| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্কুল থেকে ফিরে খাবার খাবে, মা হয়তো খাবার রেডি করে রেখেছে। কিন্তু বাচ্চার স্কুল থেকে আর ফেরা হলো না। সে চলে গেলো না ফেরার দেশে!
যে চুলার আগুনে রান্না হয়, তার তাপমাত্রা বড়জোর হয় ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ১০০ ডিগ্রিতে তো পানিই ফুটতে শুরু করে। আর সেখানে একটা ফাইটার জেট যখন ক্র্যাশ করেছে, তখন এর আগুনের তাপমাত্রা উঠে যায় প্রায় ১০০০ থেকে ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস! চিন্তা করতে পারেন? কি পরিমাণ কষ্ট পেয়ে আমাদের আদরের সোনামণিরা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে, বার্ন ইউনিটে পুড়ে যাওয়া দেহ নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করছে! গায়ে সামান্য আঁচ পর্যন্ত লাগতে দেয় না যে মা-বাবা, তাদের আদরের সন্তান আজ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে! কি ঝড় বইছে তাদের ভেতর! শরীরের কোনো একটা অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে যে যন্ত্রণা হবে, এই যন্ত্রণার সামনে হয়তো তা কিছুই না!
আচ্ছা, ডিফেন্স সেক্টরের এত বিশাল বাজেট কই গেছে এতদিন? লুটেরার দল লুটে খেয়েছে! ডিফেন্স আপডেটের বদলে জনগণের ট্যাক্সের টাকা মূর্তি আর আতশবাজি ফোটানোতে খরচ করেছে! এদের দুর্নীতি যে আকাশ ছুঁয়েছিলো, তা বোঝাতেই হয়তো পাইলট আকাশে জীবন দিলেন। শুধু তাই না, ভাঁড়-তের আদেশে খু নী হাসিনা আমাদের ফোর্সকে এমনই পঙ্গু বানিয়ে রেখে গেছে, যে আকাশ প্রতিরক্ষা বলতে আমাদের এখন কিছুই নেই। ইতিমধ্যেই মোদিশাবকেরা উল্লাস শুরু করে দিয়েছে! বলুন তো, কেনো এমন ভাঙ্গারী এফ-৭ চাইনিজ রেপ্লিকা বিমান নিয়ে আমাদের পড়ে থাকতে হয়, যে বিমান সব দেশ ২০-৩০ বছর আগেই ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে? একাধিক জায়গায় দেখলাম, এটা নাকি ১৯৭৬ সালের মডেল! আমি তো বলি এদেশে বিমানবাহিনীর আসলে কোনো প্রয়োজন নেই। কি লাভ, এই সেক্টরে পয়সা নষ্ট করে? ইন্ডিয়া তো দূর, এরা মিয়ানমারের এয়ারস্পেসেও কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। আর আজকের ঘটনার পর লোগোতে ঈগল থাকা এয়ারফোর্সের কাকগুলো ফেসবুক পেইজের কমেন্টবক্সও বন্ধ করে রেখেছে!
এরকম ঘনবসতিপূর্ণ একটা শহরে লোকালয়ের উপর দিয়ে প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়নের প্ল্যান কোন হারামীর ছাওয়ালের ছিলো? তাও এমন পাইলটকে যে কিনা একজন শিক্ষানবিশ, যে কিনা কখনোই সলো ফ্লাইট চালায়নি, এটাই ছিলো তার প্রথম ইন্সট্রাক্টরবিহীন সলো ফ্লাই! প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনা এদেশে এটাই প্রথম না। এসব করতে হয় জনপদহীন এলাকায়। বিমানবাহিনীকে কারা বোঝাবে এসব? পাইলট নাকি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলো কোনো জনমানবহীন এলাকায় প্লেন ল্যান্ড করাতে। কিন্তু ঐ যে, ভাঙ্গারী! এসব অচল মাল পাইলটের কথা শুনবে কেনো?
আমি তো বলি এই শহরের আয়তনের ২০%-ই (কম বেশি হতে পারে) খেয়ে রেখেছে ক্যান্টনমেন্ট এরিয়া। কাজের কাজ কিছুই নাই, সম্মুখ সমরের অ্যাবিলিটি প্রশ্নবিদ্ধ, এত বড় এলাকা দিয়ে এরা করবেটা কি? এত বড় এরিয়ার পরও প্রশিক্ষণ বিমান আছড়ে পড়ে আবাসিক এলাকায়, স্কুলের বাচ্চাদের উপরে!
নিয়ম না মানাটাই এখানে নিয়ম! আকাম করবে একজন, তার মাশুল দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে হাজারজন। অতীতের প্রত্যেকটা বড় দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে রাজনীতি তথা লুকোছাপা করা হয়েছে। আর ইন্টেরিমকে যেহেতু এখন মোটেও বিশ্বাস করি না, সুতরাং তাদের কাছে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আদায় করতেই হবে। নিমতলী ট্র্যাজেডিতে ঐ এলাকার একজনের মুখে শোনা, নিজ হাতে ২০০+ ডেডবডি তারা নিজেরাই বের করেছিলো, কিন্তু অফিসিয়াল হিসেবে মৃতের সংখ্যা মেরেকেটে ১২০! লাশ আসলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহুল ব্যবহৃত একটি বস্তু! সবাই এ নিয়ে রাজনীতি করতে চায়। হাসুর তুলনায় বর্তমান ইন্টেরিম যে খুব সাধু তাও না। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় বায়ুসেনার বদলে তারা পায়ুসেনা বাড়াচ্ছে, পতিতাদের উদরপূর্তি করছে, পায়ুকামীদের উন্নয়ন করছে। এই দুর্ঘটনার দায় অবশ্যই বিমানবাহিনী আর সরকারকে নিতে হবে।
শুধু ইন্টেরিম কেনো, কাউকেই এখন আর বিশ্বাস করি না। অলরেডি একটা ভিডিও দেখে ফেলেছি, যেখানে যমুনা টিভির সাক্ষাৎকারে লাশের সংখ্যা বলে ফেলায় সেনাবাহিনী বেধড়ক পিটিয়েছে ছাত্র-শিক্ষকসহ অনেক লোককে! এবার কিছু বুঝে আসছে?
এভাবেই আমরা জীবন দিতে থাকবো নির্মাণাধীন ভবনের ইট মাথায় পড়ে, ছিনতাইকারীর হাতে, ফ্লাইওভার/মেট্রো/প্রজেক্টের কংক্রিটের চাই পড়ে, বাসের চাপায়, লঞ্চে ডুবে, ট্রেনের আগুনে পুড়ে, বিল্ডিং ধসে, ড্রেনে পড়ে!
অতীতের বড় দুর্ঘটনাগুলোর মতোই, এবারও মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই অনেক কথা বলবে, প্রশ্ন উত্থাপন করবে, সমাধানও বাতলে দেবে। কিন্তু ঐ সমাধানের পথে যাদের হাঁটার কথা, তারা আর হাঁটতে চাইবে না।
তারপর আবার একটা ঘটনা ঘটবে, আবার সবাই উচ্চকিত হবে। আর একসময় সবাই সবকিছু ভুলে যাবে। And the cycle goes on....
জুলাই হয়ে রইলো শোকের মাস! আল্লাহ বাচ্চাগুলোর জন্য শহীদি ফয়সালা করে দিন, আমীন!
©somewhere in net ltd.