![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তাহেরের শেষ চিঠি
'বাঙালি জাতির জন্য উদ্ভাসিত সূর্য উঠলো বলে'
ঢাকা, জানুয়ারি ১৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বাঙালি জাতির জন্য উদ্ভাসিত সূর্য উঠার আর দেরি নাই- সামরিক আদালতে গোপন বিচারে মৃত্যুদণ্ডের পর এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম।
১৯৭৬ সালের ১৮ জুলাই পত্রিকায় নিজের মৃত্যুদণ্ডের সংবাদ পড়ে পরিবারের উদ্দেশে লেখা শেষ চিঠিতে তাহের লিখেছিলেন, "বাঙালি জাতির জন্য উদ্ভাসিত সূর্যের আর কত দেরি। না, আর দেরি নাই। সূর্য উঠলো বলে।"
চিঠির শুরুতেই তাহের সামরিক আদালতে গোপন বিচারের রায়ের কথা লেখেন। এরপর তুলে ধরেন অপর সহদণ্ডপ্রাপ্তদের অনুভূতি।
একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের এই কমান্ডার লিখেন, "নীতু, মিশু ও যিশুর (তাহেরের সন্তানরা) কথা- সবার কথা মনে পড়ে। তাদের জন্য অর্থসম্পদ কিছুই আমি রেখে যাইনি, কিন্তু আমার সমগ্র জাতি রয়েছে তাদের জন্য।
"আমরা দেখেছি শত-সহস্র উলঙ্গ, মায়া ভালবাসা বঞ্চিত শিশু। তাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় আমরা গড়তে চেয়েছি।"
যুদ্ধাহত এই মুক্তিযোদ্ধা ওই চিঠিতে বলেন, "এদেশ সৃষ্টির জন্য আমি রক্ত দিয়েছি। সেই সূর্যের জন্য আমি প্রাণ দেব, যা আমার জাতিকে আলোকিত করবে, উজ্জীবিত করবে-এর চাইতে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে।
"আমাকে কেউ হত্যা করতে পারে না। আমি আমার সমগ্র জাতির মধ্যে প্রকাশিত। আমাকে হত্যা করতে হলে পুরো জাতিকে হত্যা করতে হবে। কোন শক্তি তা পারে, কেউ পারবে না।"
১৯৭৬ সালের ১৮ জুলাই পত্রিকায় নিজের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের সংবাদ সম্পর্কে চিঠিতে তাহের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছিলেন, "মামলার যা বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা।"
মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর ওই মামলায় তাহেরের আইনজীবীরা তাকে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করার কথা জানালে তিনি স্পষ্টভাবে এ প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
চিঠিতে তাহের সে কথাও লিখেছেন।
"আমি তাদেরকে (আইনজীবীদের) স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলাম রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো আবেদন করা চলবে না। এই রাষ্ট্রপতিকে আমিই রাষ্ট্রপতির আসনে বসিয়েছি, এই দেশদ্রোহীদের কাছে আমি প্রাণভিক্ষা চাইতে পারি না।"
ওই মামলায় তাহেরের সঙ্গে মেজর জিয়াউদ্দিনের ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা হয়। কারাগারে বসে তিনি কবিতা লিখতেন।
চিঠির শেষে জিয়াউদ্দিনের লেখা একটি কবিতার কয়েকটি পঙক্তি উল্লেখ করেন। এটি ওই বছরের ১৫ জুলাই লেখা।
কবিতার অংশবিশেষ- "...জন্মেছি, সারা দেশটাকে কাঁপিয়ে তুলতে
কাঁপিয়ে দিলাম।
জন্মেছি, তোদের শোষণের হাত দুটো ভাঙবো বলে
ভেঙে দিলাম।
...পায়ের নীচে শোষক আর শাসকের
কবর দিলাম।
পৃথিবী অবশেষে এবারের মত বিদায় নিলাম।"
তাহেরের নঙ্গে ওই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তার ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন শেষ লেখা ওই চিঠি সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন, "১৯৭৬ সালের ২০ জুলাই কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে তাহেরের সঙ্গে দেখা করতে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি (তাহের) আমাকে চিঠিটি পড়ে শুনিয়েছিলেন।"
অধ্যাপক আনোয়ার জানান, পরে ফাঁসির আগে সম্ভবত কারারক্ষীদের কারো মাধ্যমে তিনি (তাহের) চিঠিটি বাইরে পাঠাতে সক্ষম হন। এভাবেই চিঠিটি পৌঁছায় পরিবারের সদস্যদের কাছে।
অধ্যাপক আনোয়ার আরো জানান, চিঠিটির দুটি কপি লিখেছিলেন তিনি। একটি ডায়রিতে, অন্যটি কাগজে। ছয় পৃষ্ঠার কাগজে লেখা ওই চিঠিটিই বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
চিঠিটি শুরু করেন এভাবে, 'শ্রদ্ধেয় আব্বা, আম্মা, প্রিয় লুৎফা, ভাইজান, আমার ভাই বোনেরা'।
আর শেষ করেছেন, 'তোমাদের তাহের' দিয়ে।
তাহের জন্মেছিলেন ১৯৩৮ সালের ১৪ নভেম্বর আসামের বদরপুরে। তিনি ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ কল্যাণে মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর সময় তিনি ছিলেন তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে। ওই বছরের ২০ জুলাই মেজর এম এ মঞ্জুর, মেজর জিয়াউদ্দিন ও ক্যাপ্টেন পাটোয়ারিকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানের এবোটাবাদ থেকে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পৌঁছান।
পরে ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসাবে যোগ দেন স্বাধীনতা যুদ্ধে। ১৪ নভেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে একটি পা হারান তিনি।
স্বাধীনতার পর সক্রিয় হন জাসদের রাজনীতিতে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান চলে। এরই এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নেন এবং সামরিক আদালতে গোপন বিচারে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এম এ তাহেরসহ ১৭ জনকে সাজা দেওয়া হয়। ১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই ওই রায়ের পর ২১ জুলাই ভোররাতে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএন/এইচএ/২২০৭ ঘ.
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৪২
াহো বলেছেন:
জিয়াউর রহমান ১৯৭৬-এর ২৯শে নভেম্বরে প্রধান সামরিক শাসক সায়েমের বিরুদ্ধে ক্যু করে নিজে প্রধান সামরিক প্রশাসক
Click This Link
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৩২
াহো বলেছেন:
কর্নেল তাহের ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেলেন জীবনের জয়গান :কালের কন্ঠ ২১ জুলাই ২০১০
Click This Link
জিয়া যে এতো নিষ্ঠুর ছিল তা জানতাম না :লুৎফা তাহের ittefaq 2010/08/27/
Click This Link
বিদেশি বন্ধুর চোখে কর্নেল তাহের
Click This Link
কর্নেল তাহের: এক অমীমাংসিত চরিত্র
Click This Link
হ্যাঁ আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি নুরুজ্জামান মানিক
Click This Link
'বাংলাদেশ : দ্য আনফিনিশড রেভু্যলিউ[শন'।
লরেন্স লিফশুলজ
Click This Link
'
তাহেরের মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্যকিছু শুনতে চাননি জিয়া'
Click This Link