![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ষ্টেশনটা পার হয়ে রেললাইনটা যেখানে উত্তরদিকে বাক নিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেছে সেখানে প্রায়ই একটা ছেলেকে বসে থাকতে দেখা যায়। শান্ত শিষ্ট মায়াবি একটা চেহারা। কিন্তু মায়াবি ঐ মুখটা যেন একটা আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ। যে মুখ চেপে রেখেছে কষ্টের এক বিশাল পাহাড়। প্রতিদিনই ছেলেটা এই বাঁকের মুখে এসে দাড়ায় চলন্ত কোন এক ট্রেনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য। কিন্তু নির্মম বাস্তবতার আঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাওয়া রাহাত চলন্ত ট্রেনের সামনে দাড়াতে ব্যর্থ হয় প্রতিবার। বাঁকের মোড়ে হারিয়ে যাওয়া ট্রেনের দিকে তাকিয়ে থেকে রাহাত ভাবে তার অতীত দিনের কথা, তার ব্যর্থতার কথা।
দুইবছর আগে যখন হিমির সাথে সম্পর্ক ছিল জীবনটা তখন অন্যরকম ছিল রাহাতের। পাগলের মত ভালোবাসতো মেয়েটা রাহাতকে। বৃদ্ধা মা আর হিমিকে নিয়েই সুখের দিনগুলি কাটছিল রাহাতের। বাবা মারা যাওয়ার পর অনেক কষ্ট করে রাহাতকে ভার্সিটি পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন ওর মা। অথচ দরিদ্রের কষাঘাতে পৃষ্ট হয়ে যাওয়া রাহাতকে খুব সহজেই আপন করে নিয়েছিল বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে হিমি। মায়ের প্রতি হিমির শ্রদ্ধা দেখে নিজের অজান্তেই মাঝে মাঝে চোখটা ভিজে উঠত রাহাতের। পাশ করে বের হয়ে যখন চাকুরীর সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছিল তখন হিমিই ছিল ওর অনুপ্রেরণার উৎস। কিন্তু হটাতই সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেল। হিমির আচারনের পরিবর্তনটা বুঝতে পারতে না পারতেই বিধাতা যেন রণ হুঙ্কার দিয়ে আবির্ভূত হল রাহাতের ভাগ্যের বিপক্ষে। মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়ল। একদিকে বেকারত্তের অভিশাপ অন্যদিকে অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা। ঠিক তখনই বাস্তবতা তার নির্মম আঘাত হানল। বাবার বড়লোক বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে গেল হিমির। শেষ সুযোগটাও দেয়নি হিমি ওকে আটকানোর। তবে রাহাতের চেয়ে বেশী আঘাতটা যেন পেয়েছিল মা। ছেলের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে অঝোরে কেঁদেছিলেন সেদিন। মায়ের জন্যই খুব তাড়াতাড়ি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে রাহাত। কিন্তু যেদিন সকালে চাকুরীর Appointment letter টা হাতে পেয়ে মায়ের চিকিৎসার স্বপ্ন দেখছিল মৃত্যুদূত তখন হাসপাতালে হাজির হয় মায়ের বিদায়ের ছাড়পত্র নিয়ে। সংগ্রামী মা সংগ্রাম করেই বিদায় নিলেন বিনা চিকিৎসায়।
এরপর অনেকগুলো দিন কেটে যায়। আজ রাহাতের অনেক টাকা। শুধু নেই মা আর সেই মানুষটা যে ওকে স্বপ্ন দেখাতো সুখি হওয়ার। এই ব্যর্থতা আর গ্লানিই রাহাতকে প্রতিদিন ডেকে নিয়ে আসে রেললাইনের এই মোড়ে। কিন্তু মুক্তি আজও মেলেনি। অদৃশ্য এক শক্তি ওকে আটকে রাখে। আবারো ট্রেনের হুইসেল শোণা যাচ্ছে। এবার পারতেই হবে রাহাতকে। আজ তাকে বেরিয়ে আসতেই হবে কাপুরুষতার খোলস ভেঙ্গে। মুখোমুখি হতে হবে চলন্ত ট্রেনের .........
২| ২৭ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩৬
কিউপিড ইমতিয়াজ বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। এরপর থেকে চেষ্টা করবো আরেকটু বিস্তারিত লেখার
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা জুন, ২০১৪ রাত ১২:৪৬
একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
সুন্দর। বাট আরেকটু ডিটেইলস হলে ভালো হত।