নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাজার সনেটের কবি।

ফরিদ আহমদ চৌধুরী

বিষয় যতই জটিল হোক,ভাবতে ভালো লাগে

ফরিদ আহমদ চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা স্বীকৃতি

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৪৭



বিষয়টা কওমী স্বীকৃতি ও সরকারের ভুল শুদ্ধ হওয়া সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে। সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। চাকুরী নিতে হবে যোগ্যতায়। তবে স্বীকৃতি চিন্তায় এক পক্ষ এমন লাচার হচ্ছে কেন, বুঝা মুশকিল! একেই বলে হিংসে। নিজের ক্ষতি না হোক, তবে কিছুতেই পরের উপকার হতে দেবে না।
কওমী আলেমেরা ব্যাবসা এখনো করে, চাষবাসও করে, তাতে স্বীকৃতি দরকার করেনা। ওটা বিয়ে ও চাকুরীতে লাগে। এখন চাকুরী দাতা চাকুরী আর কন্যা দাতা কন্যা দেখে শুনে দিলেই হলো।
আর যদি আপনারা তাদের দাবায়ে রাখেন, আর যদি এ বিশাল জনগোষ্ঠি সেই ক্ষোভে জঙ্গি খাতায় নাম লেখায়, তবে শান্তিতে নিদ্রামগ্ন হয়ে নাক ডাকতে পারবেনতো? কেউকূফ কোন কিছু খুব দেরীতে বুঝে, ক্ষতি হওয়ার পর। কিন্তু সেটা বঙ্গবন্ধু কন্যা নয়। তিস্তার পানিও ইনশা আল্লাহ তিনিই আনবেন। শুধু তাঁকে একটু ভাবতে দেন। তাঁর পিতার হাত ধরে পেয়েছেন স্বাধীণতা, ইনশাআল্লাহ তাঁর হাত ধরে পাবেন সমৃদ্ধি।
তা’না হয় ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় হয়ে চাঁদ যদি ঝলসানো রুটি হয় তবে চাঁদে সাঈদী হুজুরেরে নাও দেখা যেতে পারে। সে যাই হোক এ জনপ্রিয় হুজুরের ফাঁসি না দিলেই মনে হয় ভাল। বাকীটা বিদগ্ধজনেরা বলতে পারেন। আর আমার একটা মনের কথা হলো,‘নোয়াখালী বিভাগ চাই, কুমিল্লাও বিভাগ হোক, আপত্তি নাই। তা’ছাড়া এর চেয়ে ছোট অনেক রাষ্ট্রও আছে। আমরাতো সামান্য একটা বিভাগ চাই। সাগর আমাদের সাথে। এ বিভাগ ক্রমাগত বড় হবে, ইনশাআল্লাহ। আর আমরা যেতেতু আর সবার থেকে আলাদা, সেহেতু আমাদের বিভাগ চাওয়ার দাবী সংগত। আশাকরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিমুখ করবেন না।

মন্তব্য ৪১ টি রেটিং +২১/-০

মন্তব্য (৪১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৫০

জাহিদ হাসান বলেছেন: স্বীকৃতি দিছে, এটা ঠিক অাছে। কিন্তু এখন সরকার যদি এই সব প্রতিষ্ঠানকে সংস্কার না করে- তবে যেই লাউ, সেই কদু রয়ে যাবে।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:১৯

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমারো তাই মনে হয়।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:০৩

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
সহমত

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:২০

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: হমতের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


কওমীদিগকে জাতির মুলধারার সাথে যোগ করা হয়েছে, এখন তারা যদি গুরুত্ব বুঝতে পারে, সেটা এক লাফে জাতিকে অনেক উপরে নিয়ে যাবে।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৫৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: তাদের দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস বুঝা উচিত।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬

মোহাম্মদ বাসার বলেছেন: এই প্রক্রিয়ায় কওমি ও মাদ্রাসার শিক্ষার বিস্তার ঘটবে সন্দেহ নেই, ধরুন ২০ গুন বিস্তার ঘটলো! ২% সারা বিশ্বে মোসলমানদের দূরাবস্তা দেখে ভাবল আমাদের দেশে যত পশ্চিমা মানুষ বা প্রতিষ্ঠান আছে তাদের বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া যাক, তখন ব্যাপারটা কেমন দাঁড়াবে?

এখন অংকটা কশা যাক, আগে মাদ্রাসা ছিল মনে করুন একটা। এখন ২০ টা। এই ২০ টা থেকে ২% হারে ৪০টা জঙ্গী তৈরী হলো। আর আগে ছিল ১টা। ধরুন আগে ক্ষোভ, না পাওয়ার বেদনা থেকে তৈরী হত ১০%। তাহলে কতজন জঙ্গী তৈরী হত আগে? ১০জন তাই না?

এবার আসল কথায় আসি। অবৈজ্ঞানিক বা ভ্রান্ত নীতির শিক্ষা ব্যবস্থাকে আপনি যতই আধুনিকীকরণ করুননা কেন তা কিন্তু ভ্রান্তই থেকে যাবে। এই জন্যই কামাল আতাতূর্ক সেই ১৯২৩/২৪ সালে আধূনিক তুরস্কের গোড়াপত্তনের সময় ইসলামী শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৫২

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: স্বীকৃতি না থাকায় জঙ্গী হতো দশ জন স্বীতৃতি পাওয়ায় হবে চল্লিশ জন, এমন ধারণা ভুল। দেখা যায় খাস্তা চাউল দুই কেজীতে যতগুলো মরা চাউল পাওয়া যায় ভাল চাউল দশ বস্তাতেও ততগুলো মরা চাউল পাওয়া যায়না।ভালোর জোয়ার শুরু হলে সেই জোয়ারে সব মন্দ ভেসে যাবে।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৯

মোহাম্মদ বাসার বলেছেন: চাঁদ গাজী ভাই লাফটা কি অনেক বড় হবে???????? হাহাহা!!!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৪৫

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: চাঁদ গাজী ভাই লাফটা কি অনেক বড় হবে? লাফটা বড়ই হবে যদি পিছন থেকে কেউ টেনে না ধরে। প্রধানমন্ত্রী অন্তত তাই ভাবছেন মনে হয়। আর চাঁদগাজীও সম্ভবত সেটাই বুঝিয়েছেন।

৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:০১

চিন্তক মাস্টারদা বলেছেন: আপনি ত দেখছি চাঁদেরও খবর রাখেন

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৪২

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আপনি ত দেখছি চাঁদেরও খবর রাখেন চাঁদের খবর একলা চিন্তক মাস্টারদা রাখবেন আর কেউ রাখবেনা তাতো হতে পারেনা!

৭| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৩২

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: কওমীর স্বীকৃতি নিয়ে আপত্তি নেই!


তবে তাদের একটা নীতিমালার মধ্যে আনা দরকার!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৪০

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: তবে তাদের একটা নীতিমালার মধ্যে আনা দরকার! আমার মনে হয় এ ব্যাপারে কারো দ্বীমত নেই।

৮| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৩৭

মিঃ আতিক বলেছেন: অত্যন্ত সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত। যে যাই বলুক মাদ্রাসার স্বীকৃতি না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখলে ক্ষতি আরও বেশীর সম্ভাবনা ছিল। কাওমি নাম নিয়ে কাউকে সমাজ থেকে আলাদা করার সুযোগ নেই।আমরা সবাই বাংলাদেশী।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: একশভাগ সঠিক কথা বলেছেন। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।

৯| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:০৩

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: কওমি স্বীকৃতি নিয়ে আমার আপত্তি নেই, তবে তাদের কিছু দাবী আমাকে খুব চিন্তিত করে। তারা বাঙালি জাতির সকল কৃষ্টি, সংস্কৃতি কে হারাম বলে, তারপর বাংলাদেশে কোন ভাস্কর্য থাকবেনা, তাদের ইতিহাস সাবজেক্টে অনেক উল্টাপাল্টা শিখাচ্ছে।


" তিস্তার পানিও ইনশা আল্লাহ তিনিই আনবেন। শুধু তাঁকে একটু ভাবতে দেন। তাঁর পিতার হাত ধরে পেয়েছেন স্বাধীণতা, ইনশাআল্লাহ তাঁর হাত ধরে পাবেন সমৃদ্ধি।"-- এই কথাটুকুতে যে যাই বলুক, আমি পুরোপুরিভাবে বিশ্বাস করি সবসময়।

ভালো লাগলো পোষ্ট পড়ে।
শুভেচ্ছা রইল।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৭

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: তারা বাঙালি জাতির সকল কৃষ্টি, সংস্কৃতি কে হারাম বলে, তারপর বাংলাদেশে কোন ভাস্কর্য থাকবেনা, তাদের ইতিহাস সাবজেক্টে অনেক উল্টাপাল্টা শিখাচ্ছে। প্রিয় কবি পোষ মানাতে জানলে বনের বাঘও পোষ মানে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীতো অনেকগুলো অসাধ্য সাধন করেছেন। তো আমার মনে হয় আবার তেমন একটি বিষয় তিনি হাতে নিয়েছেন।

১০| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৪৯

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার বলেছেন।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৪

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।

১১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:০৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাল একটি বিষয়ে যথাসময়ে পোষ্টটি দেয়ার জন্য । বেশ কয়েকদিন যাবত কওমী মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার পাঠ্যক্রম নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে দেখতে পাচ্ছি । বিষয়টি নিয়ে বিস্তর আলোচনার অবকাশ আছে বলে মনে করি । যতদুর জানা যায় কওমী মাদরাসায় প্রচলিত সিলেবাস বা পাঠ্যক্রমের গোড়াপত্তনকারী ছিলেন মোল্লা নেযামুদ্দীন সাহালবী (রহ.) (১৬৭৭/৭৮ – ১৬৯১ ) । মোল্লা নেযামুদ্দীন সাহালবী (রহ.) কর্তৃক প্রবর্তিত ‘দরসে নেযামী’ সিলেবাস পূর্ণতা পায় শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ.) (১৭০৩ – ১৭৬৫ ) এর তত্ত্বাবধানে। কালের বিবর্তনে ১৮৬৬ সনে হযরত মাওলানা কাসেম নানুতবী (রহ.) ( ১৮৩২ -১৮৮০ ) প্রতিষ্ঠা করেন দারুল উলুম দেওবন্দ। দারুল উলুম দেওবন্দে তখন যে সিলেবাস বা পাঠ্যক্রম গ্রহণ করা হয় তা ছিল মুলত ওই মোল্লা নেযামুদ্দীন সাহালবী (রহ.)-এর পাঠ্যক্রম যা শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ.) কর্তৃক পূর্ণতা পেয়েছিল বলে দেখা যায় । যদি ভুল না হয়ে থাকে তাহলে দারুল উলুম দেওবন্দে প্রবর্তিত পাঠ্যক্রমই বর্তমানে বাংলাদেশের কওমী মাদরাসাসমূহে সিলেবাস হিসেবে বিদ্যমান (সূত্র : ইসলামী বিশ্বকোষ, ত্রয়োদশ খন্ড, পৃষ্ঠা-৫৫৩) ।

বর্তমানে কওমী মাদরাসাগুলোতে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলির মধ্যে (১)আল-কুরআন (২) তাজবীদ-কুরআন পঠননীতি (৩) ইলমুল ক্বিরাআত-কুরআনের উচ্চারণনীতি (৪)তাফসীর-কুরআনের ব্যাখ্যা (৫) উসূলে তাফসীর-কুরআন ব্যাখ্যার নীতিমালা (৬) উলূমুল কুরআন- কুরআনের শাস্ত্রীয় জ্ঞান (৭) আল-হাদীস (৮) উসূলে হাদীস-হাদীস ব্যাখ্যার নীতিমালা (৯) উলূমুল হাদীস-হাদীসের শাস্ত্রীয় জ্ঞান (১০) ফিক্বহ-ইসলামী আইন (১১) উসূলে ফিক্বহ-ইসলামী আইনের নীতিমালা (১২) উলূমুল ফিক্বহ-ইসলামী আইনের শাস্ত্রীয় জ্ঞান(১৩)ফিক্বহে মুক্বারান-তুলনামূলক ইসলামী আইন (১৪) ইলমুল ফারায়েয-উত্তারাধিকার সম্পদ বণ্টন আইন (১৫) ইলমুল আক্বাইদ – ঈমানবিষয়ক জ্ঞান (১৬) মানতিক- যুক্তিবিদ্যা (১৭) ফালসাফা- দর্শনশাস্ত্র (১৮) আরবী ভাষা ও সাহিত্য (১৯) উর্দু (২০) বালাগাত- শব্দালংকার (২১) ফাসাহাত- বাক্যালংকার (২২) ইলমে মা’আনী-শব্দ তত্ত্ব (২৩) ইলমে বয়ান- বাক্য তত্ত্ব (২৪) ইলমে বাদী- বাচনিক তত্ত্ব (২৫) ইলমে নাহু-বাক্য প্রকরণ (২৬) ইলমে সরফ- শব্দ প্রকরণ (২৭) ইলমে লুগাহ- শব্দ কোষ (২৮) ইলমে তারিখ-ইতিহাস (৩০) সীরাত- রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জীবনী। এ ছাড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বাংলা, অংক, ইংরেজি, সমাজ, বিজ্ঞান ও ফার্সি শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন মাদরাসায় কারিগরি প্রশিক্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তি তথা কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্র রয়েছে ।

উপরুক্ত বিষয়সমুহ অন্তর্ভুক্ত করে কওমী মাদরাসা শিক্ষা কার্যক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রধানত ৪টি মৌলিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত বলেও পর্যালোচনায় দেখা যায় । প্রথমটি হল তাওহীদে খালিস (বিশুদ্ধ একত্ববাদ ) দ্বিতীয়টি ইত্তিবায়ে সুন্নাত (সুন্নাতের অনুসরন ) তৃতীয়টি তায়াল্লুক মা’আল্লাহ (আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক)। তাই কওমী মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় একজন শিক্ষার্থী জ্ঞান অর্জন করার পর কেবল মাত্র তখনই পূর্ণ যোগ্যতাসম্পন্ন আলেম হতে পারবে, যখন ওই শিক্ষার্থী ইলম অর্জনের পর কোনো আল্লাহ ওয়ালার সোহবতে (সান্নিধ্যে) থেকে ইলমে তাসাউফের গভীর সাগরে ডুব দিয়ে আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম হবেন। চতুর্থ মৌলিক ভিত্তিটি ই’লায়ে কালিমাতুল্লাহ (আল্লাহর বিধান সুউচ্চকরণ)। তাই, কওমী শিক্ষা কার্যক্রমের মুল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় একজন শিক্ষার্থী তার ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে নিজেকে নিয়োজিত করে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের সাথে সাথে স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্যও প্রয়োজনীয় প্রাত্যহিক ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনে সক্ষমত্ অর্জন করতে পারবেন ।

কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রমকে নিয়ে এতদিন ধরে একটি নেতিবাচক ধ্যান ধারনা সমাজের কিছু মানুষের কাছে প্রচলিত ছিল , কিন্তু কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রমকে সরকারী পর্যায়ে স্বীকৃতি দানের পরে গত কয়েকদিনের কর্মকান্ডে মানুষের মনে একটি পজিটিভ চিন্তা ভাবনার উন্মেষ ঘটছে বলে দেখা যাচ্ছে । এটা নি:সন্দেহে সামাজিক ক্ষেত্রে একটি গুরুতইপুর্ণ বিষয় হিসাবে বিবেচনা করা যায় । দেশের সকলকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে সন্মূখপানে জাতীয় অগ্রগতির লক্ষ্যে । এখন প্রয়োজন দেশের সকল শিক্ষানুরাগী বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কওমী পাঠ্যক্রমকে কিভাবে আরো বেশী করে দ্বীনি ও সমাজের প্রতিটি পেশাগত ডিসিপ্লিনের সাথে সমন্বয় সাধন করা যায় সে বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা ।

কওমী মাদরাসাসমূহের হিতাকাক্সক্ষী ও এর প্রতি সহমর্মী অনেকেই এখন এই শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে কারিগরি শিক্ষাকে সমন্বিত করার বিষয়ে মতামত রাখছেন বলে দেখা যায় । ধারণা করা হয় উলামায়ে কেরামগন অর্থনৈতিক দিক থেকে সমাজের বোঝা না হয়ে নিজ যোগ্যতায় জীবনোপকরণের ব্যবস্থা করে দ্বীনের খিদমত আঞ্জাম করার পাশাপাশি দেশের জাতীয় সমৃদ্ধির জন্য জাগতিক বিষয়েও মুল্যবান অবদান রাখতে সক্ষম হবেন যদি শিক্ষা ব্যবস্থায় কারিগরী কিছু বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা যায় যথোপযুক্ত ভাবে । কওমী শিক্ষা স্তরের উপরের পর্যায়ে বিষয় ভিত্তিক বিভাজন করে ছাত্র ছাত্রীদের উপরেই সিন্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া যেতে পারে তাঁরা কোন বিষয়ে উচ্চতর পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ হবেন । যদিও এ কথা সত্য যে কুরআন ও হাদীসের ন্যায় এমন একটি ব্যাপক বিষয়ের ওপর পারদর্শিতা অর্জনে নিয়োজিত থাকার সময় কারিগরি বিষয়ে সময় ব্যয় করা বাস্তবতার নিরিখে একজন কওমী মাদ্রাসার ছাত্রের জন্য বেশ কষ্টকর হবে । কারণ দিনের বেশীর ভাগ সময় ব্যয় করে যেখানে কুরআন-হাদীস ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যোগ্যতা অর্জন করা কঠিন, সেখানে কারিগরি শিক্ষার পেছনে সময় ব্যয় করার সময় কোথায়? কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার আলেম ওলামারাগনও বলে থাকেন সমাজের অন্যান্য পেশাজীবী মানুষের সেবা সমাজের সব মানুষ সব সময় গ্রহণ করে না। কিন্তু উলামায়ে কেরামের দ্বীনি সেবা সমাজের সব মানুষের জন্য সব সময় প্রয়োজন। তাই সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ওপর উলামায়ে কেরামের প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব অনেক অনেক বেশি। (সূত্র : কওমী মাদরাসার নেসাব ও নেযাম- দরসে নেযামীর কিতাবসমূহের পাঠদান পদ্ধতি। মূল : আল্লামা তাকী উসমানী, অনুবাদ : মাওলানা মুহাম্মাদ ওমর ফারুক, পৃষ্ঠা-১৭) ।

কিন্তু এ কথা অনস্বীকার্য যে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষা এখন সময়ের দাবি , তাই বিষয়টি যথাযোগ্য গুরুত্বের সাথে সংস্লিস্টদের বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করি ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩০

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: সকলের পক্ষে সব বিষয়ে এক সঙ্গে দক্ষ হওয়া সম্ভব নয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা সৃষ্টির ট্রেনিং প্রদান করে থাকে। যেমন আমি আছি কম্পিউটারে। আমাদের মোট সরকারী ভাবে ৫৫ টি ট্রেনিং রয়েছে। আমি মনে করি কওমী আলেমগন যদি দ্বীনি এলেমের পাশাপাশি এ প্রশিক্ষণ নিতে পারে তবেই চলে। তো তারা এখন যা পড়ছে তাতে আমি মনে করি তারা এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে। সরকারের আরো নানা মুখী প্রশিক্ষণ রয়েছে। যা কওমী আলেমগন গ্রহণ করতে পারে। স্বীকৃতির পাশাপাশি কওমী আলেমদের যতদ্রত এসব প্রশিক্ষণে যুক্তকরা যায় ততই মঙ্গল। এরপর এদের বিভিন্ন ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর যদি এরা মৎস্য খামার, ডেইরি ফার্ম, পল্ট্রি ফার্ম, কম্পিউটার সেন্টার ইত্যাদি গড়ে তুলতে পারে, সেই সাথে তাদের একটা সংসার থাকলে। তবে তাদের মাথায় জঙ্গিবাদের শয়তানি চিন্তা ঢুকার সময় পাবেনা। যখন তারা দেখবে যতকাজ ততটাকা তখন কাজটাই ভাল লাগবে জঙ্গিবাদ আর ভাল লাগবেনা।
আর আপনার মন্তব্য আমার পোষ্টের চেয়েও বড়। যদি কিছু মনে না করেন তবে এটা আমি পোষ্টে ব্যবহার করতে চাই। আপনার অনুমতির অপেক্ষায় থাকলাম। আর আপনি অবশ্য দেখেছেন আমি আপনার কথা কিভাবে উপস্থাপন করি।

১২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৮:১২

সিনবাদ জাহাজি বলেছেন: তিস্তার পানিও ইনশা আল্লাহ তিনিই আনবেন। শুধু তাঁকে একটু ভাবতে দেন। তাঁর পিতার হাত ধরে পেয়েছেন স্বাধীণতা, ইনশাআল্লাহ তাঁর হাত ধরে পাবেন সমৃদ্ধি
মানুষ বাঁচে আশায়
আশায় থাকেন আরো ফেলানীকে দেখি আগে তারপর না হয়........................

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ভুল-ত্রুটি সবার থাকে। তবে দেশ উন্নয়নের পথেই হাঁটছে বলে আমার মনে হয়। তবে আর আশ করতে দোষ কি?

১৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্বীকৃতি দিয়েছেন, ভাল করেছেন। এখন জাতিকে বিভক্ত না করে ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস নেয়াটা জরুরী বলে মনে হয়।
যে কোন শত্রু একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিকে ভয় পাবে এবং আমলে নেবে।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:১১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: মহোদয় অবঃ ডিফেন্স অফিসার যেমন বলার কথা তেমনটাই বলেছেন। আপনারা জাতীর এক এক জন আলোর দিশারী। যতদিন বাাঁচবেন আলো ছড়াবেন সন্দেহ নেই। তাই জাতির স্বার্থে আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আল্লাহ আপনাকে বাাঁচিয়ে রাখুন সত্য ও সুন্দরের জন্য, আমিন।

১৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর প্রতিমন্তব্যের জন্য। আপনার প্রস্তাবটি আমি দেখেছি । ভাল প্রম্তাব দিয়েছেন। বিষয়গুলি বেশ জাতীয় গুরুত্বপুর্ণ । এদিকে দেখলাম আহলে সুন্নাতেরা এর প্রতিবাদ করেছেন । যাহোক বিষয়টাকে মন্তব্যের ঘর হতে একটি পৃথক পোষ্টে নিতে হলে একে অারো একটু মডিফিকেশনের প্রয়োজন আছে, আশা করি আজ রাতে একে পোষ্ট দেয়ার মত করে মডিফিকেশন করে এই মন্তব্যের ঘরে দিতে পারব। আপনে হয়ত খেয়াল করে দেখবেন প্রায় অনেকের পোষ্টেই আমার অনেক মন্তব্য মুল পোষ্টের থেকে অনেক বড় হয়ে যায় । গত এক বছরে আমার করা মন্তব্যের সংখা সাত হাজারের উপরে যার অধিকাংশ নিয়েই আমি ইচ্ছা করলে পৃথক পৃথক পোষ্ট দিতে পারতাম , তাতে হয়ত আমার প্রোফাইল অনেক সমৃদ্ধ দেখাত । কিন্ত আমি সেদিকে মনযোগ দেইনা , আমি পৃথক পোষ্ট দেয়ার চেয়ে যার পোষ্টে মন্তব্যগুলি করি তাঁর পোষ্টটিকেই সমৃদ্ধ করাতে বেশী আনন্দ পাই। যাহোক অআপাতত আমার ২৯ নং মন্তব্যটি যেমন আছে তেমন থাকুক , আজ রাতে এখানে এর যে মডিফাইড ভার্সনটা দিব বলে আশা রাখছি সেটা যদি আপনার কাছে ভাল লাগে তাহলে তা বিবেচনা করতে পারেন ।

অনেক শুভেচ্ছা রইল , আল্লাহ সহায় হোন ।

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১০

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।

১৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:১২

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: কাওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি। তার মানে সফি সাহেব আর তেতুল নন?

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১১

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: তেঁতুলের জন্য আপনার অনেক আক্ষেপ হচ্চে মনে হয়।

১৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৪৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: জনাব আপনার পোস্ট ও সবার মন্তব্য পড়েছি মনোযোগ দিয়ে। আর তা আমার কতোহল বসেই সাধন হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি দীনি একটি বিষয় উদঘাটন হচ্ছে তা মনোযোগ নিবিষেই পড়া দরকার। মাশাল্লাহ আপনার উপস্থাপনা আর জনাব ডা: এম আলী ভাইয়ের মন্তব্য পড়ে এতোই খুশি হয়েছি। যে এই কয়দিনের প্রচার প্রচারণার নানান দিক গুলো জ্ঞান দিয়ে ছেটে নিতে সক্ষম হয়েছি। সত্যিই দীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যদি দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত হতে পারে তবে দেশে শান্তি অবধারিত। হক এমন একটি বিষয় তা অবগত হয়ে গ্রহন আর বর্জন করা দরকার। দীনি শিক্ষার পাশাপাশি দুনিয়াবী শিক্ষাও নিতে পারে। এমনতো নয় যে ওরা জমাজের বহির্ভূত কোন জীব। ওরা এই সমাজেরি কেহ। তাদের স্বীকৃতিতে কারোর মাথা ব্যাথা এতো হওয়ার কারণ বুঝতে পারি নাই।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুন।

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১২

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: তথাপি এতেও অনেকের মাথাব্যাথা হয়।

১৭| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:২৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: কওমী মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার স্বীকৃতি নিয়ে দেশে আলোচনা চলছে ব্যপকভাবে, বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই বিস্তারিত আলোচনার অবকাশ আছে বলে মনে করি । প্রথমমেই বলে রাখি , আমরা দেখতে পাই মাদ্রাসা শিক্ষা গ্রহণ করে অনেকেই বরেণ্য ব্যক্তিত্বে পরিনত হয়েছেন আমাদের দেশে ও উপ-মহাদেশে , তাদের জ্ঞানের ভান্ডার ব্যাপক। তাই মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি যথাযোগ্য সন্মান দিয়েই লিখাটি শুরু করছি । ইংরেজি সিলেবাস যেমন আন্তর্জাতিক, তেমনি মাদ্রাসার সিলেবাসও আন্তর্জাতিক, এর জন্য কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীগনতো অবশ্যই যথাযথ স্বীকৃতি পাওয়ার অধিকারী । কওমী মাদ্রাসায় যা পড়ানো হয় সে সকলই ভারতসহ সউদী আরবের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পড়ানো হয়। বলা হয়ে থাকে Many Islamic schools throughout modern India, Bangladesh ,Pakistan - and more recently in Afghanistan, the United Kingdom, South Africa - as well as in hundreds of other places throughout the world are affiliated, or theologically linked, to Darul Uloom Deoband.
এখানে বাংলাদেশেও কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা পাঠ্যক্রমে মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমকেও অনুসরণ করা হয়ে থাকে (সূত্র : ইসলামী বিশ্বকোষ, ত্রয়োদশ খন্ড, পৃষ্ঠা-৫৫৩) ।

মদিনা ইসলামিক বিশ্ব বিদ্যালয়, সৌদি আরব

আসল কথা হচ্ছে এটা একটা ধর্মীয় শিক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যদি ধর্মতত্বের উপরে ( Theology) আরবিতে কোর্স করানো যায় সেখানে মাদ্রাসা শিক্ষায় কেন পারা যাবেনা ? আমাদের দেশে অনেক ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলই তো চলছে। আমাদের দেশে দু’রকম শিক্ষা ব্যবস্থা কি হচ্ছে না ? । কিন্তু এ বিষয়টা নিয়েতো তেমন কোন প্রশ্ন উঠছেনা । বুঝলাম ইংরেজীর প্রয়োজন আছে বিশ্ব জ্ঞান ভান্ডার থেকে জ্ঞানের আলো আহরনের জন্য , প্রয়োজন আছে আন্তর্জাতিক ভাষায় বিশ্বের সাথে যোগাযোগ ও উঠাবসা করার জন্য । অনুরূপ ভাবে সহস্র বছর ধরে বিশ্বের জ্ঞান ভান্ডারে এমন অনেক মুল্যবান অবদান আছে যা লিখিত হয়েছে আরবী ও ফার্সীতে , এছাড়াও অর্ধ কোটির বেশী বাংলাদেশী জীবন জিবীকার তাগিতে এখন আছেন আরব মুল্লুকে , ধারণা করি এ সংখ্যা ক্রমে আরো বাড়তেই থাকবে আগত দিনগুলিতে , তাদের সাথে চাকরীর বিষয়াদিসহ ব্যবসা বানিজ্য বাড়বে বহুবিধ প্রকারে । দেশের রেমিটেন্সের একটি সিংহভাগইতো আসে আরবীয় দেশগুলি থেকে, তাছাড়া আরবীতে নাযিল হওয়া কোরান ও বিভিন্ন মুল হাদিছ গ্রন্থতো আছেই । আরব দেশে কাজের পরিবেশ , বেতন ভাতাদি, সুযোগ সুবিধা সে বিষয়গুলি আলোচনায় উঠে আসতেই পারে , তবে এগুলির উন্নতি করতে হলেও সে সমস্ত দেশে কাজ করতে যাওয়া মানুষগুলির জন্য কিংবা ব্যাবসা বানিজ্যসহ বিভিন্ন কাজে সংস্লিষ্টদের আরবী ভাষার উপরে কিছুটা দখল থাকলে তা ভাল উপকারে দিবে বলেই আশা করা যায় ।

এ প্রসঙ্গে কওমী মাদ্রাসা স্থাপনের গোড়ার কথাটা একটু বলে নেয়া যায় । ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের বছর দশেক পর ভারতের মৌলভীরা আলীগড় থেকে একটু দূরে উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে একটা (কওমী মাদ্রাসা) স্থাপন করেছিলেন বলে জানা যায় । যতদুর জানা যায় কওমী মাদরাসায় প্রচলিত সিলেবাস বা পাঠ্যক্রমের গোড়াপত্তনকারী ছিলেন মোল্লা নেযামুদ্দীন সাহালবী (রহ.) (১৬৭৭/৭৮ – ১৬৯১ ) । মোল্লা নেযামুদ্দীন সাহালবী (রহ.) কর্তৃক প্রবর্তিত ‘দরসে নেযামী’ সিলেবাস পূর্ণতা পায় শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ.) (১৭০৩ – ১৭৬৫ ) এর তত্ত্বাবধানে। কালের বিবর্তনে ১৮৬৬ সনে হযরত মাওলানা কাসেম নানুতবী (রহ.) ( ১৮৩২ -১৮৮০ ) প্রতিষ্ঠা করেন দারুল উলুম দেওবন্দ। দারুল উলুম দেওবন্দে তখন যে সিলেবাস বা পাঠ্যক্রম গ্রহণ করা হয় তা ছিল মুলত ওই মোল্লা নেযামুদ্দীন সাহালবী (রহ.)-এর পাঠ্যক্রম যা শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ.) কর্তৃক পূর্ণতা পেয়েছিল বলে দেখা যায় । যদি ভুল না হয়ে থাকে তাহলে দারুল উলুম দেওবন্দে প্রবর্তিত পাঠ্যক্রমই বর্তমানে অনেক দেশের মত বাংলাদেশের কওমী মাদরাসাসমূহে সিলেবাস হিসেবে বিদ্যমান (সূত্র : ইসলামী বিশ্বকোষ, ত্রয়োদশ খন্ড, পৃষ্ঠা-৫৫৩) ।

দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা , উত্তর প্রদেশ ভারত

বর্তমানে কওমী মাদরাসাগুলোতে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলির মধ্যে (১)আল-কুরআন (২) তাজবীদ-কুরআন পঠননীতি (৩) ইলমুল ক্বিরাআত-কুরআনের উচ্চারণনীতি (৪)তাফসীর-কুরআনের ব্যাখ্যা (৫) উসূলে তাফসীর-কুরআন ব্যাখ্যার নীতিমালা (৬) উলূমুল কুরআন- কুরআনের শাস্ত্রীয় জ্ঞান (৭) আল-হাদীস (৮) উসূলে হাদীস-হাদীস ব্যাখ্যার নীতিমালা (৯) উলূমুল হাদীস-হাদীসের শাস্ত্রীয় জ্ঞান (১০) ফিক্বহ-ইসলামী আইন (১১) উসূলে ফিক্বহ-ইসলামী আইনের নীতিমালা (১২) উলূমুল ফিক্বহ-ইসলামী আইনের শাস্ত্রীয় জ্ঞান(১৩)ফিক্বহে মুক্বারান-তুলনামূলক ইসলামী আইন (১৪) ইলমুল ফারায়েয-উত্তারাধিকার সম্পদ বণ্টন আইন (১৫) ইলমুল আক্বাইদ – ঈমানবিষয়ক জ্ঞান (১৬) মানতিক- যুক্তিবিদ্যা (১৭) ফালসাফা- দর্শনশাস্ত্র (১৮) আরবী ভাষা ও সাহিত্য (১৯) উর্দু (২০) বালাগাত- শব্দালংকার (২১) ফাসাহাত- বাক্যালংকার (২২) ইলমে মা’আনী-শব্দ তত্ত্ব (২৩) ইলমে বয়ান- বাক্য তত্ত্ব (২৪) ইলমে বাদী- বাচনিক তত্ত্ব (২৫) ইলমে নাহু-বাক্য প্রকরণ (২৬) ইলমে সরফ- শব্দ প্রকরণ (২৭) ইলমে লুগাহ- শব্দ কোষ (২৮) ইলমে তারিখ-ইতিহাস (৩০) সীরাত- রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জীবনী। এ ছাড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বাংলা, অংক, ইংরেজি, সমাজ, বিজ্ঞান ও ফার্সি শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন মাদরাসায় কারিগরি প্রশিক্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তি তথা কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্র রয়েছে ।

উপরুক্ত বিষয়সমুহ অন্তর্ভুক্ত করে কওমী মাদরাসা শিক্ষা কার্যক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রধানত ৪টি মৌলিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত বলেও পর্যালোচনায় দেখা যায় । প্রথমটি হল তাওহীদে খালিস (বিশুদ্ধ একত্ববাদ ) দ্বিতীয়টি ইত্তিবায়ে সুন্নাত (সুন্নাতের অনুসরন ) তৃতীয়টি তায়াল্লুক মা’আল্লাহ (আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক)। তাই কওমী মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় একজন শিক্ষার্থী জ্ঞান অর্জন করার পর কেবল মাত্র তখনই পূর্ণ যোগ্যতাসম্পন্ন আলেম হতে পারবে, যখন ওই শিক্ষার্থী ইলম অর্জনের পর কোনো আল্লাহ ওয়ালার সোহবতে (সান্নিধ্যে) থেকে ইলমে তাসাউফের গভীর সাগরে ডুব দিয়ে আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম হবেন। চতুর্থ মৌলিক ভিত্তিটি ই’লায়ে কালিমাতুল্লাহ (আল্লাহর বিধান সুউচ্চকরণ)। তাই, কওমী শিক্ষা কার্যক্রমের মুল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় একজন শিক্ষার্থী তার ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে নিজেকে নিয়োজিত করে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের সাথে সাথে স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্যও প্রয়োজনীয় প্রাত্যহিক ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনে সক্ষমতা অর্জন করতে পারবেন ।

কওমী শিক্ষার অর্থ জাতীয় শিক্ষা। ভারতবর্ষের স্বাধীনতার একটু আগে এ ধারার একটা বিশ্ববিদ্যালয় জওহরলাল নেহুরুর অনুমতি ও মহাত্মা গান্ধীর আশীর্বাদ নিয়ে, মওলানা আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে দিল্লিতে স্থাপিত হয়েছে , নাম জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এটাও একটা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়।

জামিয়া মিলিয়া ইসলামী বিশ্ব বিদ্যালয়, দিল্লী ভারত

কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রমকে নিয়ে এতদিন ধরে একটি নেতিবাচক ধ্যান ধারনা সমাজের কিছু মানুষের কাছে প্রচলিত ছিল , কিন্তু কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রমকে সরকারী পর্যায়ে স্বীকৃতি দানের পরে গত কয়েকদিনের কর্মকান্ডে মানুষের মনে একটি পজিটিভ চিন্তা ভাবনার উন্মেষ ঘটছে বলে দেখা যাচ্ছে । হাটহাজারী মাদরাসার বড় নামকরা একজন আলেম শাহ আহমদ শফী প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে মোনাজাত পরিচালনা করেন। এটাকে কেন্দ্র করেই মুলত আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে দেশ জুড়ে ।

এটাই বাহ্যত দেখা যায় হেফাজত ইসলামের সাথে কওমী মাদরাসার সম্পর্ক।

হাটহাজারী দারুল উলুম মাদ্রাসা , বাংলাদেশ

তবে কিছুদিন আগে ২০১৩ সনে দেশের কতিপয় রাজনৈতিক দল মনে করেছিল সরকার উৎখাতে হেফাজত ইসলামকে ব্যবহার করবে । তাদের থেকে হেফাজতকে আলাদা করার জন্য আওয়ামী লীগ একটু ভিন্ন কৌশল মনে হয় অবলম্বন করেছে। হেফাজতকে দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তোলা যায় কিনা এটা তারই একটা চেষ্টার অংশ হতে পারে। এটা নি:সন্দেহে সামাজিক ক্ষেত্রে একটি গুরুতইপুর্ণ বিষয় হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে । দেশের সকলকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে সন্মূখপানে জাতীয় অগ্রগতির লক্ষ্যে । এখন প্রয়োজন দেশের সকল শিক্ষানুরাগী বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কওমী পাঠ্যক্রমকে কিভাবে আরো বেশী করে দ্বীনি ও সমাজের প্রতিটি পেশাগত ডিসিপ্লিনের সাথে সমন্বয় সাধন করা যায় সে বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা ।

ইংরেজি শিক্ষাকে বলে থাকি আধুনিক শিক্ষা। বাংলায় আধুনিক শিক্ষা হচ্ছে অনুবাদের মাধ্যমে। মাদরাসা শিক্ষায় কোরআন এবং হাদিস শিক্ষা দেয়া হয়, তবে ছাত্রদেকে ব্যাখা বিশ্লেষন করে বোঝানো হয় পরিস্কার বাংলাতে । তবে এটা সত্য যে কওমী মাদরাসাগুলোতে চিকিৎসা শাস্ত্র , ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি বিয়য়ে শিক্ষা দেয়া হয়না, শিক্ষার্থীগন সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা কওমী মাদরাসা শিক্ষার একটা দুর্বলতা, এটা অস্বীকার করার উপায় নাই । তবে এটাও সত্যযে আমরা নিজেরাই তো এখনো উপনিবেশের শিক্ষাতে ডুবে আছি, জাতীয় শিক্ষা গড়ে তুলতে পারিনি।

কওমী মাদরাসাসমূহের হিতাকাক্সক্ষী ও এর প্রতি সহমর্মী অনেকেই এখন এই শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে কারিগরি শিক্ষাকে সমন্বিত করার বিষয়ে মতামত রাখছেন বলে দেখা যায় । ধারণা করা হয় উলামায়ে কেরামগন অর্থনৈতিক দিক থেকে সমাজের বোঝা না হয়ে নিজ যোগ্যতায় জীবনোপকরণের ব্যবস্থা করে দ্বীনের খিদমত আঞ্জাম করার পাশাপাশি দেশের জাতীয় সমৃদ্ধির জন্য জাগতিক বিষয়েও মুল্যবান অবদান রাখতে সক্ষম হবেন যদি শিক্ষা ব্যবস্থায় কারিগরী কিছু বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা যায় যথোপযুক্ত ভাবে । কওমী শিক্ষা স্তরের উপরের পর্যায়ে বিষয় ভিত্তিক বিভাজন করে ছাত্র ছাত্রীদের উপরেই সিন্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া যেতে পারে, তাঁরা কোন বিষয়ে উচ্চতর পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ হবেন । যদিও এ কথা সত্য যে কুরআন ও হাদীসের ন্যায় এমন একটি ব্যাপক বিষয়ের ওপর পারদর্শিতা অর্জনে নিয়োজিত থাকার সময় কারিগরি বিষয়ে সময় ব্যয় করা বাস্তবতার নিরিখে একজন কওমী মাদ্রাসার ছাত্রের জন্য বেশ কষ্টকর হবে । কারণ দিনের বেশীর ভাগ সময় ব্যয় করে যেখানে কুরআন-হাদীস ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যোগ্যতা অর্জন করা কঠিন, সেখানে কারিগরি শিক্ষার পেছনে সময় ব্যয় করার সময় কোথায়? কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যাবস্থা সম্পর্কে আলেম ওলামাগনও বলে থাকেন সমাজের অন্যান্য পেশাজীবী মানুষের সেবা সমাজের সব মানুষ সব সময় গ্রহণ করে না। কিন্তু উলামায়ে কেরামের দ্বীনি সেবা সমাজের সব মানুষের জন্য সব সময় প্রয়োজন। তাই সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ওপর উলামায়ে কেরামের প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব অনেক অনেক বেশি। (সূত্র : কওমী মাদরাসার নেসাব ও নেযাম- দরসে নেযামীর কিতাবসমূহের পাঠদান পদ্ধতি। মূল : আল্লামা তাকী উসমানী, অনুবাদ : মাওলানা মুহাম্মাদ ওমর ফারুক, পৃষ্ঠা-১৭) ।

তবে জাতীয় ঐক্যের জন্য আমাদের একটা অভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা দরকার। মাদরাসার ক্ষেত্রে অনেক সময় বলা হয় সংবিধান লঙ্ঘন হচ্ছে , তাহলে প্রশ্ন জাগে আমরা যে ‘এ’ লেভেল এবং ‘ও’ লেভেলকে স্বীকৃতি দিচ্ছি সেখানে সংবিধান লঙ্ঘন হচ্ছে না কেন, এ ক্ষেত্রে হয়ত বলা হবে সেটা আন্তর্জাতিক সিলেবাস। তবে মনে রাখতে হবে মাদরাসার সিলেবাসটাও আন্তর্জাতিক। এটা ভারতীয়, সউদী আরবীয় এবং অন্যান্য দেশেও। তারা মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণ করে এবং দেওবন্দকেও অনুসরণ করে। আসল কথা হচ্ছে তারা সেখান থেকে মুলত ধর্মীয় শিক্ষাটি অনুসরণ করে । তবে এটা সত্য সউদী আরবের বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এখানে কওমীররা সেটা করছে না। এজন্যই হয়তবা কওমীরা বলছে তারা একটা ফ্যাকাল্টি বা বিভাগ মাত্র । এটা ফ্যাকাল্টি অব থিওলজি বা ধর্ম তত্ব বিভাগ , ফ্যাকাল্টি অব রিলিজিয়াস স্টাডিজ ইত্যাদি । ইংরেজী তথা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যদি আরবি ও ধর্মতত্তে মাস্টার্স ডিগ্রি দেয়া যায় তাহলে সেখানে কওমী মাদ্রাসার ফেকাল্টি বা বিভাগ হতে কেন তা দেয়া যাবেনা, সমালোচনা করার সময় সকলেই বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন ।

এখানে আরো একটি কথা উল্লেখযোগ্য , মাদরাসা শিক্ষা যে বিশেষ কিছু দিক দিয়ে আমাদের অন্যান্য শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ভালো এ কথা অনেক পন্ডিতই বলেছেন বেশ জোড় দিয়ে । কওমী সিলেবাসে লজিক বলে একটা শাস্ত্র আছে দেখা যায় । আমরা ইংরেজীতে যে লজিক পড়ি সেটা অপশনাল , পড়লে পড় না পড়লে না পড় । তাতে আরোহ- অবরোহ আছে। আরবিতে এটাকে বলে মানতেক। মানতেক মানে লজিক অর্থাৎ যুক্তি দিয়ে কথা বলাটাকেই বলে লজিক । আরবিতে আছে আল ইনসানু হাই ওয়ানুন নাতেকুন অর্থাৎ মানুষ যুক্তিশীল প্রাণী, এটা এরিস্টটলের বক্তব্য। কওমী মাদ্রাসাসহ আমাদের মাদরাসায় এখনো প্লেটো পড়ানো হয় যা আফলাতুন নামে পরিচিত । সেখানে আরস্তু নামে এরিস্টটলও পড়ানো হয়। সেখানে নিউপ্লাটোনিকদেরকেও পড়ানো হয়। তবে কওমী মাদ্রাসায় মার্কস ও এঞ্জেলদেরকে পড়ানো হয়না , এর প্রয়োজনীয়তাও এখন আর তেমন নেই । ইউরোপীয়দের দর্শনকে তথাকথিত ইসলামী দর্শন বলে যেটা পড়ানো হয় সেটা মুলত গ্রিক দর্শন ছাড়া আর কিছুই নয়। ইসলাম প্রচারের দুইশ বছর পরে নবম শতাব্দীতে কিছু জগত সেরা আরবীয় দার্শনিকবৃন্দ যথা আল কিন্দি, ইবনে সিনা এবং ইবনে রুশদ প্রমুখ যে দর্শন প্রচার ও প্রসার করে গেছেন সেটাই ইউরোপে গেছে। সেটাই আমরা এখন পাশ্চাত্ত দর্শন হিসাবে ধুমছে পড়ছি। আরো একটি কথা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজ সমুহে দর্শন পড়া কি আমাদের জন্য কখনো কি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ? বর্তমানে জ্ঞান গরিমায় সেরা ইউরোপিয়ান একটি দেশ ফ্রান্সের শিক্ষা ব্যবস্থায় দেখা যায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দর্শন বাধ্যতামূলক। আমরাতো সেটা অনুসরণ করছি না শুধু কওমী মাদরাসার উপরই আমাদের যত সমালোচনা ঝেড়ে দিচ্ছি । একমুখী তীব্র সমালোচনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে আমাদের সকলকে । মাদ্রাসাকে সংস্কার করতে হবে, তবে তার চেয়ে বেশি দরকার হয়ে পড়ছে আমাদের আত্মসংস্কারের।

সমাজের কোনো একটি অংশকে বিচ্ছিন্ন রেখে ভালো সমাজ বিনির্মাণ করা যাবে না , এটা সবাইকে মেনে নিতে হবে । প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ একটা বাস্তবতা উপলব্ধি করার জন্য। তবে এটা অনস্বীকার্য যে দেশের বিপুল সংখক ( প্রায় ১৪ লাখ ) শিক্ষার্থী যে বিদ্যা গ্রহণ করছে তার প্রায়োগিক দিক সমাজে খুবই কম। নিয়োগ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে এগুলোর প্রয়োগ সীমাবদ্দ । তাঁরা মূল সমাজ থেকে বলতে গেলে বিচ্ছিন্ন । যদিও তারা কোরআন-হাদীস ইত্যাদি বিষয়ে ভালো শিক্ষা গ্রহণ করে থাকেন । তাদেরকে সমাজের মধ্যে একীভূত করার প্রয়াস প্রশংসনীয়। তাদের এতদিন কোনো নিয়ন্ত্রনই ছিল না। এখন তাদের সাথে যোগসূত্রের যে সূচনা হলো, তাকে ভাল করে কাজে লাগানোর কৌশল হয়তো অচীরেই প্রণীত হবে। স্বতন্ত্রতা ও ঐতিহ্য নষ্ট হবে বলে আতীতে কওমীরা কোন অনুদান-দান গ্রহণ করতেন না, নিজেদের অর্থে পরিচালিত হতেন । সে ধারা তাদের ভাঙ্গতে হবে । কওমী শিক্ষা ধারায় মুলত চারটা স্তর আছে বলে দেখা যায় । এগুলো হলো হিদায়া ( যা এসএসসি পর্যায়ভুক্ত ), সরে বেকিয়া (এইচএসসিপর্যায়ভুক্ত ), মিসকাত ( স্নাতক অনার্স পর্যায়ভুক্ত ), দাওরা হলো কামিল ( স্নাতকোত্তর পর্যায়ভুক্ত ) । গত ১১ই এপ্রিল ২০১৭ তারিখে আপাতত দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি সাহিত্য) সমমান ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন প্রশ্ন জাগে প্রতিটি স্তরের পাঠ্যক্রমের সময়কাল নিয়ে , এগুলি যদি দেশে প্রচলিত অন্যান্য শিক্ষা স্তরের সময়ের সাথে মিলিয়ে নির্ধারণ করা না হয় তাহলে দন্ধ ও সংঘাত অনিবার্য । তাই বিষয়গুলি নিয়ে এখনই ভাবতে হবে দেশের সকল শিক্ষানুরাগী বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে, তা না হলে হয়তো প্রশ্নের মুখেই পড়বে এই কওমী স্বীকৃতি । তবে কওমীদেরে বৃহত্তর সমাজের সাথে একাত্ব করার যে মহৎ কাজটা শুরু হয়ে গেছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োচিত । আশা করছি আগামীতে কওমী মাদারাসা শিক্ষা ব্যাবস্থায় জড়িতরা নিজেরাই আধুনিক শিক্ষার বিষয়গুলো গ্রহণ করবেন নিজেদের প্রয়োজনেই। তবে এটাই সুখের কথা আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষায় সংস্কারের পর্বগুলো এখন জোড়েসুরেই শুরু হয়েছে বলা যায় । আলীয়া মাদ্রাসা ধারায় পাঠ্য বইয়ে স্কুল-কলেজের পাঠ্য বিষয়গুলি শুরু হয়েছে বেশ আগেই এখন কওমীদের ক্ষেত্রেও এটা শুরু হলে মূল সমাজের মধ্যে তারা একীভূত হয়ে যাবে, জাতীয় এক্য হবে সুসংহত ।

অনেক ধন্যবাদ আপনার মুল্যবান পোষ্টটি দিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত একটি আলোচনার সুযোগ করে দেয়ার জন্য । এ বিষয়গুলি নিয়ে আমি আপনার মত এত বিষদ জানিনা , তবে গত কয়েকদিন ধরে এ বিষয়টির উপর আলোচনা প্রেক্ষিতে কিছু প্রাসঙ্গীক কথাই শুধু বলা হল উপরে । ভুল ভ্রান্তি কিছু হলে ধরিয়ে দিলে নীজকে শুধরে নিব সেভাবে ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল । আল্লাহ সকলের সহায় হোন – আমীন

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:১৩

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: মহোদয় আপনার এ মন্তব্যটি পোষ্ট আকারে উপস্থাপন করেছি।

১৮| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ২:৫৯

ওমেরা বলেছেন: আমি এসব জানি ও না বুঝি ও না আপনারা জ্ঞানী গুনীরা যা বলেন তাই ঠিক মনে করি ধন্যবাদ ভাইয়া ।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৬

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

১৯| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৮

কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: ভালো একটি পোষ্ট। বুজলাম, কিন্তু আপনি কি নোয়াখালী বিভাগের পক্ষে নাকি কুমিল্লা বিভাগের পক্ষে বা কোনটি ভালো মনে করেন?

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৫

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমার বাড়ী লক্ষ্মীপুরঅ যার পও নোয়াখালী বিভাগই চই। তবে সেই সাথে কুমিল্লাও বিভাগ হোক সেটাও চাই।

২০| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৮

কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: বলেন কী? তাই নাকি? লক্ষ্মীপুরের কোন থানায়? আমি রামগন্জ হতে। লক্ষ্মীপুর-১

১১ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৪

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর। রামগঞ্জ সীমান্তে। আমাদের পাশের গ্রাম বদরপুর রামগঞ্জে। আমাদের নন্দীগ্রাম, রাজবাড়ী। পোদ্দার বাজারের পশ্চিমে। পোদ্দার বাজারে আমার দোকান আছে। আর রামগঞ্জের মানুষের সাথে আমাদের একাকার অবস্থা। আমার বড়ভাই কিছুদিন বালূয়া চৌমুহনী ছিলেন। সেপর্যন্ত আমিও গিয়েছি। জেনে ভাল লাগল প্রিয় কবি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.