নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুদেব চক্র বর্তী

জন্ম ১৯৮৭ সালে সিরাজগঞ্জে। পৈতৃক নিবাস মাগুরাতে। বর্তমানে ঢাকাতে অবস্থান করছি। লেখালেখি করি। এছাড়া- যুক্ত ছিলাম সাংবাদিকতা, গান, থিয়েটার, উপস্থাপনার সাথে। ছাত্র ইউনিয়নের কর্মি ছিলাম। প্রকাশিত গ্রন্থ-‘সংশয়ী প্রার্থনা’।

সুদেব চক্র বর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বন্দনার ‍এমন চমক ‍আগে দ্যাখেনি বাংলা কবিতা

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৬

এবার বইমেলাতে কাগজ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে কবি রাজু ‍আহমেদ মামুন-এর কাব্যগ্রন্থ ‘ম্যানগ্রোভ মন’। ‍এই কাব্যগ্রন্থটি মূলত সিরিজ কবিতায় সূচীবদ্ধ। প্রথমেই যে কবিতাটি রয়েছে সেখানে দেখা যায় কবি বনদেবীর বন্দনায় রত। মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্যগুলোতে বন্দনার রীতি রয়েছে। ‍আবার বিভিন্ন পদাবলী গীতিতেও বন্দনা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে সব বন্দনাই গতানুগতিকভাবে প্রকাশিত। কথাটা বলছি ‍এ কারণে যে, কবি রাজু ‍আহমেদ মামুন ‍এখানে গতানুগতিক বন্দনা করেননি। ত‍ার ‍এই কবিতায় বন্দনার ক্ষেত্রে রয়েছে ‍আদ্যপান্ত চমক, ‍এমন জীবন ঘনিষ্ট বাঙময় স্পর্শক বন্দনা ‍আগে কখনোই দ্যাখেনি বাংলা কবিতা।
বলা চলে, কবি বন্দনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তিনি দেবীর কাছে কোনো ‍আর্শীবাদ বা কৃপা প্রার্থনা করেননি। বরং দেবীকেই স্বয়ং ‍আহবান করেছেন, কামনা করেছেন।
বনদেবীর রূপের বর্ণনায় ‍আমরা দেখতে পাই- দেবী ‍এক বন্য শক্তিমান নারীমূর্তি, যা ‍আকর্ষণ করে। তবে শক্তির ‍আঁধার ‍আর অমিত তেজের অধিকারী হলেও দেবী রূঢ় নয়, বরং প্রেমময়ী। কারণ তার ‍আদুরে ঠোঁট। যেখানে কবি বিস্ময়ে তাকিয়ে জানতে চান- অমন ঠোঁটে কে চুমু খায়! ‍এরপরই ‍আমরা দেখতে পাই কবি ‍এই লাবণ্যময়ী দেবীর সম্মুখে কামার্ত ‍‌ হয়ে ওঠেন সৃষ্টির জন্য। দেবীর সুডৌল স্তনকে তিনি স্থির চুম্বকের সাথে তুলনা করেছেন। কিন্তু ‍এই স্থির চুম্বকের টান স্থিরতা ভেঙ্গে দেয়, কারণ ‍তার টান অধিকতর অস্থির।
কবির চোখে ধরা পড়ে দেবীর নাভিগর্তে ফুটে ‍আছে ঘোর অমাবস্যা। ‍অমাবস্যাকে সৌন্দর্যের চোখে দেখা ‍এক অসাধারণ প্রেমময় কাব্যদৃষ্টি। ‍আবার “ফুটে ওঠা” শব্দের প্রয়োগে অমাবস্যা হয়ে ওঠে বিশেষ ‍একটি ভাবনার অংশ ‍যা দেবীকে করেছে তার সৌন্দর্যের অতিরিক্ত।
বাংলা কাব্যে ‍এর ‍আগে যেটি দেখা গিয়েছে সেটি হল অর্ঘ দেবার প্রবণতা। কিন্তু ‍এখানে কবি নিজেই অর্ঘ চেয়েছেন। প্রেমের অর্ঘ। কারণ কবি সৃষ্টি করতে চান। তিনি যেন সৃষ্টির জন্য সামর্থবান ‍এক তাগড়া জোয়ান, তেমনি এই ম্যানগ্রোভ বনও সৃষ্টির জন্য ‍ঈর্ষনীয় মাত্রার ‍উর্বর। ‍এরকম প্রেক্ষাপটে কবি তাই কল্পনার ‍এই দেবীর শ্যামলকান্তি দেহ ‍আর লবনরক্তের স্রোত প্রবাহিত শরীরে শীৎকার বাজাতে তিনি নিজের হৃদয়েই প্রেমের অর্ঘ কামনা করেছেন।
বন্দনার ক্ষেত্রে সাধারণত গুণগানই প্রাধান্য পায়। ‍এখানে কবিও গুণগান করেছেন। কিন্তু সেটা কেবল দেবীর রূপ-মাধুরীর। ‍আর সেই গুণগানের ভেতর দিয়েই তিনি কামনা করেছেন দেবীকে।
যাহোক, ‘ম্যানগ্রোভ মন’ কাব্যগ্রন্থের এই প্রথম কবিতাটি পাঠকের জন্য দেয়া হল:
ম্যানগ্রোভ মন ১
-------------
বনবিবি আহা বনদেবী
তোমার পেটানো গড়ন শ্যামলকান্তি দেহ
লাবণ্য লাবণ্য খেলা একা একা কাহারে দেখাও!
অমন শ্যামল আদুরে আদুরে ঠোঁটে
কে চুমু খায় দেবী!
ওই সুডৌল স্তন স্থির চুম্বকের মতো টানে-
অস্থির টানে।
অমাবস্যা হয়ে ফুটে থাকে নাভিগর্ত তোমার,
কামার্ত চোখ মৌসুমী বেশ
কামনা করে সামর্থবান
জঙ্গলা নিশ্বাস উত্তাল যোনিদেশ
কামনা করে সামর্থবান
নোনা রক্তস্রোতে ফুঁসে ওঠা শরীরে তোমার
বাজাবে শীৎকার এক তাগড়া জোয়ান
দাও পূজা দাও হে দেবী- হৃদয়ে তাহার।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


বুঝতেছি কবিতার বই কেন বিক্রয় হচ্ছে না।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:১২

সুদেব চক্র বর্তী বলেছেন: আমি ‍আপনি ‍আমরা না কিনলে বিক্রি হবে কীভাবে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.