নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফরটি ইজ দা নিউ থারটি

ফরটি ইজ দা নিউ থারটি

ফরটি ইজ দা নিউ থারটি › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেঘনাদবধ কাব্য/চতুর্থ সর্গ

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫৭

মেঘনাদবধ কাব্য/চতুর্থ সর্গ

লিখেছেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত





নমি আমি,কবি-গুরু তব পদাম্বুজে,

বাল্মীকি;হে ভারতের শিরঃচূড়ামণি,

তব অনুগামী দাস,রাজেন্দ্র-সঙ্গমে

দিন যথা যায় দূর তীর্থ দরশনে;

তব পদ-চিহ্ন ধ্যান করি দিবানিশি,

পশিয়াছে কত যাত্রী যশের মন্দিরে,

দমনিয়া ভব-দম দুরন্ত শমনে---

অমর; শ্রীভর্ত্তৃহরি; সূরী ভবভূতি

শ্রীকন্ঠ;ভারতে খ্যাত বরপুত্র যিনি

ভারতীর, কালিদাস--সুমধুর-ভাষী;

মুরারী-মূরলীধ্বনি-সদৃশ মুরারি

মনোহর;কীর্ত্তিবাস,কীর্ত্তিবাস কবি,

এ বঙ্গের অলঙকার;--হে পিতঃ, কেমনে,

কবিতা-রসের সরে রাজহংস-কুলে

মিলি করি কেলি আমি, না শিখালে তুমি?

গাঁথিব নূতন মালা ,তুলি সযতনে

তব কাব্যদানে ফুল; ইচ্ছা সাজাইতে

বিবিধ ভূষনে ভাষা; কিন্তু কোথা পাব

( দীন আমি; ) রত্নরাজী,তুমি নাহি দিলে,

রত্নাকর ? কৃপা,প্রভু কর আকিন্চনে।

একাকিনি শোকাকুলা, অশোক-কাননে

কাঁদেন রাঘব-বান্ছা আঁধার কুটিরে

নীরবে;দুরন্ত চেড়ী,সতীরে ছাড়িয়া,

ফেরে দূরে মত্ত সবে উৎসব-কৌতুকে--

হীন-প্রাণা হরিণীরে রাখিয়া বাঘিনী

নির্ভয় হৃদয়ে যথা ফেরে দূর বনে

মলিন-বদনা দেবী,হায় রে যেমতি

খনির তিমির গর্ভে ( না পারে পশিতে

সৌর-কর-রাশি যথা ) সূর্য্যকান্ত-মণি;

কিম্বা বিম্বাধরা রমা অম্বুরাশি-তলে;

স্বনিছে পবন, দূরে রহিয়া রহিয়া

উছ্বাসে বিলাপী যথা; লড়িছে বিষাদে

মর্মরিয়া পাতাকুল; বসেছে অরবে

শাখে পাখী; রাশি রাশি কুসুম পড়েছে

তরুমূলে; যেন তরু, তাপি মনস্তাপে,

ফেলিয়াছে খুলি সাজ; দূরে প্রবাহিণী,

উচ্চ বিচী-রবে কাঁদি, চলিছে সাগরে,

কহিতে বারীশে যেন এ দুঃখ-কাহিনী;

না পশে সুধাংশু-অংশু সে ঘোর বিপিনে

ফোটে কি কমল কভু সমল সলিলে ?

তবুও উজ্বল বন ও অপূর্ব্ব রূপে;

একাকিনী বসি দেবী, প্রভা আভাময়ী,

তমোময় ধামে যেন ; হেন কালে তথা

সরমা সুন্দরী আসি বসিলা কাঁদিয়া

সতীর চরণ-তলে,সরমা সুন্দরী--

রক্ষঃকুল-রাজলক্ষী রক্ষোবধূ-বেশে;

কতক্ষনে চক্ষু-জল মুছি সুলোচনা

কহিলা মধুর স্বরে; " দুরন্ত চেড়ীরা,

তোমারে ছাড়িয়া, দেবি ফিরিছে নগরে,

মহোৎসবে রত সবে আজি নিশা-কালে;

এই কথা শুনি আমি আইনু পূজিতে

পা-দুখানি। আনিয়াছি কৌটায় ভরিয়া

সিন্দুর; করিলে আজ্ঞা,সুন্দর ললাটে

দিব ফোঁটা। এয়ো তুমি, তোমার কি সাজে

এ বেশ ? নিষ্ঠুর,হায়, দুষ্ট লঙ্কাপতি ;

কে ছেঁড়ে পদ্মের পর্ণ ? কেমনে হরিল

ও বরাঙ্গ-অলঙ্কার, বুঝিতে না পারি ?

কৌটা খুলি,রক্ষো বধূ যত্নে দিলা ফোঁটা ।

সীমন্তে ; সিন্দুর বিন্দু শোভিল ললাটে ,

গোধূলি-ললাটে, আহা; তারা-রত্ন-যথা ;

দিয়া ফোঁটা, পদ-ধূলি লইলা সরমা ।

" ক্ষম লক্ষি, ছুইনু ও দেব-আকাঙ্খিত

তনু;কিন্তু চির-দাসী দাসী ও চরণে;"

এতেক কহিয়া পুনঃ বসিলা যুবতী

পদতলে;আহা মরি সুবর্ণ-দেউটি

তুলসীর মূলে যেন জ্বলিল, উজলি

দশ দিশ; মৃদু-স্বরে কহিলা মৈথিলী;---

" বৃথা গন্জ দশাননে তুমি, বিধুমুখী ;

আপনি খুলিয়া আমি ফেলাইনু দূরে

আভরণ,যবে পাপী আমারে ধরিল

বনাশ্রমে। ছড়াইনু পথে সে সকলে,

চিহ্ন হেতু। সেই হেতু আনিয়াছে হেথা--

এ কনক-লঙ্কাপুরে----ধীর রঘুনাথে ;

মণি,মুক্তা, রতন, কি আছে লো জগতে,

যাহে নাহি অবহেলি লভিতে সে ধনে ?

যথা গোমুখীর মুখ হইতে সুস্বনে

ঝরে পূত বারি-ধারা, কহিলা জানকী,

মধুর ভাষিণী সতী, আদরে সম্ভাষি

সরমারে,---"হিতৈষিণী সীতার পরমা

তুমি,সখি; পূর্ব্ব-কথা শুনিবারে যদি

ইচ্ছা তব,কহি আমি, শুন মনঃ দিয়া ।---

ছিনু মোরা, সুলোচনে, গোদাবরী-তীরে,

কপোত কপোতী যথা উচ্চ বৃক্ষ-চূড়ে

বাঁধি নীড়,থাকে সুখে;ছিনু ঘোর বনে,

নাম পঞ্চবটী,মর্ত্ত্যে সুর-বন-সম।

সদা করিতেন সেবা লক্ষণ সুমতি।

দন্ডক ভান্ডার যার, ভাবি দেখ মনে,

কিসের অভাব তার? যোগাতেন আনি

নিত্য ফল-মূল বীর সৌমিত্রি; মৃগয়া

করিতেন কভু প্রভু; কিন্তু জীব নাশে

সতত বিরত,সখি রাঘবেন্দ্র বলী,---

দয়ার সাগর নাথ ,বিদিত জগতে;

"ভুলিনু পূর্ব্বের সুখ। রাজার নন্দিনী

রঘু-কুল-বধু আমি; কিন্তু এ কাননে,

পাইনু, সরমা সই,পরম পিরীতি ;

কুটীরের চারিদিকে কত যে ফুটিত

ফুলকুল নিত্য নিত্য,কহিব কেমনে?

পঞ্চবটী-বন-চর মধু নিরবধি;

জাগাত প্রভাতে মোরে কহরি সুস্বরে

পিকরাজ;কোন রাণী,কহ; শশিুমুখি,

হেন চিত্ত-বিনোদন বৈতালিক-গীতে

খোলে আঁখি? শিখী সহ । শিখীনি সুখিনী

নাচিত দুয়ারে মোর; নর্ত্তক,নর্ত্তকী,

এ দোঁহার সম, রামা,আছে কি জগতে ?

অতিথি আসিত নিত্য করভ,করভী,

মৃগ- শিশু, বিহঙ্গম,স্বর্ণ-অঙ্গ কেহ,

কেহ, শুভ্র,কেহ কাল,কেহ বা চিত্রিত,

যথা বাসবের ধনুঃ ঘন-বন-শিরে;

অহিংসক জীব যত। সেবিতাম সবে,

মহাদরে; পালিতাম পরম যতনে,

মরুভূমে স্রতোস্বতী তৃষাতুরে যথা,

আপনি সুজলবতী বারিদ-প্রসাদে।

সরসী আরসি মোর ; তুলি কুবলয়ে,

( অতুল রতন-সম ) পরিতাম কেশে ;

সাজিতাম ফুল-সাজে ; হাসিতেন প্রভু,

বনদেবী বলি মোরে সম্ভাষি কৌতুকে ;

হায়, সখি, আর কি লো পাব প্রাণনাথে?

আর কি এ পোড়া আঁখি এ ছার জনমে

দেখিবে সে পা-দুখানি---আশার সরসে

রাজীব ; নয়ন মণি? হে দারুণ বিধি,

কি পাপে পাপী এ দাসী তোমার সমীপে?



এতেক কহিয়া দেবী কাঁদিলা নীরবে ।

কাঁদিলা সরমা সতী তিতি অশ্রু-নীরে।

কতক্ষনে চক্ষু-জল মুছি রক্ষোবধূ

সরমা, কহিলা সতী সীতার চরণে;---

" স্মরিলে পূর্ব্বের কথা ব্যাথা মনে যদি

পাও, দেবী, থাক তবে ; কি কাজ স্মরিয়া ?---

হেরি তব অশ্রু-বারি ইচ্ছি মরিবারে ; "



উত্তরিলা প্রিয়ম্বদা ( কাদম্বা যেমতি

মধু-স্বরা ) ;--"এ অভাগী,হায়, লো সুভগে,

যদি না কাঁদিবে, তবে কে আর কাঁদিবে

এ জগতে ? কহি, শুন পূর্ব্বের কাহিনী।

বরিষার কালে,সখি,প্লাবন-পীড়নে

কাতর,প্রবাহ,ঢালে,তীর অতিক্রমি,

বারি-রাশি দুই পাশে; তেমতি যে মনঃ

দুঃখিত,দুঃখের কথা কহে সে অপরে।

তেঁই আমি কহি,তুমি শুন,লো সরমে ;

কে আছে সীতার আর এ অবরু-পুরে?

" পঞ্চবটী-বনে মোরা গোদাবরী-তটে

ছিনু সুখে। হায়, সখি,কেমনে বর্ণিব

সে কান্তার-কান্তি আমি ? সতত স্বপনে

শুনিতাম মন-বীণা বন-দেবী-করে;

সরসীর তীরে বসি, দেখিতাম কভু

সৌর-কর-রাশি-বেশে সুরবালা-কেলি

পদ্মবনে; কভু সাধ্ধী ঋষিবংশ-বধূ

সুহাসিনী আসিতেন দাসীর কুটীরে,

সুধাংশুর অংশু যেন অন্ধকার ধামে;

অজিন ( রন্জিত, আহা, কত শত রঙে; )

পাতি বসিতাম কভু দীর্ঘ তরুমূলে,

সখী-ভাবে সম্ভাষিয়া ছায়ায়,কভু বা

কুরঙ্গিনী-সঙ্গে রঙ্গে নাচিতাম বনে,

গাইতাম গীত শুনি কোকিলের ধ্বনি;

নব-লতিকার,সতি দিতাম বিবাহ

তরু-সহ; চুম্বিতাম মন্জরিত যবে

দম্পতী, মন্জরীবৃন্দে আনন্দে সম্ভাষি

নাতিনী বলিয়া সবে; গুন্জরিলে অলি,

নাতিনী-জামাই বলি বরিতাম তারে;

কভু বা প্রভুরর সহ ভ্রমিতাম সুখে

নদী-তটে; দেখিতাম তরল সলিলে

নূতন গগন যেন,নব তারাবলী,

নব নিশাকান্ত-কান্তি ; কভু বা উঠিয়া

পর্ব্বত-উপরে ,সখি বসিতাম আমি

নাথের চরণ-তলে, ব্রততী যেমতি

বিশাল রসাল-মূলে; কত যে আদরে

তুষিতেন প্রভু মোরে, বরষি বচন-

সুধা, হায়, কব কারে ? কব বা কেমনে ?

শুনেছি কৈলাস-পুরে কৈলাস-নিবাসী

ব্যোমকেশ,স্বর্ণাসনে বসি গৌরী-সনে,

আগম,পুরাণ, বেদ, পঞ্চতন্ত্র-কথা

পঞ্চমুখে পঞ্চমুখ কহেন উমারে;

শুনিতাম সেইরূপে আমিও,রূপি,

নানাকথা ; এখনও, এ বিজন বনে,

ভাবি আমি শুনি যেন সে মধুর বাণী ;---

সাঙ্গ কি দাসীর পক্ষে, হে নিষ্ঠুর বিধি,

সে সঙ্গীত ?"---নীরবিলা আয়ত-লোচনা

বিষাদে। কহিলা তবে সরমা সুন্দরী ;---

"শুনিলে তোমার কথা, রাঘব-রমণি,

ঘৃণা জন্মে রাজ-ভোগে ; ইচ্ছা করে,ত্যজি

রাজ্য-সুখ, যাই চলি হেন বনবাসে ;

কিন্তু ভেবে দেখি যদি,ভয় হয় মনে।

রবিকর যবে, দেবি, পশে বনস্থলে

তমোময়,নিজগুনে আলো করে বনে

সে কিরণ; নিশি যবে যায় কোন দেশে,

মলিন-বদন সবে তার সমাগমে;

যথা পদার্পণ তুমি কর, মধুমতি,

কেন না হইবে সুখী সর্ব্ব জন তথা,

জগৎ-আনন্দ তুমি, ভুবন-মোহিনী ;

কহ, দেবি, কি কৌশলে হরিল তোমারে

রক্ষঃপতি? শুনিয়াছে বীণা-ধ্বনি দাসী,

পিকবর-রব নব পল্লব-মাঝারে

সরষ মধুর মাসে ; কিন্তু নাহি শুনি

হেন মধুমাখা কথা কভু এ জগতে;"

===***===





মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:২০

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: পোস্ট করে লা-পাত্তা? কি কারণে 'মেঘনাঘ বধ' এখনে পেস্ট করা হচ্ছে, শুনতে চাই!

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:৫৮

ফরটি ইজ দা নিউ থারটি বলেছেন: oil your own machine

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:১১

আরজু পনি বলেছেন:


সাথে ব্যাখ্যা করে দিলে আরো ভালো হতো ।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১১

ফরটি ইজ দা নিউ থারটি বলেছেন: ক্লাসিক পদ্যের নমুনা দিলাম, নতুন কবিদের শিক্ষার জন্য

৩| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:০১

আরজু পনি বলেছেন:

নতুন কবিরা কি আসলেই এই ক্লাসিক পদ্য নিয়ে ভাববে ? মনে তো হয় না :|

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৫:১৯

ফরটি ইজ দা নিউ থারটি বলেছেন: আমারও মনে হয় না, তাই বলে সবখানেই যে অখাদ্য খেতে হবে, সেটারও কোন মানে নেই

৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৫:১৮

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: আপনি নতুন কবিদের জন্য মেঘনাধ বধ থেকে কপি -পেস্ট করে দিচ্ছেন; ভালো।

ঢাকা ইুনিভার্রসিটির বাংলা ডিপার্টমেন্টের কয়জন লেকচারার মেঘনাধ বধ কাব্য বুঝে?

৫| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪৬

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: এবার অন্য কিছু একটা দেন, কমপক্ষে 'মেঘদুত'।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:০১

ফরটি ইজ দা নিউ থারটি বলেছেন:
তন্বী শ্যামা শিখরিদশনা পক্কবিম্বাধরোষ্ঠী
মধ্যে ক্ষামা চকিতহরিণীপ্রেক্ষণা নিম্ননাভি:।
শ্রোণীভারাদলসগমনা স্তোকনম্রা স্তনাভ্যাং
যা তত্র স্যাদ্ যুবতিবিষয়ে সৃষ্টিবাদ্যেব ধাতু:।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.