হাওয়া ভবন আর আয়নাঘরের তুলনা কেনো হাস্যকর?

২০ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:৩০

হাওয়া ভবন জিনিসটা ছিল একটা অফিস। বলতে পারেন মধুর ক্যান্টিনের মতো একটা জায়গা। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে ওঠা সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে দুর্নীতি। এখানে বসে বিভিন্ন লবিং তদবির করা হত।

আর আয়নাঘর একটা টর্চার সেল। সামরিক বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক শত শত জীবিত মানুষকে গুম করে এনে এখানে কবরের মতো ছোট জায়গায় বছরের পর বছর আটকে রাখা হত। এটা একটা মানবতাবিরোধী অপরাধ। আন্তর্জাতিক আদালতে এর বিচার হয়। এই এই দুইটা জিনিস এর তুলনা হয় কীভাবে? মগজ ধোলাই করা অরাজনৈতিক লোকজনের রাজনীতি চর্চা বড় ভয়াবহ। তবুও প্রশ্ন করুক আমরা উত্তর দিতে থাকি। রাজনীতি সচেতনতা বাড়ুক।

এর সাথে কয়েকটি কথা অ্যাড করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছি। সাকিব বিন রশিদের আইকিউমার্কা "আই হেইট পলিটিক্স" জেনারেশন হঠাৎ করেই পলিটিক্স নিয়ে মাথা ঘামালে যা হয় আর কি! একটা টর্চার সেলের সাথে তাই লিয়াজো-লবিং-তদবির বাণিজ্যের আখড়ার সাথে তুলনা শুরু করেছে। এর পেছনে রয়েছে যমুনা টিভির জনৈক সাংবাদিকের রুমিন ফারহানাকে করা উদ্ভট একটি প্রশ্ন, যে ক্ষমতায় গেলে আপনারা আবার "হাওয়া ভবন" চালু করবেন কিনা! গেঞ্জি (Gen-Z) তথা সাবেক আই হেইট পলিটিক্স জেনারেশনের অবগতির জন্য বলতে বাধ্য হচ্ছি, হাওয়া ভবন হচ্ছে ২০০১-০৬ মেয়াদের বিএনপি আমলের সরকারের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। বনানীর ১৩ নং রোডের ৫৩ নং হোল্ডিং। এটি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয় হলেও চেয়ারপারসনের চেয়ে এখানে বেশি নিয়মিত ছিলো তারেক রহমান, তার ঘনিষ্ঠদের নিয়ে। এটি তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হারিস চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, ইমরান সালেহ প্রিন্সরা নিয়ন্ত্রণ করতো। বিএনপি সরকারের আমলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে "হাওয়া ভবন" অন্যতম ভূমিকা রেখেছিলো। টেন্ডার, নিয়োগ বাণিজ্য, পদায়ন, বদলি, ব্যবসা, ইলেকশনের নমিনেশন এসব নিয়ন্ত্রণ হতো প্রায় দেশের হেডকোয়ার্টারের মতো বনে যাওয়া এই জায়গায়।

এই বৈশিষ্ট্যগুলো দেখলেই বোঝা যায়, দুইটার কোনোভাবেই তুলনা করা যায় না। সর্বোচ্চ শাস্তি ডিজার্ভ করা ক্রাইমের সাথে হাওয়া ভবনের এই তুলনাটা আসলে মূর্খতার পরিচয় দেয়। ঠিক যেমন মূর্খতার পরিচয় দেয় এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, দুইটাই এক আমরা জনগণই খারাপ, আগেই ভালো ছিলো - মার্কা কথাবার্তা! পড়াশোনা নাই যে ব্যাপারে, সেটা নিয়ে ট্রল করাটা চূড়ান্ত লেভেলের আবলামি।

০ টি +০/-০