নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লু'জ ব্লগ

আমি নীল, আমি কালো, আমি মন্দ হয়েও ভালো

টেস্টিং সল্ট

এতো ঠুনকো খোলস তুমি পড়েছো পাগল, এতো পলকা দেয়ালে তুমি ঘিরেছো নিজেকে, চাইলেই সেই দেয়াল ভেঙে দেয় কোন আদুরে নরোম হাত।

টেস্টিং সল্ট › বিস্তারিত পোস্টঃ

বড়ো গল্পঃ আমি মুনীর (দ্বিতীয় পর্ব)

২৩ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১

প্রথম পর্ব



পর্ব ২







।। আমি মুনীর ।।









আমি মুনীর। আমি একজন সাইকোপ্যাথ।



এই মুহূর্তে কেউ একজন আমার দিকে তাকিয়ে আছে।



আমি গান শুনছি।



আমার উচ্চতাভীতি আছে, কিন্তু এই মুহূর্তে রেলিং গলে সোজা নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।



একএক বার মনে হচ্ছে, চারতলা নিচে সিমেন্ট বাঁধানো ইট পাথর আমার দিকে ধেয়ে আসছে।



ফ্রি ফল, খারাপ না। তবে এখান থেকে পড়লে মরবো না।



আচ্ছা মরতে কেমন লাগে?











সে এখনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সতেরো আঠারো বছর বয়সের মেয়েগুলো এতো বোকা হয় কেন?



আমার তার দিকে তাকানোর প্রয়োজন নেই। আমি জানি তার নির্বোধ মস্তিস্ক এই মুহূর্তে কি ভাবছে।



ভাইয়ার বাসায় কেউ নেই। এখানে থেকে যাওয়া যেতে পারে।



আরে মেয়ে, একটা তেইশ বছরের ছেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে গান শুনছে। এতো দেখার কি আছে?



বজ্র চমকাচ্ছে। ভালো। মহাসেন না কি যেন আসছে শুনেছিলাম। আমি টিভি দেখি না। বজ্রের শব্দ আমার ভালো লাগে।



সেদিন সমুদ্রে জাহাজ ডুবিয়ে দেবার মত তুফান বৃষ্টি হয়েছে। আমি ভিজেছি। জ্বরও হয়েছিলো। মা ওষুধ খেতে বলেছিলো। ওষুধ খেতে আমার ভালো লাগে না।



বৃষ্টি আসতে পারে। বৃষ্টি ফিল করতে পারি না। ফিল করতে চাই। আমি বৃষ্টি পছন্দ করি। টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনতে পেতাম না বলে একসময় আমার মাথার ভেতরে জ্বালা করতো।



আমি ছেলেটা দেখতে খারাপ না। তুমি তাকিয়ে থাকো। তোমার মনোযোগ আমার জন্য ভালো।



ভাইয়ার বাসায় থেকে যাওয়া যাবে না। একা বাসায় আমি থাকতে পারি না। আবার কি জানি, পারতেও পারি। আমি জানিনা।



আমি একজন সাইকোপ্যাথ। সাইকোপ্যাথ মানে পাগল নয়। পাগল হচ্ছে ইনসেইন। সাইকোপ্যাথ কতগুলো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যর সমষ্টি। কাল রাতেই গুগল করেছিলাম।



আড্ডার টপিক বদল হতে হতে শেষে মানসিক বিকৃতি নিয়ে অনেক কথা হয়েছিলো। প্রথম দিকে আমি জোড়ালো গলায় বলে যাচ্ছিলাম। সবাইকে মনোযোগী করতে পেরেছি। আমি অ্যাটেনশন পছন্দ করি।



পরের দিকে ওদের একজন সাইকোপ্যাথি নিয়ে আলোচনা শুরু করলো। আমি চুপ হয়ে গেলাম। সাইকোপ্যাথ মানে পাগল নয়।



খিদে পেয়েছে। ভাইয়ার ফ্রিজ ভর্তি খাবার দাবার আছে। আনতে ইচ্ছে করছে না। আরেকজনের দৃষ্টি এতখনে প্রেমিকা সুলভ হয়ে গেছে। থাক তুই তাকিয়ে!!



আমার অতীতের অনেক প্রশ্নের জবাব আমি পেয়ে গেছি। আমি পাগল নই, তবে আমি সুস্থও নই।



কাল রাতে দুনিয়ার সেরা সেরা সাইকিয়াট্রিস্ট এর লেখা পেপারস পড়েছি। সাইকোপ্যাথিক বিহেভিয়ার টেস্ট নিয়েছি। এইটার আসল নাম সাইকোপ্যাথ চেকলিষ্ট -রিভাইস (পিসি এল – আর)। রবার্ট হেয়ার নামের এক ভদ্রলোক এই টেস্টের জনক।



আমাকে আড়াল থেকে দেখে এই টেস্ট লিখেছে কিনা, আল্লাহ্‌ মালুম।



আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি একটা বেড়া ডিঙিয়ে অন্য পাশে চলে এসেছি। ওপাশে সাধারণ, “সুস্থ” মানুষেরা। আমার মা ও। জেবাও ওই পাশে।



আগে মনে হতো, আমি সুস্থই, শুধু একটু তার ছেঁড়া।



অমন অনেকেই হয়।



কিন্তু এখন জানি, Most studies indicate that there are no conventional methods available which cures psychopathic behavior.



সাইকোপ্যাথ মানেই খুনী না। সিনেমা দেখে দেখে মানুষের মাথা গুলো গেছে। অবশ্য ওদের মাথাগুলো একেবারেই বোরিং। মোটা দাগে কাউকে আলাদা করে দিতে চায়। মগজ ব্যবহার করে না।

মগজ! মগজ! মস্তিষ্ক জিনিশটা আসলে দুর্দান্ত একটা সৃষ্টি। মগজের মধ্যেই সব। ইনসেপশন মুভির মতো, লেয়ারের পর লেয়ার।



এবার দেখা যেতে পারে তোমাকে।



হু, মুখটাও সুন্দর তোমার। প্রথমে শুধু ঘাড়টা দেখেছিলাম। মেয়ে মানুষের ঘাড়, গলা, এত সুন্দর কেনো?



জেবার ঘাড় গলাও সুন্দর ছিলো। জেবা!



আমার হাসি তোমাকে অবাক করেছে মেয়ে। তুমি আমাকে ছ্যাঁচড়া ভেবেছিলে।



আমি মুনীর। আমি ছ্যাঁচড়া নই।



শুভ অথবা তারেক এতক্ষণে ভাব বিনিময় করার চেষ্টা করতো। তুমি দিতে। আমার বন্ধুরা কায়দা জানে। আমার কায়দার দরকার নেই।



গ্রীলের ফাঁকা গলে পড়ে যেতে ইচ্ছে করছে। সব কিছু ধুসর। ধুসর পীচ জমানো রাস্তায় দলা দলা হলদে মগজ ছিটকে থাকবে। মুনীরের মগজ।



কফির তেষ্টা পেয়েছে।



বাজ পড়ছে। জেবা বাজ পড়ার শব্দ ভয় পেতো। আমার বাহু আঁকড়ে ধরতো।



অ্যাই মেয়ে, হাতে জেবার মত নখ আছে?



না থাক, ওর মতো নখের দরকার নেই। তুমি জেবা নও। তোমার দিকে তাকিয়ে মুনীর হেসেছে। তোমার তো খুশীতে মরে যাওয়া উচিত। এসো, লাফ দাও।



উহু, সতেরো বছর। ভয় পাবে।



এই বারান্দায় থাকলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া যেতো।



না, আমি খুনী নই। আমি মুনীর। আমি সাইকোপ্যাথ। অ্যা গুড ওয়ান।











।। চলবে ।।











।। আমি ইচ্ছে করে লেখি না, মাঝে মাঝে কেউ একজন আমার মাঝে চলে এসে আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নেয়। নিজেকে ভাঙার চেষ্টা করেছি এই গল্পে, অথবা নিজেকে জোড়া দেবার। এই গল্পটা ঝর্ণার মতো বাইরে এসেছে, পুকুরের মত পুরোটার নকশা করে লিখতে বসিনি। গল্পের পরবর্তিতে কি হতে পারে, আমি নিজেও জানিনা। ইচ্ছে হলে চোখ রাখবেন পরের পর্বের জন্য। ।। [/si





তৃতীয় পর্ব

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:২৭

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: +++++++++++

চালায়া যান।

২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৩

টেস্টিং সল্ট বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৪০

মামুন রশিদ বলেছেন: সাইকো গল্প ইদানিং ভালোই লাগে, অনেকেই লিখছেন । তবে আপনার সহজ সরল বর্ননার ঢঙ টা বেশ ভালো লেগেছে । চালিয়ে যান ।

২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

টেস্টিং সল্ট বলেছেন: আগের পর্বটা পড়লে এই পর্বের লেখনীর ঢং বদলাবার কারণটা ধরতে পারবেন। ধন্যবাদ

৩| ২৪ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৫০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: অ্যাঁ! পুরাই ধাক্কা খাইলাম! ভাবছিলাম কি সুন্দর রোম্যান্টিক গল্প!

কিরে তুই কি পারফিউম মুভির কাহিনী ঢুকায় দিবি নাকি এর মধ্যে?

২৪ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৬

টেস্টিং সল্ট বলেছেন: পারফিউম আমি দেখি নি। তাই বলতে পারছি না।

৪| ২৪ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৯

ইলুসন বলেছেন: এতক্ষণ পর্যন্ত ভালই লেগেছে। আশাকরি পরের পর্ব খুব শীঘ্রই পাব।

ছোট একটা অনুরোধ, গল্পে বারবার করে বলা হচ্ছিল আমি একজন সাইকোপ্যাথ! এটা বারবার বলে না দিয়ে একবার বললেও পাঠকরা বুঝে যাবে, আর যদি একবারও না বলে শুধু চিন্তাভাবনাগুলোর প্রকাশ করার মাধ্যমে বোঝানো যায় যে লোকটা একটা সাইকোপ্যাথ তাহলে তো আরো ভাল।

২৪ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৮

টেস্টিং সল্ট বলেছেন: ব্যপারটা অনেকটা এরকম, ছেলেটি আজই বুঝতে পেরেছে সে কি, সে কে। তার চারিত্রিক অসংলগ্নতা সম্পর্কে সে অবগত ছিল, আজ সেগুলোর পেছনের কারণটা জানতে পারলো।

এবং, সে একজন সাইকোপ্যাথ এটা আবিষ্কারের পর তার সমস্ত অস্তিত্ব দুলে উঠবে, এইটাই স্বাভাবিক।
তার চিন্তা থেকে সে এক মুহূর্তের জন্যও সাইকোপ্যাথ শব্দটা মুছে ফেলতে পারবে না। এই মানসিক অবস্থাটাই ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি।

৫| ২৮ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

মাক্স বলেছেন: ১ম প্লাস!
পরের পর্বও দিসেন দেখি। পড়তে হবে!

২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:০৭

টেস্টিং সল্ট বলেছেন: ধন্যবাদ মাক্স

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.