নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছোট বুদ্ধি ব্লগ

জর্জ অলড্রিন ঘোষ

https://www.facebook.com/TusharHQ5

জর্জ অলড্রিন ঘোষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

লোকাল বাসে নিউমার্কেট গমন ও ফেসবুক পর্ব

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৩:৩৫



দেখতে দেখতে একটি বছর চলে গেলো, এই একটি বছরে আমি যা দেখেছি তা বলে বোঝাতে পারবো না। নতুন বছরের আগমন আমাদের সকলের জীবন কে করুক প্রাণবন্ত এবং সাফল্যময়। প্রতিবছর অল্প অল্প করে হলেও আমরা সবাই নিজেকে একটু একটু করে পরিবর্তন করি – চেষ্টা করি একটু নতুন কিছু করতে, যাতে আমাদের পুরাতন বছরের ভুল গুলো সুধরে নেওয়া যায়। ইংরেজীতে ইহাকে বলে হয়তো নিউ ইয়ার রেজুলেশন।

গতবছর বড়দিনের পরপর নতুন বছর এর অনুষ্ঠান এবং আয়োজন নিয়ে তোড়জোড় চলছে, আমি গিয়েছি একটু নিউমার্কেট – একটা ব্যাগ কিনবো। বাসা হতে বের হয়ে উঠলাম ২৭ নাম্বার লোকাল বাসে, ভিড়ের মধ্যে অতি কষ্টের মাঝেও কোন ভাবে নিজেকে একটি চিপায় ঢুকাতে সক্ষম হলাম। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম, একটা সিট খালি হওয়া মাত্র সেটার পেছনে ছোটা শুরু করলাম। শেষমেষ সিট পেলাম, কিন্তু পাসের সিটে বসে থাকা এক লুঙ্গি পড়া বৃদ্ধ কে দেখে খানিকক্ষণ থমকে থাকতে হলো –
লোকটা দেখতে বদখত, প্রথমত লোকটার চেহারায় বয়সের ভারে চোখে মুখে একটা রূক্ষতা প্রকাশ পায়। বাস একটু পরপর জ্যামে আটকা পড়ছে দেখে পকেট থেকে ফোনটা বের করে নতুন কেনা গ্রামিণফোনের ইন্টারনেট প্যাকে ফেসবুক ব্রাউজ করছিলাম, লোকটা বারবার আমার ফোনের টেক্সট দেখার জন্য উঁকি দিচ্ছিল দেখে আমার বেশ অস্বস্তি লাগছিলো। লাগাটাই স্বাভাবিক কারণ এরকম ভাবে কেউ কারো ফোনে উঁকি দেবে সেটা চিন্তা করতেও কেমন যেন অবাঞ্চিত লাগে, একটু পর লোকটা আমাকে জিজ্ঞাসা করলো – ‘আপনি কোথায় নামবেন?’ উত্তরে আমি বললাম – ‘নিউমার্কেট এর কিছু সামনে নামবো, কেন?’ আমাকে দেখে একটা অস্লিল হাসি দিয়ে বলল, ‘জ্বে… আমিও সেইখানেই নামবো… তা ভাই আপনি করেন কি?’
এরকম অপরিচিত কারো সাথে কথা বলাটা আমার স্বভাবগত নয়, সুতরাং প্রসঙ্গত কারণেই আমি বারবার উহাকে এড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলাম। যতই এড়াতে চাই লোক ততই জেঁকে বসে, বারবার এই কথা সেই কথা বলে কথা আদায়ের চেষ্টা করতে লাগলো।

অবশেষে আমাকে জিজ্ঞাসা করে – ‘ভাই, আপনার হাতে ঐটা কি ফেচবুক?’ আমি বললাম, ‘জ্বী এটা ফেসবুক, কেন?’ উত্তরে লোকটা আমাকে একটা বিজয়ীর হাসি হেসে বলল, ‘আমাকে একটা ফেসবুক খুলে দেবেন?’ আমি বললাম, ‘আপনি কি ফোন ব্যবহার করেন?’ পকেট থেকে একটা সিম্ফোনীর ক্লাসিক সিরিজের ডায়েল প্যাড কীবোর্ডওয়ালা ফোন দিয়ে বলল, ‘এই যে এইটা!’। আমি খুশি খুশি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম, অপেরা মিনি ব্রাউজার আর ফেসবুক এ্যাপ দুটোই বিল্ট ইন দেওয়া আছে। অতঃপর বাসের মধ্যে বসে নিজের ৫-১০ মেগাবাইট খরচ করে বৃদ্ধ কে একটা ফেসবুক এ্যাকাউন্ট খুলে দিলাম।

হয়তো আমার কাজটা করা ঠিক হয়েছে, হয়তো হয়নি তবে আমার নিজের বিবেক আমাকে যা করতে বলেছে আমি তাই করেছি। আমার দেশের সকল শ্রেণীর মানুষ অন্তত ইন্টারনেট কি? তথ্য প্রযুক্তি কি? কিভাবে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম গুলো কাজ করে সে খবর রাখে, ওরা জানে কিংবা জানতে চায় তাতেই আমি খুশি হয়েছি।

একটা সময় আমিও বুড়ো হবো, তখন হয়তো ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের চেয়েও উন্নত কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। তখন আমিও বুড়ো বয়সে কোন বাচ্চা ছেলের কাছে সাহায্য চাইলে সে যদি আমার প্রতি বিরূপ আচরণ করে তবে কিন্তু আমি কষ্ট পাবো। হয়তো মন থেকে মেনে নিতে পারবো না, হাঁটুর বয়সের একটা বাচ্চা ছেলে আমাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাল, অন্তত এতটুকু কমন সেন্স থেকেই আমি এই বৃদ্ধ লোকটিকে সেদিন সাহায্য করেছিলাম, পরে ভেতরে ভেতরে আমার নিজের কাছেই অনেক আনন্দ লাগলো।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৮

ঈশান আহম্মেদ বলেছেন: হুম...দেশের প্রতিটি স্থানে সর্বস্তরের জনগনের কাছে ইন্টারনেট পৌছে দেওয়া,আমাদেরই দায়িত্ব।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮

জর্জ অলড্রিন ঘোষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে :)

২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৩

কালীদাস বলেছেন: খারাপ বলেননি, দেশের মুটামুটি সবাই ফেসবুক দিয়ে ইন্টারনেট চেনে এবং এরপরেও সেটাতেই বেশিরভাগ ানলাইন টাইমটা পাস করে।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:০২

জর্জ অলড্রিন ঘোষ বলেছেন: করুক না তাতেও অসুবিধে কই? এটলিস্ট মানুষ এর চিন্তা, বুদ্ধি, বিবেক বিকশিত হচ্ছে। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.