হচ্ছি। ভদ্রলোকের মানসিক শক্তি ও কর্মস্পৃহা কোন লেভেলের, তা আজ একটু থেকে কিছু হইলেই ফেবুতে পোস্ট দিয়ে সুইসাইড করা পোলাপান বুঝবে না।
ভদ্রলোক দিল্লী থেকে এই অঞ্চলে এমনি এমনি আসেন নাই। তাঁর মাজারের সাইনবোর্ড থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তৈমুর লং এর আক্রমণে তিনি পদচ্যুত হয়ে দিল্লী থেকে এখানে এসাইলাম নিয়ে আসেন কিংবা হিজরত করেন। তবে এ নিয়ে মত বিরোধ রয়েছে, তিনি গৌড় থেকে এসেছেন এবং তৈমুর লিং এর সাথে সময়ের পার্থক্য অনেক। জানি না, এমন গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানের সাইনবোর্ডে ভুল তথ্য কেন লেখা থাকবে?? যাহোক, খাল জাহান আলি এ অঞ্চলে এসেছেন এ কথা সত্য। এখানে এসে তিনি চুপ করে বসে থাকেন নি। জায়গাটা ছিলো সুন্দরবনের অংশ। তিনি জংগল সাফ করার নামে সুন্দরবন কেটেকুটে মনুষ্য বসতি স্থাপন করেন। মানুষের বসবাসের জন্য প্রধান উপকরণ হচ্ছে পানি। আর এখানকার পানি হচ্ছে লবণাক্ত। তিনি বিশাল বিশাল দিঘী খনন করেন, ঠাকুর দিঘী আর ঘোড়া দিঘী। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, দিঘীর পানি সুপেয়! লোকে বলে, এ দিঘি নাকি এক রাতেই কাটা হয়ে গেছে! এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই৷ তবে সে সময় মাটি কাটার আধুনিক যন্ত্র, ক্রেন কিছুই ছিলো না। তবুও এমন দিঘী কিভাবে কেটে ফেলেছিলেন, তা বিস্ময়কর তো বটেই। এক রাতের মিথ হিসেবে বলা যায়, বন থাকায় লোকজন এদিকে হয়তো টের পায় নি দিঘী কাটা হচ্ছে, পরে এক সময় এসে হঠাৎ দিঘী দেখে অবাক হয়ে যায়! এগুলো অবশ্য আমার মনগড়া ব্যাখ্যা! আসলে কী হয়েছে, টাইম মেশিন আবিস্কারের আগে বলা যাচ্ছে না।
খান জাহানের পোষা কুমির কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড়। ধারণা করি, সুন্দরবন এলাকারই কোন কুমির দিঘীতে চলে এসেছিলো। প্রতিকূল পরিবেশে তাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছিলো। কিন্তু খান জাহান আলি মানুষের জন্য কাজ করলেও প্রাণবিকতাও ছিলো। হয়তো তিনি কুমির দুটিকে খাবার দিয়ে পোষ মানিয়ে ফেলেছিলেন! এখনো কুমির দুটির বংশধরদের অনেকেই দেখতে পায়।
কালাপাহাড় আর ধলাপাহাড়, দুইটা কুমিরের লোকাল রেপ্লিকা সংগ্রহ করতে পেরে আমি উৎফুল্ল। বিশ্বজয়ের আনন্দ হচ্ছে।
ইসলাম প্রচারের জন্য খান জাহান আলি এ অঞ্চলে বেশ কিছু মসজিদ স্থাপন করেন, যা আজ ৭০০ বছর পরেও তাদের সৌন্দর্য নিয়ে মাথা উঁচু করে রয়েছে৷ তাঁর রুচি ও সৌন্দর্যবোধের পরিচয় শুধু মসজিদেই নয়, অনেক বাগানও তিনি তৈরি করেন, তাতেও পাওয়া যায় । বাগান বা বাগ বাগিচা থেকে এ অঞ্চলের নাম বাগেরহাট হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। প্রচুর মসজিদের জন্য মসজিদের শহর হিসেবেও বাগেরহাটের ঐতিহ্য রয়েছে৷
ছোট্ট ছিমছাম সুইট একটা মসজিদ। বাংলাদেশের কোন টাকার নোটেই এ মসজিদের ছবি নেই।
একটা বন কেটে মনুষ্য বসতি স্থাপন, সেই বসতিকে শহরে পরিনত করা কম কথা নয়। শুধু তাই নয়, শহরটিকে আলাদাভাবে মসজিদের শহর হিসেবেও বিখ্যাত করে তুলেছিলেন। ফিকহ শাস্ত্রের পণ্ডিত ছিলেন বলেই ইসলাম প্রচার করতে মনোনিবেশ করেছিলেন। দিল্লির মতো আধুনিক স্থান থেকে তিনি এসেছিলেন বলেই এগুলো সম্ভব হয়েছিলো।
খান জাহান আলির মাজারে পেলাম। এই মৃৎশিল্পগুলো আমার চোখে একটু অন্য রকম মনে হলো, রঙে, আকৃতিতে আর বিষয়ে। সাধারণত মেলায় আমরা যেমন মৃৎশিল্প দেখি, এগুলো ঠিক তেমন নয়। মাত্র দুটো রঙের প্রাধান্য এমন যে, সবগুলো জিনিস মিলে এটাই একটা আলাদা শিল্প হয়ে উঠেছে! দেখুন, পাখিগুলোর ধরন ধারণ কেমন একটু আলাদা। এখানেই নাম মাত্র মূল্যে পেলাম কালাপাহাড় আর ধলাপাহাড় কুমির দুটোকে।
মাজার প্রাঙ্গনে এসব মৃৎশিল্প দেখে খুব ভালো লাগলো।
লোকে বলে, এ মাজার গরম জায়গা! এটা অবশ্য আমরাও টের পেয়েছি। গাড়ির এসি থেকে যেই মাজারে এলাম, অতিরিক্ত গরম লাগছিলো। অথচ কিছুক্ষণ আগেই পাশের এলাকায় বৃষ্টি হলো। মেঘ জমে থাকায় আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়াতে আর আমরাও দীর্ঘ সময় এসিতে ছিলাম, হয়তো সেজন্যই আমাদের এত অস্বস্তি হচ্ছিলো। এমন কি এই আমিও, যে কিনা কুমিরের মতো সারাক্ষণ রোদ পোহাই, আমারও গরমে অস্বস্তি হচ্ছিলো। মাজারটা আসলেই গরম জায়গা কিনা, তা বোঝার জন্য শীতকালেও একবার যাওয়া দরকার বলে মনে হচ্ছে।
০৭ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৭
এইযেদুনিয়া বলেছেন: সব উন্নয়ন কি এক রাতেই হয়েছে?
২| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:২৮
কামাল১৮ বলেছেন: আধুনিক মন দিয়ে দেখা তাই পড়ে ভালো লাগলো।আমি বরিশাল থেকে বাঘেরহাট হয়ে কয়েকবার খুলনা আসছি,কিন্তু কোনই আগ্রহ নাই বলে দেখা হয় নাই।
০৭ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এইযেদুনিয়া বলেছেন: বেশিরভাগ সময় ভ্রমনের পরেই আগ্রহ তৈরি হয়।
৩| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৫৮
সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে দুপা ফেলিয়া একটি শিশির বিন্দু।
১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০৩
এইযেদুনিয়া বলেছেন: ঘর হতে দু পা ফেলুন এবার।
৪| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৩৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ষাট গম্বুজ মসজিদ, ২টা বিশালাকার দিঘি এবং আরো কী কী যেন ঘুরে এসেছি ২/৩ বার। ব্যস্ত ছিলাম, অত স্টাডি করার মতো সময় ছিল না এ ব্যাপারে আপনার আগ্রহ ও পোস্ট ভালো লাগলো।
০৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:০৭
এইযেদুনিয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৫| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:০৮
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: পড়ে ভালো লাগলো।
০৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:০৮
এইযেদুনিয়া বলেছেন: তাহলে আমার লেখা সার্থক।
৬| ০৭ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দীঘিতে পানি কমে গেছে মনে হচ্ছে। শেষবার যখন দেখি তখন সম্ভবত ঘাট পর্যন্ত পানি ছিল।
বাংলাদেশের অনেক বড় দিঘি সম্পর্কেই গল্প আছে যে এই দিঘি এক রাতে খনন করা হয়েছে। এখন কয়টা কুমির আছে দীঘিতে? খাবার দিলে এরা কাছে আসত আগে। কুমির ডাকার লোক ছিল। বিশেষ রকম শব্দ করে এরা কুমির ডাকতে পারতো।
০৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:০৯
এইযেদুনিয়া বলেছেন: পানি কম মনে হচ্ছে? আমি যে পানি দেখলাম, তাতেই তো তাজ্জব হয়ে যাচ্ছি। আরো পানি থাকলে, না জানি কেমন দেখায়!
৭| ০৭ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: আপা আপনি কোথায়? মন্তব্যের উত্তর দেবেন না?
১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০৩
এইযেদুনিয়া বলেছেন: অফলাইনে ছিলাম।
৮| ০৭ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
খান জাহানের পোষা কুমির কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড়। ধারণা করি, সুন্দরবন এলাকারই কোন কুমির দিঘীতে চলে এসেছিলো।
সম্ভবতো আপনার ধারণা ভুল। সুন্দরবনে যেই ধরনের কুমির থাকে তাদের সাথে কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড়ের কোনো মিল ছিলো না। ওরা ছিলো মিঠাপানির এক প্রজাতির কুমির।
কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড়ের কোনো বংষধর বর্তমাণে দীঘিতে নেই। এখন যে কুমিরগুলি আছে সেগুলি ভারত থেকে এনে ছাড়া হয়েছে।
চুনাখোলা ও বিবিবেগুণী মসজিদে যাননি?
১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৩২
এইযেদুনিয়া বলেছেন: এটা অবশ্য আমারও মনে হয়েছে, কালা আর ধলা তো মিঠা পানির। কিন্তু এ এলাকায় ৭০০ বছর আগে ওরা এলো কিভাবে?
মাজার ব্যবসার জন্য এখন ইন্ডিয়া থেকে কুমির নিয়ে আসা হয়েছে নিশ্চয়ই।
৯| ০৮ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:২১
ধুলো মেঘ বলেছেন: একজন পর্যটকের চোখ আর আপনার দেখার চোখ কিছুটা ভিন্ন। আপনি পেশায় কি?
১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৩১
এইযেদুনিয়া বলেছেন: হ্যাঁ, আমার দেখার চোখ একটু ভিন্ন বটে। পেশায় কী, তা তো ব্লগারের পরিচয়েই লেখা রয়েছে! হাহাহা
১০| ০৮ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:৪২
শাওন আহমাদ বলেছেন: বাহ! পড়ে ভালো লাগলো।
১২ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০২
এইযেদুনিয়া বলেছেন: তাহলে আমার লেখা সার্থক।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাগেরহাঁট এলাকার অনেক উন্নতি হয়েছে। আমি তো গিয়ে অবাক!!!! এত উন্নয়ন!!!
রাস্তাঘাট। বিদ্যুৎ। যানবাহন। এমনকি অনেক গুলো বড় বড় বিল্ডিং হয়েছে। দেখলে মনে হয় ঢাকা শহর। গ্রামে কোনো কাঁচা রাস্তা পাওয়া যায় না। সব বাড়িতে বিদ্যুত আছে।