নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

humanchorcha

writer

সাইফুল ইসলাম গাজী

writer and translator of Bangladesh

সাইফুল ইসলাম গাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজয়ী সোমালি কবি লাদান ওসমানের কবিতা

২৭ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯

সোমালি কবি লাদান ওসমান তার ‘রান্নাঘরের অধিষ্ঠাত্রীর সাক্ষ্য’ ‘কবিতা সংগ্রহ’-এর জন্য এ বছর (২০১৪) ‘সিলারম্যান প্রাইজ ফর আফ্রিকান পোয়েটস’ লাভ করেছেন। গত বছর এর উদ্বোধনী পুরস্কারটি পেয়েছিলেন কেনিয়ান কবি ক্লিফটন গাচাগুয়া তাঁর ‘কিলিফির পাগল’ কাব্যগ্রন্থের জন্য। এই পুরস্কারের জন্য লাদান পাবেন ১০০০ মার্কিন ডলারের সমমানের অর্থ আর তার বইটি প্রকাশিত হবে ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা প্রেস ও আমালিয়ন প্রেস সেনেগাল থেকে। লাদান ওসমানের জন্ম সোমালিয়ার মুগাদিসুতে। বর্তমানে বসবাস করেন আমেরিকার ওহিয়োতে। তিনি ওটারবিয়েন কলেজ থেকে বি.এ এবং অস্টিনের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ‘মিসেনার সেন্টার অব রাইটারস’ থেকে এমএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর কবিতা টেড কুসের’স সিন্ডিকেট নিউজপেপার, আমেরিকান লাইফ ইত্যাদিতে ছাপা হয়।



পুরস্কার কমিটির ঘোষণা শোনার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় লাদান বলেছেন, ‘‘এই পুরস্কারের আমি প্রশংসা করি এবং খুবই মূল্য দেই। বইটিতে জীবন ও কবিতাকে আমি খুব খারাপভাবে উপস্থাপন করেছি, আসলে যেমনটি আমি প্রত্যক্ষ করেছি। আমি চেয়েছিলাম সৃজনশালীতার মাঠে একটু জায়গা করে নিতে। বছর ধরে গুচ্ছ গুচ্ছ চিন্তা জড়ো করে-রচনা করেছি এই বই। এই পুরস্কার পেয়ে আমি খুবই উদ্দীপিত, বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারছি রুক্ষ জলে ভেসে আসা শুভ সংবাদটি। এখন আমি সামনের দিকে তাকাব নতুন পাঠক আর সমপ্রদায় হবে আমার লক্ষ্য।’’

সমপ্রতি সোমালিয়ায় রচিত হচ্ছে দারুণসব কবিতা। সোমালি কবিতা আরবি কবিতার ইতিহাসের সঙ্গেই যুক্ত থাকলেও এর ইতিহাস, ঐতিহ্য ভিন্ন। এর লিখিত রূপটি বিশ্ব জুড়ে ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি পায় জাতীয় কবি মুহাম্মদ ইব্রাহিম ওয়ারসেম, হাদরাবির সময় থেকে। পরে তাঁরই পথ ধরে সমানশক্তি নিয়ে সামনে আসেন, ম্যাক্সামড যশি ধামাক, গেরি। এইসব মহান পুরুষ কবিদের কবিতা বিশ্ব গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপিত হওয়ায় সেখানকার মহিলা কবিদের মধ্যে উদ্দীপনা বিশেষভাবে চোখে পড়ছে। নারীদের হীন অবস্থান তুলে ধরার ক্ষেত্রে এইসব কবিদের রচনা এত বেশি ব্যঙ্গময় হয়ে উঠছে যে, আগে কখনো এমনটি দেখা যায়নি। তাদের ভাষা যেমন শক্তিশালী, আঙ্গিকও অনেক বেশি বর্ণাঢ্য। তাদের এই সৃজনশীল কর্মকাণ্ডকে শুধু নারীবাদী কর্মকাণ্ড বললে তাদের ছোট করা হয়। আর এই সব তরুণ কবিদের উৎসাহিত করছে সিলারম্যান, ব্রুনেলের মত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার। পুরস্কারের সূত্রেই তারা উঠে আসছেন বিশ্ব গণমাধ্যমে। তাদের কবিতা কম সময়ের অনূদিত হয়ে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায়। এখন সময়টাও দারুণ, বিশ্বজুড়ে নারীবাদীদের সৃজনশীল কাজের স্বীকৃতি মিলছে, সঙ্গে অর্থও জটুছে। আর্থিক ও সংস্কৃতির দিক থেকে সক্ষমতা অর্জনই এক বিংশ শতাব্দির নারীর চূড়ান্ত লক্ষ্য।



আজকের রাত



আজকের রাত একটি মাতাল মানুষ

তার নোংরা জামা।



পুনর্ব্যবহারযোগ্য আবর্জনাপাত্রে গল্পরত কোনো দম্পতি নেই

যারা আমাকে আমার প্লাস্টিক আপলোডে সাহায্যে করতে পারে।

একটি শাদাকালো বেড়ালও নেই

আভিজাত্যের সঙ্গে সুষমতা রেখে

যে চুমু খেতে পারে মনমরা তারাদের ঠোঁটে।



আছে শুধু দমবন্ধ করা চুকা গন্ধ

জামার গলাবন্ধনীতে ঘামের দাগ

গাড়ির নিচে গড়াগড়ি খাওয়া পানির বোতল।



আমি আমার সংক্ষিপ্ত জামা-প্যান্টে জুসের বোতল জড় করি

এরপর ভরে দিই প্রতিবেশীদের কোল

প্রশান্তির সঙ্গে তাকাই সামনের ব্যালকনির দিকে

যখন কেউ পান করে একান্তে, নিজস্ব নিরালায়।



নিজেকে শুধু বলি: বড় হও, একটি তরঙ্গ হও।



অনুযোগ



আমি আমার হাঁটু দুটো একসঙ্গে রাখি, এমনকি গোছলের সময়ও।

মেরির গল্পটি আমি জানি, অলৌকিকভাবেও ঘটে যায় অনেক কিছু।



মাঝেমধ্যেই মরীচা ধরা রেলপথ ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটি,

যাতে লোকেরা দেখে মনে করে একজন পালোয়ান ছুটছে;

এভাবেই তাদের বুঝিয়ে দেই: সহজলভ্য নই আমি।



কিন্তু এরপরও আমার ফুফু-খালামনিদের চিন্তার শেষ নেই আমাকে নিয়ে

কত অুনযোগ তাদের: মেহিদির রঙে হাত রাঙিয়ে যারা বাইরে ঘুরে,

যারা লজ্জার মাথা খায়, তারাই গর্ভবতি হয়।



তারা বলেন: শোনো ভাইঝি, চোখে কাজল পরো না, দৌড়ে যেও না

আঙ্গিনার বাইরে, সামনের সড়কে

সন্ধ্যের পর বেহায়ার মতো খেলো না ওই মাঠে, ওখানে ঝোঁপেঝাড়ে

খারাপ লোক ঘাপটি মেরে থাকে, জিনেরাও থাকে উৎপেতে

গাছের মগডালে।



সাধারণ স্বর্গ



আমি একটি পুতুলকে সাজিয়ে চেয়ারে রখলাম,

আশা করতে লাগলাম তার মুখ থেকে কিছু শুনব।

মনে মনে বলি, ‘‘কথা ফুটুক তোমার মুখে।’’

কিন্তু আমি তো এক সাধারণ আত্মা। আমার কথায়

অলৌলিকতা আসবে কোথা থেকে?

হঠাৎ তার চোখের পাতা পিট্‌পিট্‌ করে উঠল।

আমি ভীষণ খুশি, পুতুলটিকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন|

অনেক কথা বলার আছে তাকে।

এও জানি, বাস্তবে নয়, স্বপ্নেই আমি স্বর্গ রচনা করি।



পাক্ষিক অনন্যা

জুন ২০১৪

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.