নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানব মঙ্গল আমার একান্ত কাম্য

মহাজাগতিক চিন্তা

একদা সনেট কবি ছিলাম, ফরিদ আহমদ চৌধুরী ছিলাম, এখন সব হারিয়ে মহাচিন্তায় মহাজাগতিক চিন্তা হয়েছি। ভালবাসা চাই ব্লগারদের, দোয়া চাই মডুর।

মহাজাগতিক চিন্তা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যক্তি অনুসরণে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) চার দলে বিভক্ত হয়ে বুঝালেন, ব্যক্তি অনুসরণে একদলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়

০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১০:৩২



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।

সূরাঃ ৪৮ ফাতহ, ২৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৯। মোহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল; তাঁর সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবে।তাদের লক্ষণ তাদের মুখমন্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে: তওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপ এবং ইঞ্জিলেও তাদের বর্ণনা এরূপই। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারা গাছ, যা থেকে নির্গত হয় নতুন পাতা, অতঃপর ইহা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষীদের জন্য আনন্দ দায়ক। এভাবে মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা আল্লাহ কাফিরদের অন্তর্জালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের।

সহিহ বোখারী ২৯ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
২৯। হযরত আহনাফ ইবনে কায়েস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, আমি হযরত আলী (রা.) অথবা হযরত ওসমান (রা.) কে সাহায্য করতে চললাম, (পথে) আবু বাকরাহ (রা.) এর সাথে দেখা হলো। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম, এ ব্যক্তিকে সাহায্য করতে চলছি। তিনি বললেন ফিরে যাও। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে কলতে শুনেছি, যখন দু’জন মুসলমান তরবারী নিয়ে পরস্পর মুখোমুখী হয়, তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয় জাহান্নামী হয়। আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল (সা.) এতো হত্যাকারী বলে, কিন্তু নিহত ব্যক্তির ব্যাপারটি কি? তিনি বললেন, সে তার সঙ্গীকে হত্যা করার আকাঙ্খী ছিল।

* মতভেদের কারণে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) হযরত আয়েশার (রা.) অনুসারী দল, হযরত মুয়াবিয়ার (রা.) অনুসারী দল, হযরত আলীর (রা.) অনুসারী দল ও হযরত আবু বাকরার (রা.) অনুসারী দলে বিভক্ত হয়েছেন। প্রথম দুই দল তৃতীয় দলের সাথে যুদ্ধ করেছেন এবং চতুর্থ দল যুদ্ধ করা থেকে বিরত থেকেছেন। সাহাবায়ে কেরামের (রা.) প্রতি ক্ষমার ঘোষণা থাকায় তাঁদের কেউ জাহান্নামে যাবেন না। তবে তাঁদের যাদের মতভেদের দায় সাব্যস্ত জান্নাতে তাঁদের মর্যাদা কম হতে পারে। তাঁদের কোন তিন দলের মতভেদের দায় সাব্যস্ত?

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।

# সূরাঃ ৩৫ ফাতির, ২৮ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
২৮। যে ব্যক্তি আল্লাহ সম্পর্কে জানে এবং তাঁর হুকুম সম্পর্কে জানে সে আলেম, সে আল্লাহকে ভয় করে। সে আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে জানে এবং তার জন্য কি ফরজ তাও সে জানে।

সূরাঃ ২৯ আনকাবুত, ৪৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৩।এসব দৃষ্টান্ত আমি মানুষের জন্য পেশ করে থাকি, যেগুলো কেবল আলেমরাই বুঝে থাকে।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* সাহাবায়ে কেরামের (রা.) সবাই আল্লাহর নিকট থেকে সনদপ্রাপ্ত আলেম এবং কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী তাঁদের সর্ববৃহৎ দল সুনিশ্চিত ভাবে সঠিক। তাঁরা হযরত আলীর (রা.) দলে থাকায় হযরত আলীর (রা.) দল সঠিক সাব্যস্ত। বিষয়টি কিভাবে বুঝাগেল?

সূরাঃ ৫ মায়িদা, ৫৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৬। কেউ আল্লাহ, তাঁর রাসুল এবং মু’মিনদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে আল্লাহর দলইতো বিজয়ী হবে।
সহিহ আল বোখারী, ৬৮০৪ নং হাদিসের (কিতাবুল ইয়তেসাম) অনুবাদ-
৬৮০৪। হযরত মুগীরা ইবনে শো’বা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবি করিম(সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, নবি করিম (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের একদল লোক সর্বদা নাহকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠিত ও জয়যুক্ত থাকবে, যতক্ষণ না আল্লাহর নির্দেশ (কেয়ামত) আসবে, সে সময়ও তারা জয়যুক্ত থাকবে।

সহিহ আবু দাউদ, ৪৫৭৭ নং হাদিসের (সুন্নাহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৫৭৭। হযরত সাফীনা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, নবুয়তের খেলাফতের সময়কাল হলো ত্রিশ বছর। তারপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রাজত্ব বা বাদশাহী দান করবেন।

হযরত সাঈদ (র.) বলেন, সাফীনা (রা.) আমাকে বলেন, তুমি হিসাব কর। আবু বকরের (রা.) শাসনকাল দু’বছর, ওমরের (রা.) দশ বছর, ওসমানের (রা.) বার বছর, আলীর (রা.) ছ’বছর।হযরত সাঈদ (র.) বলেন, আমি সাফীনাকে (রা.) জিজ্ঞেস করি যে, বনু মারওয়ান ধারণা করে যে, আলী (রা.) খলিফাদের অন্তর্ভূক্ত নন। তিনি বলেন, বনু-মারওয়ানরা মিথ্যা বলেছে।

* হযরত আলীর (রা.) দলকে অন্য দুই দল হারাতে না পারায় তাঁর দল সঠিক সাব্যস্ত। কারণ ত্রিশ বছরের মেয়াদের মধ্যে তিনি তাঁর খেলাফত সম্পন্ন করেছেন। সংগত কারণে তাঁর দলকে সঠিক নয় বলার সুযোগ নাই। চতুর্থ দল তাঁর পক্ষে যুদ্ধ না করায় তারাও সঠিক নয় সাব্যস্ত হবেন। হযরত আলী (রা.) সঠিক সাব্যস্ত হওয়ায় এটা সাব্যস্ত যে সাহাবায়ে কেরামের (রা.)সর্ববৃহৎ দল তাঁর সাথে ছিলেন। সংখ্যা গরিষ্ঠের বিপক্ষে নেতিবাচক কথা থাকায় অনেকে সর্ববৃহৎ দলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পথভ্রষ্ট হয়। কারণ সংখ্যা গরিষ্ঠ এবং সর্ববৃহৎ দল এক কথা নয়। ৩০% সাহাবার দল তাঁদের সর্ববৃহৎ দল হতে পারে, কিন্তু সংখ্যা গরিষ্ঠ হলো ৫১%। সংগত কারণে হযরত আলীর (রা.) দলকে কোন ভাবেই সঠিক দল নয় বলার সুযোগ নাই। সাহাবায়ে কেরামের (রা.) পর আল্লাহর সনদপ্রাপ্ত আলেম কারা?

সূরাঃ ২১ আম্বিয়া, ৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭। তোমার পূর্বে আমি ওহীসহ পুরুষ পাঠিয়েছিলাম; তোমরা না জানলে আহলে যিকরকে জিজ্ঞাসা কর।

সূরাঃ ১৬ নাহল, ৪৩ ও ৪৪ নং আয়তের অনুবাদ-
৪৩।তোমার পূর্বে আমরা পুরুষ ভিন্ন (বার্তা বাহক) প্রেরণ করিনি। আমরা তাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেছিলাম।অতএব আহলে যিকরকে জিজ্ঞাস কর, যদি তোমরা না জান।
৪৪।সুস্পষ্ট প্রমাণ ও কিতাব সমূহ সহ।আর মানুষকে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা, সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আপনার প্রতি নাজিল করেছি যিকর। যেন তারা চিন্তা ভাবনা করতে পারে।

* সাহাবায়ে কেরামের (রা.) পর আল্লাহর সনদপ্রাপ্ত আলেম হলেন আহলে যিকর। কারা আহলে যিকর?

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৯ নং আয়াতের অনুবাদ।
৯। হে মুমিনগণ! জুমুয়ার দিন যখন সালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর যিকিরের দিকে দৌড়িয়ে যাও এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ কর। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বুঝ।

সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৭। আর যারা মসজিদ নির্মাণ করেছে ক্ষতি সাধন, কুফুরী ও মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং ইতিপূর্বে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম করেছে তার গোপন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের জন্য, তারা শপথ করেই বলবে তারা ভাল কিছু করার জন্যই ওটা করেছে; আর আল্লাহ সাক্ষি দিচ্ছেন নিশ্চয়ই তারা মিথ্যাবাদী।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* যাদের দায়িত্বে সম্পন্ন যিকিরে সামিল হতে আল্লাহ দৌড়ে যেতে আদেশ করেছেন সেই সেই জুমুয়ার খতিবগণের সর্ববৃহৎ দল আহলে যিকর। কারণ মুসলিমদের মাঝে বিভেদ তৈরী করতে যেসব মসজিদ তৈরী করা হয়েছে সেসব মসজিদের জুমুয়ার খতিব আহলে যিকর নয়। সুতরাং জুমুয়ার খতিবগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে মতভেদকারী জুমুয়ার খতিব আহলে যিকর নয়। সুতরাং যারা আহলে যিকর সাব্যস্ত তাঁদের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থেকে মুসলিম একদলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। মুসলিম সেই ব্যক্তির অনুসারী হতে পারে যিনি আহলে যিকরের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন হযরত আলীর (রা.) দলের সাথে সম্পৃক্ত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসিউদের (রা.) অনুসারী হয়েছে হানাফী গণ।

# হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)

সহিহ আল বোখারী, ৩৪৮৭ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪৮৭। হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি ও আমার ভাই ইয়েমেন হতে (মদীনায়) আসলাম এবং বেশ কিছু দিন থাকলাম। আমরা সব সময় ভাবতাম যে, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নবি (সা.) পরিবারের একজন লোক। কেননা আমরা প্রায়ই তাঁকে ও তাঁর মাকে প্রায়ই নবীর (সা.) নিকট আসতে দেখতাম।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৩৭ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১৩৭। হযরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি যদি পরামর্শ ছাড়াই কাউকে আমার প্রতিনিধি নিযুক্ত করতাম তাহলে ইবনে উম্মে আবদ (রা.) কেই (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ) আমার প্রতিনিধি নিযুক্ত করতাম।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৩ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৩। হযরত ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার পর তোমরা আমার সাহাবীদের মধ্যে আবু বকর, ওমর ও আম্মারের অনুসরন কর এবং ইবনে মাসউদের উপদেশ শক্তভাবে আঁকড়ে ধর।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৫ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৫। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াযিদ (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা হোযায়ফার (রা.) নিকট এসে বললাম, আপনি আমাদেরকে এমন এক লোকের খবর দিন, যিনি আচার ও আচরণে অন্যদের তুলনায় রাসূলুল্লাহর (সা.) অধিক কাছের।যাতে আমরা তাঁর কাছ থেকে দীন শিখতে পারি এবং হাদিস শুনতে পারি। হযরত হোযায়ফা (রা.) বলেন, আচার-আচরণ ও চাল-চলনে লোকদের মধ্যে রাসূলুল্লাহর (সা.) অধিকতর কাছের হলেন ইবনে মাসউদ (রা.)। তিনি তাঁর ঘরের খবর আমাদের চেয়ে অধিক জ্ঞাত। রাসূলুল্লাহর (সা.) সাহাবীগণ উত্তমরূপে জানতেন, ইবনে উম্মে আবদ (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ) তাদের সকলের চেয়ে আল্লাহর অধিক নৈকট্যশীল।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৬ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৬। হযরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি যদি কাউকে তাদের পরামর্শ ব্যতীত আমির নিয়োগ করতাম, তবে ইবনে উম্মে আবদকে (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ) আমির নিয়োগ করতাম।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৮ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৮। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা চার ব্যক্তির নিকট থেকে কোরআন শিক্ষা কর, ইবনে মাসউদ, উবাই ইবনে কাব, মুয়াজ ইবনে জাবাল ও হোযাইফার স্বাধীন দাস সালেম থেকে।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৯ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৯। হযরত কাঈসামা ইবনে সাবরা (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মদীনায় এসে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলাম, তিনি যেন আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দেন। অতএব তিনি আবু হোরায়রাকে আমার ভখাগ্যে ঝুটিয়ে দিলেন। তাঁর পাশে বসে আমি তাঁকে বললাম, আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে ছিলাম, তিনি যেন আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দেন।অতএব আপনি আমার জন্য সহজলভ্য হয়েছেন।তিনি (আমাকে) জিজ্ঞাস করেন তুমি কোথা হতে এসেছ? আমি বললাম, আমি কুফার অধিবাসী। আমি ভালোর খোঁজে এসেছি এবং তাই খুঁজছি। তিনি বলেন, তোমাদের মাঝে কি সাদ ইবনে মালেক (রা.) যার দোয়া কবুল হয়, রাসূলুল্লাহর অযুর পানি ও জুতা বহনকারী ইবনে মাসউদ (রা.), রাসূলুল্লাহর (সা.) গোপন তথ্যের খাজাঞ্চী হোযায়ফা (রা.), আমার যাকে আল্লাহর নবির (সা.) ভাষায় আল্লাহ শয়তানের আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং দুই কিতাবধারী সালমান (রা.) প্রমুখ সাহাবীগণ বিদ্যমাণ নেই? কাতাদা বলেন দুই কিতাব হলো, ইঞ্জিল ও কোরআন।

* হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের (রা.) অনুসারী তাবেঈ ইমাম আবু হানিফাও (রা.) ব্যক্তি জিসাবে সঠিক ছিলেন।

# ইমাম আবু হানিফা (র.)
সহিহ আল বোখারী, ২৮৮৯ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৮৮৯। হযরত মুয়াবিয়া (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যাকে কল্যাণ দানের ইচ্ছা করেন, তাঁকে তিনি দীন সম্পর্কে গভির জ্ঞান (ফিকাহের জ্ঞান) দান করেন। আল্লাহ প্রদানকারী আর আমি বন্টনকারী। আমার এ উম্মত তাদের বিরোধীদের উপর চিরদিন বিজয়ী হবে। এ অবস্থায় আল্লাহর চূড়ান্ত সমাধান এসে যাবে।

সহিহ তিরমিযী, ২৬১৮ নং হাদিসের (ইলম সম্পর্কে অধ্যায়) অনুবাদ-
২৬১৮। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, একজন ফকীহ শয়তানের মোকাবেলায় হাজার আবেদ অপেক্ষা বিপজ্জনক।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩০ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
২৩০। হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার থেকে একটি হাদিস শুনে অতঃপর তা’ অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয় আল্লাহ তাকে হাস্যোজ্জল ও আনন্দময় করে দেবেন। কেননা এমন কতক ফিকাহ বাহক রয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে ফকীহ নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী অধিকতর জ্ঞানী হয়ে থাকে।

* হাদিস অনুযায়ী হাদিসের সঠিক বাহক হলেন ফকিহ।হাদিস অনুযায়ী ফকিহ তিনি যাঁর শিক্ষার্থী তাঁর চেয়ে অধিক জ্ঞানী।ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী অধিকতর জ্ঞানী ইসলামে এমন একমাত্র জুটি হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.) ও ইমাম আবু আবু ইউসুফ (র.)। কারণ ইমাম আবু হানিফার (র.) বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা থাকলেও তাঁর এ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফের (র.) বিচারপতি হওয়ার যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা উভয় ছিল। সুতরাং ইমাম আবু ইউসুফ (র.) ইমাম আবু হানিফার (র.) থেকে অধিকতর জ্ঞানী ছিলেন। কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফের (র.) কোন শিক্ষার্থী তাঁর চেয়ে অধিক জ্ঞানী ছিল না বিধায় তিনি ফকিহ ছিলেন না। কিন্তু ইমাম আবু হানিফা (র.) থেকে তাঁর শিক্ষার্থী ইমাম আবু ইউসুফ (র.) অধিকতর জ্ঞানী ছিলেন বিধায় ইমাম আবু হানিফা (র.) ফকিহ ছিলেন। এ সূত্রে ইমাম আবু হানিফা (র.) ছাড়া দ্বিতীয় কোন ফকিহ নেই।

# সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
৪। ওটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি ওটা দান করেন। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহশীল।

# সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং থেকে ৪ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
২। উম্মী দ্বারা আরবদেরকে বুঝানো হয়েছে।
৩। এ আয়াতের তাফসিরে আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহর পার্শ্বে বসে ছিলাম, এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হয়। জনগণ জিজ্ঞাস করেন হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! ‘ওয়া আখারিনা মিনহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম’ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তিন বার এ প্রশ্ন করা হয়। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাতখানা সালমান ফারসীর (রা.) উপর রেখে বললেন, ঈমান যদি সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট থাকত তাহলেও এই লোকগুলোর মধ্যে এক কিংবা একাধিক ব্যক্তি এটা পেয়ে যেত।(ফাতহুলবারী ৮/৫১০, মুসলিম ৪/১৯৭২, তিরমিযী ৯/২০৯, ১০/৪৩৩, নাসাঈ ৫/৭৫, ৬/৪৯০, তাবারী ২৩/৩৭৫)
৪। মোহাম্মদকে (সা.) নবুয়ত প্রদান করা আল্লাহ তা’আলার এক বিশেষ অনুগ্রহ।

সহিহ বোখারী ৪৯৯ নং হাদিসের (সালাতের ওয়াক্ত সমূহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৯৯। হযরত যুহুরী (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দামেশকে আনাস ইবনে মালেকের (রা.) নিকট গিয়ে দেখতে পেলাম, তিনি কাঁদছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, আমি যা যা দেখেছি তার মধ্যে এ নামাযই আজ পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু এখন নামাজও নষ্ট হতে চলেছে।

* রাসূলের (সা.) কথা অনুযায়ী আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে সাহাবায়ে কেরামের (রা.) যুগের পর হযরত সালমান আল ফারসীর (রা.) এলাকার একজন অনারবের অনুসারী হতে বলেছেন।মহানবির (সা.) নবুয়তের মত তাঁর জ্ঞান বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ।তো যাঁর এলেম বা জ্ঞান আল্লাহর অনুগ্রহ তাঁকে সঠিক নয় বলার সুযোগ নাই। ইসলাম বিনষ্টের পর একমাত্র অনারব ইমাম আবু হানিফা (র.) বিনষ্ট ইসলামের পূর্ণাঙ্গ সংশোধনী উপস্থাপন করে তাঁর ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফকে (র.) এর পরিশোধনের অনুরোধ করেন।
সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের মধ্যে আমির।কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে বিরোধ দেখাদিলে উহা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসুলের নিকট। ওটা উত্তম এবং পরিনামে ভাল।

মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
২২৪। হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।

* আমিরুল মুমিনিন হারুনুর রশিদের নির্দেশ প্রাপ্ত ইমাম আবু ইউসুফ (র.) ইমাম আবু হানিফার (রা.) ইসলামের সংশোধনীর পরিশোধন করলে আমিরুল মুমিনিন হারুনুর রশিদ তা’ অনুমোদন করেন। পরে তা হানাফী মাযহাব নামে আহলে যিকরের আমলে স্থান পায়। সুতরাং এর বাইরে ইসলাম নাই। এর বাইরে গিয়ে কতিপয় সুফী শয়তান যে শিরকী ও কুফরী কথা বলে তার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই্। তারা বলে মুরশিদকে সিজদা করলে সেই সিজদা আল্লাহ পায়। এটা আল্লাহর সম্পর্কে জঘণ্য মিথ্যাচার। এরা এবং এদের অনুসারীরা দায়েমী জাহান্নামী হবে।কারণ ফানা ফিল্লাহর মাধ্যমে কেউ আল্লাহর অংশ হলেও তাতে কেউ আল্লাহর অংশীদার হয় না। আর অংশ ও অংশিদার এক কথা নয়। আমার অংশ আমার চুল ও নখ। আমার অংশিদার আমার সন্তান। তো আমার চুল ও নখকে গোছল করালে আমার সন্তানকে গোসল করানো হবে কি? এধরনের লোককে সিজদা করলে সেই সিজদা শয়তান পায়। কারণ এসব লোক শয়তান কর্তৃক চালিত হয়েই এমন জঘণ্য কথা বলে। সুতরাং ব্যক্তি অনুসরন দায়েমী জাহান্নামী হওয়ার কারণও হতে পারে। তবে আহলে যিকরের অনুসারী ব্যক্তির অনুসরনে কোন সমস্যা নাই। মোট কথা আহলে যিকরের অনুসরনের মাধ্যমেই মুসলিম একদলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১০:৪৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মাজহাব নিয়ে অনেকে বাড়াবাড়ি করে। অথচ মাজহাবের উদ্যোক্তারা বলেছেন তাদের ফতোয়ার উপরে কোন সহি হাদিস পেলে সেটা মানতে হবে। বাংলাদেশের বক্তারা এমনভাবে বলেন যে মাজহাব একবার একটা ধরলে অন্য কোন মাজহাব মানা যাবে না। এগুলি বাড়াবাড়ি। মাজহাবের নামে ইসলামকে ৪ দলে ভাগ করা সঠিক না। এক সময় নাকি মক্কার মসজিদুল হারামে আলাদা আলাদা জামাতে ওয়াক্তের নামাজ পড়া হতো। প্রত্যেক মাজহাব আলাদা আলাদাভাবে পড়তো। এগুলি ইসলামের নামে বিভক্তি। বিভক্তিই ইসলামের ক্ষতি করছে।

০২ রা জুন, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: ভেদাভেদ নিরসন পদ্ধতি ইসলামে আছে, কিন্তু ভেদাভেদকারীরা সেটা মানছে না।

২| ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১০:৪৯

কামাল১৮ বলেছেন: বাঁচতে হলে সবাইকে ইরানের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।নয়তো গাজার দশা হবে।

০২ রা জুন, ২০২৪ সকাল ৮:৪৬

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: ইরান গাজার জন্য কি করতে পেরেছে?

৩| ০২ রা জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩১

এস.এম.সাগর বলেছেন: আমি কোন মাজহাব মানিনা, আমাদের নবি হযরত মুহাম্মদ সাঃ কোন মাজহাবের অনুসারী ছিলেন?

০৩ রা জুন, ২০২৪ রাত ১২:৩৬

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: পোষ্টটি ব্যক্তি অনুসরন সংক্রান্ত। এটাকে মাযহাবের দিকে টেনে নেওয়া ঠিক নয়।

৪| ০৩ রা জুন, ২০২৪ রাত ১:০১

কামাল১৮ বলেছেন: যাকিছু করছে ইরানই করছে।সৌদী কিছুই করে নাই।দুনিয়ার খবর কিছু রাখেন।না কি আখেরাত নিয়াই ব্যস্ত থাকেন।

০৩ রা জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৮

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: ইহুদীর সাথে ইরান টক্কর দিচ্ছে এটা ঠিক আছে। তবে তারাও খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.