নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানব মঙ্গল আমার একান্ত কাম্য

মহাজাগতিক চিন্তা

একদা সনেট কবি ছিলাম, ফরিদ আহমদ চৌধুরী ছিলাম, এখন সব হারিয়ে মহাচিন্তায় মহাজাগতিক চিন্তা হয়েছি। ভালবাসা চাই ব্লগারদের, দোয়া চাই মডুর।

মহাজাগতিক চিন্তা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবস্থার প্রেক্ষাপটে কোরআন-হাদিস গৃহিত হয় অবস্থার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে কোরআন মানসুখ, হাদিস বাতিল হয়

১৯ শে জুন, ২০২৫ রাত ১১:১২



সূরাঃ ৮ আনফাল, ৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩৯। আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে কিতাল (যুদ্ধ) করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দ্বীন সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহতো এর দর্শক।

সূরাঃ ৫ মায়িদা, ৪৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৪। নিশ্চয়ই আমরা তাওরাত অবতীর্ণ করেছিলাম; তাতে ছিল পথনির্দেশ ও আলো। নবিগণ, যারা আল্লাহর অনুগত ছিল তারা ইয়াহুদীদিগকে তদনুসারে বিধান দিত, আরো বিধান দিত রব্বানীগণ, এবং বিদ্বানগণ। কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল। আর তারা ছিল উহার সাক্ষী।সুতরাং মানুষকে ভয় করবে না। আমাকেই ভয় কর। আর আমার আয়াতসমূহ তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করবে না। আল্লাহ যা নাজিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা হুকুম প্রদান করে না তারাই কাফির।

সূরাঃ ২ বাকারা, ২৮৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮৬। আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্ট দায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত।সে ভাল যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। সে মন্দ যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তার। হে আমাদের প্রতিপালক যদি আমরা ভুলে যাই অথবা আমাদের ত্রুটি হয় তবে আমাদেরকে পাকড়াও করো না। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের পূর্ববর্তিগণের উপর যেমন গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলে আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না।হে আমাদের প্রতিপালক এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করবেন না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই।আমাদের পাপ মোছন করুন, আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের উপর আমাদেরকে জয়যুক্ত করুন।

সূরাঃ ৪৯ হুজরাত, ১০ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০। মু’মিনগণ পরস্পর ভাই ভাই; সুতরাং তোমরা ভাইদের মাঝে ইসলাহ (শান্তি স্থাপন) কর, আর আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও।

সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৩। ঐসব রাসূলদের আমরা তাদের কোন জনের উপর কোন জনকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাদের মধ্যে কোন জনের সঙ্গে আল্লাহ কথা বলেছেন।আর কোন জনকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। আর আমরা মরিয়ম পুত্র ঈসাকে প্রকাশ্য মুজেযা দান করেছি। আর তাকে পবিত্র আত্মা দ্বারা সাহায্য করেছি।আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে নবিগণের পরবর্তী লোকেরা পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হতো না। কিন্তু তারা পরস্পর ইখতিলাফ (মতভেদ) করেছিল।তাতে তাদের কিছু লোক মুমিন এবং কিছু লোক কাফের হয়ে গেল। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তারা পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হতো না। কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করে থাকেন।

সূরাঃ ২ বাকারা, ২০১ নং আয়াতের অনুবাদ-
২০১। আর তাদের মধ্যে কিছু লোক বলে, হে আমাদের রব! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান করুন এবং পরকালে কল্যাণ দান করুন। আর আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করুন।

* দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ফিতনার বিরুদ্ধে চালানো যুদ্ধ ফিতনা দূরীভূত হওয়ার পূর্বে থামালে কাফের হতে হয়। কিন্তু ফিতনার বিরুদ্ধে চালানো যুদ্ধ ফিতনা দূরীভূত হওয়ার পূর্বে থামালে কাফের হবে না যদি ফিতনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর সক্ষমতা না থাকে। তখন প্রয়োজনে ফিতনা থেকে আত্মরক্ষায় হিজরত করতে হবে।আর ফিতনা যদি মুমিনের পক্ষ থেকে হয় এবং পরে তাদের থেকে শান্তি প্রস্তাব আসে তখন যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি স্থাপন করতে হবে। তখন যুদ্ধ চালিয়ে গেলে উল্টা কাফের হতে হয়। সিফফিন যুদ্ধ থামিয়ে হযরত আলী (রা.) পক্ষ ও হযরত মুয়াবিয়া (রা.) মুমিন হলেন। এ যুদ্ধ থামানোর বিরোধীতা করে খারেজী পক্ষ কাফের হয়ে গেল। উল্টা সিঢফিন যুদ্ধ থামানোর অপরাধে খারেজী পক্ষ হযরত আলীকে (রা.) কাফের ফতোয়া দিয়ে হত্যা করে ফেলে।

আল্লাহ কল্যাণ চান। কিন্তু যুদ্ধে সকল পক্ষের অকল্যাণ। সেজন্য ফিতনা দূরীভূত হওয়ার পূর্বেও যুদ্ধ বন্ধে কল্যাণ হলে যুদ্ধ বন্ধ করে সন্ধি করতে হবে। হুদায়বিয়ার সন্ধি এমন এক সন্ধি। রাসূল (সা.) দেখলেন যুদ্ধ করার চেয়ে সন্ধি করায় বেশী উপকার। সেজন্য তিনি যুদ্ধ না করে সন্ধি করেছেন। আল্লাহ সেই সন্ধিকে ফাতহুম মুবিন বা প্রকাশ্য বিজয় বলেছেন। আর হদায়বিয়ার সন্ধির পর মক্কা বিজয় হয়। সিফফিন যুদ্ধের পর হযরত মুয়াবিয়া (রা.) খেলাফতের একাংশের শাসক হন। পরে তিনি সম্পূর্ণ খেলাফতের শাসক হন। তিনি কন্সটান্টিনোপল (ইস্তাম্বুল) জয় করেন। যাতে মুসলিমরা ইউরোপের অংশিধার হতে সক্ষম হয়।

সূরাঃ ২, বাকারা। ৮৪ নং ও ৮৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৪। (হে ইহুদী সম্প্রদায়) আমি যখন ওয়াদা নিয়েছিলাম যে, পরস্পর রক্তপাত করবে না এবং স্বীয় বাসস্থান থেকে আপন ব্যক্তিদেরকে বহিস্কৃত করবে না, এর পর তোমরা স্বীকৃতি দিয়েছিলে এবং তোমরাই এর সাক্ষী ছিলে।
৮৫। এরপর সেই তোমরাই তোমাদের লোকদেরকে হত্যা করছো এবং তোমরা তোমাদের এক দলকে তাদের বাসস্থান থেকে বহিস্তৃত করে দিচ্ছ, তাদের প্রতি শত্রুতাবশত অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পরের বিরুদ্ধে সহোযোগিতা করছ। আর তারা বন্দী হয়ে এলে তোমরা তাদের থেকে মুক্তিপন দাবী করো। অথচ তাদেরবে বহিস্কৃত করা তোমাদের জন্য হারাম। তবে কি তোমরা কিতাবের একাংশকে বিশ্বাস করো এবং আরেক অংশকে অবিশ্বাস করো? অতএব তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের পার্থিব জীবনে হীনতা ছাড়া আর কিছুই নাই।আর কিয়ামতের দিন তারা কঠিন শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে।আর তোমরা যা করছে আল্লাহ সে ব্যাপারে অমোনোযোগী নন।

সূরাঃ ২, বাকারা। ৮৪ নং ও ৮৫ নং আয়াতের তাফসির তাফসিরে ইবনে কাছির অনুবাদ-
৮৫। মদীনায় আনসারদের দু’টি গোত্র ছিলো আউস ও খাযরায। এরা সব সময় পরস্পর যুদ্ধ-বিগ্রহে লেগেই থাকতো। মদীনায় ইহুদীদের তিনটি গোত্র ছিলো ১। বনু কাইনুকা ২। বনু নাযীর ৩। বনু কোরায়যা।কনু কায়নুকা ও বনু নাযির খাযরাযের পক্ষপাতি করায় তাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বে পরিনত হয়ে ছিলো। আর বনু কোরায়যার সম্পর্ক ছিলো আউসের সাথে। আউস ও কাযরাযের মধ্যে যুদ্ধ হলে ইহুদীদের তিনটি দল নিজ নিজ মিত্রের পক্ষে যুদ্ধ করতো। দুই পক্ষের ইহুদী স্বয়ং তাদের হাতে মারাও পড়তো। আর সুযোগ পেলে এক অন্যের ঘর-বাড়ী ধ্বংস করতো এবং দেশ থেকে বহিস্কার করতো। অথচ তাওরাতে দেশ থেকে নির্বাসিত করা সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ ছিলো। কিন্তু তখন তারা তাদের কিতাব মানতো না। তারা তাদের অন্য দলের ধন-সম্পদও দখল করতো। এরপর যুদ্ধ বন্ধ হলে তারা পরাজিত দলের বন্দীদেরকে মুক্তিপন দিয়ে ছাড়িয়ে আনতো আর বলতো, আমাদের প্রতি মহান আল্লাহর আদেশ আছে, আমাদের মধ্যে যদি কেউ বন্দী হয় তাহলে আমরা যেন তাদেরকে মুক্তিপন দিয়ে ছাড়িয়ে নেই।

* কিতাবের একাংশ মানা এবং অন্য অংশ না মানা ইহুদী স্বভাব। মুসলিমদের মধ্যে এ স্বভাব প্রথমে এসেছে শিয়াদের মাঝে, তারপর এসেছে খারেজীদের মাঝে, তারপর এসেছে সালাফীদের মাঝে। মুসলিম হয়ে ইহুদী খাছলত ধারণ করায় আল্লাহ এদেরকে ইহুদী দ্বারা শাস্তি দিচ্ছেন।

সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।
সূরাঃ ৫ মায়িদা, ৬৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৭। হে রাসূল! তোমার রবের নিকট থেকে তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা’ প্রচার কর। যদি না কর তবে তো তুমি তাঁর রেসালাত প্রচার করলে না। আল্লাহ তোমাকে মানুষ হতে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।

* আল্লাহ হযরত আলীকে (রা.) মাওলা বলতে বললেন, রাসূল (সা.) তাঁকে মাওলা বললেন। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) মাওলা অর্থ বুঝলেন বন্ধু।শিয়া বুঝলো নেতা। এ নিয়ে তারা যে কেসাল শুরু করলো, সেই কেসালে তারা খলিফা হযরত ওসমানকে (রা.) হত্যা করে চির ঘৃণিত হলো।আল্লাহ তাঁর খলিল হযরত ইব্রাহীমকে (আ.) নেতা বানালেন চল্লিশ বছরের পর এবং তিনি তাঁর হাবিব মহানবিকে (সা.) নেতা বানালেন চল্লিশ বছরের পর। হযরত আলীর (রা.) যোগ্যতা কি তাঁদের থেকে বেশী? তাহলে তিনি চল্লিশের আগে নেতা হনে কেন? সেজন্য রাসূলের (সা.) ছাত্র সাহাবায়ে কেরাম (রা.) তাঁর ইন্তেকালের সময় তেত্রিশ বছরের হযরত আলীকে (রা.) বাদ দিয়ে ষাট বছরের হযরত আবু বকরকে (রা.) নেতা বানিয়েছেন। এখন শিয়া বলছে সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নাকি এতে পথভ্রষ্ট হয়েছে।

সূরাঃ ২ বাকারা,৩১ নং থেকে ৩৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩১। আর তিনি আদমেকে (আ.) সব জিনিসের নাম শিখালেন। তারপর সেগুলো ফেরেশতাদের সামনে হাজির করলেন। তারপর বললেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে আমাকে এসব বস্তুর নাম বলে দাও।
৩২। তারা বলেছিলো, আপনি মহান পবিত্রময়। আপনি আমাদেরকে যা শিক্ষা দিয়েছেন এর বাইরে আমাদের কোন জ্ঞান নেই। নিশ্চয়ই আপনি সর্ব জ্ঞানী, মহাকৌশলী।
৩৩। তিনি বললেন হে আদম! তুমি তাদেরকে ঐসবের নাম বলে দাও!এরপর যখন সে তাদেরকে ঐগুলোর নাম বলে দিলো, তখন তিনি (আল্লাহ) বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, নিশ্চয়ই আমি আকাশ ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জানি। আর তোমরা যা প্রকাশ কর এবং যা গোপন কর আমি তাও জানি।

সূরাঃ ৭ আ’রাফ, ১৯ নং থেকে ২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৯। হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর।আর যা খুশী খাও। আর এ গাছের কাছে যেও না।তাহলে তোমরা যালিমদের মধ্যে গণ্য হবে।
২০। অতঃপর তাদের লজ্জাস্থান যা তাদের নিকট গোপন রাথা হয়েছিল তা’ তাদের কাছে প্রকাশ করার জন্য শয়তান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল। আর সে বলল, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও, অথবা এখানে স্থায়ী হয়ে যাও সেজন্য তোমাদের রব এ গাছ সম্বন্ধে তোমাদেরকে নিষেধ করেছেন।
২১। সে তাদের নিকট কসম করে বলল, আমিতো তোমাদের নছিহতকারীদের একজন।
২২। এভাবে সে তাদেরকে ধোকা দিয়ে নীচু করল।তৎপর যখন তারা সে বৃক্ষফলের মজা গ্রহণ করল তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়ল।আর তারা নিজেদেরকে জান্নাতের পাতা দ্বারা আবৃত করতে লাগল।তখন তাদের রব তাদেরকে ডেকে বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এ গাছের কাছে যেতে মানা করিনি? আর আমি কি বলিনি যে শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন?

সহিহ বোখারী ২৯ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
২৯। হযরত আহনাফ ইবনে কায়েস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, আমি হযরত আলী (রা.) অথবা হযরত ওসমান (রা.) কে সাহায্য করতে চললাম, (পথে) আবু বাকরাহ (রা.) এর সাথে দেখা হলো। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম, এ ব্যক্তিকে সাহায্য করতে চলছি। তিনি বললেন ফিরে যাও। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে কলতে শুনেছি, যখন দু’জন মুসলমান তরবারী নিয়ে পরস্পর মুখোমুখী হয়, তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয় জাহান্নামী হয়। আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল (সা.) এতো হত্যাকারী বলে, কিন্তু নিহত ব্যক্তির ব্যাপারটি কি? তিনি বললেন, সে তার সঙ্গীকে হত্যা করার আকাঙ্খী ছিল।

* আল্লাহ প্রশিক্ষিত চল্লিশ বছরের কম বয়সি বড় আলেম হলেন হযরত আদম (আ.)। তিনিও শয়তানের ধোকায় পড়েছিলেন।তাহলে রাসূল (সা.) প্রশিক্ষিত বড় আলেম হযরত আলী (রা.) শয়তানের ধোকায় পড়বেন না কোন কারণে? রাসূল (সা.) কি আল্লাহ থেকেও বড় শিক্ষক? খলিফা হযরত ওসমান (রা.) হত্যার প্রধান অভিযুক্ত মালেক উশতারকে হযরত আলী (রা.) খেলাফতের প্রধান সেনাপতি নিয়োগ দান করলেন এবং খলিফা হযরত ওসমান (রা.) হত্যার অন্য বড় অভিযুক্ত হযরত আবু বকরের (রা.) ছেলে মোহাম্মদকে মিশরের শাসক পদে নিয়োগ দান করলেন। পক্ষান্তরে জনপ্রিয় শাসক হযরত মুগিরা বিন শোবা, হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ও হযরত আমর ইবনুল আসকে তিনি শাসনকর্তার পদ থেকে বরখাস্ত করলেন। অবশেষে হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ও হযরত আমর ইবনুল আস (রা.) হযরত আলীর (রা.) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাঁর থেকে খেলাফতের একাংশ কেড়ে নেন। বিষয়টা কি হলো? যিনি খেলাফত অখন্ড রাখতে পারেননি তিনি নেতা নাকি বন্ধু হওয়ার যোগ্য ছিলেন? তাঁর আগে যারা নেতা ছিলেন তাঁরা খেলাফত অখন্ড রাখতে সক্ষম হয়েছেন। হযরত আলী খেলাফত অখন্ড রাখতে সক্ষম না হওয়ায় তিনি সুনিশ্চিতভাবে বন্ধু ছিলেন, তিনি নেতা ছিলেন না।

সূরাঃ ১৮ কাহফ, ৬০ থেকে ৮২ আয়াতের অনুবাদ-
৬০।যখন মূসা তাঁর সংগীকে বলেছিল, দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে না পৌঁছে আমি থামব না অথবা আমি যুগ যুগ ধরে চলতে থাকব।
৬১।তারা উভয়ে যখন দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে পৌঁছল তারা নিজেদের মৎসের কথা ভুলেগেল।উহা সুড়ংগের মত নিজের পথ করে সমূদ্রে নেমে গেল।
৬২। যখন তারা আরো অগ্রসর হলো মূসা তার সংগীকে বলল আমাদের নাস্তা নিয়ে আস।আমরা তো আমাদের সফরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।
৬৩। সে বলল, আপনি কি দেখেছেন? যখন আমরা শিলাখন্ডে বিশ্রাম নিতে ছিলাম তখন আমি মৎসের কথা ভুলে গিয়ে ছিলাম! শয়তান উহার কথা বলতে ভুলিয়ে দিয়েছিল।মৎসটি বিস্ময়করভাবে সমূদ্রে নিজের পথ করে নেমে গেল।
৬৪। মূসা বলল, আমরা তো সেই স্থানটিই খুঁজতেছিলাম।অতঃপর তারা নিজেদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চলল।
৬৫। অতঃপর তারা সাক্ষাৎ পেল আমাদের বান্দাদের মধ্যে একজনের।যাকে আমরা আমাদের নিকট হতে অনুগ্রহ দান করে ছিলাম এবং আমরা তাকে আমাদের নিকট হতে শিক্ষা দিয়ে ছিলাম এক বিশেষ জ্ঞান।
৬৬। মূসা তাকে বলল, সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে তা’ হতে আমাকে শিক্ষা দিবেন এ শর্তে আমি আপনার অনুসরন করব কি?
৬৭। সে বলল, আপনি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্য ধরে থাকতে পারবেন না।
৬৮। যে বিষয় আপনার জ্ঞানায়ত্ত নয় সে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধরবেন কেমন করে?
৬৯। মূসা বলল, আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করব না।
৭০। সে বলল, যেহেতু আপনি আমার অনুসরন করবেনই তবে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করবেন না, যতক্ষণ না আমি সে সম্বন্ধে আপনাকে কিছু বলি।
৭১।অতঃপর উভয়ে চলতে লাগল। পরে যখন তারা নৌকায় চড়লো সে ইহা ফুটো করে দিল।মূসা বলল, আপনি কি আরোহীদিগকে নিমজ্জিত করে দেবার জন্য উহা ফুটো করলেন? আপনিতো গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন।
৭২। সে বলল, আমি কি বলিনি যে আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধরতে পারবেন না?
৭৩। মূসা বলল, আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না এবং আমার বিষয়ে অত্যাধিক কঠোরতা অবলম্বন করবেন না।
৭৪। অতঃপর উভয়ে চলতে লাগল।চলতে চলতে ইহাদের সাথে এক বালকের সাক্ষাত হলে সে উহাকে হত্যা করল। তখন মূসা বলল, আপনি এক নিস্পাপ জীবন নাশ করলেন হত্যার অপরাধ ছাড়াই। আপনিতো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন।
৭৫।সে বলল, আমি কি বলিনি যে আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধরতে পারবেন না?
৭৬।মূসা বলল, এরপর যদি আমি আপনাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাস করি তবে আপনি আমাকে সংগে রাখবেন না।আমার ওযর-আপত্তি চূড়ান্ত হয়েছে।
৭৭।অতঃপর উভয়ে চলতে লাগল।চলতে চলতে তারা এক জনপদের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছে তাদের নিকট খাদ্য চাইল।কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল। অতঃপর তারা এক পতনোন্মুখ দেয়াল দেখতে পেল এবং সে উহা সুদৃঢ় করে দিল।মূসা বলল, আপনিতো ইচ্ছা করলে এর জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারতেন।
৭৮। সে বলল, এখানেই আপনার এবং আমার মধ্যে সম্পর্কছেদ হলো।যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি আমি তার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করছি।
৭৯।নৌকাটির ব্যাপার-এটা ছিল কতিপয় দরিদ্র ব্যক্তির, উহারা সমূদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করত। আমি নৌকাটিতে ত্রুটিযুক্ত করতে ইচ্ছা করলাম। কারণ উহাদের সম্মুখে ছিল এক রাজা, যে বল প্রয়োগে নৌকা সকল ছিনিয়ে নিত।
৮০। আর বালকটি, তার পিতামাতা ছিল মু’মিন। আমি আশংকা করলাম যে সে বিদ্রোহাচরণ ও কূফুরি দ্বারা তাদেরকে বিব্রত করবে।
৮১। অতঃপর আমি চেয়েছি যে তাদের প্রতিপালক যেন তাদেরকে তার পরিবর্তে এক সন্তান দান করেন। যে হবে পবিত্রতায় উত্তম এবং ভক্তিতে ঘনিষ্ঠ।
৮২। আর ঐ দেয়ালটি ছিল নগরবাসী দুই পিতৃহীন বালকের।যার নীচে রয়েছে তাদের গুপ্তধন।আর তাদের পিতাছিল সালেহ বা সৎকর্মপরায়ন।সুতরাং আপনার প্রতিপালক দয়া পরবশ হয়ে ইচ্ছা করলেন যে তারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে তাদের ধনভান্ডার উদ্ধার করুক।আমি নিজ হতে কিছু করিনি। আপনি যে বিষয়ে ধৈর্য ধরতে অপারগ হয়েছিলেন এটা তার ব্যাখ্যা।

সহিহ আল বোখারী, ১২০ নং হাদিসের (কিতাবুল ইলম) অনুবাদ-
১২০। হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর (রা.) কর্তৃক বর্ণিত। আমি ইবনে আব্বাসকে (রা.) বললাম, নাওফ আল বাকালী মনে করে যে, খিজিরের (আ.) ঘটনায় বলা মূসা বনি ইসরাঈলের কথিত মূসা নন। তিনি অন্য মূসা। ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, আল্লাহর শত্রু মিথ্যা বলছে। উবাই ইবনে কাব আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, যে মূসা (আ.) বনি ইসরাঈলের সামনে ভাষণ দিতে দাঁড়ালে তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, কোন ব্যক্তি সর্বাধিক জ্ঞানী? তিনি বললেন, আমিই সর্বাধিক জ্ঞানী। এতে আল্লাহ তাঁকে তিরস্কার করলেন। কারণ তিনি জ্ঞানকে আল্লাহর নিকট সোপর্দ করেননি।অতঃপর আল্লাহ তাঁকে ওহী মারফত জানালেন,সমূদ্রের সঙ্গম স্থলে আমার এক বান্দা আছে, তিনি তোমার চেয়ে বেশী জ্ঞানী। মূসা (আ.)বললেন, আমার রব আমি কিভাবে তাঁর সাথে দেখা করতে পারি।? তাঁকে বলা হলো, একটি থলের ভিতর একটি মৎস রাখ। যেথানে তুমি ঐ মৎস্যটিকে হারিয়ে ফেলবে সেখানেই তাকে পাওয়া যাবে। অতৎপর তিনি তাঁর সঙ্গী ইউশা ইবনে নূনকে সাথে নিয়ে চললেন এবং থলেতে একটি মৎস্য নিয়ে গমন করতে করতে একটি বড় পাথরের চটানে উপস্থিত হলেন। আর ঐ পাথরের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। মাছটি থলে হতে বের হয়ে সমূদ্রে সুড়ঙ্গ করে সোজা পথ ধরল। মূসা (আ.) ও তাঁর সঙ্গীর নিকট তা’ আশ্চর্য ব্যাপার ছিল। এরপর তারা সারা দিন ও সারা রাত পথ চললেন।পরদিন ভোরে মূসা (আ.) তাঁর সাথীকে বললেন, নাস্তা আন আমরা আমাদের এ ভ্রমনে অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। মূসা (আ.) কে যে জায়গার কথা বলা হয়েছিল তা’ অতিক্রম করার পূর্ব পর্যন্ত তিনি কোনরূপ ক্লান্তি অনুভব করেননি। তাঁর সাথী তাঁকে বলল, দেখুন আমরা যখন চটানে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, আমি তখন মাছটির কথা ভুলে গিয়ে ছিলাম।তারপর তাঁরা উভয়ে তাঁদের পায়ের চিহ্ন অনুসরন করে ফিরে আসলেন।যখন তারা উক্ত পাথরের চটানে উপনিত হলেন, দেখলেন এক ব্যক্তি কাপড় মুড়ি দিয়ে বসে আছেন।
মূসা (আ.) সালাম দিলেন। খিজির(আ.) বললেন তোমার এদেশে সালাম কোথায়? মূসা (আ.) বললেন, আমি মূসা। খিজির (আ.) বললেন বনি ইসরাঈলের মূসা? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহ আপনাকে যেজ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন তার কিছুটা আমাকে শিখাবেন,এ উদ্দেশ্যে আমি কি আপনার অনুসরন করব? তিনি বললেন তুমি কিছুতেই আমার সাথে ধৈর্যাবলম্বন করে থাকতে পারবেন না।হে মূসা!আমাকে আল্লাহ যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন আমি তাই রাখি, তুমি তা’ জান না। আর তোমাকে আল্লাহ যে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন তাই তুমি রাখ, আমি তা’ জানি না।মূসা (আ.) বললেন, আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যীল পাবেন।আমি কোন ব্যাপারে আপনার অবাধ্য হব না। তারপর তারা উভয়ে সমূদ্রের তীর দিয়ে পথ অতিক্রমকরতে লাগলেন।
তাঁদের কোন নৌকা ছিল না। এক সময় তাঁদের নিকট দিয়ে একটা নৌকা যাচ্ছিল, তারা তাতে তাদেরকে তুলে নেওয়ার জন্য নৌকার মাল্লাদের বললেন। খিজির (আ.) পরিচিত ছিলেন বলে তারা বিনা ভাড়ায় তাদেরকে তুলে নিল। অতঃপর একটি চড়ুই পাখি এসে নৌকাটির একটি কিনারায় বসল এবং একবার কি দু’বার সাগরে ঠোঁট ডুবিয়ে দিল। তখন খিজির (আ.) বললেন, হে মূসা. তোমার ও আমার জ্ঞান আল্লাহর জ্ঞানের তুলনায় এ চড়ুই পাখীর ঠোঁটে সাগরের পানি অপেক্ষাও কম। খিজির (আ.) নৌকাটির একখানা তক্তার দিকে অগ্রসর হলেন এবং তা’ টেনে খুলে ফেললেন। মূসা (আ.) বললেন, এরা বিনা ভাড়ায় আমাদেরকে নৌকায় তুলল আর আপনি তাদেরকে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের নৌকা ছিদ্র করে দিলেন? তিনি বললেন, আমি কি বলিনি যে তুমি আমার সাথে ধৈর্যাধারণ করে থাকতে পারবে না? মূসা (আ.) বললেন, আমি ভুল করেছি বলে আপনি আমাকে ধরবেন না। আর আমার ব্যাপারে আপনি আমার প্রতি কঠোর হবেন না। মূসার (আ.) প্রথম প্রতিবাদটি ভুলক্রমে হয়েছিল। তাঁরা আবার সামনে চললেন। দেখলেন, একটি ছেলে অন্য ছেলেদের সাথে খেলা করছে।তখন খিজির (আ.) তার মাথার উপরের দিক নিজ হাতে ধরে তা’ ছিন্ন করে ফেললেন। এতে মূসা (আ.) বললেন, আপনি বিনা কারণে একটি নিরপরাধ প্রাণীকে হত্যা করলেন? খিজির (আ.) বললেন, আমি কি তোমাকে বলিনি যে, তুমি ধৈর্যাধারণ করে আমার সাথে থাকতে পারবে না? ইবনে উয়াইনা বলেন, খিজিররের (আ.) এ কথার মধ্যে তোমাকে শব্দটি থাকায় এটি অধিক মজবুত হয়েছে।
তারা আবার চলতে চলতে এক গ্রামে পৌঁছলেন এবং গ্রামবাসীদের নিকট খাবার চাইলেন। কিন্তু তারা তাঁদের মেহমানদারী করতে রাজি হল না। সেখানে তারা দেখলেন যে একটা প্রাচীর ধসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। খিজির (আ.) নিজহাতে তা’ সোজা দাঁড় করিয়ে দিলেন।মূসা (আ.) বললেন, আপনি চাইলে এ কাজের জন্য মজুরী নিতে পারতেন। খিজির বললেন, এবার তোমার ও আমার মধ্যে বিচ্ছেদ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, মূসার (আ.) উপর আল্লাহ রহম করুন।আমাদের কতই না ভাল লাগত যদি তিনি ধৈর্যাধারণ করতেন।

* বেশী জ্ঞানী হযরত খিজির (আ.) আল্লাহর বন্ধু এবং তাঁর থেকে কম জ্ঞানী হযরত মুছা (আ.) নেতা ছিলেন। হযরত আলীও (রা.) বেশী জ্ঞানে রাসূলের (সা.) বন্ধু ছিলেন। তিনি নেতা ছিলেন না। সেজন্য জনগণ তাঁকে বুঝতে না পেরে তাঁর বড় পদে নিয়োগ করা মালেক উশতার ও হযরতআবু বকরের (রা.) ছেলে মোহাম্মদকে গণপিটুনিতে হত্যা করে ফেলে এবং তাঁর বরখাস্ত করা শাসকদের পক্ষে তারা হযরত আলীর (রা.) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। সুকরাং হযরত আলীর (রা.) ক্ষেত্রে হাদিসের মাওলা অর্থ নেতা বাতিল হয়ে বন্ধু সাব্যস্ত হবে।

সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা (ইতায়াত) আনুগত্য কর আল্লাহর, আর (ইতায়াত) আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের মধ্যে আমির।কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে বিরোধ দেখাদিলে উহা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসুলের নিকট। ওটা উত্তম এবং পরিনামে ভাল।

সহিহ বোখারী ১৮৭০ নং হাদিসের (কিতাবু সালাতিত তারাবীহ) অনুবাদ-
১৮৭০। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানের রাতে ঈমানের সাথে এবং ছাওয়াবের আশায় (নামাযে) দাঁড়ায় তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। ইবনে শেহাব বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) ইন্তেকাল করলেন এবং হকুমও এ অবস্থায়ই রয়ে গেল। তারপর আবু বকর (রা.) এর সম্পূর্ণ খেলাফত আমল এবং ওমরের (রা.) খেলাফত আমলের প্রথম ভাগ এ অবস্থায়ই কেটে গেল। (এ সময়) সকলেই একা একা তারাবীহ পড়ত।ইবনে শিহাব ওরওয়াহ ইবনে জোবায়ের থেকে বর্ণনা করেছেন,আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল কারী বলেছেন, আমি রমযানের এক রাতে ওমর ইবনে খাত্তাবের সাথে মসজিদের দিকে বের হলাম। ;দেখলাম,বিভিন্ন অবস্থায় বহুলোক একা একা নামায পড়ছে।তখন হজরত ওমর (রা.) বললেন,আমার মনেহয় এদের সকলকে একজন কারীর সাথে জামাতভুক্ত করে দিলে সর্বাপেক্ষা ভাল হবে।অতঃপর তিনি তাই করার মনস্থ করলেন এবং তাদেরকে উবাই ইবনে কা’ব (রা.) এর পিছনে জামাতভুক্ত করে দিলেন। এরপর আমি দ্বিতীয় রাতে আবার তাঁর সাথে নামাজে বের হলাম। দেখলাম, লোকেরা তাদের ইমামের সাথে নামাজ পড়ছে। ওমর (রা.) বললেন এটি একটি উত্তম বিদয়াত। রাতের যে অংশে লোকেরা নিদ্রা যায়, তা যে অংশে তারা ইবাদত করে তদপেক্ষা উত্তম।অর্থাৎ রাতের প্রথমভাগ অপেক্ষা শেষ ভাগের নামায অধিক উত্তম। এটিই তিনি বুঝাতে চেয়েছেন।

সহিহ বোখারী ৮২ নং হাদিসের (কিতাবুল ইলম) অনুবাদ-
৮২। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে রেওয়ায়েত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, নিদ্রিত অবস্থায় আমাকে এক পেয়ালা দুধ দেওয়া হলো। আমি তা পান করলাম। এমন কি আমার নখের ভেতর থেকে তৃপ্তি প্রকাশ পেতে দেখলাম। অতঃপর আমি আমার অবশিষ্ট দুধটুকু ওমর ইবনে খাত্তাবকে প্রদান করলাম। সাহাবীরা বললেন, হে মহান আল্লাহর রাসূল, আপনি এ স্বপ্নের কি তাবীর করছেন? তিনি বললেন, ইলম।

সহিহ আল বোখারী, ৩৪২৩ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪২৩। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। দেখলাম লোকদেরকে আমার সামনে আনা হচ্ছে। ঐসব লোক জামা পরিহিত ছিল। তাদের কারো জামা সিনা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। আবার কারো জামা তার চেয়ে নীচ পর্যন্ত পৌঁছেছিল।তারপর আমার সামানে ওমরকে আনা হলো। তার গায়ে এরূপ একটি জামা ছিল যে, সে মাটিতে টেনে চলছিল।সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) আপনি এর অর্থ কি করেছিলেন? তিনি বললেন, দীন ইসলাম।

* উত্তম বিদয়াতকে আমিরল মুমিনিন হযরত ওমর (রা.) সাওয়াবের কাজ মনে করলেন। সালাফীরা উত্তম বিদয়াতকে গুনাহের কাজ মনে করে। হাদিস থেকে হযরত ওমরের (রা.) এলেম ও দ্বীন উভয় ঠিক ছিল বলে জানা যায়। তো এ বিষয়ে যিনি রাসূলের (সা.) ছাত্র তাঁর কথা না শুনে আমরা সালাফীদের কথা কেন শুনব? তাদের শিক্ষক কে? তারা হযরত ওমর থেকে হযরত আয়েশাকে প্রাধান্য দেয়। অথচ যরত ওমর (রা.) রাসূলের (সা.) চল্লিশ বছরী ছাত্র হলেও হযরত আয়েশা (রা.) ছিলেন আঠার বছরের ছাত্রী। শিয়া, খারেজী (ইবাদী) ও সালাফী এ দল তিনটি কোরআনের একাংশ মানে তো অন্য অংশ মানে না। এদের স্বভাব ইহুদীর মত আল্লাহ এদেরকে ইহুদী দিয়ে শাস্তি দিচ্ছেন। এদের যারা মিত্র তাদের জন্যও ইহুদী গজবের ব্যবস্থা থাকবে। হামাস হলো শিয়া মিত্র। সেজন্য তারাও গজবে ঢুকেগেছে।
সূরাঃ ৯ তাওবা, ৪০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪০। যদি তোমরা তাঁকে সাহায্য না কর, তবে আল্লাহতো তাঁকে সাহায্য করেছিলেন যখন কাফিরগণ তাঁকে ধাওয়া করেছিল (হত্যা করার জন্য), আর তিনি ছিলেন দু’জনের মধ্যে দ্বিতীয় জন। যখন তাঁরা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিলেন, তিনি তখন তাঁর সঙ্গিকে বলেছিলেন, তুমি বিষণ্ন হয়ো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।অতঃপর তাঁর উপর আল্লাহ তাঁর প্রশান্তি নাজিল করেন এবং তাঁকে শক্তিশালী করেন এমন সৈন্যবাহিনী দ্বারা যা তোমরা দেখনি।আর তিনি কাফেরদের কথা তুচ্ছ করে দেন।আর আল্লাহর কথাই সুউচ্চ। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী সুবিজ্ঞ।

সূরাঃ ৪৮ ফাতহ, ২৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৯। মোহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল; তাঁর সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবে।তাদের লক্ষণ তাদের মুখমন্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে: তওরাতে তাদের বর্ণনা এরূপ এবং ইঞ্জিলেও তাদের বর্ণনা এরূপই। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারা গাছ, যা থেকে নির্গত হয় নতুন পাতা, অতঃপর ইহা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষীদের জন্য আনন্দ দায়ক। এভাবে মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা আল্লাহ কাফিরদের অন্তর্জালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের।

* মোহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল; তাঁর সহচরগণ তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। সেজন্য হযরত মুয়াবিয়াকে (রা.) রাসূল (সা.) হুনায়নের যুদ্ধে একশত উট উপহার দিয়েছেন। সাহাবায়ে কেরামকে (রা.) আল্লাহ ক্ষমা করে পুরস্কার দিলে আমরা তাঁদের দোষ ধরি কেমন করে? সাহাবায়ে কেরামের (রা.) দোষ ধরার এ অকাজটাই করে শিয়া, খারেজী (ইবাদী) ও সালাফী। মধ্যপ্রাচ্য এরা ও এদের বন্ধুদের বাসা। ইহুদী দিয়ে আল্লাহ এদেরকে শাস্তি দিলে কেউ কি এদেরকে রক্ষা করতে পারবে? আল্লাহর ক্ষমা করা সাহাবায়ে কেরামের (রা.) দোষ ধরা বন্ধ না করলে আল্লাহ এদেরকে শাস্তি থেকে রক্ষার কোন পথ আমি দেখি না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.