নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি

ইমরুল কাওসার ইমন

সংবাদকর্মী

ইমরুল কাওসার ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধ্বংসের দাঁড়প্রান্তে কুয়াকাটার শুটকি শিল্প

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৪


ইমরুল কাওসার ইমন : সৌন্দয্যের পাশাপাশি শুটকির জন্য অনেক বিখ্যাত কুয়াকাটা। কুয়াকাটা, লেবুচরসহ আরো বেশ কিছু এলাকা যুগযুগ ধরে চলে আসছে মুটকি উৎপাদন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে কুয়াকাটার শুটকি শিল্পের গৌরবময় অধ্যায়। পরিবহন সমস্যা, সরকারের অসহযোগিতা, মাছের আড়তদারদের সিন্ডিকেটসহ বেশ কিছু সমস্যার কারণে এখন ধ্বংসের দাঁড়প্রান্তে কুয়াকাটার এ শুটকি শিল্প।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পশ্চম দিকে সমুদ্রের তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে শুটকি পল্লী। স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটার আশপাশে গড়ে উঠেছিল ৩০টিরও বেশি শুটকি পল্লী। কিন্তু নানামুখী সমস্যায় এসব শুটকি পল্লী একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে মাত্র ৮ থেকে ১০টি কেন্দ্রে শুটকি উৎপাদন করা হচ্ছে। কুয়াকাটার শুটকি পল্লীর একটি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের মালিক আনোয়ার বলেন, দিন দিন শুটকি শিল্প ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। এক সময় সৈকতের এই তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছিল বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নানান কারণে লোকসানেরমুখে এগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায় কুয়াকাটা, আলিপুর, লেবুর চর, গঙ্গামতির চরসহ বেশ কিছু স্থানে এসব শুটকি শুকানোর কাজ করা হয়। স্থানীয় শুটকি পল্লীতে কর্মরতরা জানিয়েছেন মূলত তিন প্রক্রিয়া এ অঞ্চলে শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ করে উৎপাদন করা হয়। এগুলো হলো, রোদে শুকিয়ে, লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে এবং আগুনে ছেঁকে। তবে বেশিরভাগ শুটকি রোদেল তাপে শুকিয়েই তৈরি করা হয়। শুধু মাত্র আগুনের ছেঁকা দিয়ে তৈরি করা হয় চিংড়ির শুঁটকি। ইলিশের শুঁটকি তৈরিতে ব্যবহার করা হয় লবণ।
সরেজমিন আরো দেখা গেছে, গভীর সমুদ্র থেকে তীরে আসা ট্রলারগুলো থেকে মাছ সংগ্রহ করে পল্লীর প্রতিষ্ঠানগুলো। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রক্রিয়া করা শুটকিগুলোর মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় শুটকির তালিকায় রয়েছে, পোয়া মাছ, সোনাপাতা, রূপচাঁদা, লইট্যা, ছুরি, চিংড়ি, মধুফাইস্যা, ফাইস্যা, চাপিলা, শাপলাপাতা, পোটকা ইত্যাতি। প্রথমিকভাবে মাছগুলোকে আলাদা করে পরিষ্কার করা হয়। পরের ধাপে আরো একবার ভালোভাবে বাছাই করা হয়। এর পর মাছগুলো কেটে পেট থেকে সব ময়লা বের করে তৃতীয় বার পরিষ্কার করা হয়। তারপর দেয়া হয় রোদে তাপে শুকাতে। শুটকি পল্লীতে কর্মরতরা জানিয়েছেন, এক চালান কিংবা শুটকি প্রক্রিয়াজাত করতে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগে।
শুটকি পল্লীতে কর্মরত নাজমা বেগম বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর থেকে এখানে কাজ করছি। আমি একাই নই, পরিবারের বাকি ৪ জন সদস্যও এই পেশার সাথে সম্পৃক্ত। ৫ জনের সংসারে খুব ভালোভাবেই দিন চলছে তাদের। তবে যে ভাবে শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হতে শুরু করেছে তাতে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি শঙ্কিত।
শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের দেয়া তথ্য মতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটার আশেপাশে ১০ থেকে ১২টি শুটকি পল্লীতে শ্রম দিচ্ছে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার মানুষ। তবে মাত্র তিন থেকে চার বছর আগেও প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ৩০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করত ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.