![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে সারা বছরে চাহিদার ৫০ শতাংশ গরু কোরবানিতে জবাই হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ৮৬ লাখ ২২ হাজার গরু-মহিষ জবাই হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭২ লাখ গরু(http://goo.gl/ssjTy6)।এরমধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা শহরে কমপক্ষে জবাই হবে ৩০ লক্ষ পশু (http://goo.gl/FIdjmD) ।
আসন্ন ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি দিতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ৪৯৩টি স্থান নির্ধারণ করেছে সরকার। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২৮৫টি এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২০৮টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে ।ধরি পশুর জন্য নির্ধারিত স্পট সংখ্যা ৫০০টি। হিসেব করলে দাড়ায়, প্রতি স্পটে পশু জবাই হবে গড়ে ৬০০০টি।যত সমস্যাই হোক না কেন , এই নির্দিষ্ট স্থানেই কোরবানি করতেই হবে। কারন সরকারীভাবে জানানো হয়েছে যত্রতত্র বা রাস্তাঘাটে কোরবানি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে রাজধানীবাসীকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্যত্র পশু জবাই করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে (http://goo.gl/YnrrcV)।
এবার ধরুন আপনার এলাকায় একটি বড় মাঠ আছে, যেখানে এক সাথে দুটি বড় ফুটবল ম্যাচ হতে পারে। (এত বড় মাঠ ঢাকায় কয়টি আছে ?) সেখানে গরু ফেলানো হলো। বলতে পারেন একসাথে কতটি গরু ফেলানো যাবে ? ধরলাম একসাথে এত বড় মাঠে ২০০টি গরু ফেলানো যাবে। আবার পুরো মাঠে ২০০টি কসাই টিমও সদা প্রস্তুত থাকবে।
এরপর শুরু হলো কার্যক্রম। ৬০০০টি গরুকে কোরবানী দিতে মোট ৩০টি টার্ম প্রয়োজন। অর্থাৎ একটি কসাই টিমকে (৪ সদস্য বিশিষ্ট) পরপর ৩০টি গরু জবাই করতে হবে। সময় আছে সকাল ৯টা থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত, মানে ৯ ঘণ্টা। হিসেব কষলে দেখা যাচ্ছে প্রতি গরুর জন্য কসাই টিম পাবে গড়ে ১৮ মিনিট করে। কিন্তু বাস্তবিক ক্ষেত্রে একটি চৌকশ টিমের জন্য ১টি সম্পূর্ণ গরু প্রসেসিং এর জন্য নূণ্যতম ৩ ঘণ্টা করে লাগবে। অর্থাৎ দিনে একটি চৌকশ টিম ৩টির বেশি গরু ফিনিশিং দিতে পারবে না।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, সরকার যদি ২০০ x ৫০০ = ১ লক্ষ কসাই টিম (৪ সদস্য বিশিষ্ট) রেডি করে, তবে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ গরু কোরবানী করা সম্ভব। ঈদ তিন দিন হলে তবে কোরবানী করা সম্ভব ৯ লক্ষ গরু। বাকি ২১ লক্ষ কোরবানী ৩ দিনে সরকার করতে পারবে না।
যদিও সরকার দাবি করেছে, পরিবেশ দূষণ বন্ধ করা, তবে আসলে এটা মূল কারণ নয়। কোরবানীর ঈদে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে পরিচ্ছন্নতা কর্মী সংখ্যা থাকে ৫-৮ হাজার। সরকার এদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারছে না। অথচ ২০ হাজার কর্মী করলে পরিচ্ছনতা কাজ সহজ হয়ে যায়। সেটা না করে ১ কোটি লোককে কোরবানীর স্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছে সরকার।
এমনিতেই সারাবছর যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা, যানবাহন সংকট, শব্দদূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, মশার উপদ্রব, ভয়াবহ যানজট, পয়ঃনিষ্কাশনের করুণ অবস্থা, জলাবদ্ধতা, রাস্তাঘাটের করুণ দশা প্রভৃতি সমস্যায় ঢাকা নগরী বিপর্যস্ত।ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার টন ময়লা-আবর্জনা জমে। এর মধ্যে ডিসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সর্বোচ্চ তিন হাজার টন পর্যন্ত ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করে। বাকি চার হাজার টন ময়লা-আবর্জনার ধকলে বেসামাল থাকে নগরবাসী।এসব কারনে সারা বছরই ঢাকা অপরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে বিবেচিত (http://goo.gl/VNCdwQ)।
কিন্তু সামগ্রিকভাবে সমস্যা সমাধানের উদ্যগ না নিয়ে সরকার শুধুমাত্র কোরবানির স্থান নির্ধারিত করে দেয়ার উদ্দেশ্য কোরবানীকে নিরুৎসাহিত করা, বিশেষ করে গো-মাতা কোরবানী হ্রাস করা।এভাবে চললে কোরবানী ঈদ হবে কসাইয়ের দোকান থেকে মাংস কেনার সমতূল্য । কোরবানী নামক ধর্মীয় উৎসব গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে ।
সংকলিত
©somewhere in net ltd.