নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু নাই

নীল গাংচিল

ভালো হতে পয়সা লাগে না

নীল গাংচিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাদুর কাঠি

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:৩৬


১৪ই এপ্রিল। সন্ধ্যা ৬ টা বেজে ৪৫ মিনিট।

'৫২ টিভির সন্ধের খবরে সংবাদ পাঠিকা শারমিন শীলা -
চলতি খবরের মাঝে হঠাৎ পাশ থেকে স্টুডিও ডেস্কের ওপর একটা কাগজ দিয়ে যায় সহকারী। কাগজটি টেনে নিয়ে -

" দর্শকবৃন্দ, এই মাত্র পাওয়া খবর অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এস সি চত্ত্বরে ভীড়ের মাঝে মুমূর্ষাবস্থায় পাওয়া ৪ জন আহতের ২ জনের ইতোমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে। বৈশাখী মেলায় বেড়াতে আসা মানুষের ভিড়ে আজ সন্ধ্যে নাগাদ ৪ জন ব্যাক্তিকে মুমূর্ষাবস্থায় দেখতে পায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যারা। তবে মেলার ভীড়ের কারণে আহতদের উদ্ধার করতে বেগতিক অবস্থায় পড়ে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আমাদের সাথে আছেন রিপোর্টার কাজী আরাফাত। "

স্ক্রীনের ইনসেটে লাইভ দেখা যাচ্ছে টি এস সি চত্তর থেকে। ভীর ঠেলে হাতে মারক্রোফোন কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে রিপোর্টার কাজী আরাফাত ডান কানে ইয়ারফোন চেপে ধরে -

" শারমিন, শুনতে পাচ্ছেন? "

" জ্বি আরাফাত, আমরা আপনাকে শুনতে পাচ্ছি। আরাফাত আমাকে বলুন এখন কি অবস্থা ঘটনাস্থলের? "

" শারমিন, আপনি হয়তো দেখতে পাচ্ছেন আমি পুলিশভ্যানের একপাশে আশ্রয় নিয়েছি যেখানে একটু ভীড় কম। তাছাড়া পুরো টি এস সি চত্তর জুড়ে অঢেল মানুষের ভীড়। মূলত এই ভীড়ের কারণেই আহতদের উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। আপনি হয়তো জেনেছেন যে দুজন ভিকটিম ইতোমধ্যেই মারা গেছেন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভীড় ঠেলে কোন এ্যমবুলেনস এখন অব্দি ঘটনাস্থলে এসে পৌছতে পারে নি। এবং পুলিশের ভাষ্যমতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাদের মৃত্যু হয়। তাছাড়া বাকি দুজনের অবস্থাও গুরুতর। এদিকে প্রচন্ড বাতাস বইছে। হয়তো আমরা বছরের প্রথমদিন কালবৈশাখীর দেখা পাবো। শারমিন। "

" ভিকটিমদের কারো পরিচয় এবং তারা কিভাবে আহত হয়েছেন সে সম্পর্কে যদি কোন তথ্য থাকে, আরাফাত। "

" না শারমিন। আহতদের পরিচয় এখনো জানা যায় নি, তবে সন্ধের একটু পরেই একটা ছোট খাটো জটলা বাধে চত্তরের ঠিক দক্ষিণদিকটায়। এর পরপরি পুলিশ ঘটনাস্থলে কাছাকাছি দুরত্বে ৪ জনকে আহতাবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। তাছাড়া ভীড়ের মানুষের পদদলিতও হন আহতরা। শারমিন। "

" আচ্ছা, জানা গেছে যে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল এখন ঘটনাস্থলে কর্মরত আছে। তাদের কারো সাথে কি কথা হয়েছে আপনার? আরাফাত। "

" শারমিন, আসলে গোয়েন্দা বিভাগের একজন কর্মকর্তা এই মুহুর্তে আমার সঙে রয়েছেন। "

মাইক্রোফোন এগিয়ে দিতেই স্ক্রীনে মধ্যবয়সী গোয়েন্দা কর্মকর্তার আবির্ভাব।

" এখনো কি আহতদের কারো পরিচয় পাওয়া গিয়েছে? "

" হ্যা, পাওয়া গিয়েছে তবে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের খাতিরে এই মুহুর্তে কোন গণমাধ্যম কর্মিকে তাদের নাম পরিচয় বলছি না। অবস্থা স্বাভাবিক হলেই প্রেস-ব্রিফিং এ জানানো হবে। তাছাড়া আহতদের শরীরে ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের কারো গলায়, কারো ঘাড়ে, কারো বুকে একাধিক ক্ষতচিহ্ন আমরা দেখেছি এবং দুজনের চোখেও নির্মমভাবে আঘাত করা হয়েছে কোন কিছু দিয়ে খুঁচিয়ে বা গেঁথে। তবে আমরা এখনো তেমন কিছু খুজে পাইনি ঘটনাস্থলে।"

" কি ধরণের অস্ত্র হতে পারে বলে আপনারা ধারণা করছেন? "

" আহতদের ক্ষত দেখে মনে হলো স্ক্রু ড্রাইভার টাইপের কিছু একটা হবে আরকি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তবে ভীড়ের কারণে আমরা হাসপাতালের দিকে এগুতে পারছি না। এদিজে জোড়ে সোরে বাতাসও শুরু হয়েছে। তাছাড়া ঘটনার পর আরো বেশি পরিমাণ মানুষ কৌতূহলী হয়ে ভীড় জমিয়েছে। "

মাইক্রোফোন নিজের দিকে ফিরিয়ে -
" ধন্যবাদ আপনাকে। শারমিন, একজন আপাতত এইটুকু। কি কারণে বা কারা এমনটা ঘটিয়েছে তা আদৌ জানা যায় নি। শারমিন।"

" ধন্যবাদ আরাফাত।"

ইনসেটের লাইভ ইউন্ডো মিলে গেলো।

" দর্শকমণ্ডলী, এতোক্ষন দেখছিলেন টি এস সি চত্তর থেকে রিপোর্টার কাজী আরাফাতের লাইভ রিপোর্ট। "

হঠাৎ কালবৈশাখীর আভাসে উৎসবে মেতে ওঠা মানুষগুলো ছুটোছুটি করছে এদিক ওদিক। কেউ কেউ সঙীর হাত ধরে দেয়ালের ধারে দাঁড়িয়ে বছরের প্রথম কালবৈশাখীর বাতাস উপভোগ করছে। আবার কেউ মাতাল বাতাসের সাথে মিলিয়ে নিচ্ছে সুখটান।
ওয়াকিটকি হাতে পুলিশের ছুটোছুটি। আর লালসাদা শাড়িতে নিয়নের হলুদ আলো ভেদ করে দীর্ঘ ঘন কালো রেশমি চুল বাতাসে এলিয়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে কোন এক রমণী। পায়ে তার আলতাবরণ। কপালে লাল টিপ। কোমল হাতের বাহুতে কতিপয় হিংস্র নরপিশাচের নখের আচড়।

রমনী দু'হাতে ধরলো গুছিয়ে তার রেশমি কালো কেশ। আলতোভাবে পেচিয়ে নিলো তার চুলগুচ্ছ, পরম যত্নে বাধলো স্বাধের খোঁপা। খোঁপায় পড়লো রজনীগন্ধার মালা আর গুঁজল একটি রক্তাক্ত যাদুর কাঠি।

রেডিওতে তখন বাংলা প্লে-লিস্টের শেষ গানটা -
" আলগা করো গো, খোঁপার বাঁধন।
আলগা করো গো, খোঁপার বাঁধন।
দিল ওহি মেরা ফাস গ্যেয়ি
দিল ওহি মেরা ফাস গ্যেয়ি......... "

( আমার সপ্তম শ্রেনী পড়ুয়া চাচাতো বোন খোঁপার কাটাকে যাদুর কাঠি বলে)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ২:১৬

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: নজরুল সংগীত টা আমার অনেক প্রিয়।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:০৩

নীল গাংচিল বলেছেন: আমারো

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:১৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:০৩

নীল গাংচিল বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.