নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফ এর দৃষ্টিভঙ্গি

ফ এর দৃষ্টিভঙ্গি › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেনো বাংলাদেশে জিন্নাহ আজও প্রাসঙ্গিক?

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৫

আমাদের দেশীয় বিফ লাভার তো বটেই, সাধারণ মানুষদেরও অবশ্যই ধন্যবাদ জানানো ও কৃতজ্ঞ থাকা উচিত যে মানুষটির প্রতি, তার নাম মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, দ্যা কায়েদ-এ-আযম। শুধু কুরবানীর ঈদ না, সবসময়ই তার কথা ও অবদান নিয়ে চর্চা হওয়া উচিত। ১৬ বছরের আওয়ামী দুঃশাসনে যার নাম নেয়াটাও নিষেধ ছিলো, আজ তাকে নিয়ে, তার ডেথ অ্যানিভার্সারি উপলক্ষে ঢাকায় প্রোগ্রাম হয়েছে। চিন্তা করা যায়? কে বলে আমরা অকৃতজ্ঞ?

এই ব্যক্তি মুসলমানদের জন্য আলাদা একটা স্টেট এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন বলেই ভারতবর্ষ ভেঙ্গে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিলো। ধর্মের ভিত্তিতে এই ভাগ না হলে আজ হয়তো ভারতের গেরুয়া সন্ত্রাসী, হিন্দুত্ববাদী, উগ্র হিন্দুবাদীদের হাতে পিটুনি খেয়ে, জবাই হয়ে, ধর্ষিত হয়ে মারা পড়া লাগতো। না আযান শোনা যেতো, না ঈদ পালন করা যেতো, না হিজাব পরিধান করা যেতো, না দাঁড়ি রাখা যেতো আর না গরুর মাংস খাওয়া যেতো।

এখানেই শেষ না। ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তান না হলে আজকের বাংলাদেশ রাষ্ট্রই হয়তো সৃষ্টি হতো না।

মজার ব্যাপার হলো, জিন্নাহ নিজে একজন সেক্যুলার ছিলেন। কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে ভারতভাগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন বেশ, এটা তার মেধা আর প্রজ্ঞার কারণেই। যদিও নিন্দুকেরা তার বিরুদ্ধে মদ আর শুকর খাওয়ার অভিযোগ তোলে, তা অবশ্য ধোপে টেকে না সহজে। সূত্রগুলো অসমর্থিত। পাশাপাশি ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তাকে এই সময়ের পোলাপাইনদের কাছে ভিলেন বানিয়ে রাখা হয়েছে। সেদিন ঢাকা মেডিকেলে তিনি কি, কোন উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আর ভাষা আন্দোলন ব্যাপারটা আসলে কি - এগুলো জানলে পোলাপাইনদের জ্ঞান খুলবে আর বিগত সরকারকে শুধু রাতদিন গালাগাল করবে, তাদের এতদিন মিথ্যা ইতিহাস গেলানোর জন্য। এটাই উত্তম সময়, সকল মিথ্যা ইতিহাস দূরীভূত করার, সবাইকে সঠিকটা জানানোর। যতদিন মুসলমান জাতি এই রাষ্ট্রে থাকবে, মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ এখানে প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবেন, কারও কারও কাছে রবিঠাকুর বা শেখ মুজিবের চেয়েও বেশি!

উইকিপিডিয়া থেকে কিছু তথ্য বা ইতিহাস তুলে ধরছি, সবার অবগতির জন্য, আপনাদের জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে -

''হিন্দু এবং মুসলমান কে ভারতীয় উপমহাদেশে দুটি ভাগে বিভক্ত করার জন্য একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় এবং এর মূল কারণ ছিল তৎকালীন সময়ে হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে বেশকিছু সংঘাত এবং অসমতা। এর প্রেক্ষিতে মূলত হিন্দু এবং মুসলমানকে দুটি আলাদা জাতিতে তথা রাষ্ট্রে বিভক্ত করার জন্য দ্বিজাতি তত্ত্ব উপস্থাপন করা হয় ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের প্রথমদিন। এবং এই তত্ত্বটি উপস্থাপনের পিছনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। অনেকে মনে করেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বি-জাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে লাহোর প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল এবং মুসলিম জাতীয়তাবাদ পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করেছিল। ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের প্রথমদিন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বিখ্যাত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ঘোষণা দেন। উক্ত ঘোষণায় তিনি বলেন, ভারতের সমস্যা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে নয়, দুই জাতির মধ্যে। এর মাধ্যমে মূলত ভারতে মুসলমান এবং হিন্দুদের মধ্যে জাতিগত পার্থক্য এবং অসমতা দেখা দিয়েছিল তার সম্পর্কে বলা হয়। সে সময় হিন্দু এবং মুসলিম দের মধ্যে এতটা পার্থক্য তৈরী হয়েছিল যে জিন্নাহ মনে করেছিলেন তাদেরকে একত্রে রাখা সম্ভব নয়। তাদের আলাদা আলাদা জাতি হিসেবে আলাদা আলাদা স্থানে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে এবং কোনভাবেই তাদেরকে একত্রিত করা যাবে না। যেহেতু তারা দুটি স্বতন্ত্র এবং পৃথক জাতি, তাই তাদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র তৈরি করে দেয়াই সমাধান মনে করেন। লাহোর অধিবেশনে জিন্নাহ মুসলমানদের পৃথক জাতি হিসেবে চিহ্নিত করেন। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর এরূপ ব্যাখ্যার ভিত্তিতে বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এ কে ফজলুল হক ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ মুসলিম লীগের অধিবেশনে মুসলমানদের পৃথক আবাসভূমি স্থাপনের রূপরেখা সম্বলিত একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নির্দেশে চৌধুরী খালেকুজ্জামান উক্ত প্রস্তাব সমর্থন করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়াতে এবং ভারতীয় নেতৃবৃন্দের মতামত না-নিয়ে ভারত সরকারের যুদ্ধে যোগদানের কারণে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তা আলোচনা করতে এবং ১৯৩৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশসমূহে মুসলিম লীগের পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণের জন্য মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪০ সালে লাহোরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সাধারণ অধিবেশন আহবান করেন। জিন্নাহ তাঁর দুঘণ্টারও অধিক সময়ব্যাপী বক্তৃতায় কংগ্রেস ও জাতীয়তাবাদী মুসলমানদের সমালোচনা করেন এবং দ্বি-জাতি তত্ত্ব ও মুসলমানদের স্বতন্ত্র আবাসভূমি দাবি করার পেছনের যুক্তিসমূহ তুলে ধরেন। তাঁর যুক্তিসমূহ সাধারণ মুসলিম জনতার মন জয় করে। বাংলার মুসলমানগণ, যারা উনিশ ও বিশ শতকের প্রথম দিকে নিজেদের আত্মপরিচয় খুঁজে ফিরছিল, পরিশেষে লাহোর প্রস্তাবের মধ্যে তার সন্ধান পায়। লাহোর প্রস্তাব তাদেরকে একটি জাতীয় চেতনা প্রদান করে। তখন থেকে মুসলিম রাজনীতির প্রধান ধ্যানধারণা হিন্দুদের অবিচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পরিবর্তে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক অস্তিত্ব অর্জনের দাবির রূপ পরিগ্রহ করে। ২৪ মার্চ প্রবল উৎসাহের মধ্য দিয়ে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।''


অতল শ্রদ্ধা এই বিজ্ঞ, পরিণামদর্শী মানুষটির জন্য। আল্লাহ আপনাকে মাগফিরাত নসিব করুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.