নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুদেব চক্র বর্তী

জন্ম ১৯৮৭ সালে সিরাজগঞ্জে। পৈতৃক নিবাস মাগুরাতে। বর্তমানে ঢাকাতে অবস্থান করছি। লেখালেখি করি। এছাড়া- যুক্ত ছিলাম সাংবাদিকতা, গান, থিয়েটার, উপস্থাপনার সাথে। ছাত্র ইউনিয়নের কর্মি ছিলাম। প্রকাশিত গ্রন্থ-‘সংশয়ী প্রার্থনা’।

সুদেব চক্র বর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সীতা চরিত্রের সন্ধানে...

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:২৩

সীতা শব্দের অর্থ ভূমি থেকে যা উৎপন্ন। রামায়ণে দেখা যায় রাজা জনক হাল চাষ করতে গিয়ে ভূমি থেকে সীতাকে পেয়ে যান।
এখানে একটা বিষয় স্পষ্ট। তা হল লাঙলের ব্যবহার। তার মানে এই অঞ্চলে কৃষিব্যবস্থা চালু হয়েছে রামায়নের যুগে। বহিরাগত ও দুধর্ষ আর্যরা এই অঞ্চলের বনাঞ্চল উজাড় করে কৃষিব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাইছিল যেটা সম্ভবত কথিত অনার্যরা মেনে নিতে চাইছিল না। ফলে উৎপাদিত ফসলের ভাগ আর্যরা এই ভূখণ্ডের অধিবাসী আর্যদের ভাষায় কথিত অনার্যদেরকে দিতে চায়নি। অথবা কৃষি সভ্যতা গড়ে উঠলেও (যেহেতু একটা সূত্র বলছে প্রাক আর্য যুগের সিন্ধু সভ্যতা ছিল কৃষি প্রধান এবং এই পদ্ধতির আবিষ্কারক ছিল নারীরা। অর্থাৎ নারীর মাধ্যমেই বিশ্বের সর্বপ্রথম কৃষি ব্যবস্থা চালু।) জমি দখলকেন্দ্রিক একটা বিরোধ তৈরি হয়। ফলে অনার্যদের একটি অংশ রাবণের নেতৃত্বে ঐ ফসল চুরি করে নেয় অথবা দখল করে নেয়।
তার মানে লঙ্কা যুদ্ধ কি এই ফসল উদ্ধারের জন্য ছিল? ব্যাপারটা তাইই আসলে। সীতা শব্দের অর্থ যেহেতু ভূমি থেকে উৎপন্ন কিছু বোঝাচ্ছে, সেহেতু সীতা আর ফসল যে একই অর্থে ব্যবহৃত তা স্পষ্ট।
কিন্তু রামায়ণ নামক মহাকাব্যের কবি এই ইতিহাসকে কাব্যময়তা প্রদান করতে গিয়ে সীতাকে একটি নারীরূপে উপস্থাপন করেছেন।
যেমন- এটা কি বিশ্বাসযোগ্য যে হনুমান বা বানর তীর-ধনুক নিয়ে যুদ্ধ করেছিল? মূল ব্যাপারটা হল আর্য সমাজে বা বৈদিক যুগে মানুষ বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত ছিল। একেকটি গোত্রের নামকরণ করা ছিল বিভিন্ন জন্তুর নামে। তার মানে ঐ যুদ্ধে অনার্যদের একটি অংশ রামের সাথে অংশ নিয়েছিল যারা ছিল বানর গোত্রের এবং তাদের প্রধান নেতা ছিল সুগ্রীব। অর্থাৎ ভয়ে কিংবা স্বার্থের লোভে অথবা বেদমন্ত্র উচ্চারণকারী সৌন্দর্যবান সুপুরুষ রামের প্রতি ভক্তিতে অনার্যদের একটি অংশ রামের পক্ষ নেয়।
আমরা রাবণকে রাক্ষস বলি। আসল ব্যাপারটা হল আর্যরা অনার্যদেরকে দস্যু বা রাক্ষস নামে অভিহিত করতো। আদতে রাক্ষস প্রজাতির কোনো প্রাণী আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু যুদ্ধে যদি রাম পরাজিত বা রাবণ জয় লাভ করতো তাহলে রাবণই হত দেবতা!
যাইহোক- ইতিহাস যখন কাব্যে পরিণত হয় তখন তা অতিরঞ্জিত হয়, সেই কাব্য যখন মিথ হয় তখন তা যুক্তি হারায়, আর সেই মিথ যদি ধর্মীয় কাহিনী হয়ে ওঠে তাহলে তা শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস ছাড়া কিছু নয়। সীতা বা রামায়ণের ব্যাপারটাও সেরকম। তবে এই সীতা বা রামায়ণের সূত্র ধরে আমরা কিছু বিষয়ের মিমাংসার পথ পেয়েই যাই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.