![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(দৃশ্যপটঃ সূবর্ণার রুম)
ফোনটা ভাইব্রেট করেই যাচ্ছে । আননোন নাম্বার । ধরবে না ধরবে না করেও হঠাত্ কি মনে করে ফোনটা ধরে বসল সূবর্ণা ।
:- হ্যালো, এটা কি সূবর্ণা এক্সেপ্রেস ? একটা এডভান্সড টিকিট কাটা যাবে ?
দাঁতে দাঁত চেপে সূবর্ণা বলল- জ্বি হ্যাঁ ! কিন্তু আমাদের এখান থেকে শুধু জাহান্নামের টিকিট দেয়া হয় । কাটবো ?
:- ওরে বাবা ! ঐখানে যাওয়ার কোন ইচ্ছাই আমার নাই ! তবে আপনি চাইলে আপনার হৃদয়ের একটা টিকিট কাটতে পারেন ! ঐখানে বসত পাততে খুব ইচ্ছে করে আমার !
:- ইডিয়ট !!
লাইন কেটে রাগে ফুঁসতে থাকে সূবর্ণা । মুহিব, ফাজিল একটা ! ঐ ফাজিল নতুন নাম্বারটা কোথায় পেল ? ভাবতে থাকতে সূবর্ণা । নিশ্চয় অর্পণা থেকে নিয়েছে । অর্পণা সূবর্ণার ছোট বোন ।
:- অর্পা...... চিত্কার করে ডাকল সে ।
:- কি হয়েছে ? এত চেঁচচ্ছ কেন ? পাশের রুম থেকে অর্পা জবাব দিল ।
:- আমার নাম্বার মুহিবকে কেন দিয়েছিস ?
:- বারে ! আমি কেন মুহিব ভাইয়াকে তোমার নাম্বার দিতে যাবে ? আমার কিসের এত ঠ্যাকা ?
:- দেখ ! ঢং করবি না আমার সাথে ?
:- আমি কেন ঢং করবো ? ঢং তো করছ তুমি ! মনে মনে ভাইয়াকে ভালবাস, কিন্তু উপর দিয়ে ভাব ধরছ ! হু !
বলেই মুখ বাঁকিয়ে ঢেং ঢেং করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল অর্পণা ।
সব একজোট হয়েছে । রাগে নিজের মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে সূবর্ণার !
(দৃশ্যপটঃ মুহিবের রুম)
ফোনটা রেখেই বত্রিশ দন্ত বিকশিত করল মুহিব । এ মেয়েটাকে সে অনেক ভালবাসে । তাইতো এত বেশি জ্বালায় !
আসলে প্রেম-ভালবাসার মত মানবিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিখ্যাত (কিংবা কুখ্যাত) মনীষী পুলক ভাইয়ের একটা সূত্র আছে । পুলক ভাই বলেছেন- 'যাকে যত বেশি ভালবাসো, তাকে তত বেশি পোড়াও ! সে যখন তোমার ভালবাসাটুকু বুঝতে পারবে, তখন পোড়া ছাইগুলো সুখের উপদ্রব (মধুর স্মৃতি) হয়ে ধরা দেবে ।'
মুহিব জানে, আজ হোক কাল হোক সূবর্ণা অবশ্যই একদিন তার প্রস্তাবে হ্যাঁ বলবেই ! তাই তো জনৈক মনীষী পুলক ভাইকে অনুসরণ করছে সে ।
(কাহিনী সারসংক্ষেপ)
কাহিনীটির শুরু হয়েছিল মাস ছয়েক আগে । অর্পণাদের স্কুলে একটা কালচারাল প্রোগ্রাম ছিল । সূবর্ণা সেখানে গিয়েছিল । সেখানেই সূবর্ণাকে প্রথম দেখে মুহিব । সেই থেকে পিছনে লেগেই আছে । মুহিব সেখানে এসেছিল তার ছোট ভাই মেহেদীর সাথে যে কিনা আবার অর্পণার ক্লোজ ফ্রেন্ড ! ব্যস ! সেই থেকে তিনজন একজোট হয়ে তাকে জ্বালিয়ে মারছে !
গত ছয় মাসে ছেলেটার জ্বালায় সর্বমোট পাঁচবার নাম্বার পাল্টেছে সে । কিন্তু প্রত্যেকবারই কোন এক অজানা উপায়ে তার পেয়ে যায় সে । অবশ্য কিভাবে পায় সেটাও অজানা নয় । ঘরের শত্রুই যেখানে বিভীষণ, সেখানে কিছুই অসম্ভবপর নয় !
মুহিব ছেলেটা দেখতে শুনতে খারাপ না । রোদে পোড়া তামাটে গাত্রবর্ণ সাথে সুগঠিত শরীর । ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্জ্ঞিনিয়ার । তবে পেশায় বেকার ! পাশ করার পর থেকে বাসায় বসা । চাকরি বাকরি হয় নি । এমনি ট্রাই করে নি ! বাসায় বলে দিয়েছে- সে চাকরী করবে না । স্বতন্ত্র কিছু করবে । তবে সে স্বতন্ত্র কিছুটা কি এবং কবে থেকে শুরু করবে এ বিষয়ে কেউ কিছু জানে না । সম্ভবত মুহিব নিজেও জানে না !
সূবর্ণার ধারণা- তার পিছনে ঘুরঘুর করা ছাড়া মুহিব আর কিছু করে না । ওর জ্বালায় তার ঘর থেকেই বের হওয়ায় দায় । কলেজ, লাইব্রেরি, শপিংমল, আড্ডা যেখানেই যাক না কেন ছায়ার মত পিছনে লেগে থাকে । ধৈর্যও আছে মাশাল্লাহ । এতবার রিফিউজ করার পরও হাল ছাড়ে নি । আঠার মত লেগেই আছে ।
রাত পৌনে বারটা । একনিষ্টমনে অংক কষছে সে । কাল তার ফিজিক্সের মিড টার্ম এক্সাম । হঠাত্ ফোনটা ভাইব্রেট করে উঠল । আননোন নাম্বার । ধরবে না ধরবে না করেও কি এক অজানা আকষর্ণে রিসিভ করে ফেলল । হয়ত তার অবচেতন মন বুঝতে পারছিল যে কলারটা মুহিবই হবে ।
রিসিভ করেই শুনল- হ্যালো, এটা কি সূবর্ণা এক্সপ্রেস........................
অর্পণা রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই মেজাজ খারাপ হতে শুরু করল সূবর্ণার । পড়াশোনায় আর মন বসাতে পারল না । মনে মনে মুহিবের চৌদ্দ গোষ্ঠি উদ্ধার করে ঘুমাতে গেল সে ।
কি মুশকিল ! ঘুমও আসে না । বারবার শুধু মুহিবের কথাই মনে আসছে । আচ্ছা, সে কি মুহিব কে প্রশ্রয় দিচ্ছে ? নাকি অর্পণা যেটা বলেছিল সেটাই ঠিক ! সেও মুহিবকে একটু একটু............. ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়ল সে ।
(ভালবাসার প্রথম অনুভূতি)
সূবর্ণার আজ খুব মন খারাপ । না, মুহিব তাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করেছে- সেজন্য মন খারাপ না । মন খারাপের আসল কারণটা হল- মুহিব গত এক মাস ধরে তাকে ফোন দেয় নি !
মানুষ এক বড়ই আজব প্রাণী । একটা জিনিস নিয়মিত ঘটতে থাকলে সেটা যতই বিরক্তকর হোক না কেন সে সেটাতে অভ্যস্ত হয়ে যায় । পরে সেটা যদি হঠাত্ করে বন্ধ হয়ে যায় তবে সেটাকে সে প্রবলভাবে মিস করতে শুরু করে । এখন যেমন সে মুহিবকে মিস করছে । ভীষণ মিস করছে !
অর্পণাকে একবার ভেবেছিল জিজ্ঞাসা করবে যে মুহিবের কি হয়েছে ? এখন ফোন টোন করে না কেন ! পরে লজ্জায় আর সংকোচে তা জিজ্ঞাসা করা হয়ে উঠে নি ।
মুহিব টা ও যে কি ! আজ ওর জন্মদিন এটাও ভুলে গেল ? ভুলতে পারল সে !? আগে তো কোথায় যেত, কার সাথে যেত, কি করত সব খবর রাখত । আর এখন ? এত বড় একটা বিশেষ দিন ও ভুলে বসে আছে !
একবার ভাবল মুহিবকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করবে- কি ব্যাপার মিস্টার ? নতুন কাউকে পেয়েছেন নাকি ? আমার জন্মদিনটাও ভুলে বসে আছেন যে ?
কিন্তু কিছু করল না সে । পাথরের মূর্তির মত ঠাঁই বসে রইল । মুহিবের সাথে তার এমন কোন সম্পর্ক হয় নি যে তার জন্মদিনের কথা তাকে মনে রাখতেই হবে ! ওর কিসের এত ঠ্যাকা ?
সূবর্ণার প্রচুর অভিমান হল । সেটা কি তার নিজের উপর নাকি মুহিবের উপর- সে নিজেও জানে না । দুহাঁটুর মাঝে মাথা গুঁজে ঠুঁকরে কেঁদে উঠল সে ।
(মুহিবের অন্তর্ধান রহস্য)
মাস খানেক আগের কথা । মুহিব বাসায় বসে বসে ভিডিও গেমস খেলছিল । এমন সময় তার বড় মামা আমেরিকা থেকে ফোন দেয় । বড় মামাকে আবার খুব ভয় পায় মুহিব !
মায়ের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে মা মুহিব সম্পর্কে একগাদা অভিযোগ হাজির করেন মামার কাছে । মামা তো শুনেই ক্ষ্যাপা ! গ্র্যাজুয়েশান শেষ করার পরও বসে বসে বাপের হোটেলে খাচ্ছিস ! লজ্জা করে না ? দুনিয়াটা কি মামা বাড়ির আবদার পাইছস ? রাগের মাথায় সিদ্ধান্ত নিলেন মুহিবকে তাঁর কাছে অর্থাত্ ইউএসএ নিয়ে আসবেন ।
রাতে যখন মুহিবের বাবা বাসায় ফিরল তখন মা তাকে সব খুলে বললেন । বাসায় বসে বসে ছেলের বখে যাওয়াটা তিনি নিজেও দেখছিলেন । কিন্তু অতি আদরের ছেলে বলে কটু কথা তেমন একটা বলতে পারতেন না । এখন যখন শ্যালকের কাছ থেকে এমন একটা প্রস্তাব পেলেন তখন আর 'না' করার প্রশ্নই আসে না !
মুহিব গাইগুঁই করল অনেকক্ষণ । সে আমেরিকায় যাবে না । উপায় না দেখে মায়াকান্নাও জুড়ে দিল । কিন্তু কোন লাভ হল না । তার উপর মা তাকে কান্নাকাটি করে (ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল) করে রাজি করিয়ে ফেললেন !
মুহিব যাওয়ার জন্য 'হ্যাঁ' করেছে এটা দেখে বাসার সবাই কি খুশি ! সবার খুশি দেখে এক মূহুর্তের জন্য নিজের কষ্টের কথা ভুলে গেল মুহিব । বাসা থেকে বেরিয়ে গেল । খুব মন খারাপ হয়ে আছে । সূবর্ণাকে ফোন দিল । নাম্বার বন্ধ । মনটা আরো খারাপ হয়ে গেল ।
সারাটা দিন বন্ধুদের সাথে ছিল । তার এই বন্ধুগুলো অসাধারণ । মন খারাপ করে থাকতেই দেয় না ! যদি কোন ভাবে বুঝতে পারে মন খারাপ তবে হাসাতে হাসতেই মেরে ফেলার অবস্থা করে !
রাতে বাসায় ফিরে সূবর্ণাকে ফোন দিল । ধরল না । দিতেই থাকল । ১৩তম বারে এসে সূবর্ণা ফোন ধরল । ধরেই দেয়া শুরু করল ঝাড়ি- এই তোমার কি আর কোন কাজ নেই ? পাইছ টা কি ? দিনরাত ছব্বিশ ঘন্টা শুধু ফোন আর ফোন ! আমারে কি তোমার মত বেকার ভাবছ ? মেয়ে দেখলেই খালি কথা বলতে ইচ্ছে করে, না ? কারেক্টার ঢিলা....... etc etc.
সূবর্ণার এই ঝাড়ি অবশ্য নতুন কিছু না । প্রতিদিনই সে এমনটা করে । আর মুহিব তক্কে তক্কে তার প্রতিটি কথার উত্তর দেয় । কিন্তু আজকের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন । পুরো দিন মেজাজ খারাপ ছিল । ভেবেছিল সূবর্ণার সাথে কথাগুলো শেয়ার করে একটু হালকা হবে । কিন্তু আজ সূবর্ণার কথাগুলো খুব গায়ে লাগল । নীরবে ফোনটা কেটে দিল- যেটা মুহিব কখনোই করে না ।
ভেবেছে টা কি মেয়েটা ? ভালই তো বাসি । অন্যায় তো আর কোন করি নি । মনের কথাই তো কেবল জানিয়েছি ওকে । তবে কেন প্রতিদিন শুধু শুধু কথা শুনতে হবে ?
মনে মনে মুহিব কঠিন একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল । আর ফোন দেবেটা মেয়েটাকে । দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা নাই ! পড়ে গেলে মানুষ তবেই বুঝে সে কি হারিয়েছে ? মুহিব এখন ওর পাশে আছে তো ! তাই মুহিবের গুরত্ব বুঝছে না । ও যখন অনেক.... অনেক দূরে চলে যাবে তখনই তার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারবে । তখন বুঝবে কি হারিয়েছে সে !
মেহেদীকে ডেকে বলে দিল- সূবর্ণা বা অর্পণা কেউ যদি তার খোঁজ করে যেন সোজা বলে দেয় যে সে জানে না ! সূবর্ণার কথাটা মেহেদী প্রথম থেকেই জানে ! তাই সে একটু অবাকই হল । কিন্তু ভাইয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আর কিছু বলার সাহস পেল না ।
অবশ্য মুহিব চাইলেও আর আগের মত যোগাযোগ করতে পারত কিনা সন্দেহ । পরদিনই তাকে ভিসার কাজে দৌড়াদৌড়ি শুরু করতে হল । মুহিবের মামা মার্কিন পাসপোর্টধারী, তাছাড়া বাংলাদেশ দূতাবাসে তার এক বন্ধুও কাজ করত । মুহিবের আব্বুরও বেশ কিছু লিংক ছিল । সেখান থেকেও সহযোগিতা আসল । মুহিবের গ্র্যাজুয়েশনের সিজিপিএ ভাল ছিল । তাছাড়া আইইএলটিস স্কোরকেও মোটামুটি স্বাস্থ্যবান বলা যায় ! ব্যাটে বলে মিলে গেলে যা হয় আরকি ! রেকর্ড সময়- মাত্র একমাসের মধ্যে তার মার্কিন ভিসা কনফার্ম হয়ে গেল । দীর্ঘ একমাসের ছুটাছুটিতে চেহারা ভেঙ্গে পড়েছে মুহিবের । তবে তা নিয়ে সে খুব একটা চিন্তিত না । কাজ শেষ হওয়ায় স্বস্তির একটা নিশ্বাস ফেলল । এখন শুধু উড়াল দেয়ার পালা ।
(যাত্রা প্রস্তুতি)
:- থ্যাংকস দোস্ত, তোরা অনেক করলি আমার জন্য ।
:- শালা বন্ধুদের থ্যাংকস বলস । লাত্থি দেবো !
:- তাই দে.... (:ডি)
মিথুন সত্যি সত্যি একটা লাথি লাগিয়ে দিল মুহিবের পা*ায় !
:- আব্বে হারামি ! সত্যি সত্যি লাগাই দিলি নাকি ?
:- তুই ই তো বললি ।
:- আমি তো কথার কথা বলছি !
:- আমিও কথার কথা লাগাইছি ! (:ডি)
এই মাত্র টিকিট কনফার্ম করে বেরিয়ে এল মুহিব আর মিথুন । মুহিব যেখানেই গেছে তার সাথে বন্ধুদের কেউ না কেউ থাকতই । একা একা কোথাও লাইনে দাঁড়াতে হয়নি তার ।
ভাগ্য ভাল ছিল মুহিবের । নেক্সট ফ্লাইট আগামীকাল রাত আটটায় । সেটারই টিকেট পেয়ে গেছে সে ।
:- এখন কি করবি ?
:- বাসায় চলে যাবো ।
:- সূবর্ণার সাথে যোগাযোগ হয় ?
:- গত এক মাস করি নি ।
:- ও ও করে নি ?
:- নাহ ! ওর কিসের এত ঠ্যাকা ? বাদ দে এসব ।
:- ঠিক আছে, বাদ দে ।
:- কাল তোরা আসবি তো ?
:- শালা, গাধার মত কথা কস ক্যান ? তুই চলে যাবি আর আমরা আসমু না এটা কোন কথা হইল ?
:- হে হে ! জানি তো আসবি ! তারপরও আবার বলছিলাম আরকি ! ফর্মালিটি বুঝছ না ?
:- মামা, এখনো দেশ ছাড় নাই । এর আগে ফরমাল হয়ে যাইতাছ ? শুনো, আমাগো কাছে বেশি ফরমাল হওয়ার চেষ্টা করবা তো ফর্মালিটি তোমার (.....) দিয়ে ঢুকাই দিবো !
:- ধুর হারামি, যা ভাগ ।
:- আচ্ছা যা । সাবধানে যাস....
মিথুনকে বিদায় বলে মুহিব বাসার দিকে রওনা দিল । হাতে একদম সময় নেই । কিন্তু অনেক কাজ বাকি এখনো ।
(প্রথম ভালবাসি)
বাসায় আসতে আসতে মুহিবের সন্ধ্যা হয়ে গেল । এসেই দেখল বাসায় একটা উত্সব উত্সব ভাব । সবাই তার জন্য খুশি । কিন্তু মুহিব একটা জিনিস বুঝতে পারল না, একটা মানুষ দীর্ঘদিনের জন্য দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে । তাকে বিদায় করার জন্য সবাই এত খুশী কেন ?
ক্লান্ত পায়ে হেঁটে নিজের রুম আসল । রাস্তায় প্রচুর জ্যাম । কাল আবার বিরোধীদলের আধাবেলা হরতাল । তার ফ্লাইট যেহেতু রাতে তাই তেমন একটা সমস্যা হবে না । কিন্তু তারপরও তার কপালে একটা চিন্তারেখা ফুটে উঠল । দেশের যে কি হচ্ছে ? দুদিন পরপর খালি হরতাল । এভাবে চলছে দেশ কিভাবে আগাবে ?
হঠাত্ চিন্তা ভাবনার ধরণ দেখে মুহিব নিজে নিজেই হেসে উঠল ! দেশই ছাড়েনি এখনো কিন্তু তার আগেই চিন্তাভাবনা প্রবাসীদের মত হয়ে গেছে ! শুধু উপদেশ দেয়া আর আফসোস করা !
বিছানায় চোখ বন্ধ করে গা এলিয়ে দিল মুহিব । এসির ঠান্ডা বাতাসে শরীরটা জুড়ানোর পর চোখ খুলে তাকাতেই ক্যালেন্ডারের দিকে চোখ পড়ল মুহিবের । ২১ নভেম্বর রেড মার্কারে সার্কেল করা । আজ কয় তারিখ ? ২১ তারিখই তো ! তাহলে আজকের দিনটা সার্কেল করা কেন ? দেশে কাটানো শেষ দিন বলে ? ও তো দুদিন আগেও তো জানত না যে এত তাড়াতাড়ি টিকিট কনফার্ম হয়ে যাবে ! তাহলে ?
তাড়াতাড়ি মোবাইল নিয়ে রিমাইন্ডার চেক করল ।
ওহ গড ! আজ সূবর্ণার জন্মদিন ! আজকের দিনটা ভূলে গেল সে ! ভেরি ব্যাড ।
কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন দিল সে । বুকে একটা ভয় কাজ করছে । কি না কি বলে আবার ? অনেক দিন কথা বলে নি । তাই ভয়ের সাথে নার্ভাসনেসটাও কাজ করছে ।
কয়েকবার রিং হওয়ার পর ফোন ধরল সূবর্ণা । বিষণ্ন কন্ঠে বলল- হ্যালো !
মুহিব ঝাড়ি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই ছিল । কিন্তু সূবর্ণার এমন কন্ঠের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না । উদ্দিগ্ন কন্ঠে জিজ্ঞাসা করল- কি হয়েছে সূবর্ণা ?
শ্লেষ মেশানো কন্ঠে সূবর্ণা বলল- কি আর হবে ? কিছু হয় নি । আর হলেই বা কি ? আমি তোমার কে ?
সামথিং ইজ রঙ ! এই সূবর্ণা সে সূবর্ণা না যাকে সে চিনত । এ অন্য একজন । ব্যস্ত কন্ঠে আবার বলল- কি হয়েছে সেটা তো বলবা ?
এবার ডুকরে কেঁদে উঠল সুবর্ণা । কাঁদতে কাঁদতেই বলল- আমি জানি না কি হয়েছে । আমি তোমাকে একটুও সহ্য করতে পারতাম না । কিন্তু তুমি যখন হঠাত্ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে, তখন আমার ভিতরের সব যেন কেমন উলট পালট হয়ে গেল । আমি জানি না কেন এখন আর আমার কিছুই ভাল্লাগে না ? জানি না কিছুতেই কেন এখন আর মন বসে না ? আমি জানিনা, কিচ্ছু জানি না !
একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল মুহিব । যাক অবশেষে, দাঁত পোকায় খাওয়ার পর দাঁতের মর্ম বুঝতে শিখেছে মেয়ে । মিষ্টি কন্ঠে মুহিব বলল- আমি জানি কি হয়েছে ! তুমিও আমার....
:- কচু জান তুমি । তুমি কিচ্ছু জান না । আই হেইট ইউ । আই জাস্ট হেইট ইউ- মুহিবকে কথা শেষ করতে না দিয়েই চিত্কার করে বলে উঠল সূবর্ণা ।
:- সত্যি ?
:- হু সত্যি !
:- তিন সত্যি ?
:- একশো সত্যি !!
:- আমার চোখে চোখ রেখে কথাটা বলতে পারবে ?
:- কেন পারবো না ? অবশই পারবো । আগে সামনে তো আসো ।
:- ঠিক আছে তুমি অপেক্ষা কর । আমি এক ঘন্টার মাঝে তোমার বাসার নিচে আসছি । রাখি বাই !
ইয়াহু !
অজ তাহলে সেই বিশেষ দিন ! প্রথম ভালবাসি বলার দিন । তাড়াতাড়ি শার্ট গায়ে দিয়েই বেরিয়ে পড়ল মুহিব । তার এমন ছুটে যাওয়া দেখে মা জিজ্ঞাসা করল- কি রে ? এই মাত্রই তো এলি ! আবার কোথায় যাচ্ছিস ?
:- তোমার বউয়ের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি !
:- মানে ?
:- মানে কিছু না ।
:- যেখানেই যাস, তাড়াতাড়ি ফিরিস ।
:- চিন্তা করো না মা । একটু পরেই চলে আসবো ।
ছুটে বেরিয়ে গেল মুহিব । বাসার সামনের মোড়ে একটা গিফট হাউজ । এক দৌড়ে সেখানে ঢুকল । ঢুকেই মাথা ঘুরিয়ে গেল ! হায় হায় ! এত গিফট ! কোনটা ছেড়ে কোনটা নেবে ?
তার চোখ পড়ল একটা কাচের ঘরের দিকে । ঘরের সামনে এক দোলনা । সেখানে দুইটা বাচ্চা দুলছে । পিছনে হাত ধরাধরি করে তাদের মা বাবা দাঁড়িয়ে আছে । তাদের মুখে হাসি । একটি কমপ্লিট হ্যাপি ফ্যামেলি !
ঠিক এরকমই একটা স্বপ্ন ছিল মুহিবের । ছোট্ট একটি বাড়ি । সূবর্ণা আর তার ছোট্ট একটা সংসার । সাথে দুটা বাচ্চা- একটা ছেলে একটা মেয়ে ! পারফেক্ট ফ্যামেলি !
শো-পিচ নয়, যেন একটা স্বপ্নকেই হাতে তুলে নিল সে । তারপর দাম মিটিয়ে ছুটতে থাকল । তার স্বপ্নের রাণী যে তার জন্য অপেক্ষা করে আছে !
(পূর্ণতা)
বিকেল থেকে মন খারাপ ছিল সূবর্ণার । কান্নাকাটিও অনেক করেছে । একটা ফোনও করল না মুহিব ? এত পাষাণ হয়ে গেল ছেলেটা ? সে না হয় একটু বকেছিল । কিন্তু তাই বলে এভাবে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হবে ?
সন্ধ্যার একটু পরে ফোন আসল মুহিবের । বহু আকাঙ্খিত ফোন । ফোন ধরতে গিয়েই অভিমানে বুকটা ফেঁপে উঠল তার । না, মুহিব কে তার মনের অবস্থা বুঝতে দেবে না । কিছুতেই না । এত কাঁদিয়েছে কেন তাকে ? এর শাস্তি তো তাকে পেতেই হবে ।
কিন্তু সূবর্ণার নিজের কন্ঠই তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল । ছেলেটা সব বুঝে ফেলেছে । ধুর, এটা কি হল ?
আচ্ছামত ঝাড়ল ওকে । ব্যাটা আমাকে কাঁদায় !! কত্ত বড় স্পর্ধা ।
মুহিব যখন বলল- ওর বাসার নিচে আসছে তখন খুশিতে ওর বুকে পিয়ানো বাজতে শুরু করল । মুখে যদিও বলেছে- 'এসে দেখো কি করি' কিন্তু মনে মনে ঝপেছে- প্লিজ তাড়াতাড়ি আসো । প্লিজ......
অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে । নিজেও পেয়েছি অনেক । কিন্তু কষ্টের দিন আজ শেষ করতে চাই । আজই তোমাকে বলে দেব- কতটা ভালবাসি ।
আজ আমি তোমাতে পূর্ণ হতে চাই । প্লিজ তাড়াতাড়ি আসো । তোমার হাত ধরেই আজ পূর্ণ হব আমি ।
(অপেক্ষা)
গিফট হাউজ থেকে বেরিয়েই একটা সিএনজি তে উঠে বসল মুহিব । সূবর্ণাদের এরিয়ায় যেতে বলল । কিন্তু ড্রাইভার মশাই বেঁকে বসলেন । অনেক দূর । যেতে মিনিমাম ঘন্টা খানেক লাগবে । যেতে রাজি হল না সে ।
টিনের চালে কাক,
মুহিব তো অবাক !
:- আরে ভাই, যাবেন না ক্যান ?
:- অনেক দূর তো ভাই !
:- অনেক দূর বলেই তো সিএনজি তে উঠলাম । নইলে তো হেঁটেই যেতাম ! চলেন না ভাই....
:- দিনের বেলা হইলে যাওয়া যেতে । কিন্তু রাইতে.....
:- রাইতে ডরান নাকি ? ভূতে ধরবো ?
:- না ভাই ! ভূত বলে তো কিছু নাই !
:- তাইলে ?
:- কাল তো হরতাল ভাই !
:- তা তো কাইল ! আজকে যাইতে সমস্যা কি ?
:- ভাই, আপনে জানেন না এখন হরতালের চেয়ে হরতালের আগের দিনে গাড়ি ভাংচুর বেশি অয় ! এত রিক্স নিয়া যামু না ভাই । গাড়ির কিছু হইলে বউ বাচ্চা নিয়া না খাইয়্যা থাকতে হইবো । আপনে বরং অন্য গাড়ি দেখেন ।
:- গাড়ি যে আর নাই এটা তো দেখতেছেন । বিশ্বাস করেন ভাই, যাওয়াটা আমার খুব ইম্পরট্যান্ট । জীবন মরণের প্রশ্ন । চলেন না রে ভাই......
জীবন মরণের প্রশ্ন শুনে ড্রাইভার যেতে রাজি হল । তারও তো 'দিল' বলতে কিছু একটা আছে ! যদিও ভাড়া অনেক বেশি চাইল । কিন্তু সেটা ব্যাপার না । যেতে রাজি হইছে এটাই বড় ।
গাড়িতে বসে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল মুহিব । অপেক্ষা ছাড়া আর কোন কাজ নেই । সূবর্ণার কাছে পৌঁছানোর অপেক্ষা.......
(অপেক্ষার প্রহর)
মুহিব ফোন করার পর থেকেই সূবর্ণা ব্যালকনিতে এসে বসে আছে । যাতে তাকে দেখা মাত্রই এক ছুটে নিচে গিয়ে তার বুকে ঝাপিয়ে পড়তে পারে । কিন্তু তার আসার কোন নামগন্ধ নেই ।
বলেছিল এক ঘন্টার মধ্যে আসবে । এখন তিন ঘন্টা পার হয়ে চার ঘন্টা চলছে । তবুও লাটসাহেবের কোন দেখা নেই । ছেলেটা যে কি !? এখনো প্রেমও হয়নি । তার আগে থেকেই লেট করা শুরু করেছে । আর প্রেম হয়ে গেলে নাজানি কি করা শুরু করবে !
সূবর্ণা চুপচাপ বসে আছে । মুহিবের আগমনের অপেক্ষা । ঠোঁটের কোণে তার হালকা হাসি । চোখে ভাসছে পুরানো দিনের সেই সব কথা । মুহিবের বাঁধরামি, ফাজলামি সব.... তখন কি বিরক্ত লাগত এসব ! আর এখন কতই না রোমান্টিক মনে হচ্ছে ! কিন্তু পাগলটা আসতে এত দেরি করছে কেন ??
ড্রয়িং রুমে সূবর্ণার আব্বা খবর শুনছে । তার কিছু কিছু কিছু ব্যালকনিতে বসা সূবর্ণার কানেও আসছে । দেশের অবস্থা খুব বেশি ভাল না । সন্ধ্যা থেকে বেশ কয়েকটি স্থানে হ্যান্ড গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়েছে, গাড়িও ভাংচুর হয়েছে বেশি কিছু । যাত্রীসহ একটি অটোরিক্সা নাকি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে । মুহিবের আসতে কোন সমস্যা হচ্ছে তো ? চিন্তা টা কে জোর করে মাথা থেকে সরিয়ে দিল । তার মুহিবের কিছু হবে না । সে অবশ্যই আসবে । সূবর্ণা অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকে ।
(শেষ কথা)
মুহিব তখন কল্পনায় নিমগ্ন । সূবর্ণার সাথে দেখা হলে কি বলবে, কি করবে, কিভাবে হাসবে তা নিয়ে মানসপটে হাজারো ছবি আঁকছে । এমনটা তো নয় যে- সূবর্ণার সাথে তার এই প্রথম দেখা হচ্ছে ! আগে তো প্রায় প্রতিদিনই দেখা হত । তবে সেসব দেখার সাথে এবারের দেখা হওয়াটার অনেক পার্থক্য । আজ যে ভালবাসি বলার দিন.......
মোড় ফিরতে মুহিবের গাড়িটা একটু স্লো হয়েছিল । হঠাত্ কোথায় থেকে যেন চার-পাঁচ জন এসে ওদের গাড়িটা ঘিরে ফেলল । ভয় পেয়ে ড্রাইভার হার্ড ব্রেক কসল । সাথে সাথে গাড়ির কাচে হকিস্টিকের আঘাত । মুহিব বের হওয়ার চেষ্টা করেছিল । এক সাইকো তাকে বের হতে দিল না । ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঠেলে পেট্রল ঢেলে পুরো গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল । জ্বলন্ত কুন্ডলীর বুকে সলীল সমাধি ঘটল এক গুচ্ছ তাজা স্বপ্নের ।
মুহিবের বাবা-মা তার ফেরার প্রহর গুণছে ।
নাম না জানা সেই সিএনজিওলার বউ বাচ্চা নিচ্ছে রুজি রুটি নিয়ে তাদের কর্তার ফেরার খবর ।
আর সূবর্ণা ?
সে তো বসে আছে তার অধরা ভালবাসাকে কাছে পাবার অপেক্ষায়......
কেউ জানে না কবে তার অপেক্ষার প্রহর ফুরাবে, কবে ফুরাবে তাদের অপেক্ষার প্রহর.......
♥♥ কিছু কথাঃ
প্রথম প্যারাটি লিখেছিলাম ছয় মাস আগে । একটা মিলনাত্মক সমাপ্তি টানাই এর উদ্দেশ্য ছিল । কিন্তু আলসেমির কারণে তখন পুরো লেখাটা কমপ্লিট করা হয় নি । সময়ের পরিক্রমায় লেখার মূল থিম কি ছিল সেটাও ভুলে যাই !
এটা যেটা হয়েছে সেটা হচ্ছে থিম ছাড়া লেখালেখি !
লেখাটাতে প্রচুর অসংগতি আছে । বিশেষ করে আমেরিকা যাবার প্রসেসটাতে ! কি আর করা ? অভিজ্ঞতা সংকট !
আবেগটাকে ঠিক মত ব্যবহার করতে পারি নি । বাক্য চয়নেও ছিল যথেষ্ট অপারদর্শিতা । তবে এসব নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামাই না । শখের বসে কিবোর্ড টেপাটিপি করি । প্রফেশনাল রাইটারদের মত এত কিছু চিন্তা করলে চলে নাকি ?
ফেসবুক লিংকঃ Click This Link
১৫ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১:১৯
ফরহাদ আহমদ নিলয় বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৫ ই মে, ২০১৩ দুপুর ২:০৪
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: আগুনের মধ্যে সলিল সমাধি ছাড়া বাকি সব ঠিক আছে। গল্প খারাপ হয় নি।
১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:১১
ফরহাদ আহমদ নিলয় বলেছেন: ধন্যবাদ.................
৩| ১৫ ই মে, ২০১৩ দুপুর ২:০৫
নিবিড় এখন বলেছেন: অসাধারন...
১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:১২
ফরহাদ আহমদ নিলয় বলেছেন: Thank You............
৪| ১৫ ই মে, ২০১৩ দুপুর ২:১০
ইলা বলেছেন: চালিয়ে যান। পরিপক্কতা আসবেই। আর এেতা নিখুঁদ হলেতো এখানে লেখার অবসর পাবেন না।
১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:১৩
ফরহাদ আহমদ নিলয় বলেছেন: ধন্যবাদ ।
সাথেই থাকুন ।
৫| ১৫ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮
ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
বেশ ভাল্লাগসে ||
১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:১৪
ফরহাদ আহমদ নিলয় বলেছেন: ধন্নবাদ
৬| ১৫ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালই লাগল। 'আর ফোন দেবেটা মেয়েটাকে' লাইনটা ঠিক করে দেন। আর সম্পূর্ণই আমার একটা মত প্রকাশ করি, (:পি) (:ডি) ইত্যাদি দেখে ফেসবুক প্রকাশনী বলে মনে হচ্ছে। ব্লগিয় ভার্সনে এইগুলা বাদ দিয়ে দিলে পড়তে ভাল লাগবে।
ভাল থাকুন। শুভ কামনা।
০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:২৪
ফরহাদ আহমদ নিলয় বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ১৫ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:০৩
২৪ বলেছেন: অসাম হইছে
০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:২৪
ফরহাদ আহমদ নিলয় বলেছেন: ধন্যবাদ
৮| ২৮ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:২৩
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: চরম হইছে ভাই.............
০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:২৪
ফরহাদ আহমদ নিলয় বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১:০৯
গ্য।গটেম্প বলেছেন: ভাল হয়েছে