![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একবার যুদ্ধশিশু রায়ান কানাডা থেকে বাংলাদেশে এসেছিল। কিন্তু ও দেখেছিল এদেশে বোমার আতংক, খুন, ধর্ষন। দেখেছিল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ কীভাবে উল্টোপথে হাঁটছে। তাই ও লিখেছিল- 'বাংলাদেশ একটা সুড়ঙ্গের ভেতর ঢুকে গেছে যার ভেতরে কেবলই অন্ধকার।'
রায়ান এদেশে থাকেনি। হতাশা নিয়ে ফিরে গেছিল কানাডাতে। কিন্তু সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে কি? দেশে আজ নিরাপদ নয় কেউই। সংখ্যালঘু, ভিন্নমতালম্বী, মুক্তমনা, লেখক, প্রকাশক, ধর্মযাজক, শিশু, নারী, পুলিশ, বিদেশি নাগরিক এমনকি ব্যাংকে গচ্ছিত টাকাও নিরাপদ নয়। নিরাপদ কেবল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাই সহজেই বলে দেন- 'মানুষ শান্তিতে ঘুমাচ্ছে।' অথচ এরকম বচনের আস্কারা দিয়ে তিনি যে সন্ত্রাসী কিংবা জঙ্গিদের সুযোগ করে দিচ্ছেন তা কি প্রধানমন্ত্রী জানেন? আমিও জানার চেষ্টা করিনি। তাইতো ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে দাঁড়িয়ে ঝাল মুড়ি খেতে থাকি।
মুড়ি খেতে খেতে কালাবুর চোখে সংশয় দেখছিলাম আর প্রতিকারের কথা চিন্তা করছিলাম। হঠাৎ মনে পড়ে গেল নাম না জানা এক লেখকের কথা। বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে তিনি লিখেছেন-'ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা ভিন্ন তো কোনো উপায় দেখিনা। তবে ঈশ্বর তো একা, তিনি কতদিক সামলাবেন। কেবল ইহকাল তো নয়, পরকালের দায়িত্বও রয়েছে।'--- ভাবনার মাঝখানে সম্বিৎ ফিরে পেলাম কালাবুর ডাকে। ও বলল- 'কী ভাবছো?' বললাম 'কিছু না'।
কালাবু আমার বন্ধু। যে আমার চোখ দেখলেই আমার ভেতরটা বুঝে যায়। তবু ওকে ফাঁকি দিয়ে বিড় বিড় করে বলতে লাগলাম-'বাংলাদেশ কাঁদছে। আর আমি বেঁচে আছি কেবল অসহায় ঈশ্বরের কান্না দেখার জন্য।' কালাবু সরল একটি মেয়ে। তবু ও এটুকু বোঝে আমরা কেউই নিরাপদ নই। তাই রাতের প্রপেলার যত বাড়তে থাকে ও ততই তাগাদা দিতে থাকে আমার বাসায় ফেরার। কালাবুকে বিদায় জানিয়ে বাসে উঠে পড়ি। তীব্র যানজট আর গরমের ক্লান্তি ভুলে চিৎকার করতে থাকি- 'হে ঈশ্বর তুমি কাঁদো। তোমার চোখের জলে নিভে যাক সমস্ত আগুন'।
©somewhere in net ltd.