![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি নিরপেক্ষ নই । আমি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে।
৭ মার্চের ভাষণ : পটভূমি ও তাৎপর্য
----------
ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ ভাষণটি দিয়েছিলেন। ১০ লক্ষাধিক লোকের সামনে পাকিস্তানি দস্যুদের কামান-বন্দুক-মেশিনগানের হুমকির মুখে বঙ্গশার্দুল শেখ মুজিব ওই দিন বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
কী পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু সেই ইতিহাস বিখ্যাত ভাষণ দিয়েছিলেন। ১৯৭০-এর ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। ১৩টি মহিলা আসনসহ জাতীয় পরিষদে আসন সংখ্যা ছিল ৩১৩টি (৩০০+১৩=৩১৩)। এর মধ্যে অবিভক্ত পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল- পূর্ব পাকিস্তানের আসন সংখ্যা ছিল ১৬৯টি (১৬২+৭=১৬৯)। ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯ আসনের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পায় ১৬৭টি আসন। ওই নির্বাচনে বহু রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। সামরিক আইনের অধীনে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগ ১৬৭টি আসন পাওয়ার পর বাকি ২টি আসন পায় পিডিপি। ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর তৎকালীন সামরিক প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ’৭১-এর ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের পিপিপি নেতা জেড এ ভুট্টো এবং পাকিস্তান সামরিক চক্র সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে অর্থাৎ আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ষড়যন্ত্রকারীদের হাতের পুতুলে পরিণত হলেন সামরিক প্রেসিডেন্ট জে. ইয়াহিয়া খান। ’৭১-এর পহেলা মার্চ ১টা ৫ মিনিটে আকস্মিক এক বেতার ঘোষণায় ৩ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়। জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত হওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গর্জে ওঠে বাংলাদেশ (পূর্ব পাকিস্তান)।
৩ মার্চ পল্টনে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের সভায় প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধু আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি থাকি আর না থাকি, বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন যেন থেমে না থাকে। বাঙালির রক্ত যেন বৃথা না যায়। আমি না থাকলে- আমার সহকর্মীরা নেতৃত্ব দিবেন। তাদেরও যদি হত্যা করা হয়, যিনি জীবিত থাকবেন, তিনিই নেতৃত্ব দিবেন। যে কোনো মূল্যে আন্দোলন চালাইয়া যেতে হবে- অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” বঙ্গবন্ধু আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ৭ মার্চ রোববার রেসকোর্স ময়দানে তিনি পরবর্তী কর্মপন্থা ঘোষণা করবেন। ৪ মার্চ থেকে ৬ মার্চ সকাল ৬টা থেকে ২টা পর্যন্ত সারা দেশে হরতাল পালনের আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে আন্দোলন এগিয়ে চলল। সারা দেশে তখন একজন মাত্র নেতা। তিনি হচ্ছেন দেশের শতকরা ৯৮ জন মানুষের ভোটে নির্বাচিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের সামরিক শাসন চালু থাকলেও সামরিক সরকারের কথা তখন কেউ শুনছে না। শেখ মুজিবের কথাই তখন আইন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সমগ্র বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে।
সেই আন্দোলনমুখর পরিস্থিতিতে ঘনিয়ে এল ৭ মার্চ। সবার দৃষ্টি ৭ মার্চের দিকে। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে কী বলবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভাবিয়ে তুলল পাকিস্তান সামরিক চক্রকেও। কারণ তারা বুঝে গেছে, বাংলাদেশের মানুষের ওপর তাদের আর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। দেশ পরিচালিত হচ্ছে বিরোধী দলের নেতা শেখ মুজিবের কথায়। এই অবস্থায় ৭ মার্চ শেখ মুজিব যদি রেসকোর্সের জনসভায় স্বাধীনতা ঘোষণা করে বসেন। চিন্তিত পাকিস্তান সামরিক চক্র কৌশলের আশ্রয় নিল। ৭ মার্চের একদিন আগে অর্থাৎ ৬ মার্চ জে. ইয়াহিয়া খান টেলিফোনে কথা বলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা, আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে। পূর্ব পাকিস্তান সামরিক সরকারের তৎকালীন তথ্য কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক সালিকের ‘ Witness to Surrender’ গ্রন্থে এসব তথ্য রয়েছে। ৬ মার্চ জে. ইয়াহিয়া তার দীর্ঘ টেলিফোন আলাপে আওয়ামী লীগ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বলার চেষ্টা করেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) যেন এমন কোনো কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করেন, যেখান থেকে ফিরে আসার উপায় আর না থাকে।’
৭ মার্চের পূর্ব রাতে জে. ইয়াহিয়া টেলিপ্রিন্টারে শেখ মুজিবের কাছে একটি বার্তাও প্রেরণ করেন। সালিকের গ্রন্থে রয়েছে- একজন ব্রিগেডিয়ার জে. ইয়াহিয়ার সেই বার্তা ৭ মার্চের আগের রাতে শেখ মুজিবের ৩২ নম্বরের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসেন। মেজর সালিক ওই বার্তাটি সংক্ষিপ্ত আকারে তার ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলেন। বার্তায় জে. ইয়াহিয়া শেখ মুজিবকে অনুরোধ করেন, “অনুগ্রহ করে কোনো দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন না। আমি সহসাই ঢাকা আসছি এবং আপনার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমি আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি আপনার আকাক্সক্ষা এবং জনগণের প্রতি দেয়া আপনার প্রতিশ্রুতির পুরোপুরি মর্যাদা দেব। আমার কাছে একটি পরিকল্পনা আছে- যা আপনাকে আপনার ছয়দফা থেকেও বেশি খুশি করবে। আমি সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি, কোনো দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন না।” (সূত্র : Witness to Surrender) ৬ মার্চ টেলিফোনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা, টেলিপ্রিন্টারে বঙ্গবন্ধুর কাছে বার্তা প্রেরণ করেও পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছিলেন না জে. ইয়াহিয়া। ৬ মার্চ এও ঘোষণা করা হলো যে, ২৫ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
৭ মার্চ রেসকোর্সে জনসভার বক্তব্য কী হবে- এ নিয়ে ৬ মার্চ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক হয়। জনসভায় বঙ্গবন্ধু কী বলবেন- এ নিয়ে বিভিন্নজন বক্তব্য রাখেন। একপক্ষের মত, বঙ্গবন্ধু যেন জনসভায় সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। অন্যপক্ষ স্বাধীনতার সরাসরি ঘোষণা পরিহার করে আলোচনার পথ খোলা রাখার পক্ষে মত প্রদান করেন। সভা ৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত মুলতবি রইলো। ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের চরমপন্থীরা বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধুকে ৭ মার্চের জনসভায় স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য। যদ্দুর জানা যায়, ৭ মার্চ ভাষণ দেয়ার আগে চিন্তিত বঙ্গবন্ধুকে বেগম মুজিব বলেছিলেন, ‘আল্লার নাম নিয়ে তোমার মন-দিল-অন্তর থেকে যা আসে- তাই বলে দিও।’
পরিস্থিতির চাপে ভীতসন্ত্রস্ত পূর্ব পাকিস্তান সামরিক সদর দপ্তর থেকে বিভিন্নভাবে শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগকে এই মেসেজ দেয়া হয় যে, ৭ মার্চ যেন কোনোভাবেই স্বাধীনতা ঘোষণা না করা হয়। ৭ মার্চ জনসভাকে কেন্দ্র করে কামান বসানো হয়। এমনকি আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র প্রস্তুত রাখা হয়। মেজর সিদ্দিক সালিক তার গ্রন্থে লিখেছেন, পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি ৭ মার্চের জনসভার প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ নেতাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “পাকিস্তানের সংহতির বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হলে তা শক্তভাবে মোকাবেলা করা হবে। বিশ্বাসঘাতকদের (বাঙালি) হত্যার জন্য ট্যাংক, কামান, মেশিনগান সবই প্রস্তুত রাখা হবে। প্রয়োজন হলে ঢাকাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হবে। শাসন করার জন্য কেউ থাকবে না কিংবা শাসিত হওয়ার জন্যও কিছু থাকবে না।”
এমন এক কঠিন সংকটময় পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৭ মার্চ রেসকোর্সে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষকে চারটি শর্ত দিয়ে ভাষণের শেষাংশে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।” বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কিছু অংশ ব্যাখ্যা করলে দেখা যায়, তিনি সেদিন যুদ্ধের ঘোষণা যেমন পরোক্ষভাবে প্রদান করেন- আবার যুদ্ধে কিভাবে জয়ী হতে হবে সে ব্যাপারেও বক্তব্য রাখেন। স্বাধীন রাষ্ট্রের বৈধ সরকারপ্রধানের মতো এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, “২৮ তারিখে কর্মচারীরা গিয়ে বেতন নিয়ে আসবেন। এরপর যদি বেতন দেয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের ওপর আমার অনুরোধ রইলো প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।”
প্রকৃতপক্ষে ’৭১-এর পহেলা মার্চ থেকেই পূর্ব পাকিস্তানে মুজিবের শাসন কায়েম হয়। যে জন্য তিনি বলতে পেরেছেন, ২৮ তারিখ কর্মচারীরা বেতন নিয়ে আসবেন। তিনি পাকিস্তানি শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলারও আহ্বান জানান। অনেকেরই আশঙ্কা ছিল বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলা হতে পারে। যে জন্য তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা রাস্তাঘাট সবকিছু বন্ধ করে দেবে।’ অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলেও শত্রু পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকে- ৭ মার্চের ভাষণে তাই তিনি বলেছেন। তা ছাড়া ভাতে মারবো, পানিতে মারবো- এ কথার মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীকে গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে পর্যুদস্ত করার কথাই বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সে সময় এমন ছিল যে, কোনো কোনো বিদেশি পত্রিকাও তখন জানিয়েছিল- ৭ মার্চ শেখ মুজিব হয়তো পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন। ’৭১-এর ৫ মার্চ লন্ডনের গার্ডিয়ান, সানডে টাইমস, দি অবজারভার এবং ৬ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ৭ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণার পূর্বাভাস দেয়া হয়। ৬ মার্চ ’৭১ লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ছাপা হয়“শেখ মুজিবুর রহমান আগামীকাল (৭ মার্চ) পূর্ব পাকিস্তানের একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারেন।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ’৭১-এর ৭ মার্চ সরাসরি কেন স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি, তার ব্যাখ্যা পরবর্তীকালে তিনি নিজেই দিয়েছেন। ১৯৭২ এর ১৮ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে এনডব্লিউ টিভির জন্য দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ৭ মার্চের ওই ঘটনা বর্ণনা করেন। ফ্রস্ট শেখ মুজিবের কাছে জানতে চান, ‘আপনার কি ইচ্ছা ছিল যে, তখন ৭ মার্চ রেসকোর্সে আপনি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ঘোষণা দেবেন?’ জবাবে শেখ মুজিব বলেন, ‘আমি জানতাম এর পরিণতি কী হবে এবং সভায় আমি ঘোষণা করি যে এবারের সংগ্রাম মুক্তির, শৃঙ্খল মোচন এবং স্বাধীনতার।’ ফ্রস্ট প্রশ্ন করেন, ‘আপনি যদি বলতেন, আজ আমি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ঘোষণা করছি, তো কী ঘটত?’ শেখ মুজিব উত্তর দেন, ‘বিশেষ করে ওই দিনটিতে আমি এটা করতে চাইনি। কেননা বিশ্বকে তাদের আমি এটা বলার সুযোগ দিতে চাইনি যে, মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং আঘাত হানা ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প ছিল না। আমি চাইছিলাম তারাই আগে আঘাত হানুক এবং জনগণ তা প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত ছিল।’
ইতিহাস প্রমাণ করে- ৭ মার্চ সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা না করে বঙ্গবন্ধু শতভাগ সঠিক কাজটিই করেছেন। ২০০৬ সালের ৩১ মার্চ আইয়ুব খান নামের একজন কলাম লেখক দৈনিক ভোরের কাগজে যথার্থই লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের একটি শব্দ বা দাড়ি-কমাতেও বাহুল্য ছিল না। প্রতিটি শব্দ বা বাক্য বাস্তবতার গভীর থেকে উৎসারিত। এ যেন কোনো দেবদূত, সমবেত জনতাকে তাদের সংকটকালে অমোঘ নিয়তির দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।’
উল্লেখ্য, ওই ভাষণের ১৮ দিন পর ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা শহরে গণহত্যার মাধ্যমে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন পাকি প্রেসিডেন্ট জে. ইয়াহিয়া খান। মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত বাঙালি জাতি ৯ মাসের যুদ্ধে বিজয় এনেছিল।
কৃতজ্ঞতা / মোহাম্মাদ শাহজাহান॥
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৭:৩৫
ক্লোন রাফা বলেছেন: আপনি ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ পলিটিক্যাল কাব্যর নায়ক’কে প্রত্যক্ষ্য করা একজন সৌভাগ্যবান। পৃথিবীর ইতিহাসে এর চাইতে সমৃদ্ধপুর্ণ ভাষণ আর নেই । একটি জাতির জন্য সকল রকম দিকনির্দেশনা আছে এই ভাষণে।
২| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:১৫
ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:
মানুষ যুদ্ধ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন; কিন্তু সব শ্রেণীর মানুষ যুদ্ধে না'যাওয়াতে বিশাল সংখ্যক মানুষের মাঝে দেশ-প্রেম নেই।
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:৫৫
ক্লোন রাফা বলেছেন: বিশেষ করে উচ্চবিত্ত এবং পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছে সুবিধা প্রাপ্ত মানুষ যুদ্ধ করে নাই। ২% সামরিক বাহিনীর লোক যুদ্ধ করে পুরো সুবিধা নিয়েছে ৭২ সাল থেকে। পুলিশের অবদান পাশ কাটিয়ে চলে সবাই।
৩| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৬:৩৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
মুজিব আমার স্বাধীনতার অমর কাব্যের কবি।
৭ই মার্চ অমর হোক।
জয়বাংলা !!!
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:০৮
ক্লোন রাফা বলেছেন: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পৃথিবীর ইতিহাসে রাজনৈতিক মহানায়ক। ৭ই মার্চের ভাষণে অমর কাব্য রচনা করে গেছেন।
৪| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:১৩
নিমো বলেছেন: উফ! কী পোস্ট দিলেন। আমিতো এরই মধ্যে ব্লগের জা-শি শুয়োর, কুকুর, শেয়াল, পাকি রাজাকার, আল বদর, শামস ছানা-পোনাদের চামড়া পোড়ার গন্ধ পাচ্ছি।
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:২৫
ক্লোন রাফা বলেছেন: ওরা এখানে আসবেনা। কারন ওদের পিতৃপরিচয় প্রকাশ হয়ে যাবে। ওরা ধর্ম’কে আশ্রয় করে আক্রমণ করা বরাহ...।
৫| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমার দাবী আজকের একটাই- যারা ৩২ নম্বর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে এবং শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভেঙ্গে দিয়েছে তাদের শাস্তি দিতে হবে।
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৫
ক্লোন রাফা বলেছেন: বাঙালীর মনের কথা Click This Link
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:০৫
ক্লোন রাফা বলেছেন: Click This Link একজনের আমলনামা‼️
৬| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:০৭
রিফাত হোসেন বলেছেন: পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলা। তবে তিনি পাকিস্তান ভেঙ্গে যাক চান নাই। স্বায়ত্তশাসনের দিকে ধাবিত হচ্ছিলেন। পাকিদের বৈষম্যের জন্য এই পথ ধরতে বাধ্য হয়েছিলেন। পরিনতি মুক্তি সংগ্রাম। পাকিস্তান-ভারত যতই বলুক তারা আমাদের ভাই বা শুভাকাঙ্ক্ষী, আদতে তারা নিজ নিজ স্থানে স্বার্থপর। বাংলাদেশীরাই শুধু দেশের স্বার্থ বুঝল না।
আফসোস যে, ১৯৭১ পরবর্তী লীগ ক্ষমতার সঠিক ব্যবহার করতে পারে নাই। এরপর কি হয়েছে তা ভেঙে বলার কিছু নাই।
১৮ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:০৬
ক্লোন রাফা বলেছেন: বঙ্গবন্ধু একটি জাতিকে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন । কি করতে হবে কেনো করতে হবে সবকিছু স্ফটিকের মত স্বচ্ছ ভাবে বলে দিয়েছেন।
এর চাইতে পরিষ্কার করে বলার কিছু নাই । তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদীর তকমা নিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রাম বানচাল করতে চান নি ।
আপনি ঠিক কোন প্রজন্মের আমার জানা নেই । তবে এতটুকু বুঝতে পারছি ৭১ পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে বিন্দুমাত্র বাস্তব জ্ঞান নেই ‼️
৭| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:২২
নিমো বলেছেন: @রিফাত, তখনতো পাকিস্তান ভাঙার মত পরিস্থিতি ছিল না। তাহলে উনি সেটা চাইবেন কেন? এখন যে নাহিদরা দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র, নূতব সংবিধান, জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলছে। এখানে কি বাংলাদেশ ভাঙার ষড়যন্ত্র তত্ত্ব কপচানোর সুযোগ আছে?
৮| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৬
মিরোরডডল বলেছেন:
কেমন আছে রাফা?
আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, আমাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলতে যা কিছু দেখেছি পড়েছি জেনেছি, তার মাঝে ৭ই মার্চের ভাষণটা অন্যতম ভুমিকা রাখে। রাজনীতি করিনা, ইনফ্যাক্ট বুঝিও না কিন্তু এটা জানি যে একজন নেতা ঠিক এমনটাই হওয়া উচিত যার এক ডাকে লাখো মানুষ একত্রিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা তার শাসনামলে অনেক অন্যায় করেছে, ভুল করেছে। একসময় নিশ্চয়ই এগুলো আইনের আওতায় আনা হবে।
কিন্তু তার কারণে শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙ্গা, ভাস্কর্য জ্বালানো পোড়ানো এসব কি সঠিক কাজ??? আমরা যারা একটা স্বাধীন দেশে জন্ম নিয়েছি, স্বাধীনতার পেছনের মানুষগুলোর প্রতি আমাদের মিনিমাম শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত।
শেখ হাসিনা সব জায়গায় বাধ্যতামূলকভাবে মুজিবের ছবি রাখা, জাতির পিতা বলে বলে মানুষের কাছে শেখ মুজিবকে বিরক্তকর করে তুলেছে। এটা তার ব্যর্থতা যে সে তার বাবাকে এভাবে লেইট ডাউন করেছে কিন্তু তার দায়ভারতো শেখ মুজিবের না।
আজ যারা শেখ মুজিবকে অস্বীকার করে, এই ভাষণটা দেখলে আমার মনে হয়, এগুলো কি মিথ্যা!!
বাংলাদেশে এরপর আর কোন নেতা কি এসেছে এরকম!!!
আসলে আমরা জাতি হিসেবে খুব অকৃতজ্ঞ।
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৪০
ক্লোন রাফা বলেছেন: রাফা, ভালো নেই । আমার বাংলাদেশ ভালো নেই। আমার শেকড় ধরে টান দিয়েছে যারা তাদের সমূলে উৎপাটন করা এখন সময়ের দাবি।
শেখ হাসিনা নিজেও হয়তো এমনটা চায় নাই। ৫৪ বছরের বাংলাদেশে কোন সরকার কি বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতার মহানায়কদের যথাযথ সম্মান দিয়েছে⁉️ বরং ইতিহাস থেকে আমাদের সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায় মুছে দিতে চেয়েছে। এর শত সহস্র প্রমাণ এখন আরো বেশি প্রকট। শেখ হাসিনা তাই সবাইকে অবগত করতেই অনেক কিছু করেছেন। এর বাইরে বঙ্গবন্ধুর ভাষায় যদি বলি। তাহলে চাটুকাররা তার সর্বনাশ করেছেন অপরিসীম। একজন মহানায়কের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু এই বাংলাদেশে সেই অবদান মুছে ফেলতে বঙ্গবন্ধুর বংশ নিশ্বেষ করা হয়েছে ।পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নৃশংস হত্যার ইতিহাস কি আর ২য় টি আছে⁉️ আমি মনে করি সেই আতংক থেকেই কিছু ভুল শেখ হাসিনাও করেছেন।
শেখ হাসিনার স্থানে নিজেকে স্থাপিত করে একটু ভাবুন। আমি হোলে আমার প্রতিপক্ষ ও স্বাধীনতা বিরোধীদের ধুলায় মিশিয়ে দিতাম। যদি আমার জিবনের বিনিময়ে হয় তবুও।
ধন্যবাদ, মি.ডল।
৯| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:০৯
রিফাত হোসেন বলেছেন: @নিমো সাহেব
পোস্টের subject ৭ই মার্চ। আপনি টেনে চুইংগাম এর মত ২য় না ৩য় প্রজাতন্ত্রের দিকে যাচ্ছেন।
কিছু মানুষ সামান্য ব্যাপারে গায়ে পড়ে লাগে। এতে অধিকাংশই ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থ বিদ্যমান থাকে।
মুসলিমরা(ইসলামপন্থী) বিশ্বাস করে থাকে দুই কাধে দুই ফেরেস্তা আছে। সুতরাং মুজিব বলেন আর নাহিদ বলেন বা মাশরাফি, কেউই উর্ধ্বে নন। শেখ মুজিব ফলাফল পেয়েছিলেন। নাহিদ সেই দিকে হাটা দিলে কি হবে তার উদাহরণ আমরা জানি-ই। শুধু ভুলে গেলেই বিপদ!
১০| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৩০
নিমো বলেছেন: রিফাত ভাই রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। ভালো থাকুন।
১১| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:০৯
কামাল১৮ বলেছেন: @ মিরোর,আপনি মাঝে মাঝে কোথায় নিরুদ্দেশ হয়ে যান।আপনি ব্লগে থাকলে বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্য পাওয়া যায়।
১২| ০৮ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।
১৩| ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:২২
খায়রুল আহসান বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৩:২৩
কামাল১৮ বলেছেন: ঐ সভায় উপস্থিত থেকে শেখ মুজিবের ভাষণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুনেছি।ঐ মাঠেই নয় তারিখে ছিল ভাসানীর জনসভ্।সেই সভাতেও উপস্থিত ছিলাম।তখন আমি একটি কমিউনিষ্ট পার্টির সার্বক্ষণিক কর্মি।