![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেয়েটি প্রথম থেকেই এমন ছিল।নিজে থেকেই ফোন দিত।
ফোন দিয়েই বলতো..অামি অাপনার অপরিচিতা একটু কথা বলতে পারি???
এমন মিষ্টি একটা কন্ঠ শুনলে মুগ্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকতো না।মুগ্ধ হয়েই বলতাম...অবশ্যই অাপু,কেন নয়???!!!!
- কেমন অাছেন ???
- এইতো অাপু ভালো।অাপনি???
- ভালো। অার ভাইয়া পড়াশুনা কেমন চলছে???
- এইতো মুটামুটি।অাপনার কেমন চলছে পড়াশুনা??
- অামারও সেম।অামিতো অাপনার অপরিচিতা।তাই একটা পারসোনাল প্রশ্ন জিঙ্গেস করি????
- অবশ্যই করতে পারেন
- অাপনার গার্লফ্রেন্ড অাছে ভাইয়া????
- না অাপু,মাছ এখনো জালে ধরা দেয়নি
- সত্যিই বলছেন তো.......
বলেই এক অট্টহাসি দিত মেয়েটি।হাসিতে পৃথিবী এপাশ থেকে ওপাশে দোল খেত।অামি হাসি শুনে উত্তর দেওয়া ভুলে যেতাম.....
যখন অামি বলতাম....হ্যাঁ অাপু সত্যিই বলছি।জাল খালি....ততক্ষনে মোবাইল টুটু শব্দ করে চলছে।
অামি ফোন করলাম কিন্তুু ফোন বন্ধ।অনেক বার ট্রাই করেতাম ফোনে।পরের দিন নতুন কর্মসূচী sms কিংবা mms. তারপরও কাজ হত না।
মাঝে মাঝে মনে হত ফোন নম্বরটা ব্লেক লিস্টে দিয়ে দিই।কিন্তুু তখন অামার মাথায় ঘুরতো সেই হাসিটা।সেই হাসিটা নিয়ে একসপ্তাহ পার করার পর
হাসিকন্যার অাবার ফোন পেলাম।এবার অারেকটা নতুন নম্বর থেকে.....
- কেমন অাছেন ভাইয়া???
- এইতো অাপু ভালো।অাপনাকে এই সাত দিনে কতবার ফোন করেছি অাপনি জানেন????
- কেন ফোন করেছিলেন ভাইয়া???
- অাপনার হাসি শোনার জন্য.......
বলতেই শুরু করতো হাসি।অকারনে হাসি। অার অামি গুগ্ধ শ্রোতা।
- অাজ কয়মিনিট কথা বলবেন???
- তিন মিনিট।অানুপাতিক হারে বাড়বে এক মিনিট
- পরের বার কখন কথা হবে???
- একসপ্তাহ পর
- কাল ফোন করা যায় না.....
টুট টুট।ফোন দিলাম না।জানি ফোন বন্ধ।তুমি যেই হও অার যতদিন পরেই ফোন দাও।অামি তোমার হাসি শোনার জন্য অনন্তকাল অপেক্ষা করতে প্রস্তুুত।কিন্তুুু মেয়েটি কেন এমন করছে বুঝতে পারছি না।
ভেবেই রেখিছি এক সপ্তাহ পর ফোন দেবে কিন্তুু তিনদিন পরেই মেয়েটির ফোন পেয়ে অবাক হলাম।
- হ্যালো কেমন অাছেন ???
- এইতো,অাপনি ????
- অামিও ভালো।
- এইবার এত তাড়াতাড়ি ফোন দিলেন বুঝলাম না।
- মন খারাপ।
- কেন
- বান্ধবীর সাথে ঝগড়া হয়েছে
এভাবেই চলতো অাইন্টাইনের সূত্র অনুযায়ী খুবই অল্প কথা।কিন্তুু মিনিট ঘন্টা দিন পার হয়ে যেত।পরে জানতে পারলাম মেয়েটির এরকম পাঁচটি নম্বর অাছে যেগুলোতে মেয়েটি নম্বর অান্তাজে বানিয়ে ফোন দেয় অার অাপরিচিতা সেজে কথা বলে।তিন থেকে চার মিনিট কথা বলার পর ফোন বন্ধ করে দেয়।পড়ার ফাঁকে কিছু বিনোদন খোঁজে।
কথার বিষয় বস্তুু সবসময় অদেখা মেয়েটিই নির্ধারন করতো।কখনো সাগরে, পাহাড়ে পর্বতে কিংবা কখনো নিতান্ত পল্লির বুকে ঘুরে বেড়াতাম একেবারে ফুরফুরে মেজাজে হোস্টেলে বসেই শুধুমাত্র চিন্তার জগতে।
একসময় ভেবে দেখলাম হাসিকন্য মনকন্যা হয়ে উঠেছে।মনকন্যা ছাড়া বেঁচে থাকার মানেই হয় না।
মনকন্যার সাথে একদিন দেখা করলাম।হাসির সাথে চেহারার মিল পেলাম।
মনকন্যা একদিন ফোন করে বলল,অামি বাসা থেকে চলে এসেছি।তুমি যেখানে নিয়ে যাবা সেখানেই যাব।
তুমি কমলাপুর স্টেশনে অপেক্ষা কর।অামি অাসতেছি।চটগ্রাম যাব।
- একটা কেবিন পুরোটা ভাড়া করার কি দরকার ছিল????
- অামার মনকন্যা যাবে বলে কথা।কেবিন না পুরো ট্রেন ভাড়া করতে ইচ্ছে করছে
- (মনকন্যার পৃথিবী ভোলানো হাসির পর) কেবিনেতো কেউ থাকবে না।তখন ভেববে ট্রেনে শুধু অামরাই অাছি।তাইতো হল।এখন তুমি বস।
- ওকে তুমি বস অামি কিছু খাবার কিনে নিয়ে অাসি
মানুষ তার ভবিষ্যত দেখতে পারলে ভালো হত।যেহেতু দেখতে পারে না তাই অামিও বুঝতে পারিনি স্টেশনে অামার চাচার সাথে দেখা হবে।
- রাব্বী।এই রাব্বী!!!স্টেশনে কি!!!!
- হ্যাঁ কাক্কু কেমন অাছেন???এমনিতেই ফ্রেন্ডকে ট্রেনে তোলে দিতে এসেছিলাম।
- তোলে দিয়েছো???
- হ্যাঁ, অার অান্টি কেমন অাছেন???
- এইতো ভালো।এখন অার ঘুরাঘুরি করতে হবে না।বাসায় চল।অার তো কোন কাজ নেই!!!!
- না।অান্টি চলেন
মনকন্যা মেয়েটিকে চট্রগ্রামের ট্রেনের কেবিনে তুলে দিয়েছি।অামি বাসায় অাসার জন্য সি এন জি খোঁজছি।
মেয়েটি ট্রেন ছাড়ার পর খোঁজতে থাকবে অামাকে।
ড্রাইভার হুইসেল দিয়ে ট্রেন চালাতে শুরু করবে।কেউ একজন মিসিং অাছে ট্রেনে এটা নিয়ে ট্রেনের ড্রাইভারের কোন মাথাব্যথা নেই।ট্রেন চলা শুরু করলে যাত্রীদের ভালোলাগা শুরু হবে কিন্তুু মেয়েটির খারাপ লাগা শুরু হবে।মেয়েটির জন্য অালাদা করা রিংটোন অামার মোবাইলে অার বাজবে না।কারন অামার মোবাইল চার্জের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
পরের স্টেশনে যাত্রীরা খুশিতে নিচে নামবে।অার মেয়েটি মন খারাপ করে একলা কেবিনে কাঁদা শুরু করবে।
অার অামি.....!!!!!!!
সত্য ঘটনা অবলম্বনে।ইন্টারমিডিয়েট বড়ই খারাপ সময়।
©somewhere in net ltd.