নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুদেব চক্র বর্তী

জন্ম ১৯৮৭ সালে সিরাজগঞ্জে। পৈতৃক নিবাস মাগুরাতে। বর্তমানে ঢাকাতে অবস্থান করছি। লেখালেখি করি। এছাড়া- যুক্ত ছিলাম সাংবাদিকতা, গান, থিয়েটার, উপস্থাপনার সাথে। ছাত্র ইউনিয়নের কর্মি ছিলাম। প্রকাশিত গ্রন্থ-‘সংশয়ী প্রার্থনা’।

সুদেব চক্র বর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ কেন যুদ্ধাপরাধীদের ভোট দিয়েছিল ?

২১ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২০

কেউ একজন প্রশ্ন করছিল- শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের অপরাধ সত্ত্বেও মানুষ তাদের ভোট দিয়েছিল কেন?

উত্তরটা আমার মনে হয় এর পেছনে রয়েছে দুটি কারণ। একটি হল রাজনীতি, অন্যটি হল ধর্ম।
৭৫ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ উল্টোপথে যাত্রা শুরু করে। এর অন্যতম প্রক্রিয়া ছিল এই যুদ্ধাপরাধী ও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মৌলিক চেতনায় অবিশ্বাসীদের পূর্নবাসনের কারণে। আর জঘন্য এই কাজটি করে নোংরা রাজনীতি শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতাকারী জিয়াউর রহমান। বিএনপি'র হাত ধরে জামায়াত জনগনের কাছে পৌঁছাতে থাকে। আর ধীরে ধীরে মানুষ ভুলে যেতে থাকে ভয়াল অতীত। বিশেষত যারা মুক্তিযুদ্ধকে কেবল নিছক 'গন্ডগোল' বলে মনে করে।
অপরদিকে চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার প্রয়াস। আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আওয়ামীলীগও সেদিন কেবলমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতের কৃপার দ্বারস্থ হয়েছিল। এদেশের জনগনের বিরাট অংশ দল বা প্রতীক দেখে ভোট দেয়, ফলে দল যুদ্ধাপরাধী না মুক্তিযোদ্ধাকে সামনে আনছে সেটা তারা বিবেচনা খুব কমই করতে পেরেছে। আর অন্য যে কারণটি ছিল সেটি হল ধর্ম। জামায়াত একটি ইসলামী সংগঠন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমরা তাদের প্রতি আস্থা এনেছে। সাঈদী ওয়াজের মাধ্যমে ব্যাপক মানুষের কাছে পীরের মর্যাদা পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে তাকে চাঁদেও(!) দেখতে পেয়েছে শহর গ্রাম গঞ্জের ব্যাপক মানুষ। নিজামী, মুজাহিদ ও অন্যান্যরাও ইসলামের দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি পেয়েছে। ফলে যুদ্ধাপরাধীরা এমপি হয়েছে, মন্ত্রী হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, আর্ন্তজাতিক লবিং পরিপুষ্ট হয়েছে। এসব কারণেই বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার।

একদিকে রয়েছে রাজনৈতিক শক্তি এবং বিভিন্ন লবিং, অন্যদিকে রয়েছে জনগনের রাজাকার সমর্থন। কারণ এখনও জনগনের বিরাট একটা অংশ মনে করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার অর্থ হল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ইসলামকে আঘাত করা। তবে অতীতের রাজনৈতিক ভুল বা সীমাবদ্ধতা ঠেলে এই বিচার সম্পন্ন হচ্ছে এটা একটা স্বস্তির ব্যাপার। এজন্য নানা সময়ে নানা ব্যক্তি ও সংগঠন ভুমিকা রেখেছে। এখন ভূমিকা নিতে হবে সবার। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেবার পাশাপাশি জনগনকে ধর্মীয় মৌলবাদের ছায়া থেকে সরিয়ে আনতে হবে। যদিও এখনও এই জামায়াত ও ধর্ম নিয়ে অন্তরালে আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি দু দলই রাজনৈতিক বিবেচনা করছে। কিন্তু অতীত থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষার পরিণাম কে না জানে। যে যে রাজনীতিই করুক না কেন মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের মৌলিক চেতনায় কোনো বিরোধ থাকবে না। তাহলেই আমরা অতীতের কলংক মোচন করার পথ প্রশস্থ করতে পারব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.