নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জন্মগত ভাবেই একজন উৎকৃষ্ট পাঠক । তবে একাকীত্ব কাটানোর জন্য মাঝে মাঝে নিকৃষ্ট মানের লেখাও লিখি ।

ফরহাদ আহমদ নিলয়

ফরহাদ আহমদ নিলয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাইনক্যা চিপা - দ্য সায়েন্স ফিকশন

১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:৫২

ভায়েজার-N44 স্পেসশিফের চিফ ক্যাপ্টেন আমি । মূলত এই আকাশ জাহাজ টি গবেষণা ও অনুসন্ধান কাজেই ব্যবহৃত হয় । জন পন্ঞ্চাশেক ক্রু আর ৯ জন বিজ্ঞানী নিয়ে গ্রহ-গ্রহান্তরে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে বেডানোই আমাদের কাজ । টাইম স্পেস ব্যবহার করে সৌরজগত থেকে ৮৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে T-40 নক্ষত্রপুন্জ্ঞের কাছাকাছি এসে পড়েছি আমরা । এবারের মিশন T-40 নক্ষত্র রাশির ZEO-242 গ্রহটি । এই প্রথম বারের মত আমাদের টিমটি এত দূরের কোন স্থানে অনুসন্ধান চালাতে এসেছে । তাই সবাই খুব উত্তেজিত । ঘন্টায় ১৩২৫০০০ মাইল বেগে আমাদের স্পেসশিপ টি ZEO-242 এর দিকে ধেয়ে চলছে ! সেখানে পৌঁছাতে আর সপ্তাহখানেক লাগবে । নিশ্চিন্ত মনে এগিয়ে চলছি আমরা ।

৭ তারিখ সকাল বেলা । এখানে, মহাকাশে অবশ্য সকাল/সন্ধ্যা কিছুই বুঝার উপায় নাই । পৃথিবীর প্রমাণ সময়ের সাথে মিল রেখে কৃত্রিমভাবে এসব তৈরি করে TINA.

TINA আমাদের সুপার কম্পিউটারের নাম । কোয়ান্টাম সুপার সিরিজের পন্ঞ্চম ভার্সনের এই কম্পিউটারটি একাই কয়েক লক্ষ কম্পিউটারের কাজ করে ফেলতে পারে । এর কাজও একদম নিখুঁত । নিশ্চিন্তে ভরসা করা যায় । এই স্পেসশিপ রক্ষণাবেক্ষণ, গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ, পৃথিবীতে অবস্থিত মূল কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ, স্পেসশিফের ভিতরে তাপমাত্রা ও বাতাসের চাপ ঠিক রাখা, কৃত্রিম মহাকর্ষ তৈরি করা ইত্যাদি সব কাজ সে নিজে নিজেই করে নিতে পারে । কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশিষ্ট এই কম্পিউটার টি মাঝে মাঝে নানা কান্ড ঘটিয়ে আমাদের মনোরন্জ্ঞনেরও ব্যবস্থা করে । তাই আমরা আদর করে ওকে TINA বলে ডাকি ।



৭ তারিখ সকাল বেলা । ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে TINA সম্ভাষণ জানাল-

-: সুপ্রভাত ক্যাপ্টেন । ছয় ঘন্টার দীর্ঘ ঘুম কেমন হল ?

-: থ্যাংকস TINA. ঘুম অনেক ভাল হয়েছে । তোমার তৈরি কৃত্রিম স্বপ্নটা অনেক মজার ছিল ।

-: ওয়েলকাম ক্যাপ্টেন । তুমি কি ওদের কে খুব মিস করছ ?

-: মানুষ খুব ইমোশনাল একটা প্রাণী । মিস করাটাই খুব স্বাভাবিক । স্ত্রী আর তিন বছরের বাচ্চাকে রেখে এতদূরে আসা যে কতটা কষ্টকর সেটা তুমি বুঝবে না । তারপরও তোমার সহমর্মিতার জন্য ধন্যবাদ ।

-: একেবারেই যে বুঝব না সেটা ঠিক না ক্যাপ্টেন । আমার মাঝেও বুদ্ধিমত্তা আছে । হোক না সেটা কৃত্রিম । খানিক টা আবেগও আছে । তা না হলে কিভাবে বুঝতে পারতাম যে কোন স্বপ্নটা দেখালে তুমি খুশি হবে ?

-: হুম । সেটাই ।

-: তোমার কফি এসে গেছে ক্যাপ্টেন ।

-: ধন্যবাদ TINA. এদিকের খবর বল ।

-: সব ঠিকঠাক মতই চলছে । আর ১২ ঘন্টার মাঝে আমরা ZEO তে পৌঁছাতে পারব ।

-: গ্রেট ।

-: ক্যাপ্টেন, আমার কি মনে হয় জান ? তোমাদের অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলছে । এই গ্রহটার সব তথ্য উপাত্ত আমি বিশ্লেষণ করে দেখেছি । পুরাই পৃথিবীর মত । এখানে প্রাণের অস্তিত্ব না থেকে পারেই না ।

-: তাই নাকি ? সবাইকে জানিয়েছ ।

-: হুম । সবাই জানে । তারা এটা নিয়ে খুব উত্তেজিত । কনপারেন্স রুমে তারা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে ।

-: ওকে ।



ছোট খাট একটা কনপারেন্স রুম । সব বিজ্ঞানীরা হাজির । আমি আসতেই সবাই দাড়িয়ে গেল । বসতে বললাম সবাইকে । আমিই শুরু করলাম-



-: ZEO-242 নিয়ে TINA র রিপোর্ট তোমরা তো দেখেছ । কি মনে হয় রিয়া ? (আমাদের জীব বিজ্ঞানীর নাম রিয়া)

-: দেখেছি ক্যাপ্টেন । আমার মনে হয় এখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে ।

-: বাকিদের কি ধারণা ?

-: অন্যরাও আমার সাথে একমত । এখানে হতেই হবে । নতুবা কোন খানেই নয় ।

-: সেটাই যদি হয় তবে তোমরা তো নিজেদের দায়িত্ব জানই ।

-: ইয়েস ক্যাপ্টেন ।

-: যাও । কাজ শুরু কর । আমাদের হাতে খুব বেশি সময় নেই ।

-: যাচ্ছি ক্যাপ্টেন । কিন্তু তুমি কি করবে ?

-: মূল কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করে তাদের বিষয়টা ব্রিফ করব । তোমরা যাও ।



সবাই চলে গেল । আমিও উঠে গেলাম আমার কেবিনের দিকে ।





(৪ ঘন্টা পর)





-: ক্যাপ্টেন ! ক্যাপ্টেন !

-: কি হয়েছে TINA ?

-: চারটা স্পেসশিফ আমাদেরকে ঘিরে ফেলেছে ।

-: কি বলছ তুমি ? মাথা ঠিক আছে তো ? এখানে স্পেসশিফ কোথায় থেকে আসবে ।

-: আমার মাথা নেই । কিন্তু প্রসেসিং ইউনিট ঠিক আছে । এগুলো কোথায় থেকে এসেছে জানি না । খুব সম্ভবত ZEO থেকে ।

-: কিন্তু তোমার রাডার কি করছিল ? আগে ধরতে পারে নাই কেন ?

-: জানি না । মনে হয় আগে ছিল না । হঠাত্‍ করেই এসে পড়ছে । আমরা যভাবে টাইম স্পেস ফুটো করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যাই সেভাবেই !

-: এখন কি হবে ? কি করছে ওগুলো ?

-: জানি না কি হবে । ওগুলো কিছু করছে না । স্থির দাঁড়িয়ে আছে । ক্যাপ্টেন, কন্ট্রোল রুমে সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে । তুমি তাড়াতাড়ি যাও ।





কন্ট্রোল রুম । সবাই গম্ভীর মুখে বসে আছে । সামানে বিশাল একটা স্ক্রীন । চারটা দানবাকৃতির স্পেসশিফের ছবি সেখানে । আমিই কথা শুরু করলাম- সঙ্গীরা, আমরা অদ্ভুত একটা পরিস্থিতির সামনা সামনি পড়ে গেছি । এদের খুঁজে পাওয়ার জন্যই তো আমরা মহাশূন্য চষে বেড়াচ্ছি । কিন্তু হঠাত্‍ করে এভাবে এদের মুখোমুখি হব এটা অপ্রত্যাশিত ছিল । আমাদের তেমন কোন প্রস্তুতিও ছিল না । আমরা জানি না এই ভিনগ্রহবাসীরা দেখতে কেমন হবে ? তাদের আচার আচরণ কেমন হবে ? আমাদেরকে তারা কিভাবে নেবে ? কোন তথ্যই আমাদের কাছে নেই । কিন্তু তাই বলে তো আয় চুপ করে বসে থাকতে পারব না ! পৃথিবীর মূল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে খবর দেয়া হয়েছে । আমরা তাদের উত্তরের অপেক্ষায় আছি । কিন্তু অত দূর থেকে ওরা আমাদেরকে তেমন কোন সাহায্য করতে পারবে বলে আমার মনে হয় না । যদি কিছু করতেই হয় আমাদের নিজেদেরকেই তা করতে হবে । কি বল তোমরা ?



পদার্থ বিজ্ঞানী নুহা বলল- তুমি ঠিক বলেছ ক্যাপ্টেন । আমরা ওদেরকে এভাবে পাব এতটা আশা করি নি । আমরা তোমার সাথে একমত ক্যাপ্টেন ।



আবার আমি বললাম- তাহলে ওদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করি । TINA, তুমি ওদের কাছে মেসেজ পাঠানোর ব্যবস্থা........



TINA আমাকে কথা শেষ করার সময় না দিয়েই বলল- ক্যাপ্টেন, ওদের উপস্থিতি ধরা পড়ার পরই আমি আমার যতগুলো ভাষা জানা আছে তার সবগুলোতেই ওদের কাছে আমাদের মেসেজ পৌঁছে দিয়েছি । কিন্তু আমার মনে হয় না ওরা আমাদের ভাষা বা মেসেজ বুঝতে পেরেছে ! এখনো কোন রিপ্লে পাই নি তাদের কাছে থেকে....



নৃ-বিজ্ঞানী জুকা বলল- আমি কি কিছু বলতে পারি ক্যাপ্টেন ?

আমি সায় দিয়ে বললাম- অবশ্যই ।

সে বলতে লাগল- প্রাচীনকালে মানুষ যখন যুদ্ধ করত তখন যুদ্ধবিরতি কিংবা সন্ধির জন্য সাদা রং এর ঝান্ডা লাগাত । মধ্যযুগে কোন নতুন প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধনীতে সাদা পায়রা অবমুক্ত করা হত শান্তি কামনায় । আর বর্তমান যুগেও সাদাকে বন্ধুত্বের রং হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে । এর মানে হল যুগ যুগ ধরে সাদা রং শুদ্ধতা, বন্ধুত্ব, ভালবাসার রং হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে । এই ভিনগ্রহের বাসিন্দারা যখন আমাদের মেসেজের পাঠোদ্ধার করতে পারছে না তখন আমরা তাদের সাদা রং দেখিয়ে আমাদের মনের ভাব ও উদ্দেশ্যটা বুঝাতে পারি । ইতিহাস এর সাক্ষ্য দেয় । ইতিহাস বইতে আমি একবার পড়েছিলাম যে, বাংলাদেশ নামক ক্ষুদ্র একটা দেশের এক চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদীন ফ্রান্স সফরে গিয়ে ভাষাগত সমস্যায় পড়েন । তখন তিনি ছবি এঁকে এঁকে কথা চালান । এখানেও যেহেতু সমস্যাটা ভাষাগত তাই আমরা তার ট্রিকস টা অবলম্বন করতে পারি ।



নৃ-বিজ্ঞানীর জ্ঞানমুগ্ধ কথা শুনে আমি উচ্ছাসে বলে উঠলাম- ওয়াও ! ওয়াও ! চমত্কাদর জুকা ভাই ! তোমার চাইনিজ বউ তো তোমারে দারুণ সব বুদ্ধি দেয় ! TINA, তোমার কালেকশানে কি সাদা রং আছে ?



TINA বলল- আবার জিগায় ! আমি এখনই বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে চারপাশে সাদা রং ছড়িয়ে দিচ্ছি ।



পরক্ষণেই দেখা গেল মহাশূন্যের ওজনহীন পরিবেশে ভেসে ভেসে সাদা রং এর আভা চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে.....



(2 মিনিট পর)





হায় আল্লাহ ! একি ? ওরা মিসাইল তাক করল কেন ? ওমা ! এদেখি ছুড়েও দিল ! তীব্রবেগে কেঁপে উঠল আমাদের নভোখেয়াটি !





ZEO-242 এর প্রতিরক্ষা চিপের কথা:





এই স্পেসশিফটি আকাশ ফুঁড়ে আবার কোথায় থেকে উদয় হল ? টাইম স্পেস ফুটো করে এসেছে বোধহয় ! এদের দিকে নজর রাখতে হবে ।



এদের টার্গেট টা কি ? ZEO-242 ? গতিপথ দেখে তো সেরকমই মনে হচ্ছে । একটা কথা আছে না- পিপীলিকার পাখা উড়ে মরিবার তরে.... শালাদেরও কি মরার শখ হইছে নাকি ?



না ! অনেক দেখা হয়েছে ! এবার এদের থামাতেই হবে । যে গতি নিয়ে আসছে তাতে তো মনে হয় আর ৮ ঘন্টার মাঝেই ওরা আমাদের আকাশ সীমায় এসে পড়বে । তখন কিছু করলে থামানো কষ্টকর হবে । এদের এখনই থামাতে হবে !



কন্ট্রোল রুম । আগুন্তকদের থামানোর জন্য চারটা ওয়্যারশীপ পাঠাও !



বেটারা মনে হয় ভয় পেয়েছে । সাথে সাথে থামিয়ে দিয়েছে । যাক, প্লানটা কাজ করেছে তাহলে !



একি ? ভয়ে এদের মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি ? কি সব মেসেজ পাঠাচ্ছে ? কিছুই তো বুঝি না ! নাকি এটা ওদের অন্য কোন চাল ? উল্টা পাল্টা মেসেজ দিয়ে আমাদের সিস্টেম ক্রাশ করার ধান্দায় আছে ? চান্দু, যত চেষ্টাই কর না কেন তোমরা, আমাদের সিস্টেমের গায়ে আঁচও লাগাতে পারবে না !



সাদা রং ? এত বড় স্পর্ধা ! আমাদের সাদা রং দেখিয়ে যুদ্ধের আহবান জানায় ? আমাদের এলাকায় এসে আমাদেরকেই ধ্বংসের হুমকি দেয় ! আর তো সহ্য করা যায় না !



আমাদের এলাকায় এসে আমাদেরকেই হুমকি দাও ? দাড়াও দেখাচ্ছি, আমরাও কম যাই না !



কমান্ডো ................................ ফায়ার !!!



ওকে ! গ্রেট ! জানে মারার দরকার নেই ওদের । জীবিত ধরে আন । দেখতে চাই- কেমন বাপের বেটা ওরা.....?



ভায়েজার-N44 এর যাত্রীদের সর্বশেষ অবস্থা:



ক্যাপ্টেন :- কি ব্যাপার ? ওরা এমন করল কেন ?

TINA :- আমার মনে হয় ওরা আমাদের ভুল বুঝেছে ! এখানে সাদা রং সম্ভবত খারাপ অর্থে ব্যবহৃত হয় !

ক্যাপ্টেন :- ওহ গড ! সর্বনাশ ! তাড়াতাড়ি ওদের সাথে কন্ট্রাক করে জানাও যে ওরা আমাদের ভুল বুঝেছে ! হ্যারি আপ !

TINA :- স্যরি ক্যাপ্টেন । সেটা সম্ভব না ! ওদের একটা মিসাইল আমাদের আমাদের মেইন এন্টেনায় পড়েছে । আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিধ্বস্ত ।

ক্যাপ্টেন :- বুলশীট ! পৃথিবীতে সাহায্যের জন্য মেসেজ দাও । বল দাও আমরা খুব বিপদে আছি ।

TINA :- ক্যাপ্টেন মনে হয় আমার কথা ভাল করে বুঝতে পারেন নি । আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছে । এখন আমরা কাউকে মেসেজ দিতেও পারব না, কারো কোন মেসেজ নিতেও পারব না !

ক্যাপ্টেন :- ওহ নো ! বদমাইশ নৃ-বিজ্ঞানীটার কথা শোনা ঠিক হয় নি । বেটার চাইনিজ বউটা শালারে সব কুবুদ্ধি দেয় । এখন একটাই পথ খোলা- পালাতে হবে ! স্কাই ড্রাইভ সার্কিট টা রেড়ি কর TINA....

TINA :- আমি এবারও আপনাকে নিরাশ করছি ক্যাপ্টেন । ওদের আরেকটি মিসাইলের আঘাতে স্কাই ড্রাইভ অংশটাও বিধ্বস্ত । পালানো তো দূরে থাক, শীপটা নাড়ানোর উপায়ও নাই !

ক্যাপ্টেন :- ওহ !

TINA :- তাহলে এখন কি করব ক্যাপ্টেন ?

ক্যাপ্টেন :- করার মত আর আছে কি ? চেয়ে চেয়ে দেখ ওরা কি করে ??



ওরা তো দেখি ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে ! নিশ্চয় অন্য কোন মতলব আছে ওদের ।

চারটাই দেখি একসাথে আমাদেরটা স্পর্শ করল ! হোটাই এ টাইমিং রে বাবা.....

ওমা ! ওরা তো দেখি আমাদের শীপের দেয়াল কাটতে শুরু করেছে ! ভিতরে ঢুকার খেয়াল নাকি ওদের ?



হায় আল্লাহ ! এগুলা কি ? এগুলা এমন কেন ? আমি তো ভেবেছিলাম কত স্মার্ট হবে ওরা ! কিন্তু একি ? এগুলো এমন করে হাটে কেন ? হাটতেও তো জানে না !



হাটতে না জানলে নাই ! অস্ত্র ঠিকই চালাতে জানে । কত ভয়ংকর সব অস্ত্র নিয়ে কি অবলীলায় হেঁটে আসছে !

একি ? এ তো দেখি আমার দিকে এগিয়ে আসছে ! আমি কি করছি ? আমার দিকে আসে কেন ?

কি জানি বলল ? শুনতে পাই নি ।

আবার বলল । এবার শুনলাম । স্পষ্ট বাংলায় বলছে- এই ঘুমাস কেন ? টিউশনিতে যাবি না আজ ?

এ বেটা বলে কি ? মহাকাশে আবার টিউশন দিতে কোথায় যাব ? কিছুই তো মাথায় ঢুকছে না ! নাকি এলিয়েনদেরকেই টিউশন দিতে বলছে !!

এবার বেটা বত্খিতটা আমার কলার চেপে ধরে ধমক দিয়ে বলল- উঠ !

আমি ভয়ে ভয়ে বললাম- কোথায় উঠব ?

এবার জল্লাদ টা আমাকে একটা থাপ্পর দিয়ে বলল- শালার বাচ্ছা শালা ! ঘুম থেকে উঠ !

থাপ্পর খেয়ে ঘুম ভেঙ্গে গেল ! চোখ মেলে দেখি আমি আমার বিছানায় শুয়ে আছি । আর আমার দিকে বিষদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার রুমমেট অন্তু !!

বুঝলাম, এ মহাকাশ, স্পেসশীফ, ক্যাপ্টেন্সি, যুদ্ধ- সবই ছিল স্বপ্ন । আকাশ যানটির জন্য খারাপ লাগলেও মনে মনে খুশিতে জ্যাকসনের মত একটু মুনওয়াক করে নিলাম । যাক বাবা অমন মাইনক্যা চিপায় পড়ি নাই ! জান তো বাঁচছে !!!



রবীন্দ্রনাথের ছড়া কবিতা বীরপুরুষের প্যারোডি করে মনে মনে আবৃত্তি করলাম-



ভাগ্যিস সব স্বপ্ন ছিল,

নইলে কি দুর্দশাই না হত- তা না হলে !!!



অন্তু এখনো তার বিখ্যাত "খ্যাইয়া ফেলামু" লুক নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম । দেরি হয়ে যাচ্ছে ।



(সমাপ্ত- THE END)



Facebook Link: Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.